জাতিগত সহিংসতার মধ্যেই ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও নিয়ে আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। কুকি উপজাতির দুই নারীকে নগ্ন অবস্থায় হাঁটতে বাধ্য করার ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সহিংসতার প্রবণতা আরও বেড়েছে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে পুরো ভারতে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এদিকে, ঘটনার দুই মাস পর হেরাদাস (৩২) নামের মূল অভিযুক্তকে আটক করেছে মণিপুর পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) থৌবাল জেলা থেকে তাকে আটক করা হয়ে। পুলিশ বলছে, ভিডিওটির সূত্র ধরেই তার হদিস মিলেছে। ঘটনার সময় হেরাদাসকে সবুজ টি-শার্ট পরা অবস্থায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই তরুণীকে বিবস্ত্র করে রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে একটি মাঠে নিয়ে যাচ্ছে একদল উত্তেজিত জনতা। অভিযোগ রয়েছে, মাঠে নিয়ে গিয়ে ওই দুই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এমনকি, ওই দুই নারীর পরিবারের দুই সদস্যকেও খুন করা হয়েছে। গত ৪ মে মণিপুরের ইম্ফল শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের কাংপোকপি জেলায় ওই ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৯ জুলাই) ভিডিওটি নজরে আসার পরপরই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় ‘ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার ফোরাম’। প্রতিবাদ জানায় জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশন। দুই মাস ধরে চলে আসা জাতিগত সহিংসতা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও, এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনে তিনি বলেন, মণিপুরে যা ঘটেছে, তাতে আমার হৃদয় ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ। এমন ঘটনা যেকোনো সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক। ‘আমি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি, তার রাজ্যে যাতে আইন-শৃঙ্খলা আরও জোরদার করা হয়। বিশেষ করে, নারীদের নিরাপত্তার দিকটি যেন সুনিশ্চিত করা হয়। আর ৪ মে’র ঘটনায় যেন কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজস্থান হোক বা মণিপুর, বা ছত্তিশগড়, দেশের যেকোনো জায়গায় এ ধরণের ঘটনার বিচারে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।’ এদিকে, এ ঘটনায় বড় সতর্কবার্তা দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকার ও মণিপুর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অবিলম্বে এ ঘটনায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে শুক্রবারের (২১ জুলাই) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছে। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যদি সরকার কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আদালত স্বঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। গণতন্ত্রে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতা চলছে মণিপুরে। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং ও কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তবে সম্প্রতি তারা তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি তোলে। তাদের এ দাবির বিরোধিতা করে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসী। এ নিয়ে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে একটি মিছিলের আয়োজন করে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন। ওই মিছিল নিয়েই চূড়াচাঁদপুর জেলায় প্রথম সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, যা পরে অন্য জেলাতেও ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত এ সহিংসতায় অন্তত ১৩০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
জাতিগত সহিংসতার মধ্যেই ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও নিয়ে আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। কুকি উপজাতির দুই নারীকে নগ্ন অবস্থায় হাঁটতে বাধ্য করার ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সহিংসতার প্রবণতা আরও বেড়েছে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে পুরো ভারতে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এদিকে, ঘটনার দুই মাস পর হেরাদাস (৩২) নামের মূল অভিযুক্তকে আটক করেছে মণিপুর পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) থৌবাল জেলা থেকে তাকে আটক করা হয়ে। পুলিশ বলছে, ভিডিওটির সূত্র ধরেই তার হদিস মিলেছে। ঘটনার সময় হেরাদাসকে সবুজ টি-শার্ট পরা অবস্থায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই তরুণীকে বিবস্ত্র করে রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে একটি মাঠে নিয়ে যাচ্ছে একদল উত্তেজিত জনতা। অভিযোগ রয়েছে, মাঠে নিয়ে গিয়ে ওই দুই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এমনকি, ওই দুই নারীর পরিবারের দুই সদস্যকেও খুন করা হয়েছে। গত ৪ মে মণিপুরের ইম্ফল শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের কাংপোকপি জেলায় ওই ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৯ জুলাই) ভিডিওটি নজরে আসার পরপরই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় ‘ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার ফোরাম’। প্রতিবাদ জানায় জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশন। দুই মাস ধরে চলে আসা জাতিগত সহিংসতা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও, এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনে তিনি বলেন, মণিপুরে যা ঘটেছে, তাতে আমার হৃদয় ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ। এমন ঘটনা যেকোনো সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক। ‘আমি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি, তার রাজ্যে যাতে আইন-শৃঙ্খলা আরও জোরদার করা হয়। বিশেষ করে, নারীদের নিরাপত্তার দিকটি যেন সুনিশ্চিত করা হয়। আর ৪ মে’র ঘটনায় যেন কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজস্থান হোক বা মণিপুর, বা ছত্তিশগড়, দেশের যেকোনো জায়গায় এ ধরণের ঘটনার বিচারে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।’ এদিকে, এ ঘটনায় বড় সতর্কবার্তা দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকার ও মণিপুর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অবিলম্বে এ ঘটনায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে শুক্রবারের (২১ জুলাই) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছে। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যদি সরকার কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আদালত স্বঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। গণতন্ত্রে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতা চলছে মণিপুরে। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং ও কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তবে সম্প্রতি তারা তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি তোলে। তাদের এ দাবির বিরোধিতা করে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসী। এ নিয়ে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে একটি মিছিলের আয়োজন করে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন। ওই মিছিল নিয়েই চূড়াচাঁদপুর জেলায় প্রথম সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, যা পরে অন্য জেলাতেও ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত এ সহিংসতায় অন্তত ১৩০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
আন্তর্জাতিক ভাবে নিষিদ্ধ ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এটা এমন একটা ক্যামিক্যাল ওয়েপন যেটা বাতাস থেকে অক্সিজেনকে শুষে নেয় এবং মানব শরীরের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়। শুধু তাই নয় এই বোমার আঘাতে একজন মানুষের অনেক কষ্টদায়ক ও নির্মম মৃত্যু হয়। এই ভ্যাকুয়াম বোমা সর্বপ্রথম আমেরিকা ভিয়েতনাম যুদ্ধে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। এরপর থেকেই ভ্যাকুয়াম বোমা সারাবিশ্বে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ক্লাস্টার এবং ভ্যাকুয়াম বোমার মতো নিষিদ্ধ অস্ত্র প্রয়োগের তীব্র নিন্দা করেছে অ্যামনেস্টি এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-সহ বহু মানবাধিকার সংগঠন। অ্যামনেস্টির সাধারণ সচিব অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধের সমান।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে ইউক্রেন-সহ বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি মস্কো। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভ্যাকুয়াম বোমা প্রয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য বলে মত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। কারণ ১৯৪৯ সালের জেনিভা চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধক্ষেত্রে এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ। ইউক্রেনের দাবি, সোমবার তাদের দেশের মাটিতে ক্লাস্টার বোমার পাশাপাশি এই নিষিদ্ধ অস্ত্র প্রয়োগ করেছে পুতিনবাহিনী। হোয়াইট হাউজের আইনপ্রণেতাদের সাথে একটি বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের কাছে আমেরিকায় ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ওসামা মাকারোভার দাবি, ইউক্রেনের মাটিতে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে রাশিয়া। আজ (সোমবার) তারা ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করেছে, যেটি জেনেভা সম্মেলনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।ইউক্রেনের কোন অঞ্চলে এই বোমা ছোড়া হয়েছে, তা জানাননি মাকারোভা। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ভ্যাকুয়াম বোমার পাশাপাশি ক্লাস্টার বোমার মতো নিষিদ্ধ অস্ত্রও হয়তো প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। তাদের আরো দাবি, রাশিয়ার হামলার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ। অ্যামনেস্টির অভিযোগ, শুক্রবার সকালে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের একটি প্রি-স্কুলে ক্লাস্টার বোমা দিয়ে হামলা চালায় পুতিনবাহিনী। হামলায় ওই স্কুলে আশ্রয় নেয়া এক শিশু-সহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। তবে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর দাবি, ইউক্রেনীয় সীমান্তে নিষিদ্ধ অস্ত্র নিয়ে হামলার বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি রাশিয়া। ইউক্রেনের মাটিতে এই বোমা ছোড়া হয়েছে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণও পাওয়া যায়নি। ‘এস-১’ এবং ‘টিওএস-১এ’-এর মতো বেশ কিছু রকেট উৎক্ষেপক দেখা গেছে। এই রকেটের সাহায্যেই ভ্যাকুয়াম বোমা ছোড়া হয়। নিজেদের দেশের সংবাদমাধ্যমের এ দাবি সত্ত্বেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেনি আমেরিকা। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সাথেই একমত হয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকির মতে, ‘‘(ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের) এই অভিযোগ যদি সত্য হয়, তবে তা যুদ্ধাপরাধ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেছে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস। যুদ্ধবিশারদদের মতে, অ-পরমাণু অস্ত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হল ভ্যাকুয়াম বোমা। আকাশ বা জলপথে এর ব্যবহার সম্ভব না হলেও স্থলযুদ্ধে তা মারণাস্ত্র। বোমার ঘায়ে একসাথে অনেকের দেহ স্রেফ গায়েব করে দিতে সক্ষম এটি। পাশাপাশি, সাধারণ বোমার তুলনায় ভ্যাকুয়াম বোমার বিস্ফোরণ দীর্ঘক্ষণ ধরে স্থায়ী হয়। অনেকের কাছে এটি থার্মোবারিক অস্ত্র বা এরোসল বোমা বলেও পরিচিত।
উৎক্ষেপণকারী যন্ত্র বা রকেট লঞ্চারের সাহায্যে এই বোমা ছোড়ার পর তা বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নিতে শুরু করে। ফলে অন্যান্য বোমার তুলনায় বাতাসে বিস্ফোরণের বেশি ঢেউ খেলিয়ে দেয় এটি। থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমার মধ্যে জ্বালানি থেকে বাতাসের সংস্পর্শে আসা বিস্ফোরক (ফুয়েল-এয়ার এক্সপ্লোসিভস বা এফএই)-ই সবচেয়ে প্রাণঘাতী। সাধারণ বিস্ফোরকে ব্ল্যাক পাউডারের মতো জ্বালানি এবং অক্সিডাইজারের মিশ্রণে ২৫ শতাংশ জ্বালানি এবং ৭৫ শতাংশ অক্সিডাইজার থাকে। তবে থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমায় প্রায় ১০০ শতাংশই জ্বালানি। ভ্যাকুয়াম বোমায় প্রায় পুরোটাই জ্বালানিনির্ভর বিস্ফোরক হওয়ায় জলের তলায় বা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অধিক উচ্চতায় অথবা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তা ব্যবহার করা যায় না; কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে সুড়ঙ্গ কিংবা বাংকারের মতো জায়গায় তা ঘাতক। কারণ বদ্ধ জায়গায় হামলার পর অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসামাত্রই তা ঢেউয়ের মতো বিস্ফোরণের তরঙ্গ শুরু করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ১৯৯৩ সালে আমেরিকার সেনাবাহিনী গুপ্তচর সংস্থার একটি রিপোর্টে ভ্যাকুয়াম বোমার মারণ ক্ষমতা নিয়ে উল্লেখ রয়েছে। ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, ভ্যাকুয়াম বোমার প্রাণঘাতী পদ্ধতি অন্যান্য বিস্ফোরকের থেকে আলাদা। বিস্ফোরণের প্রবল তরঙ্গের চাপই তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। ওই চাপে ফুসফুস ফেটে যায়। ভ্যাকুয়াম বোমার হামলার ধরন ভিন্ন হলে তার ফলও আলাদা হয়। আমেরিকার ওই সংস্থার রিপোর্টে দাবি, হামলায় এই বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো না হলে তা হঠাৎই জ্বলে উঠে সামনের জনের দেহ অগ্নিদগ্ধ করে দেয়। ভ্যাকুয়াম বোমায় সাধারণত ইথাইলেন অক্সাইড এবং প্রোপাইলেন অক্সাইড-এর মতো জ্বালানির ব্যবহার করা হয়, যা অতি মাত্রায় বিষাক্ত। ফলে জ্বলন্ত অবস্থায় ওই বিষাক্ত দাহ্যের মেঘ ঘিরে ধরে হামলার লক্ষ্যকে। ফলে ওই বিষাক্ত রাসায়নিকের মেঘের মধ্যেই নিঃশ্বাস নিতে হয় এই জায়গায় থাকা মানুষকে, যা তাদের দেহের ভেতরে ঢুকে ক্ষতের সৃষ্টি করে। আমেরিকার অন্য একটি রিপোর্টে দাবি, ভ্যাকুয়াম বোমার হামলায় দেহের ভেতরে ক্ষতই বেশি হয়। যুদ্ধের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ভিয়েতনামের যুদ্ধে এফএই‘র মতো ভ্যাকুয়াম বোমার প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছিল আমেরিকার বিরুদ্ধে। ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর একটি রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছিল। আমেরিকার পাশাপাশি পূর্বতম সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরাও ভ্যাকুয়াম বোমা তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর দাবি, ১৯৬৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত বিজ্ঞানীদের তৈরি এফএই অস্ত্রই চিনের বিরুদ্ধে হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল। সে সময় থেকে ভ্যাকুয়াম বোমা নিয়ে অনবরত গবেষণা করে সেটিকে বিজ্ঞানীরা আরো ঘাতক করেছেন বলেও দাবি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর। এই মুহূর্তে রাশিয়ার কাছে তৃতীয় প্রজন্মের ওয়ারহেডস ( ক্ষেপণাস্ত্রের সামনের দিকের অংশ, যাতে বিস্ফোরক বোঝাই করা থাকে) রয়েছে বলেও দাবি। ভ্যাকুয়াম বোমাই শুধু নয়। পরমাণু শক্তির নিরিখেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘অসম’ যুদ্ধে নেমেছে ইউক্রেন। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর দাবি, রাশিয়ার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। পুতিনের ভাণ্ডারে ওয়ারহেডসই রয়েছে ছ’হাজার ৩৫০টি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আমেরিকা (সাড়ে পাঁচ হাজার)। চীন (৩৫০) বা ফ্রান্সের (২৯০) কাছে তা থাকলেও রাশিয়া বা আমেরিকার তুলনায় নগণ্য।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পদে বহাল থাকলেন ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি পুরসভার ভোটে ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জয়লাভ করে তৃণমূল। দলের জয়ী কাউন্সিলরদের নিয়ে গতকাল কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাসে এক জরুরি বৈঠক করেন দলনেত্রী ও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ওই বৈঠক থেকেই নতুন মেয়রের নাম ঘোষণা করেন মমতা। সেক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছরের জন্য এ পদে বহাল থাকবেন ফিরহাদ হাকিম। আগামী ২৮ ডিসেম্বর মেয়র পদে শপথ নেবেন রাজ্যের পরিবহন ও আবাসন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এদিনের বৈঠকের শুরুতেই তৃণমূলের টিকিটে জয়ী ১৩৪ জন প্রার্থীকে অভিনন্দন জানান দলনেত্রী। এরপর ডেপুটি মেয়র হিসেবে অতীন ঘোষের নাম প্রস্তাব করেন মমতা।
বাংলাদেশের মহান বিজয় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা কলকাতার বিধান ভবনে।। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে তৎকালীন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে সহযোগিতা করেছিলেন তার স্মৃতি বহন করে আজকের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের, ৫০,তম, স্বাধীনতা যুদ্ধের দুই দেশের মুক্তি কামী মানুষের কথা। ১৯৭১,সালে, বাংলাদেশ কে মুক্তি করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মুক্তিযোদ্ধাদের সব ধরনের সাহায্য করছিলেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। তাই নয় তৎকালীন পশ্চিম বাংলার ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সরকার ও ভারতের নাগরিক সমাজ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তি যোদ্ধাদের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করেছিলেন। তৎকালীন ভারত বাংলাদেশ কে সামরিক ও সামাজিক এবং রাজনৈতিক ভাবে সাহায্য করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কর্মরত সিপাইদের। সেই দিন ভারত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় লক্ষ লক্ষ নরনারী আত্মত্যাগ ও বলিদানের মধ্যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সেই দিনের বিভিন্ন স্মৃতি কথা আজ তুলে ধরেন ভারতের প্রবীণ জাতীয় কংগ্রেসের নেতা ও সাবেক পশ্চিম বাংলার মন্ত্রী, বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত মানবাধিকার খবরের সম্মানিত উপদেষ্টা শ্রী প্রদীপ ভট্টাচার্য এমপি. ও ভারতের লোকসভার বিরোধী দলের নেতা এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের পশ্চিম বাংলার প্রদেশের সভাপতি শ্রী অধীর চৌধুরী ও সাবেক বিধায়ক শ্রী অশিত মিত্র এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতা ও সাবেক বিধায়ক শ্রী নেপাল মাহাতো সহ বিভিন্ন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বৃন্দ।
দিল্লীর রাজদরবারে পৌঁছে যাচ্ছে মানব কল্যানে নিয়োজিত মানবাধিকার খবর এর মানবিক কর্মকান্ডের সাফল্যের বার্তা। যেখানে উপস্থিত থাকবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। অদম্য, সাহসিকা ও ষোড়শী কন্যা তৃষ্ণা রায় আগামী ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড গ্রাউন্ডে এ বার্তা পৌঁছে দিবেন বলে মানবাধিকার খবর কে জানান। তিনি বর্তমানে মানবাধিকার বিষয়ক বাংলা সৃজনশীল নিয়মিত প্রকাশনা মানবাধিকার খবর এর ভারতের পশ্চিমবংগ কলকাতার রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে ২০১৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার অবস্থায় পাচারের শিকার হয়েছিলেন এবং প্রায় দুই মাস পর উদ্ধার করতে সক্ষম হয় ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার কাজে তৃষ্ণার মা বাবার পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করে মানবাধিকার খবর। এব্যাপারে মানবাধিকার খবর অক্টোবর-২০১৯ সালের সংখ্যায় একটি বিস্তারিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় । উদ্ধারের পর থেকে তৃষ্ণা রায় মানবাধিকার খবরের মানবিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য সম্পাদককে অনুরোধ জানালে সম্পাদক কাজ করার সুযোগ করে দেয়। তাকে কলকাতার রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপর থেকে তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। পিছনে অতীতের সব কিছু ভুলে গিয়ে, সে সামনে এগিয়ে চলতে থাকে। নিজের মানসিক শক্তি সঞ্চয় করার পাশাপাশি অন্যান্য পাচারকৃত নারী ও শিশুদেরকে পশ্চিম বাংলার কয়েকটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানসিক শক্তি সঞ্চয়ে উৎসাহ ও নেতৃত্ব দিতে থাকে। পাচারের শিকার তৃষ্ণা মনে করে, অসুস্থ সমাজকে সুস্থ করে তুলতে সচেতনতার বিকল্প নেই। সমাজের প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন করতে পারলে সামাজিক ব্যধি নারী ও শিশু পাচার কিছুটা হলেও দূর করা যাবে। এজন্য সবার আগে দরকার একনিষ্ঠ ভাবে পড়াশোনা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। পড়াশোনায় মনোযোগী দিয়ে চলতি বছর মাধ্যমিকে পশ্চিমবংগের মধ্যমগ্রাম থেকে সে কৃতিত্বের সাথে পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়। সব বিষয়ে গড় ৭০% নাম্বার পেয়ে তাক লাগিয়ে দেয়। পাচার পরবর্তী উদ্ধারের পর তার উপর দিয়ে চরম ভাবে বয়ে যায় দারিদ্র্যতার পাশাপাশি শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নির্যাতন। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া টা ছিল তার জন্য খুবই কষ্টের। মানবাধিকার খবর ও তার মা- বাবা পাশে থেকে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছে। উৎসাহ দেওয়ার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তৃষ্ণা। সমাজের সকল ধরনের কুসংস্কার উপেক্ষা করে, মানবিক কাজ ও মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করায় পশ্চিমবংগ ও কেন্দ্রীয় সরকারের নজরেআসে তৃষ্ণা। তার ডাক পরে আগামী ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লীর রাজদরবারে পৌঁছে প্যারেড গ্রাউন্ডে যোগদান করার। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। দিল্লীর রাজদরবারের সেই অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে মানবাধিকার খবর পত্রিকার মানবিক কাজ কর্মের সাফল্যের কথা তুলে ধরবেন অদম্য মনোবলের অধিকারী ষোড়শী কন্যা তৃষ্ণা রায়। সেই অনুসন্ধানে মানবাধিকার খবরের সম্পাদক সহ প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তৃষ্ণার সাফল্যের কথা ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি জনপ্রিয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং কলকাতার জনপ্রিয় বহুল প্রচারিত দৈনিক এইসময় সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মানবাধিকার খবর ২০১৫ সাল থেকে দেশ- বিদেশ থেকে পাচারকৃত প্রায় আড়াই`শ নারী ও শিশু উদ্ধার করে মা- বাবা ও আইনের হাতে তুলে দিয়ে সাফল্য দেখিয়েছে। "মানবাধিকার খবর" মানবাধিকার রক্ষা ও সমাজ সেবায় অসামান্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার সহ বিভিন্ন পুরষ্কারে ভূষিত হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
দিশা বিশ্বাস , কলকাতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবার নির্বাচনী লড়াই জমে উঠেছে দুই শক্তিশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। ইতিমধ্যে এই দুই শক্তিশালী দলের শীর্ষ নেতারা মাঠে নেমে একে অপরের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। দু’দলই দাবি করেছে তারাই ক্ষমতায় আসছে। ফলে এই দাবি ও পাল্টা দাবি নিয়ে এখন এই করোনা আবহের মধ্যে জমে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপির নির্বাচনী লড়াই। আগামি বছরের মার্চ-এপ্রিলে এই রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনে ভোট নেওয়ার কথা। সেই নির্বাচনে জেতার জন্য এখনই মাঠ চষে বেড়াতে শুরু করেছে এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধি দল বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস এই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে গত ২০১১ এবং ২০১৬ সালে জয়ী হয়ে সরকার গড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মমতার দলের লক্ষ্য ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও মমতার দল তৃতীয় বার জিতে এই রাজ্যে সরকার গড়ার হ্যাট্রিক করবে। আর বিজেপি বলেছে, আর সরকার গড়ার সুযোগ পাবেনা মমতা। সামনে আসছে বিজেপির দিন। এই রাজ্যে মমতাকে হটিয়ে বিজেপির নেতৃত্বে গড়া হবে রাজ্য সরকার। মেদিজিই গড়ে দেবেন এই রাজ্যকে সোনার বাংলা হিসেবে। আর তৃণমূল ও বিজেপির এই দাবি ও পাল্টা দাবি নিয়ে এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। বিজেপি বলেছে ২০০’এর বেশি আসনে জিতে তারা এই বাংলায় নতুন সরকার গড়বে। আর তৃণমূল বলেছে এই রাজ্যে অন্তত ২১২টি আসন পেয়ে ফের সরকার গড়বে তৃণমূল। মমতাই হবেন এই রাজ্যের তৃতীয় বারের মত মুখ্যমন্ত্রী। তবে মমতার এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি বলেছে ৫০টি আসন পাওয়ায়ই এবার কঠিন হবে তৃণমূলের। আর তৃণমূল বলেছে, ওদের ২০০ আসন স্বপ্নে থাক। ওরাতো ৫০টি আসনও পাবেনা। ফলে এখন লড়াই শুরু হয়েছে ২০০ বনাম ৫০ আসন নিয়ে। গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে বিজেপির এক জনসভায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা দিয়েছিল, একুশের নির্বাচনে এই বাংলায় ২০০’এর বেশি আসন পেয়ে সরকার গড়বে বিজেপি। উৎখাত হবে মমতাদির তৃণমূল কংগ্রেস। এই একই কথা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি তাদের নির্বাচনী প্রচারে দাবি করে আসলেও তাতে আমল দেয়নি তৃণমূল। বরং তৃণমূল নেতা ও সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ওরা দিবাস্বপ্ন দেখছে। এই রাজ্যে তৃতীয় বারের মত বিপুল ভোটে জিতে সরকার গড়বে মমতাই। মমতাই হবেন এই রাজ্যের তৃতীয় বারের মত মুখ্যমন্ত্রী । বিজেপির স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনকালিন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর গলায় দাবি তুলেছিলেন, এই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের সবকটিতে জিতবে তৃণমূল। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে মমতা শ্লোগান তুলেছিলেন, ’৪২’এ ৪২’। এই শ্লোগান তুলে মমতা গোটা রাজ্যে ঝড় তুলেছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর দেখা যায় মমতা জিতেছেন ২২টি আসনে। বিজেপি জিতেছে ১৮টি আসনে। আর ২টিতে জিতেছে কংগ্রেস। কোনও আসন পায়নি বাম দল। যদিও ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই রাজ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৪টি আসন। বিজেপি মাত্র ২টি আসন। আর কংগ্রেস ৪টি এবং বামদল সিপিএম ২টি আসন। ২০১৯ সালে মমতার প্রচারের সুর তুলে এবার বিজেপিও শুরু করেছে তারা এবার ২০০ আসনেই জিতছে। ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে এবং ২০ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতনের দুটি জনসভায় যোগ দিয়ে অমিত শাহ একই কথা বলেছিলেন তাদের দল বিজেপি এবার এই রাজ্যে ২০০ আসনে জিতে সরকার গড়বে। অমিত শাহ’এর দাবিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের ’ভোটকুশলী’ প্রশান্ত কিশোর পাল্টা দাবি করে বলেছেন, বিজেপি দুই অংকের সংখ্যা পার করতে পারবেনা। সুতরাং সরকার গড়ারস্বপ্ন দেখে কিভাবে? প্রশান্ত কিশোর চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একথাও বলেছেন, তার কথা ঠিক না হলে তিনি তার সংগঠনের সব পদ থেকে বিদায় নেবেন। প্রশান্ত কিশোরের এই বক্তব্যের পর বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় পাল্টা বলেছেন, ’বাংলায় বিজেপির পক্ষে সুনামী বইছে। এই রাজ্যে আমাদের সরকার গড়ার পর হারাতে হবে একজন ভোট কুশলীকে।’ আর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন,’ কোন জগতে বাস করছেন উনি?’ আবার এর পাল্টা বলেছেন, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ’আমিতো আগেই বলেছি, এই রাজ্যে বিজেপি ৫০টি আসনও পাবেনা। তৃণমূল জিতবে ২১০টি আসনে। ফের সরকার গড়বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।’ আবার এরই প্রতি উত্তরে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুকুল রায় বলেছেন, ’এই রাজ্যে তৃণমূল ৫০টি আসন পাবে কিনা সন্দেহ। সুতরাং তৃতীয় বারের মত এই রাজ্যে তৃণমূল সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখে কিভাবে?’ তবে তৃণমূল ও বিজেপির এই নির্বাচনী লড়াইয়ে যোগ না দিয়ে কংগ্রেস ও বামদল বলেছে, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর কোনও রাজনীতিবিদ নন। কোনও দলের সদস্য নন। কেন তার মতামতকে এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? ২৪-১২-২০ ছবি দিলাম মমতা এবং অমিত শাহর।
পশ্চিমবঙ্গ সহ সমস্ত ভারতে যেভাবে করোনা সংক্রমণ দ্রæত ছড়িয়ে পড়ছে তাতে এখন থেকে গোটা দেশে করোনার লাগাম টেনে ধরতে না পারলে করোনা এবার পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারতে ভয়াবহ রূপ নেবে। করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে এক নয়া ইতিহাস গড়তে পারে গোটা বিশ্বে ভারত ; একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও। এই হুশিয়ারি দিয়েছে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইস্টিটিউট অফ সায়েন্স বা আইআইএসসি।
এই সংস্থার ডেটা সায়েন্স বিভাগের গবেষক অধ্যাপক শশীকুমার গনেশন ও দীপক সুব্রক্ষণি অন্তত ৬টি সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এই গানিতিক সমীক্ষার আভাস দিয়েছেন । যদিও ভারত সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই রাজ্যে করোনা সংক্রমণ রোধ করতে নেমে পড়েছে মাঠে। শুরু করেছে করোনা প্রতিরোধ কারার নানা কর্মসূচি।
গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, এরমধ্যে যদি করোনার প্রতিষেধক আবিস্কার হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হারে লাগাম টানা যাবে। একইসঙ্গে মানুষ যদি সত্যিই সামাজিক দুরত্ব মেনে চলে এবং মুখে মাস্ক পরেন সেক্ষেত্রেও সংক্রমণের হার কমে আসতে পারে।
আইআইএসসির গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদি এখনই লাগাম টানা না যায় তবে এবছরের ১ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গে এই সংক্রমণ সংখ্যা বেড়ে দাড়াবে ৫৯ হাজার ৩৪০। আর মারা যেতে পারে ২ হাজার ৩৭০ জন। পূজোর সময় ২২ অক্টোবর এই রাজ্যে মোট আক্রান্ত সংখ্যা হবে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪০ জন।
আর আগামি বছরের ১ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে এই সংক্রমণ সংখ্যা বেড়ে দাড়াবে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৭১০ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ২২ হাজার ১০ জন।
আর আগামি বছরের ২৩ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়ে দাড়াতে পারে ১০ লাখ ৪ হাজার। সেসময় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে হতে পারে ৪৮ হাজার ৩৬০ জন। ঠিক একইভাবে ভারতে ১ সেপ্টেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা হবে ৩৫ লাখ ৪ হাজার। মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৪১ হাজার। ১ অক্টোবর তা হবে যথাক্রমে ৬৮ লাখ ৩ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার।
১ ডিসেম্বর সেই আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে হবে ১ কোটি ৯৩ লাখ আর মৃতের সংখ্যা হবে ৮ লাখ ৩৬ হাজার। ১ জানুয়ারি সেই আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ২ কোটি ৯৬ লাখ আর মৃতের সংখ্যা ১৩ লাখ ১ হাজার। আগামি বছরের ১ মার্চ সেই সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যক বেড়ে দাড়াতে পারে । সে সময় আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে ৫ কোটি ২৬ লাখ আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাড়াতে পারে ২৪ লাখ ২ হাজার।
দুর্গাপূজো হবে করোনা বিধি মেনে: এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন এবার পশ্চিমবঙ্গে যথারীতি দুর্গাপূজো হবে। তবে তা করতে হবে করোনা বিধি মেনে। মন্ডপে একসঙ্গে ঢুকতে পারবে ২৫ জন ভক্ত। ঢুকতে হবে সামাজিক দুরত্ব মেনে। ঢোকার সময় হাত স্যানিটাইজ করতে হব। এর ব্যবস্থাও করবে প্রতিটি পূজো কমিটি।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘জনযুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বৃহস্পতিবার তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছেই, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও।
গত ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তারপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। চীনসহ ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ৬৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে একদিনেই নতুন করে আরও ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে নতুন করে আরও তিন হাজার একশ ৪৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ১৬১। আক্রান্তদের মধ্যে চার হাজার ৮শ জনের অবস্থা গুরুতর।
শি জিনপিংয়ের বরাত দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম শিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, সারাদেশ তাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে এই মহামারীর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সাড়া দিচ্ছে। এই মহামারীর বিরুদ্ধে জনযুদ্ধ শুরু হয়েছে।
এই ভাইরাসে চীনের বাইরে দু`জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ফিলিপাইনের এবং অপরজন হংকংয়ের। চীনের বাইরে অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসে প্রায় দেড়শ মানুষের আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অপরদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া চীনা চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং মারা গেছেন। গত ১২ জানুয়ারি ৩৪ বছর বয়সী এই চিকিৎসককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি।
লি ওয়েনলিয়াং আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, সার্সের মতো মহামারি আকার ধারণ করতে পারে করোনাভাইরাস। কিন্তু তার এই সতর্কবার্তা তখন পাত্তা দেয়নি দেশটির কর্তৃপক্ষ। পাল্টা তাকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে হুমকি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন তার কথাই সত্যিই হচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই।
দেশটিতে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টানা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এমনকি মরদেহ পোড়ানোর কাজেও ফুসরত মিলছে না কর্মীদের পুরো পরিস্থিতিই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
দিশা বিশ্বাস , কলকাতা থেকে ১ নভেম্বর থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে ১০ দিন ব্যাপী বাংলাদেশ বইমেলা। এবার এই বইমেলা ৯ বছরে পা দিয়েছে। মেলা শেষ হয় ১০ নভেম্বর। এবারের মেলাও বসছে কলকাতার রবীন্দ্র সদনের কাছে ঐতিহ্যবাহী মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। বাংলাদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন বই নিয়ে এই বইমেলার আয়োজন হচ্ছে প্রতিবছর। বাংলাদেশের বইকে কলকাতার বইপ্রেমীদের কাছে তুলে ধরা এবং দুই বাংলার সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজন করা হয় প্রতিবছর এই বইমেলার।
এবারে বইমেলায় প্রধান অতিথি হিসাবে বইমেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের পররাস্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বইমেলার উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, কলকাতার সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধন দীর্ঘকালের। আর এই বন্ধনকে দৃঢ় করার অন্যতম বাহন এই বই। বই পারে আমাদের দুদেশের মানুষের মধ্যের ভেদাভেদকে দূর করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করতে। আর এরজন্য আমাদের দুদেশকে এগুতে হবে। আমাদের বাংলা বইয়ের বাজারকে আরও বিস্তৃত করতে হবে।
এদিন বাংলাদেশের পররাস্ট্র মন্ত্রীর লেখা ’বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের বইটির আনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচন করা হয়। উন্মোচন করা হয় ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময় কেন্দ্রের মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ’বিনিময়’এর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সন্মাননীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ, বাংলাদেশের বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান বাংলাদেশ জাদুঘরের মহাপরিচালক ও বিশিস্ট লেখক, গবেষক শামসুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পৌর কর্পোরেশনের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, কলকাতার পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’এর সম্পাদক সুধাংশু দে । আরও ছিলেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ । উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ- হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।
বাংলাদেশ রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো , কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সন্মিলিত উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে এই বাংলাদেশ বইমেলার।
১০দিন ব্যাপী আয়োজিত এই বইমেলায় মেলা মঞ্চে প্রতিদিন ছিল বিষয়ভিত্তিক সেমিনার, কবিতা পাঠ এবং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের অংশ গ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেমিনারে যোগ দেবেন ঢাকা ও কলকাতার বিশিস্টজন এবং কবি সাহিত্যিক শিল্পীরা। ছিলেন বাংলাদেশের : শামসুজ্জামান খান, চেয়ারম্যান জাতীয় জাদুঘর, মোস্তফা কামাল ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, কালেরকন্ঠ, মফিদুল হক, ট্রাস্টি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ফরিদ আহমেদ, সভাপতি বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, রামেন্দু মজুমদার, নাট্য ব্যক্তিত্ব, হাবিবুল্লাহ সিরাজী , মহাপরিচালক বাংলা একাডেমি, মিনার মনসুর, পরিচালক জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র, খন্দকার মনিরুজ্জামান , ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দৈনিক সংবাদ, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক, কেএম খালিদ, সাংসদ, কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী । আলোচনায় আরও অংশ নেন কলকাতার বিশিস্টজন , কবি সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরাা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শান্তিনিকেতনের আদিবাসী নাচের দল ’মোহালি’ নৃত্য পরিবেশন করে। প্রতিদিন মেলা চলে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে শনি ও রোববার মেলা চলে ২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। মেলায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় রয়েছে কলকাতার ভাষা ও চেতনা সমিতি।
এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের ৮০টি সরকারি ও বেসরকারি প্রকাশনা সংস্থার ৩০ হাজার টাইটেলের বই ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে এই মেলা শুরু হয়েছিল পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে। মেলার আসর বসেছিল কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বরে। গত ২০১৭ সাল থেকে এই মেলার আসর বসছে মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। গত বছর এই মেলা শুরু হয়েছিল ২ নভেম্বর থেকে।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে একটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ভোরের দিকে দিল্লি কেন্দ্রস্থলের জনবহুল একটি এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতদের অধিকাংশই কারখানাটির শ্রমিক। ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি ও দৈনিক হিন্দুর প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রাজধানী নয়াদিল্লির মধ্যভাগে অবস্থিত রানি ঝানসি সড়কের অনজ মান্দি নামক এলাকায় ওই কারখানাটি অবস্থিত। স্থানীয় সময় রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সেখানে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তখন কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা ঘুমাচ্ছিলেন।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ত্রিশটি অগ্নিনির্বাপণকারী ট্রাক পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ ২০ জনকে স্থানীয় রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল ও হিন্দু রাও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সড়ক বন্ধ ছাড়াও ট্রাফিক পুলিশ সর্বসাধারণকে রানি ঝানসি উড়ালসড়ক (ফ্লাইওভার) ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে। উড়ালসড়কটির অবস্থান নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনের পাশেই।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ তামিলনাড়ুতে ভারী বর্ষণের কারণে প্রাচীর ধসে একটি গ্রামের অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সোমবার সকালের দিকে প্রদেশের কোয়েমবাটোরে গ্রামে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রাচীর ধসের ঘটনায় ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির কিছু অংশে ভারী বর্ষণ হচ্ছে।
বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সেখানকার জনজীবন প্রায় থমকে গেছে। তামিলনাড়ুর কিছু কিছু অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে স্থানীয় আবহাওয়া দফতর সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে। সোমবার তামিলনাড়ুর চেন্নাই, টুটিকরিন, টিরুভাল্লুর ও কাঞ্চিপুরামে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকার বেশির ভাগই পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আবহাওয়া দফতর বলছে, ভারত মহাসাগরের কমোরিন অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে; যে কারণে তামিলনাড়ুর উপকূলীয় এলাকায় আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে তামিলনাড়ুতে বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে।
রাজ্য সরকার প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে বলেছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চেন্নাইয়ে রাজ্য সরকার অন্তত ১৭৬টি ত্রাণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
ভারতের প্রবীণ রাজনীতিবিদ রাজ্য সভার সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত মানবাধিকার খবর-এর উপদেষ্টা হলেন। মানবাধিকার খবর সম্পাদক মোঃ রিয়াজউদ্দিন গত ২ অক্টোবর কলকাতা সফরকালে সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্যকে পত্রিকার উপদেষ্টা হওয়ার জন্য প্রস্তাব করলে তিনি সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এ সময় সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, মানব কল্যাণে কাজ করতে পারলে নিজের কাছে খুব ভালো লাগে। এ কারণেই রাজনীতি করে যাচ্ছি। আমার জীবনে রাজনীতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। তাই, যারা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে তাদের প্রতি আমার সমর্থন সব সময় রয়েছে এবং ভষ্যিতেও থাকবে। মানবাধিকার খবরের উপদেষ্ঠা হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত মানবাধিকার খবর পত্রিকাটি তাদের প্রকাশনার বাইরেও মানবিক কিছু বিষয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। বিশেষ করে নারী-শিশু উদ্ধারে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছে। যা’কিনা সত্যিকারের প্রশংসাযোগ্য। তাদের এই ভালো কাজের সাথে শামিল হওয়ার জন্য মানবাধিকার খবরের সঙ্গে যুক্ত হলাম। তিনি বলেন, আমি আশাকরি সমাজের কল্যাণে পত্রিকাটি আগামীতে আরো বলিষ্ট ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। মানবাধিকারের কোনো জাত, কাল, স্থান নেই সর্বত্রই সমান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রদীপ ভট্টাচার্য ১৯৪৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মাসে পশ্চিমবংলার বর্ধমান জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। পড়াশুনা করেছেন বর্ধমানের ইটাগোরিয়া হাইস্কুল, সুরি বিদ্যাসাগর কলেজ ও বর্ধমান বিশ^বিদ্যালয়ে। তিনি ভারতের জাতীয় কংগ্রেস-এর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং রাজ্য সভার একজন সম্মানিত সংসদ সদস্য। একই সঙ্গে প্রবীর ভট্টাচার্য প্রাগ্ভাষ নামের একটি সংগঠনের অবৈতনিক সম্পাদক। এছাড়া তিনি সাবেক শ্রম মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে নানাবিধ ও সেবামুলোক কাজ করে যাচ্ছেন।
মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার দেশের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মোদি এই আশ্বাস দেন। বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তাই এ ধরনের ইস্যু নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট প্রকাশিত ভারতের আসাম রাজ্যের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাসিন্দা। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির ইশতেহারে অন্যতম ইস্যু ছিল এই নাগরিক তালিকা চূড়ান্ত করা। এ বছরের গোড়ার দিকে কথিত অনুপ্রবেশকারীদের (বাংলাভাষী মুসলিম) ‘উইপোকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন বিজেপি নেতা ও ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার মাটিতে উইপোকার মতো। বিজেপি সরকার তাদের এক এক করে তুলে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে। অমিত শাহ তার বক্তব্যে অবৈধ মুসলিম অভিবাসী বলতে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে ইঙ্গিত করেন। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার দেশের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মোদি এই আশ্বাস দেন। বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তাই এ ধরনের ইস্যু নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই। এর আগেরদিন বিকালে লোতে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে দ্বিপক্ষীয় সভাকক্ষে দুই নেতার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উভয় নেতা তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। এ কে আবদুল মোমেন বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই বৈঠক খুবই সৌহার্দ্যমূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে এনআরসি, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এনআরসি ইস্যুর কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনআরসি ও পানি বণ্টনের মতো ইস্যুগুলোকে আমরা সহজভাবে নিতে পারি। কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নির্ধারণে কাজ করবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের শঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনও বিষয় নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, উভয়পক্ষ দুই দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করবে। কেননা দুই নেতার মধ্যে ভাই-বোনের মতো চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত সর্বশেষ আসামের নাগরিক তালিকা প্রকাশের পর এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তোলেন ভারতের ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের সমন্বয়কারী ও আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারতের বন্ধু এবং তারা আমাদের সহায়তা করে আসছে। আমরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে উপস্থাপন করলে তারা বরাবরই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই সংখ্যাটি বেশি বড় না, তবে এখন আমরা তাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
এদিকে বিতর্কিত নাগরিকত্ব তালিকা (এনআরসি) ইস্যুতে বাংলাদেশকে আবারও আশ্বস্ত করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। ০৫ অক্টোবর নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ আশ্বাস দেন নরেন্দ্র মোদী। পরে সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। শহীদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বস্ত করেছেন, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নরেন্দ্র মোদী এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যাখ্যা করেছেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ আছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক খুবই ভালো। উষ্ণ ও বন্ধত্বপূর্ণ। জাতিগত নিধনের শিকার, নির্মম নির্যাতনের মুখে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন বিষয়ে মিয়ানমারকে রাজি করাতে ভারতকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ককে কাজে লাগানোর অনুরোধ করেন তিনি। শহীদুল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যেতে দুই প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন। এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইর্য়ক সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকেও এনআরসি ইস্যুতে বাংলাদেশের উদ্বেগের কিছু নেই বলে আশ্বাস দেন নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) চুড়ান্ত করার পর ১৯ লাখের বেশি মানুষ তাদের নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। যাদের প্রায় সবাই বাংলা ভাষী মুসলমান ও হিন্দু। সংবাদ সম্মেলনে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
পরপর দুইদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক নিয়ে অস্বস্তিতে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও আড়ালে তৃণমূল সুপ্রিমোর এবারের দিল্লি যাত্রায় অখুশি রাজ্য বিজেপি শিবির। বিজেপি অখুশি হওয়ার অন্যতম কারণ, মমতার হঠাৎ দিল্লি সফরে রাজ্যের বকেয়া অর্থ সহজে আদায় করার পথ সুগম হওয়ার পাশাপাশি এনআরসি (জাতীয় নাগরিকত্ব তালিকা) নিয়েও পশ্চিমবঙ্গকে আশ্বস্ত করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে মমতার দু’দিনের (১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর) সফরের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তার প্রথম বৈঠকেই আগ্রহ ছিল দেশবাসীর। আর সেখানেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার আপত্তি শুনে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অমিত শাহ। যেখানে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবাংলায় হুঙ্কার দিচ্ছেন ক্ষমতায় এলে এ রাজ্যেও এনআরসি হবে এবং দু’কোটি মানুষ বাদ যাবে’, সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মমতাকে আশ্বাস দেওয়ায় স্বভাবতই অখুশি রাজ্য বিজেপি শিবির। ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরেই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বলেন, ‘পশ্চিমবাংলার মানুষদের বলেছি, এনআরসি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না। আমি কথা দিচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে না। অন্তত আমি বেঁচে থাকতে হবে না। আমার সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা হয়েছে। একটা অংশ থেকে পশ্চিমবাংলায় এনআরসি নিয়ে যে ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের কী মত, তা সবারই জানা। তবে আমি পশ্চিমবাংলা নিয়ে সেভাবে কথা না বললেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের নাম সংযুক্ত করার অনুরোধ করেছি। কারণ এনআরসি তালিকা থেকে যে ১৯ লাখ লোকের নাম বাদ পড়েছে, তাদের মধ্যে অনেক বাংলাভাষী রয়েছেন। হিন্দি ভাষাভাষীর পাশাপাশি গোর্খা (দার্জিলিং) ভাই-বোনেরাও রয়েছেন। তাদের কোনোভাবেই বাদ দেওয়া চলবে না। যারা প্রকৃত ভোটার, তাদের দেশ থেকে তাড়ানো যাবে না। আচমকা ১৯ লাখ লোককে কেন তাড়িয়ে দেওয়া হবে? তারা কোথায় যাবেন? মমতা আরও বলেন, এনআরসি ইস্যুর পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের মতো যে রাষ্ট্রগুলোর সীমান্ত রয়েছে, তা সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে রাজ্যকে সবসময় সাহায্য করা হবে বলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন। দিল্লিতে গিয়ে প্রথমদিন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে রাজ্যের বকেয়া আদায় করা এবং দ্বিতীয়দিন এনআরসি ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বস্ত হওয়া, মমতার দু’দিনের সফরের সারসংক্ষেপ এই। মুখ্যমন্ত্রীর দু’দিনের হঠাৎ দিল্লি সফরে রাজ্য বিজেপির যেমনি জল্পনা থামেনি, তেমনি এ সফর নিয়ে বাম-কংগ্রেস রাজনৈতিক মহলেরও কৌতুহলের শেষ ছিলনা। তাদের বক্তব্য, মোদী ভাই ও মমতা দিদি, অর্থাৎ ভাই-দিদি বৈঠকে বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাত হয়ে গেছে। তাই বিজেপি নিয়ে নবান্নে কিছু বললেন না মুখ্যমন্ত্রী। এনিয়ে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক মূল্য এখন শূন্যে এসে ঠেকেছে। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির যা সাংগঠনিক শক্তি, তাতে তৃণমূলকে আমাদের কোনোভাবেই দরকার নেই। বরং এখানকার শাসক শিবিরকে রাজনৈতিকভাবে পরাস্ত করার কাজে আমরা তৈরি হচ্ছি। তাই রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে যারা অবগত নন, সেই অবিবেচকরাই আঁতাতের তত্ত্ব দাঁড় করাচ্ছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির আরও এক নেতা বলেন, আগের জমানা আর নেই। রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলিকে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রভাবিত করতে মমতার দীর্ঘদিনের যে ছক, এখন সেটি আর চলবে না। তবে রাজ্য বিজেপি মুখে যাই বলুক না কেনো, স্বভাবতই তারা অখুশি। কারণ দুই দিনের সফরে রাজ্যের যা প্রয়োজন তা আদায়ের দিকেই অগ্রসর হতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রদীপ রায় চৌধুরী, কলকাতা থেকে : নিখোঁজ হওয়ার দুইমাস পর স্কুল ছাত্রী (১৫) কে আসামের শিলচর থেকে উদ্ধার করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এর মধ্যে সে পশ্চিম বঙ্গ থেকে রাজস্থান, সেখান থেকে এলাহাবাদ, দিল্লি, ফের এলাহাবাদ হয়ে আসামের শিলচর ক্লাস নাইনে পড়া মেয়েটার জীবন ২ মাস এভাবেই কেটেছে। একের পর এক হাত বদল হয়েছে। প্রত্যেকবারই সে যৌনপল্লিতে বিক্রি হয়ে গেছে। অতপর স্বাধীনতার স্বাদ পেল ২৬ জুলাই যেদিন উত্তর চব্বিশ পরগণা এবং আসামের পুলিশের যৌথ অভিযানে অন্ধকার জগৎ থেকে আলোয় ফিরলো। প্রেমিক সোহাগ রায় তাকে ফুসলিয়ে গত ২৫ মে গভীর রাতে ঘর থেকে বের করে উত্তর চব্বিশ পরগনার মধ্যমগ্রামের এই স্কুল ছাত্রীকে। সোহাগের আনা অটোয় উঠে বসে মেয়েটি। মেয়েটির পরিজনেরা বিষয়টি বুঝতে পেরে কিছু দূর গিয়ে অটোটি ধরে ফেলে। কিন্ত ভিতরে তখন মেয়েটি নেই। পুলিশ অটোচালক এবং প্রেমিক সোহাগ রায়কে গ্রেফতার করে। কিন্তু মেয়েটি সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। মেয়েটির মোবাইল নান্বারের সুত্রে তদন্তকারী দল পৌছায় দিল্লি। মোবাইলটি মেলে নাজিয়া নামে এক মহিলার কাছে। জেরায় সে জানায়, এলাহাবাদে বিক্রি করা হয়েছে ১৫ বছরের মেয়েটিকে। সেখান থেকে মাইলি তামাং নামে এক ব্যক্তিকে ধরে মধ্যমগ্রাম পুলিশ। তার থেকে শিলচরের যৌনপল্লির হদিস মেলে। এরপর ২৬ জুলাই ওই ঠিকানায় হানাদিয়ে প্রেমিক-সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উল্লেখ্য, অমানবিকভাবে বন্দী থাকা বাংলাদেশী তিন শিশু উদ্ধারের ব্যাপারে গত ১২ জুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান মানবাধিকার খবরের সম্পাদক। এসময় খবর পেয়ে উক্ত স্কুল ছাত্রীর অসহায় মা-বাবা সম্পাদকের সাথে দেখা করে তাদের নাবালিকা মেয়েকে উদ্ধার ও সার্বিক সহযোগিতার করতে বিশেষ অনুরোধ জানানোর প্রেক্ষিতে মানবাধিকার খবরের সম্পাদক নিখোঁজ ছাত্রীকে উদ্ধারের দায়িত্ব নেন। ওই সময়ে বিষয়ে মধ্যমগ্রাম থানায় আই পি সি আইনে ও ৩৬৩/৩৬৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয় যার নাম্বার (২১৮/২) তারিখ ২৭.০৫.২০১৯। নিখোজ ছাত্রী মধ্যমগ্রামের এপিসি গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২৬ মে রাত ১২টার পর থেকেই তাদের মেয়ের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাতেই বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পাওয়া গেলে মধ্যমগ্রাম থানায় মিসিং ডায়রি করে পরিবার। স্কুল ছাত্রীর বাবা চন্দ্রশেখর রায় পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা ত্রিপলী রায় গৃহবধূ। স্কুল ছাত্রীর সাত বছরের ছোট ভাই রয়েছে। মধ্যবিত্ত পরিবার। বাবা চন্দ্রশেখর রায় বলেন, ২৬ মে রবিবার মাঝরাতে বাথরুমে যাওয়ার পর থেকে মেয়েকে আর পাচ্ছি না। ওই রাতেই বাড়ির কাছে একটি অটো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম। ফলে সন্দেহ বাড়ে পরিবারের। এরপর এলাকারই অটো চালক সন্দীপ বণিককে চাপ প্রয়োগ করেন স্কুল ছাত্রীর বাবা। বাবার দাবি, সন্দীপ তাঁকে বলে সোহাগ রায় সব কিছু জানে। কিন্তু সোহাগও নিখোজ ছাত্রীর ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। পরবর্তিতে দু’জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ দিকে স্কুল ছাত্রীর কোনও খোঁজ না মেলায় তাঁকে অপহরণ কিংবা কোথাও পাচার করা হয়ে থাকতে পারে বলে পরিবারের আশঙ্কা করে। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর গত ২৬ জুলাই উক্ত স্কুল ছাত্রীকে শিলচর থেকে উদ্ধার করা হয়। মানবাধিকার খবর সার্বক্ষনিক সার্বিক সহযোগিতা ও পরামশ দিয়ে আসছিলো। তাকে উদ্ধারের ব্যাপারে মানবাধিকার খবরের বিশেষ ভূমিকার জন্য নিখোজ কিশোরীর বাবা চন্দ্রশেখর রায় ও মা ত্রিপলী রায় পত্রিকার সম্পাদককের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উদ্ধারের পর উক্ত স্কুল ছাত্রী ফিরে পেয়েছে মনোবল, যোগ দিয়েছে নিয়মিত পড়াশোনায়। পড়াশোনার পাশাপাশি ভবিষ্যতে সে সাংবাদিকতা করতে চায়। লেখালেখির মাধ্যমে তার মতো ভুক্তভোগীদের কথা সমাজে মানুষের কাছে তুলে ধরতে চায়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, মানবাধিকার বিষয়ক নিয়মিত সৃজনশীল বাংলা প্রকাশনা “মানবাধিকার খবর” এর আগেও দেশ-বিদেশ থেকে নিখোঁজ ও পাচারকৃত অসংখ্য নারী ও শিশু উদ্ধার করে অবিভাবক ও স্বজনদের হাতে তুলে দিয়ে সাফল্য দেখিয়েছে।
দুই মাসেরও বেশি সময় পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হলো জম্মু-কাশ্মীর। গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের ওপর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীদের কাশ্মীর ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। তারপর থেকেই পর্যটকদের জন্য কাশ্মীরে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিকের নির্দেশে প্রায় দু`মাস পর ভূস্বর্গে পর্যটকদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো। সোমবার এ বিষয়ে এক নির্দেশনা দেয়া হয়। এক ঘোষণায় জানানো হয় যে, আগামী ১০ অক্টোবর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে আগের মতোই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে।
এক সরকারি মুখপাত্র জানান, গভর্নর সত্যপাল মালিক পর্যটকদের ওপর থেকে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে। সে অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল।
জম্মু ও কাশ্মীরের তথ্য অধিদফতর এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, গভর্নর সত্যপাল মালিক কাশ্মীরের নিরাপত্তার বিষয়ে পরামর্শদাতা এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি স্বরাষ্ট্র দফতরকে দেওয়া নির্দেশিকায় বলেছেন, রাজ্য থেকে পর্যটক বেরিয়ে যেতে বলার আদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে ১০ অক্টোবর থেকে।
সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় বিভিন্ন রাজ্যের কয়েক হাজার পর্যটক, তীর্থযাত্রী এবং শিক্ষার্থীদের কাশ্মীর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
সে সময় কাশ্মীরে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যটক ছিল। পর্যটনের জন্য এটাই কাশ্মীরের সবচেয়ে ভালো সময় হলেও সে সময় পর্যটকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীরে টেলিফোন এবং ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়।
গত জুনে কাশ্মীরে প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া জুলাইয়ে ভ্রমণ করেছেন ১ লাখ ৫২ হাজার পর্যটক যার মধ্যে তিন হাজার ৪০৩ জন বিদেশি পর্যটক। কিন্তু গত আগস্টে কোনো পর্যটকই সেখানে ঘুরতে যেতে পারেননি।