আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: দৈনিক আজকের পত্রিকা ও বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকি এবং নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় তথ্য গোপন করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন অন্যতম আসামি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক আরডিসি নাজিম উদ্দীন এবং এনডিসি রাহাতুল ইসলাম। তাদের জামিন বাতিল প্রশ্নে করা কারণ দর্শানোর (শোকজ) জবাব শুনতে ‘বিব্রতবোধ’ করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মোসাম্মৎ ইসমত আরা এই মন্তব্য করেন।
আদালতের সরকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বজলুর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সময় সাংবাদিক আরিফের আইনজীবী ও সাবেক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুর রহমান দুলু উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানের করা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর সেই তথ্য গোপন করে হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন আসামি নাজিম উদ্দীন ও রাহাতুল ইসলাম। আদেশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের মধ্যে তাদেরকে কুড়িগ্রাম দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তথ্য গোপন করে থাকলে তাদের জামিন বাতিলের নির্দেশনাও দেন আদালত। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিরা আত্মসমর্পণ করেনি।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান এর আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু বলেন, ‘তথ্য গোপন করে আসামিদের জামিন প্রাপ্তির বিষয়টি উল্লেখ করে জামিন বাতিলের জন্য আমরা দায়রা জজ আদালতে পিটিশন দিয়েছি। আদালত আমাদের আবেদন আমলে নিয়ে গত ৫ অক্টোবর আসামিদেরকে শোকজ করেছেন। আবেদন অনুযায়ী তথ্য গোপনের কারণে কেন তাদের জামিন বাতিল করা হবে না, ৭ দিনের মধ্যে তার জবাব দেওয়ার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আজ (১৪ অক্টোবর) শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিরা জবাব দিতে আদালতে উপস্থিত হয়নি। তাদের পক্ষে জামিননামা দাখিলকারী আইনজীবী আদালতে আবেদন দিলে আদালত শুনানিতে বিব্রতবোধ করেন। বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত।’
এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘জামিনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় আসামিদের জামিন বাতিলের কারণ দর্শানোর জবাব গ্রহণ করার সুযোগ আর নেই। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আসামিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর জামিনে নেই। বরং আসামিরা নির্দেশ মোতাবেক ৪২ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করায় হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করেছে।’
কুড়িগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ বজলুর রশীদ বলেন, ‘আদালত বিব্রতবোধ করেছেন। একই সঙ্গে বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করার কথাও জানিয়েছেন।’
জামিনের শর্ত ভঙ্গ এবং শোকজের জবাব দিতে আসামিদের অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোঃ আশরাফ আলী বলেন, ‘আমি আবেদন দিয়েছি। আপনি আবেদন তুলে দেখেন।’ এরপর আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিনি।