শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত   * মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি   * দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * রশিদ মিয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান ;   * কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন;   * বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলো মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য   * ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দুর্গম সীমান্তে বিজিবি মহাপরিচালক   * টানা ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখ লাখ পর্যটক, হোটেলে কক্ষ না পেয়ে ভোগান্তি  

   প্রচ্ছদ
মানবাধিকার খবর’র সহযোগীতায়ঃ দেশে ফিরলেন পাঁচার হওয়া ৩৮ নারী ও পুরুষ
  Date : 21-03-2021

দীর্ঘ চেষ্টা ও প্রতিক্ষার পর মানবাধিকার খবর ও সরকারী বেসরকারী সংস্থার সার্বিক সহযোগিতায় দেশে ফিরলেন ৩৮ জন নারী ও শিশু। ভালো কাজের প্রলোভন আর প্রতারণাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ভারতে পাচার করা ৩৮ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী, নারী-শিশুকে উদ্ধারের ৩ থেকে ৫ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক তার নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরে গেছে। এ ব্যাপারে ‘মানবাধিকার খবর’ কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে। ফেরত আনা ৩৮ জন এর মধ্যে ২৪ জন নারী, ৭ জন শিশু, ৫ জন পুরুষ ও ২ জন কিশোর-কিশোরী রয়েছেন।
গত ২৫ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় ভারতীয় পুলিশ, বিএসএফ ও কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনারের কর্মকর্তারা যৌথভাবে বেনাপোল চেকপোস্ট শূন্য রেখায় এসব নারী-শিশুকে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। বেনাপোল থানায় জিডির মাধ্যমে তাদের বেসরকারি ৩টি সংস্থার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ফেরত আসা বাংলাদেশীদের বাড়ি, নওগাঁ, কক্সবাজার, মাগুরা, খুলনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নড়াইল জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এসময় আইনি সহায়তা দিয়ে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে তাদের গ্রহণ করে মানবাধিকার সংস্থা রাইটস যশোর ১৯ জনকে, জাস্টিস এন্ড কেয়ার ১২ জনকে ও বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি ৭ জনকে নিজেদের দ্বায়িত্বে নিয়েছেন। শার্শা ও বেনাপোল থানার সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আব্দুল ওহাব, মানবাধিকার খবর কে জানান ২৫ জানুয়ারী ঐদিন উক্ত তিনটি এনজিও সংস্থার মাধ্যমে সকল নারী ও শিশুদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ফেরত আসা নারী, শিশুরা হলেন- বাগেরহাটের শাহানাজ আক্তার, তৃষ্ণা মন্ডল, আফসানা আক্তার, তুহিন হাওলাদার, ফারজানা আক্তার, সাহাজুল শেখ, মীম হাওলাদার, সোনা শেখ ও শাকিব, নড়াইলের আশা শেখ, রুকসানা মোল্লা, পপি রানী শিকদার, ফরিদপুরের রহিমা খান, বগুড়ার আদুরী খাতুন, কবিতা আক্তার, গাইবান্ধার সানজিদা বেগম, নীলফামারীর অনুপা বিবি, কক্সবাজারের রাফা মনি ও সুহান। আরও রয়েছেন নারায়ণগঞ্জের রুনা আক্তার, নাসিমা ভূঁইয়া, সানজিদা আক্তার, খুলনার তীর্থ বিশ্বাস, মৌসুমি আক্তার, সোনালী খাতুন, বরিশালের সুমি আক্তার, যশোরের কিয়া খাতুন ও মাকসুদা বেগম, সাতক্ষীরার নূরজাহান, নরসিংদীর পাইরা বেগম, পাবনার পারভিন বেগম, সাতক্ষীরার রিক্তা, ঢাকা কেরানীগঞ্জের অজয়, নোয়াখালীর শাকিল। ঝিনাইদহের দীপরঞ্জন বিশ্বাস, পিরোজপুরের রাজিব হাওলাদার, ল²ীপুরের রবিউল ইসলাম রনি ও কুড়িগ্রামের মোফাস্বেল হক।
কিশোর-কিশোরী হলেন চট্টগ্রামের আম্বারশাহ্ এর সাকিব ওরফে সুমন ও খুলনা দিঘলিয়া সেনহাটির শিউলি আক্তার।
জানা যায়, সংসারে অভাব অনটনের সুযোগ নিয়ে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পাচার হয়ে আসছে শত শত বাংলাদেশি নারী ও শিশু। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে এদেরকে পাচারকারীরা নিয়ে যায় ভারতে। পরে তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে অসামাজিক আর ঝুঁকিমূলক কাজে ব্যবহারে বাধ্য করে।
এসময় আত্মরক্ষায় কেউ কেউ পালিয়ে পুলিশে ধরা দেয় আবার কাউকে পুলিশ উদ্ধার করে পাচারকারীদের আস্তানা থেকে। আবার অনেকে নিয়তি ভেবে অন্ধকার জগতে সপে দেয় নিজেকে। তবে যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয় তাদের প্রথম আশ্রয় হয় ভারতের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেভ হোমে। পরে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোচনায় স্বদেশ প্রত্যাবাসনে এরা দেশে ফেরেন।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) সামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি জানান, ফেরত আসা বাংলাদেশিরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের উদ্ধারের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আহসান হাবিব জানান, কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পুলিশের কাছ থেকে ফেরত আসা নারী ও শিশুদের তিনটি মানবাধিকার সংগঠন গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজিবী সমিতি প্রোগ্রামার অফিসার রেখা বিশ্বাস জানান, পাচারকারীদের হাত দেশ ও দেশের বাইরে বিস্তৃত। প্রতিবছর শত শত নারী ও শিশু সীমান্ত পথে পাচার হচ্ছে ভারতে। তবে তাদের মাত্র ৫ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পাচার প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোল গড়ে তুললে পাচার প্রতিরোধ কিছুটা সম্ভব হবে।
যশোর রাইটসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আযহারুল ইসলাম জানান, নারী, শিশুদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে পাচারকারীরা ভারতে নিয়েছিল। এদেরকে আইনি সহায়তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অন্যান্য এনজিও সংস্থার পাশাপাশি রাইটস যশোর কাজ করবে।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার এর মিনিষ্টার (পলিটিকাল) বিএম জামাল হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময় ভালো কাজের প্রলোভনে পরে এসব নারী পুরুষ ও শিশুরা পাচার এর শিকার হয়েছিলো।
ফেরত আসাদের বেনাপোল থেকে গ্রহন করে যশোর রাইটস্ এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, আমরা মহিলা আইনজীবি সমিতি ও জাস্টিস এন্ড কেয়ার তাদেরকে গ্রহন করেছি এবং তাদেরকে যশোর নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিভিন্ন সেফ হোমে দীর্ঘদিন ধরে আটক ৩৮ জন বাংলাদেশি নারী, শিশু ও কিশোরদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মোট ৩৮ জন বাংলাদেশীকে পেট্রাপোল- বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছিল কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হোমে আটক থাকা বাংলাদেশি পুরুষ, নারী, শিশু ও কিশোরদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দিল। ভারতে আটককৃত এইসব নাগরিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে তাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার পর কলকাতাস্থ উপ হাইকমিশন তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে।
২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে পেট্রাপোল বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ৩৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশে তাদেরকে নিজ নিজ পিতা মাতা ও বৈধ অভিভাবকদের নিকট হস্তান্তরের প্রায়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপহাইকমিশন।
ভারতের সেফহোমে বন্দি দু’শতাধিক বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সেফ হোমে বন্দি রয়েছে দুই শতাধিক বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী, নারী ও শিশু। এসব বন্দিদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যস্থতায় দেশে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। আর তাই দ্রæত তাদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছিল কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।
বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে ঢোকার অপরাধে পশ্চিমবঙ্গের ১৭টি সেফহোমে বন্দী রয়েছে এসব কিশোর-কিশোরী। কাজের সন্ধানে কিংবা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়ে আটক এসব বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীদের এতদিন দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যস্থতায় ফিরিয়ে দেয়া হলেও নাগরিকত্ব শনাক্তে লেগে যেত দীর্ঘসময়।
মানবাধিকার খবর কর্তৃপক্ষ ভারতে গিয়ে ও বিভিন্ন মাধ্যমে এসব পাচারকৃত অধিকাংশ নারী ও শিশু, কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরিবার বা অভিভাবকদের থেকে সংগ্রহ করে দেশে ও বিদেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সরবরাহ করে সহযোগিতা করে আসছে।
আর তাই দ্রæত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছিল কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস। এরইমধ্যে ১৬০ জনের নাগরিকত্ব শনাক্তের কাজ শেষ করেছে উপদূতাবাস। এদের মধ্যে গত ২৫ শে জানুয়ারী বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ৩৮ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতার উপরাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তারা জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করেছে। আমরা যে, ৩৮ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছি ২৫ জানুয়ারি বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
শুধু কিশোর-কিশোরীই নয়, অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। যাদের অনেকের সাজার মেয়াদ শেষ হলেও নাগরিকত্ব প্রমাণের জটিলতায় বছরের পর বছর বন্দি থাকতে হচ্ছে ভিন দেশের কারাগারে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে মানব কল্যাণে নিয়োজিত মানবাধিকার খবর দুধর্ষ ও শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক নারী ও শিশু দেশ বিদেশ থেকে উদ্ধার করে মা-বাবা ও আইনের হাতে তুলে দিয়ে সাফল্য দেখিয়েছে। এছাড়া উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছে শতাধিক নারী ও শিশু।
মানবাধিকার খবর পত্রিকাটি তার সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কারের পাশাপাশি ভারত থেকে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মাননা ২০১৯ এ ভূষিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

 



  
  সর্বশেষ
৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি
দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন
আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308