সোমবার, মে ১৩, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * শ্রীপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিলের পক্ষে গণসংযোগ-প্রচার   * ট্রেনে কাটা পড়ে গাজীপুরে প্রাণ গেল জনের   * চাঁদপুরে নিষিদ্ধ জালে মাছ ধরায় ১৪ জেলে গ্রেফতার ;   * চট্টগ্রামে ৩০ কোটি টাকা ঋণখেলাপি, সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা   * পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেল সীতাকুণ্ডের মেধাবী ছাত্র রাব্বি   * চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের টয়লেট থেকে ৭০ লাখ টাকা মূল্যের সোনা উদ্ধার;   * চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে এয়ার অ্যারাবিয়ার ফ্লাইটে ত্রুটি, শারজাহগামী ১৬৪ জন যাত্রী হোটেলে   * চট্টগ্রাম বোর্ডে এবারও শীর্ষে বন্দর নগরীর স্কুলগুলো   * চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় মোবাইল চার্জার এর পরিবর্তে ল্যাপটপ   * চিতলমারীতে বিশ “মা” দিবস পালিত  

   প্রচ্ছদ
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে নারী ও শিশু সহ স্বজনদের আকুঁতি গুম হওয়া মানুষদের ফিরিয়ে দিন
  Date : 14-09-2019

বিশেষ প্রতিবেদক :
দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে যে মানুষেরা গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের ফিরিয়ে দেওয়া কিংবা খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছে তাদের স্বজন ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। গুমের শিকার মানুষদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে গুমের শিকার মানুষদের স্বজন এবং নাগরিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৩০ আগস্ট ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সমাবেশ হয়। উক্ত সমাবেশে স্বজনদের দাবি গুম হওয়া মানুষদের ফিরিয়ে দিন।
অন্যদিকে একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস’ (৩০ আগস্ট) পালনের মুহূর্তে আমরা দিনটির তাৎপর্যের আলোকে দেশে বিরাজমান পরিস্থিতির দিকে ফিরে তাকাতে চাই। আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন সবাই একমত হবেন যে, অপহরণ, গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভুত খুন, হেফাজতে নির্যাতন, ন্যায়বিচারের সুযোগহীনতা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের নৃশংসতম ও চরম অপরাধগুলোর অন্যতম। মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রধানতম রাষ্ট্রীয় নীতি ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া ঘাটার সুযোগ নেই। মানবাধিকারের এসব লঙ্ঘনের কোনোটি বিচ্ছিন্নভাবেও সংঘটিত হয় না, এগুলো পরস্পর সম্পৃক্ত, একটি অপরটিকে আরো গুরুতর দিকে পরিচালিত করে এবং চুড়ান্তভাবে আইনের শাসনকে বিপন্ন করে তোলে। অন্যভাবে বললে, আইনের শাসনের প্রতি তোয়াক্কা না করা উল্লেখিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসার ঘটায়। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এ ধরনের অপরাধের দায়িত্বে থাকা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সুযোগসন্ধানী সদ্যরা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে এই পরিস্থিতির সুবিধা নিয়ে থাকে। কারণ অনেকেই নিজেদেরকে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে বলে বিবেচনা করে অথবা বেআইনি কাজের সহযোগী হিসাবে তারা ছাড় উপভোগ করে। এভাবে তারা আইন শৃঙ্খলা ভাঙায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন উভয়বিধ রাষ্ট্রীয় নীতি হিসাবে আইন ভঙ্গ করা এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ঘটানো বহু অভিযোগের কথা গণমাধ্যমে এসেছে। উদাহরণ হিসাবে, নারায়ণগঞ্জে সাত ব্যক্তিকে হত্যা করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ব্যবহার করা, ব্যক্তিগত বিরোধ মেটাতে শহীদ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের নাতী সৌরভকে র‌্যাব দিয়ে অপহরণ বিষয়ে তার বাবা-মার করা অভিযোগ কয়েকটি নমুনা মাত্র। আজ আমরা আইনপ্রয়োগে নিয়োজিত কিছু সদস্যের মধ্যে গুরতর অপরাধে জড়িত হবার এই প্রবণতা লক্ষ্য করছি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্ধেগজনক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছি।
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে নিজেদের দিকে ফিরে তাকাবার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। গত ৩০ ও ৩১ জুলাই জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির (ক্যাট) ৬৭তম অধিবেশনে নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তিবিরোধী সনদের আওতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি পর্যালোচনার সূত্রেপাওয়া তথ্য ও সেই সভায় আলোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে ব্যক্ত উদ্ধেগ আমাদেরকে আলোড়িত না করে পারছে না। এই অধিবেশন শেষ হবার পর দেশের দুটি মানবাধিকার বিষয়ক মঞ্চ, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি এবং হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ পৃথকভাবে ক্যাট অধিবেশনে বাংলাদেশ সংক্রান্ত আলোচনা ও সেখানে সরকারের পেশ করা প্রতিবেদন নিয়ে যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে তাও আমাদেরকে পরিস্থিতি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে।
অধিবেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী সনদে স্বাক্ষরদাতা হবার পরও আমাদের কোনো সরকার বিগত ২০ বছর এই আন্তর্জাতিক সনদের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করেনি। দায়বদ্ধতার অংশ হিসাবে এবারই প্রথম সেখানে সরকারি প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সনদের প্রতি দায়বদ্ধ না থাকার মাশুল দিতে হচ্ছে আমাদের দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্ধেগজনক পরিস্থিতি দিয়ে। ক্যাট অধিবেশনে উথাপিত ও আলোচিত তথ্য থেকে আমরা জানতে পারছি গত দশ বছরে (২০০৯-১৯) বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ২০৮৮ জন, শুধু ২০১৮ সালেই নিহত হয়েছেন ৪৬৫ জন। সংবাদপত্রের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারছি গত বছরের মে মাসে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে গত ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫৩ দিনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৪২৮ জন নিহত হয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এ মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুরুপ হত্যাকান্ডে নিহত ৩ জন রাজনৈতিক কর্মী। গত দশ বছরে গুম হয়েছেন ৫০৭ জন। গত ২৬ মে’র ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন, ব্রিং দেম ব্যাক বিফোর ঈদ, থেকে গুম সংক্রান্ত আরো কিছু তথ্য জানা যায় : প্যারিস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটসের (এফআইএইচআর) হিসাবে ২০০৯-১৮ পর্যন্ত গুমের শিকার হওয়া ৫০৭ জনের মধ্যে ৬২ জনের লাশ পাওয়া গিয়েছে। ওই সময় পর্যন্ত ১৫৯ জনের এখনও কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি। গত বছর গড়ে দৈনিক ৮ জন করে মানুষ গুম হয়েছেন। এ বছরের প্রথম তিন মাসে গুম হয়েছেন ১২ জন। অন্য সংবাদ থেকে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ হয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফ এর নেতা মাইকেল চাকমা, তাঁর নিখোঁজ হওয়া ক্যাট অধিবেশনের আলোচনায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে। তাঁর বোন ভাইকে খুঁজে বের করতে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেবার পরও এখন পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে আজ কয়েক শত পরিবারের সদস্যরা বছরের পর বছর তাদের সন্তান-স্বামী-বাবা-ভাই- বোনকে গুমের মিছিলে হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন। তাদেরই অসহায় আর্তি ফুটে উঠেছে ডেইলি স্টারের পূর্বোল্লিখিত প্রতিবেদনে। গত ২৩ বছর ধরে নিখোঁজ কল্পনা চাকমার সন্ধান পাওয়া যায়নি আজো। গুমের শিকার এসব পরিবারের প্রধানতম ভুক্তভোগীরা হচ্ছেন নারী, শিশু এবং প্রবীণ বাবা-মা। বহুবার এসব পরিবারের নানা বয়সের মানুষের মর্মন্তদ কাহিনী, ফরিয়াদ ও আকুল আবেদন আমরা শুনেছি। আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে অপহরণ ও গুমের অবসান ঘটানোর দায়িত্ব সরকারের। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে আমরা প্রত্যাশ করব গুম হওয়া সকল মানুষকে অনতিবিলম্বে নিরাপদে ঘরে ফিরিয়ে দেয়া হবে। স্বজনহারা ঘরগুলো পরম প্রিয়জনের উপস্থিতির উষ্ণতায় উজ্জল হয়ে উঠবে অচিরেই। পরিশেষে আমরা দাবী করি, ক্যাট তার চ’ড়ান্ত পর্যবেক্ষণে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি করতে বাংলাদেশ সরকারকে গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করা, গুম এবং যোগাযোগহীনভবে আটকের সকল অভিযোগের তদন্ত করা, মানবাধিকার কর্মীসহ সকলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ যে ৭৭টি সুপারিশ প্রদান করেছে, সেগুলোর আশু কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথে সকল বাধা দূর করা হবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারিরা হচ্ছেন, ‘মায়ের ডাক’ (গুেিমর শিকার পরিবারগুলোর মঞ্চ), সুভদ্রা চাকমা (‘নিখোজ মাইকেল চাকমার দিদি), সুলতানা কামাল (মানবাধিকার আন্দোলনের নেত্রী ও সাবেক উপদেষ্টা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার), আকমল হোসেন (প্রাক্তন শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), শাহদীন মালিক (আইনজীবী সুপ্রীপ কোর্ট), রেনুমা আহমদ (লেখক), আনু মুহাম্মদ (শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), শহিদুল আলম (আলোকচিত্রী), স্বপন আদনান (প্রাক্তন শিক্ষক, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সিঙ্গাপুর), জ্যোতির্ময় বড়–য়া (আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট), হাসিবুর রহমান (শিক্ষক, বুয়েট), সারা হোসেন (আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট), শিরিন প.হক (নারী অধিকার আন্দোলনের সংগঠক) এবং ওমর তারেক চৌধুরী (লেখক-অনুবাদক)।



  
  সর্বশেষ
শ্রীপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিলের পক্ষে গণসংযোগ-প্রচার
ট্রেনে কাটা পড়ে গাজীপুরে প্রাণ গেল জনের
চাঁদপুরে নিষিদ্ধ জালে মাছ ধরায় ১৪ জেলে গ্রেফতার ;
চট্টগ্রামে ৩০ কোটি টাকা ঋণখেলাপি, সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308