মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * সাতক্ষীরায় শিক্ষক কর্মচারীদের অবসর ভাতা প্রদান   * মিস অ্যান্ড মিসেস এলিগ্যান্স বাংলাদেশ ২০২৫ অনুষ্ঠিত   * চিতলমারীতে ড্রেনের পানি উপচে পড়ছে সড়কে, জনদুর্ভোগ চরমে   * শ্যামনগরে ইউএনওর বদলী প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ   * নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান   * সাতক্ষীরাদেবহাটারহাদিপুরজগন্নাথপুরআহ্ছানিয়াআলিমমাদ্রাসায়পবিত্রসিরাতুননবী (সঃ) অনুষ্টানউদযাপন   * সাতক্ষীরাদেবহাটারহাদিপুরজগন্নাথপুরআহ্ছানিয়াআলিমমাদ্রাসায়পবিত্রসিরাতুননবী (সঃ) অনুষ্টানউদযাপন   * শ্যামনগর উপকূলে বাই সাইকেল পেল ৭০ শিক্ষার্থী   * কুমিল্লার মোস্তফাপুর এলাকায় আমিনুল ইসলাম নামের এক যুবককে গলা কেটে হত্যার   * আমনের ভরা মৌসুমে কুড়িগ্রামে বিভিন্ন সারের সংকট, বিপাকে কৃষক  

   আন্তর্জাতিক
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের অভিযোগ
  Date : 02-03-2022

আন্তর্জাতিক ভাবে নিষিদ্ধ ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এটা এমন একটা ক্যামিক্যাল ওয়েপন যেটা বাতাস থেকে অক্সিজেনকে শুষে নেয় এবং মানব শরীরের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়। শুধু তাই নয় এই বোমার আঘাতে একজন মানুষের অনেক কষ্টদায়ক ও নির্মম মৃত্যু হয়। এই ভ্যাকুয়াম বোমা সর্বপ্রথম আমেরিকা ভিয়েতনাম যুদ্ধে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। এরপর থেকেই ভ্যাকুয়াম বোমা সারাবিশ্বে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ক্লাস্টার এবং ভ্যাকুয়াম বোমার মতো নিষিদ্ধ অস্ত্র প্রয়োগের তীব্র নিন্দা করেছে অ্যামনেস্টি এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-সহ বহু মানবাধিকার সংগঠন। অ্যামনেস্টির সাধারণ সচিব অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধের সমান।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে ইউক্রেন-সহ বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি মস্কো।
ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভ্যাকুয়াম বোমা প্রয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য বলে মত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। কারণ ১৯৪৯ সালের জেনিভা চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধক্ষেত্রে এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ।
ইউক্রেনের দাবি, সোমবার তাদের দেশের মাটিতে ক্লাস্টার বোমার পাশাপাশি এই নিষিদ্ধ অস্ত্র প্রয়োগ করেছে পুতিনবাহিনী। হোয়াইট হাউজের আইনপ্রণেতাদের সাথে একটি বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের কাছে আমেরিকায় ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ওসামা মাকারোভার দাবি, ইউক্রেনের মাটিতে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে রাশিয়া। আজ (সোমবার) তারা ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করেছে, যেটি জেনেভা সম্মেলনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।ইউক্রেনের কোন অঞ্চলে এই বোমা ছোড়া হয়েছে, তা জানাননি মাকারোভা।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ভ্যাকুয়াম বোমার পাশাপাশি ক্লাস্টার বোমার মতো নিষিদ্ধ অস্ত্রও হয়তো প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। তাদের আরো দাবি, রাশিয়ার হামলার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ।
অ্যামনেস্টির অভিযোগ, শুক্রবার সকালে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের একটি প্রি-স্কুলে ক্লাস্টার বোমা দিয়ে হামলা চালায় পুতিনবাহিনী। হামলায় ওই স্কুলে আশ্রয় নেয়া এক শিশু-সহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। তবে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর দাবি, ইউক্রেনীয় সীমান্তে নিষিদ্ধ অস্ত্র নিয়ে হামলার বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি রাশিয়া। ইউক্রেনের মাটিতে এই বোমা ছোড়া হয়েছে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণও পাওয়া যায়নি।
‘এস-১’ এবং ‘টিওএস-১এ’-এর মতো বেশ কিছু রকেট উৎক্ষেপক দেখা গেছে। এই রকেটের সাহায্যেই ভ্যাকুয়াম বোমা ছোড়া হয়। নিজেদের দেশের সংবাদমাধ্যমের এ দাবি সত্ত্বেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেনি আমেরিকা। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সাথেই একমত হয়েছে ওয়াশিংটন।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকির মতে, ‘‘(ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের) এই অভিযোগ যদি সত্য হয়, তবে তা যুদ্ধাপরাধ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেছে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস।
যুদ্ধবিশারদদের মতে, অ-পরমাণু অস্ত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হল ভ্যাকুয়াম বোমা। আকাশ বা জলপথে এর ব্যবহার সম্ভব না হলেও স্থলযুদ্ধে তা মারণাস্ত্র। বোমার ঘায়ে একসাথে অনেকের দেহ স্রেফ গায়েব করে দিতে সক্ষম এটি। পাশাপাশি, সাধারণ বোমার তুলনায় ভ্যাকুয়াম বোমার বিস্ফোরণ দীর্ঘক্ষণ ধরে স্থায়ী হয়।
অনেকের কাছে এটি থার্মোবারিক অস্ত্র বা এরোসল বোমা বলেও পরিচিত।


উৎক্ষেপণকারী যন্ত্র বা রকেট লঞ্চারের সাহায্যে এই বোমা ছোড়ার পর তা বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নিতে শুরু করে। ফলে অন্যান্য বোমার তুলনায় বাতাসে বিস্ফোরণের বেশি ঢেউ খেলিয়ে দেয় এটি।
থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমার মধ্যে জ্বালানি থেকে বাতাসের সংস্পর্শে আসা বিস্ফোরক (ফুয়েল-এয়ার এক্সপ্লোসিভস বা এফএই)-ই সবচেয়ে প্রাণঘাতী। সাধারণ বিস্ফোরকে ব্ল্যাক পাউডারের মতো জ্বালানি এবং অক্সিডাইজারের মিশ্রণে ২৫ শতাংশ জ্বালানি এবং ৭৫ শতাংশ অক্সিডাইজার থাকে। তবে থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমায় প্রায় ১০০ শতাংশই জ্বালানি।
ভ্যাকুয়াম বোমায় প্রায় পুরোটাই জ্বালানিনির্ভর বিস্ফোরক হওয়ায় জলের তলায় বা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অধিক উচ্চতায় অথবা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তা ব্যবহার করা যায় না; কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে সুড়ঙ্গ কিংবা বাংকারের মতো জায়গায় তা ঘাতক। কারণ বদ্ধ জায়গায় হামলার পর অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসামাত্রই তা ঢেউয়ের মতো বিস্ফোরণের তরঙ্গ শুরু করে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ১৯৯৩ সালে আমেরিকার সেনাবাহিনী গুপ্তচর সংস্থার একটি রিপোর্টে ভ্যাকুয়াম বোমার মারণ ক্ষমতা নিয়ে উল্লেখ রয়েছে। ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, ভ্যাকুয়াম বোমার প্রাণঘাতী পদ্ধতি অন্যান্য বিস্ফোরকের থেকে আলাদা। বিস্ফোরণের প্রবল তরঙ্গের চাপই তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। ওই চাপে ফুসফুস ফেটে যায়।
ভ্যাকুয়াম বোমার হামলার ধরন ভিন্ন হলে তার ফলও আলাদা হয়। আমেরিকার ওই সংস্থার রিপোর্টে দাবি, হামলায় এই বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো না হলে তা হঠাৎই জ্বলে উঠে সামনের জনের দেহ অগ্নিদগ্ধ করে দেয়। ভ্যাকুয়াম বোমায় সাধারণত ইথাইলেন অক্সাইড এবং প্রোপাইলেন অক্সাইড-এর মতো জ্বালানির ব্যবহার করা হয়, যা অতি মাত্রায় বিষাক্ত। ফলে জ্বলন্ত অবস্থায় ওই বিষাক্ত দাহ্যের মেঘ ঘিরে ধরে হামলার লক্ষ্যকে। ফলে ওই বিষাক্ত রাসায়নিকের মেঘের মধ্যেই নিঃশ্বাস নিতে হয় এই জায়গায় থাকা মানুষকে, যা তাদের দেহের ভেতরে ঢুকে ক্ষতের সৃষ্টি করে। আমেরিকার অন্য একটি রিপোর্টে দাবি, ভ্যাকুয়াম বোমার হামলায় দেহের ভেতরে ক্ষতই বেশি হয়।
যুদ্ধের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ভিয়েতনামের যুদ্ধে এফএই‘র মতো ভ্যাকুয়াম বোমার প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছিল আমেরিকার বিরুদ্ধে। ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর একটি রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছিল।
আমেরিকার পাশাপাশি পূর্বতম সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরাও ভ্যাকুয়াম বোমা তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর দাবি, ১৯৬৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত বিজ্ঞানীদের তৈরি এফএই অস্ত্রই চিনের বিরুদ্ধে হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল।
সে সময় থেকে ভ্যাকুয়াম বোমা নিয়ে অনবরত গবেষণা করে সেটিকে বিজ্ঞানীরা আরো ঘাতক করেছেন বলেও দাবি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর। এই মুহূর্তে রাশিয়ার কাছে তৃতীয় প্রজন্মের ওয়ারহেডস ( ক্ষেপণাস্ত্রের সামনের দিকের অংশ, যাতে বিস্ফোরক বোঝাই করা থাকে) রয়েছে বলেও দাবি।
ভ্যাকুয়াম বোমাই শুধু নয়। পরমাণু শক্তির নিরিখেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘অসম’ যুদ্ধে নেমেছে ইউক্রেন। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর দাবি, রাশিয়ার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। পুতিনের ভাণ্ডারে ওয়ারহেডসই রয়েছে ছ’হাজার ৩৫০টি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আমেরিকা (সাড়ে পাঁচ হাজার)। চীন (৩৫০) বা ফ্রান্সের (২৯০) কাছে তা থাকলেও রাশিয়া বা আমেরিকার তুলনায় নগণ্য।



  
  সর্বশেষ
সাতক্ষীরায় শিক্ষক কর্মচারীদের অবসর ভাতা প্রদান
মিস অ্যান্ড মিসেস এলিগ্যান্স বাংলাদেশ ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চিতলমারীতে ড্রেনের পানি উপচে পড়ছে সড়কে, জনদুর্ভোগ চরমে
শ্যামনগরে ইউএনওর বদলী প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308