শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * পুরান ঢাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে সন্ত্রাসী আলাউদ্দিনের বাসায়,অস্ত্র-গুলি উদ্ধার   * প্রাইম ব্যাংক`র চেয়ারম্যান তানজিল চৌধুরী   * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকঃ ভবিষ্যতের বাংলাদেশ   * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকঃ ভবিষ্যতের বাংলাদেশ   * দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস এবং পারস্পরিক সমঝোতার অভাব নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সব সময়ই সংকটময় করে তোলে   * কুড়িগ্রাম-১ আসনে ঘর গোছাতে ব্যস্ত বিএনপি, মাঠে জামায়াত   * কুড়িগ্রামে ২৮ বছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন পিতা-মাতা   * দেশটা শুধু পলিটিশিয়ানরাই চালায় না, দেশটা বিজনেসম্যানরাও চালায়: আনিস উদ দৌলা   * সাংবাদিক নির্যাতন মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি`র আদালতে হাজিরা   * ভাঙনের অজুহাতে খোর্দ্দ বাঁশপাতা আবাসন প্রকল্পের ঘরের খুলে নিয়েছে দরজা-জানালা  

   সারাদেশ
খুলনার প্রবেশদ্বার বেহাল সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ!
  Date : 03-09-2025

বাবলু রহমান : খুলনা মহানগরীতে প্রবেশকালেই চরম অস্বস্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। শহরের তিনটি প্রবেশদ্বারের প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। মেরামত নিয়ে কেডিএ, কেসিসি ও এলজিইডি’র সমন্বয়হীনতার কারণে অকার্যকর হয়ে পড়েছে এসব সড়ক। অতি দুর্ঘটনার ঝুঁকি প্রবণ হয়ে পড়েছে এই সড়কগুলো। প্রবেশদ্বারের সড়কগুলোর বেহাল দশায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়ে হেলে-দুলে চলতে হয় ইজিবাইক, বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কারসহ সব ধরনের যানবাহনকে। পাশাপাশি বিকল্প সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। এসব সড়ক সংস্কার কিংবা পুনঃনির্মাণের জন্য খুলনার বেশ কয়েকটি সংগঠন দফায় দফায় আন্দোলন ও মানববন্ধন করলেও তার সুফল মেলেনি। এজন্য খুলনার বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়হীনতাকেই দায়ী করছেন নাগরিক নেতারা। দ্রুত এসব সড়কের সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।

খুলনা মহানগরীর প্রবেশ করার জন্য ৩টি গুরুত্বপূর্ণ দ্বার রয়েছে। এরমধ্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোস্তফার মোড় থেকে রায়েরমহল পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক এবং খানজাহান আলী সেতু থেকে রূপসা ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত শিপইয়ার্ড সড়ক, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ কিলোমিটার এবং কেসিসি ও কেডিএ’র নিয়ন্ত্রণে থাকা সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়ক, যার দৈর্ঘ্য ২.১৬ কিলোমিটার। এসব সড়কের পাশ রয়েছে প্রায় ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৭টির মত চালকল, ২৪৩টির মত কাঠগোলা, ছোটবড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের বসবাস। এই সড়কগুলোর হতশ্রী দশার কারণে শুধুমাত্র খুলনায় আগত যান ও পণ্যবাহী পরিবহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হচ্ছেন শিশু ও নারীসহ সাধারণ এলাকাবাসী। ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল, যশোর, মাগুড়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, ডুমুরিয়া, বাগেরহাট, মোংলাসহ দেশের প্রায় ১৮টি জেলা থেকে সড়ক পথে আসা যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনকে খুলনা মহানগরীতে প্রবেশের সময় সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়ক, রূপসা ব্রিজের সংযোগ সড়ক বা মোস্তফার মোড় থেকে রায়েরমহল যেকোন একটি সড়ক ব্যবহার করে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে প্রবেশ করতে হয়। তিনটি প্রবেশ পথই দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
শিপইয়ার্ড সড়ক : ২০১০ সালে নগরের রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে শিপইয়ার্ডের সামনে দিয়ে খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) পর্যন্ত চলে যাওয়া প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কটি প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। ২০১৩ সালে প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন মেলে। দফায় দফায় মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়েও প্রকল্পটি আলোরমুখ দেখেনি।
সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সংযোগ সড়ক : শহরকে সম্প্রসারিত করার জন্য সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সংযোগ সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। ২০১১ সালে ২ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার লম্বা সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিয়েনকো লিমিটেড। দুই বছরেই শেষ হয় কাজ। এর কিছুদিনের মধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। কয়েকবার মেরামত করেও তা টেকেনি।
রায়েরমহল-মোস্তফার মোড় : ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ‘ঘুর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় মোস্তফার মোড় থেকে ৩.২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ কাজ শুরুর বছর খানেক গড়িমসির পর সময় বাড়িয়ে ঠিকাদার কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যায়।
নগরীর সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়কের ব্যাপারে বাস চালক কাওসার শেখের অনেক আক্ষেপ। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের মানুষই মনে করে না। আমাদের জীবনের কোন মূল্য যেন নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কে গাড়ি চালাতে হয়। ফলে পরিবহনের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনই দুর্ঘনায় পড়ে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রায়েরমহল এলাকার চাতাল মালিক লিটন বলেন, দিন কয়েক আগে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছিলো। কিন্তু অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাথাকার কারণে বর্ষায় রাস্তায় পানি জমে আবারো অনেক ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। চাতালে চাল পরিবহনের জন্য আমাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ। এছাড়া দুর্ঘটনাতো লেগেই আছে।
শিপইয়ার্ড মোড় নিবাসী সেলিম গাজী জানান, উন্নত জীবনের জন্য খুলনায় বসবাস করতে এসেছিলাম। কিন্তু এমন সড়ক বর্তমানে কোন প্রত্যন্ত গ্রামেও নেই। শুধুমাত্র সড়কের কারণে আমরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
নিরাপদ সড়ক চাই খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: মাহবুবুর রহমান মুন্না এ ব্যাপারে অক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার ধর্ণা দিয়েও কোন সুফল আসেনি।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের আগে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সরকার দপ্তরের কর্তারা সড়ক মেরামতের টাকা লুটপাট করার জন্য একে অপরের উপর দায় চাপিয়ে সড়কগুলোকে অভিভাবক শূণ্য করে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদের পতনের পরও কোন এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এখনও চলছে নীরব চাঁদাবাজি। প্রতিবাদ স্বরূপ আমরা সড়কে ধানের চারা রোপণ করেছি। একই সঙ্গে গেল এক যুগেও শিপইয়ার্ড সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় কেডিএ-কে লাল কার্ড প্রদর্শন করা হয়েছে।
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই সড়কের প্রকল্প পরিচালক মোর্ত্তজা আল মামুন বলেন, বর্তমানে আমরা মাহাবুব ব্রাদার্সের সাথে চুক্তি বাতিল করেছি। আবারও এই সড়কটি নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে, যা চলমান আছে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ, কার্যাদেশ প্রদান ও কাজ শুরু করা একটি বিলম্বিত প্রক্রিয়া।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার বলেন, সোনাডাঙ্গা সংযোগ সড়কের অর্ধেকাংশ আমাদের মধ্যে। বাকীটা এলজিইডির আওতায়। এলজিইডি এখনও সড়ক বুঝিয়ে দেয়নি। ফলে সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।



  
  সর্বশেষ
পুরান ঢাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে সন্ত্রাসী আলাউদ্দিনের বাসায়,অস্ত্র-গুলি উদ্ধার
খুলনার প্রবেশদ্বার বেহাল সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ!
প্রাইম ব্যাংক`র চেয়ারম্যান তানজিল চৌধুরী
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকঃ ভবিষ্যতের বাংলাদেশ

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308