বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * আলাউদ্দিন "মানবাধিকার খবর" এর চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ;   * টুকুর মুক্তির দাবিতে গাজীপুরে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল   * কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, যুবকের কারাদণ্ড   * শিশুকে ধর্ষনের পর নির্মমভাবে খুন, বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‌্যাব কর্মকর্তা   * `জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কক্সবাজারে মহান মে দিবস উদযাপন ;   * পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে মরে যাচ্ছে চা বাগান। চা চাষীদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে।   * সারা দেশেরনেয় পঞ্চগড়েও আন্তর্জাতিক মে দিবস পালিত   * কুড়িগ্রামে তীব্র দাবদাহে ধান কাটতে গিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু   * মহান মে দিবস আজ   * মোঃ আমির হোসেন বি 2189 এর বেসিক নির্বাচনে কার্যকারী সভাপতি পদে সকলের দোয়া প্রার্থী  

   বিশেষ প্রতিবেদন
আজ শ্রীপুর হানাদার মুক্ত দিবস
  Date : 12-12-2023

১২ ডিসেম্বর শ্রীপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে শ্রীপুর শত্রুমুক্ত হয়।এর আগে ধর্ষণ, গণহত্যা, বসতভিটায় অগ্নিসংযোগ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িত পাকিস্তানি সেনাদের যোগাযোগের রেলপথ শ্রীপুর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। চারদিক থেকে আক্রমণের পর ১২ ডিসেম্বর শ্রীপুর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং আত্মগোপনে চলে যেতে থাকে তাদের দোসর রাজাকাররা।১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে শ্রীপুরের ইজ্জতপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে গোসিঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কিশোর সাহাব উদ্দিন শহীদ হন। এই দিন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ হামলায় সেখানে চারজন রাজাকার ও একজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া আকন্দবাড়ী গ্রামের শহীদ সাদির আকন্দের ছেলে শাহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান আকন্দ জানান, ১৯৬৫ সালে তার বাবা তৎকালীন সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তরুণ যুবকদের প্রশিক্ষিত করে তোলার ভয়ে পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের চিহ্নিত করে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ৭১ এর ৩ এপ্রিল টঙ্গী অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলের সামনে ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে পাকিস্তানি সেনারা নির্মমভাবে তার বাবাকে হত্যা করে। এমনকি তার লাশটিও রেখে যায়নি হানাদার বাহিনী।সাতখামাইর গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের স্ত্রী হারেছা খাতুন জানান, পাকিস্তানি সেনারা তার স্বামীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তার সঙ্গে একই এলাকার ইউসুফ আলী, আজম আলী, আব্দুল লতিফ, গিয়াস উদ্দিন, ছসু মোল্লাসহ মোট ১০ জনকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। পরে তাদের সাতখামাইরে গণকবর দেওয়া হয়। ওই সময় সাত মাসের সন্তান সম্ভাবা সালেহা এবং অপর তরুণীকে পাকিস্তানি সেনারা শ্রীপুরে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। যুদ্ধ শেষে শ্রীপুরের জিনেজানা রেলসেতুর কাছ থেকে তাদের মাথার চুল, কঙ্কাল এনে গণকবরে সমাহিত করা হয়। শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী কলেজ মাঠের দক্ষিণ পাশে ১২ জন শহীদের গণকবর রয়েছে।শ্রীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক সিরাজুল হক বলেন, কেওয়া আকন্দ বাড়ির শহীদ আলমগীর বাদশা আকন্দের ছেলে নজরুল ইসলাম আকন্দ মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ায় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানিরা বাড়ি থেকে তার বাবাকে ধরে এনে হত্যা করে। তার বাবা ফকির আলমগীর বাদশা আকন্দের সঙ্গে আরও কমপক্ষে ১১ জনকে হত্যার পর গণকবর দেওয়া হয়।মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকসেনাদের স্থল যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল রেলপথ। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ এবং উত্তরের জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথকেই তারা নিরাপদ মনে করতো। গোলা-বারুদ ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মালবাহী ট্রেনে আনা-নেওয়া করতো। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান বিশেষ করে রেল সেতু এলাকায় পাকিস্তানি ক্যাম্প তৈরি করে পাহারা বসিয়ে রাখত।তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আক্রমণ করে রেলসেতু ধ্বংস করতে পারলে তাদের যোগাযোগ বন্ধ হবে। সেকশন কমান্ডার মিয়ার উদ্দিনের বাড়ি ডোয়াইবাড়ী গ্রামে। তার পরামর্শে ইজ্জতপুর রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে রেলসেতু ধ্বংস করার পরিকল্পনা করা হয়। ইজ্জতপুর গ্রামের নূরুল ইসলাম সিরাজী ও তার ভাই জসীম উদ্দিন সিরাজীর বাড়িতে ৬ ডিসেম্বর কমপক্ষে দেড়শ প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা সমবেত হন।তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন স্থানীয় তমিজ উদ্দিন। তার মাধ্যমে সেনা ক্যাম্পের খোঁজ-খবর নিই। সন্ধ্যার পর পাক সেনা ক্যাম্প আক্রমণের রেকি করি। তার দেওয়া তথ্যমতে, ৮-১০ জন পাক সেনা তখন ভারী অস্ত্রেশস্ত্রে ক্যাম্পে অবস্থান করছিল। আমরা রাত ১২টার পর পাক সেনা ক্যাম্পের আশপাশে অবস্থান নিতে শুরু করি।মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান বলেন, ৭ ডিসেম্বর ভোর ৪টায় ফায়ারের শব্দ শোনার পর পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ করা হয়। পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত মুহুর্মুহু গুলির শব্দে আশপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধারা দুদিক থেকেই পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ করতে থাকে। চলতে থাকে গুলি বিনিময়। শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের খোঁজেখানী এলাকার বাসিন্দা ও গোসিঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাহাব উদ্দিন ছিল রেলসেতুর পূর্ব পাশে থাকা দলের সামনের সারিতে। গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানেই শহীদ হন সাহাব উদ্দিন। নিহত হয় একজন পাকিস্তানি সেনাসহ চার রাজাকার। ঘটনার পরদিন ৮ নভেম্বর পাকিস্তানি সেনারা তাদের ক্যাম্প ছেড়ে চলে যায়।অপর এক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আউয়াল বলেন, ৭ ডিসেম্বর ভোর ৪টায় ইজ্জতপুরে অপারেশনে রেলসেতু ধ্বংস করা হয়। এরপর থেকেই পাকিস্তানি সেনারা শ্রীপুরের বিভিন্ন ক্যাম্প ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়া শুরু করে। কিশোরযোদ্ধা শাহাবউদ্দিন শহীদ হওয়ার চারদিন পর ১১ ডিসেম্বর বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে তার নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা ইজ্জতপুর থেকে শহীদ সাহাবদ্দিনের মরদেহ উদ্ধারে অভিযান চালায়। ওই সময় টহল ট্রেনে থাকা হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টাপাল্টি গুলিবর্ষণ চলে।১১ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে হানাদার বাহিনী শ্রীপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ১২ ডিসেম্বর ভোরে সম্পূর্ণভাবে রাজাকার ও হানাদার মুক্ত হয় শ্রীপুর। খবর পেয়ে উল্লাসিত জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে চারদিক। শ্রীপুরের মাটিতে উড়ে স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা।

গাজীপুর প্রতিনিধি



  
  সর্বশেষ
আলাউদ্দিন "মানবাধিকার খবর" এর চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ;
টুকুর মুক্তির দাবিতে গাজীপুরে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, যুবকের কারাদণ্ড
শিশুকে ধর্ষনের পর নির্মমভাবে খুন, বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‌্যাব কর্মকর্তা

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308