শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক   * কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান   * ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত   * মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি   * দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * রশিদ মিয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান ;   * কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন;   * বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলো মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য  

   প্রচ্ছদ
মানবাধিকার খবর’র সহযোগিতায় ভারতীয় কিশোরী উদ্ধার । প্রক্রিয়ায় আরও ৫ পিরোজপুরের তিন সহোদর শিশুসহ দেশে ফিরলো ৮ নারী-পুরুষ
  Date : 14-10-2019

সৈয়দ সফি :
ভারতের সেফ হোমে অমানবিক বন্দী জীবন কাটিয়ে তিন সহোদর শিশুসহ জেল খেটে ও বন্দী থাকা আরো ৬ নারী-পুরুষ দেশে ফিরেছে। তিন সহোদর হচ্ছে তানিয়া, হেনা এবং রায়হান। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রায়হান ও ২৫ সেপ্টেম্বর তানিয়া ও হেনাকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। পশ্চিমবঙ্গের দু’টি হোমে বন্দী থাকা এই তিন সন্তানকে উদ্ধারে সহযোগীতা করার পিতা-মাতার অনুরোধে একাধিকবার ভারতে যান মানবাধিকার খবরের সম্পাদক মোঃ রিয়াজ উদ্দিনকে অনুরোধ জানান। তিনি কোলকাতাস্থ বাংলাদেশের দূতাবাস ও ভারতের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিন সহোদরকে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। সন্তানদেরকে কাছে পেয়ে পিতা-মাতা একদিকে যেমন আত্মহারা হয়ে পড়েন। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে সহযোগীতা করার জন্য মানবাধিকার খবরের কাছে কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হোমে প্রায় পাঁচ মাস বন্দী জীবন কাটিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে দেশে ফিরেছে কিশোর মোঃ নাইম হাওলাদার (১১)। অন্যদিকে অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া ৮ যুবতীকে উদ্ধার করেছে হায়দরাবাদ পুলিশ। আইনী প্রক্রিয়া শেষে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠাবার ব্যবস্থা গ্রহন করবে ভারত সরকার।

পেছনের কথা :
পাচারকারিদের খপ্পরে পড়ে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের নান্টু ফরাজী ও তার স্ত্রী লাকী বেগম দুই শিশু কন্যা ও এক শিশু পুত্রকে নিয়ে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় ৬ বছর আগে ভারতে চলে যায়। নান্টু ফরাজিকে পাচারকারি দালালরা একদিন বুদ্ধি দেয় এখানে এত কস্ট না করে চলে যাও ভারতে। দিল্লিতে কাজ মিলবে। আমি দিল্লিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব। নিজেরাতো খেতে পারবে, আর কিছু টাকাও উপার্জন করতে পারবে। প্রলোভনে পড়ে যান নান্টু ফরাজি। ভাবতে থাকে তাহলে প্রস্তাবটাতো একেবারে খারাপ নয়। ভিটে মাটি বেঁচে দালাল ধরে নান্টু ফরাজি পাড়ি জমান দিল্লির পথে। সঙ্গে স্ত্রী এবং তিন শিশু পুত্র-কন্যা। ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত অবৈধভাবে পেরিয়ে দালালের মাধ্যমে পৌঁছে যান তাঁরা দিল্লিতে। হোটেলে কাজ পায় নান্টু ফরাজি। স্ত্রী লাকি বেগমের কপালেও জুটে যায় পরিচারিকার কাজ। এভাবে তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে নান্টু ফরাজি বাঁচার নতুন পথ খুঁজে পান। আশ্রয় নেয় দিল্লির বস্তিতে। সে আজ থেকে ৬ বছর আগের কথা। পরে দিল্লিতে অনেকটা স্থায়ীও হয়ে যান নান্টুর পরিবার। তিন সন্তান এবং নান্টু ফরাজি ও তাঁর স্ত্রী শিখেও ফেলে হিন্দি ভাষা। স্কুলেও ভর্তি হয় তাঁর সন্তানরা। ২০১৮ সালের দিকে বাংলাভাষীদের তাড়াতে দিল্লিতে একসময় উদ্যোগী হয় পুলিশ। নান্টু ফরাজি ভয় পেয়ে যায়। শুনেছে আসামে বাঙাালিদের তাড়ানোর খবর। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন নান্টু ফরাজির পরিবার। তাঁদের হাতেতো ভারতে বসবাসের কোনও প্রমাণ পত্র নেই। অবৈধভাবে তাঁরা বাস করছেন। থাকছেন দিল্লির বস্তিতে ।
অগত্যা নান্টু ফরাজি সিদ্ধান্ত নেন, এবার ফিরে আসবেন দিল্লি থেকে দেশের বাড়িতে। আর নয় বিদেশে। গ্রামের মাটিতেই থাকবেন। ছেলে মেয়েরাতো বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে বাস করতে পারবে। যেভাবেই হোক নিজের দেশে আহার জোটাতে পারবেন তিনি। সেই লক্ষ্য নিয়ে দেশে ফিরে আসার উদ্যোগ নেয় নান্টু ফরাজি। দালালও যোগাড় হয়ে যায়। গত বছর অর্থৎ ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস। দালালের মাধ্যমে ওরা দিল্লি থেকে ট্রেন যোগে পৌছে যায় কলকাতায়। তারপর উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার সীমান্তপথে বাংলাদেশে বেআইনিভাবে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। যথারীতি তাঁরা দালালের মাধ্যমে গোপালনগর যাওয়ার জন্য বাসে ওঠে। চাকদার সড়কপথে পুলিশ গোপনসূত্রে খবর পেয়ে আটকায় তাঁদের বাস। ওই বাসে আরও ছিল বেশ ক’জন বাংলাদেশী। তারাও পাড়ি দেবে বাংলাদেশে। নান্টু ফরাজির সঙ্গে ছিল তাঁর এক শ্যালকও। সেও দিল্লি থেকে ফিরে দেশে যাচ্ছে নান্টু ফরাজির সঙ্গে।
কিন্তু দুভার্গ্য নান্টু ফরাজির। দেশে ফেরার পথে গ্রেপ্তার হয় নান্টু ফরাজি ও তাঁর পরিবার। বাস থেকে নামিয়ে আনা হয় তাঁদের গোপালনগর থানায়। দায়ের হয় মামলা । আদালতে তোলা হয় নান্টু ফরাজির পরিবারকে। আদালত নান্টু ফরাজি ও তাঁর স্ত্রী লাকি বেগম আর শ্যালককে পাঠিয়ে দেয় কারাগারে। তাঁদের ঠাঁই হয় দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে। আর শিশু বিধায় নান্টু ফরাজির তিন সন্তানকে পাঠানো হয় পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হোমে। কারণ ওদের বিচার হয় জুভেনাইল কোর্টে। সেই ভাবে সেদিন নান্টু ফরাজিও তার স্ত্রীর হাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাদের তিন সন্তান।
বিচারে নান্টু ফরাজি ও তাঁর স্ত্রীর চার মাসের কারাদন্ড হয়। কারাদন্ড ভোগকরার পর তারা চলতি বছরের ১৯ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি পান। তারপর তাঁদের পুশব্যাক করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশে। কিন্তু যাওয়ার আগে নান্টু ফরাজি খোঁজ নিতে পারেননি তাঁর সন্তানরা কোন সরকারি হোমে আছেন। বুকভরা একরাশ ব্যথা আর কস্ট নিয়ে নান্টু ফরাজি ফিরে যান বাংলাদেশের গ্রামের বাড়িতে।
সেখানে গিয়ে কথা বলেন, পিরোজপুর ইন্দুরন্দী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে। এলাকাবাসীও জেনে যায় নান্টু ফরাজির দুর্বিষহ দিনগুলির কথা। সে শুধু বলতে থাকে, আমি জানিনা আমার তিন সন্তান এখন কোথায় রয়েছে। কোন হোমে রয়েছে তাঁরা। আপনারা তাঁকে খুঁজে দেশে এনে দিন। আমরা জানিনা কীভাবে, কোথায় ওরা বেঁচে আছে। নান্টু ফরাজির সেই ৬ বছর আগের বড় কন্যা তানিয়া আখতারের বয়স এখন ১৩, ছোট মেয়ে হেনা আখতারের বয়স ১১ আর পুত্র রায়হানের বয়স এখন ৭ বছর।
অন্যদিকে ভারতের আশ্রয় কেন্দ্রে বন্দী তিন সন্তানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসবার জন্য নান্টু ফরাজি দম্পতি অনুরোধ জানান মানবাধিকার খবর পত্রিকার সম্পাদক মোঃ রিয়াজ উদ্দিনকে। ফলে, রিয়াজ উদ্দিন ঢাকা থেকে তাদের গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে পিতা-মাতার সাথে মুখোমুখি কথা বলেন। এরপর পিতা-মাতার অনুরোধ ওই তিন শিশুকে উদ্ধারে কলকাতায় ছুটে যান মানবাধিকার খবর পত্রিকার সম্পাদক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন । তিনি কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজখবর করেন ওই তিন শিশুর। কোন সরকারি হোমে রয়েছে তারা। অবশেষে কয়েকদিনের প্রচেষ্টায় এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করে খোঁজ পান ওই তিন শিশু সন্তানের । নান্টু ফরাজির শিশুপুত্র ঠাঁই পেয়েছে কলকাতা শহরের উপকন্ঠ বারাসাতের ’কিশলয়’ হোমে। আর দুই কন্যা রয়েছে কলকাতার সল্টলেকের ’সুকন্যা’ হোমে। রিয়াজ উদ্দিন এই দুটি হোমে গিয়ে এই তিন শিশুকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কথাও বলেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। হোমের কর্মকর্তারা তাঁকে বলেছেন, কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন থেকে এঁদের ফেরত নেওয়ার চিঠি পেলে তারা বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবেন এই তিন শিশুকে। রিয়াজ উদ্দিন এই নিয়ে কথা বলেছেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের হেড অফ চ্যান্সারী বিএম জামাল হোসেনের সঙ্গে। তিনিও কথা দিয়েছেন, এই তিন শিশুকে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়ার।
এ বিষয়ে পিতা নান্টু ফরাজী মানাধিকার খবরকে জানান, আমি স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে দিল্লি থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে বনগাঁও জেলার গোপার নগর থানা পুলিশ আমাদেরকে আটক করে আদালতে পাঠায়। আদালত আমাদেরকে দমদম জেলে এবং তিন সন্তানকে পৃথক জেলে পাঠায়। জেল শেষ হলে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মুক্তি দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের তিন সন্তান তানিয়া আকতার (১৩), হেনা আকতার (১১) ও রাহান উদ্দিন ফরাজী (৯) কে অন্যত্র রাখায় আমরা বিচ্ছিন্ন ছিলাম। আমাকে ও আমার স্ত্রীকে জেল থেকে বের করে সরাসরি দেশে পাঠিয়ে দেয়ার ফলে সন্তানদের কোনো খোঁজ-খবর নেয়া সম্ভব হয়নি। যার কারণে আমরা খুবই দুঃচিন্তার মধ্যে ছিলাম। তবে, মানবাধিকার খবরের সম্পাদক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন ভারতে গিয়ে দুই দেশের সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তায় আমাদের তিন সন্তানের খোঁজ বের করার পর থেকে আমরা বেশ স্বস্তিতে আছি। সন্তানদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলিয়ে দেয়ায় আমরা আনন্দিত। সন্তানদেরকে কখন কাছে পাবো সেই সময়ের অপেক্ষায় উৎগ্রিব আমরা।

মানবাধিকার খবরের সহযোগীতা ফিরলো নাইম :
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হোমে প্রায় পাঁচ মাস বন্দী জীবন কাটিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে দেশে ফিরেছে কিশোর মোঃ নাইম হাওলাদার (১১)। তার বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া গ্রামে। এ বিষয়ে নাইমের পিতা মাসুম হাওলাদার মানবাধিকার খবরকে জানান, আমার স্ত্রী পাসপোর্ট ছাড়াই প্রায় পাঁচ মাস আগে সম্ভানকে নিয়ে ভারতের ব্যাঙ্গালোর বেড়াতে যায়। তারা দেশে ফেরার পথে বনগাঁও রেল ষ্টেশনের কাছে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে স্ত্রীকে দমদম এবং পুত্রকে বারাসাতে পৃথক হোমে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ৪ মাস বন্দী থাকবার পর স্ত্রী ছাড়া পেলেও আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় পুত্র মো ঃ নাইম হাওলাদারকে অপেক্ষা করতে হয়। পুত্রকে উদ্ধারের ব্যাপারে সহযোগীতা করার জন্য মাসুম হাওলাদার মানবাধিকার খবর সম্পাদককে অনুরোধ জানান। পিতার অনুরোধে মানবাধিকার খবর সম্পাদক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন কোলকাতাস্থ বাংলাদেশের দূতাবাস ও ভারতের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাইমের দেশে ফিরে আসবার বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। পুত্রকে ফিরে পেয়ে মানবাধিকার খবরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নাইমের পরিবার।
উদ্ধার প্রক্রিয়ায় আরো ৫ জন :
এছাড়া মানবাধিকার খবর আরো পাঁচ কিশোরকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে এনে অভিবাভকদের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা হলেন ১। আবু সাইদ (১৬). পিতা: কাসেম আলী মন্ডল, মাতা: আসমা বেগম, গ্রাম : রঘুনাথপুর, খালদাহ রোড, কোতওয়ালী যশোর। ২। রাসেল গাজী (১২) পিতা : মোসলেম, মাতা : মৃত ফুলি বেগম, গ্রাম : কামার ডাঙ্গা গোয়াল পোতা যশোর। ৩। মোঃ নিজাম মোল্লা, পিতা- মোঃ ইউসুফ আলী মোল্লা, মাতা- জাহানারা বেগম, গ্রাম- ধানসাগর, উপজেলা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট। উল্লেখ্য নিজাম মোল্লা গত ২৪ আগস্ট সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে অসাবধানতাবসত সমুদ্রের পানিতে পড়ে যায়। সে ভাসতে ভাসতে ভারতের সিমানায় পৌছালে স্থানীয় জেলেরা তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে সে পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার রায় দীঘি থানায় আছে। ৪। মোঃ মেহেদী হাসান (১৩) পিতা: মনির হাওলাদার, মাতা: লাইকলি বেগম, সাং : উত্তর সাউথখালি পোস্ট: তাফাল বাড়ি থানা: শরনখোলা জেলা: বাগেরহাট। ৫। ওয়াহিদ হাসান (৩৮), পিতা- মোঃ ওলিউল ইসলাম, নওগা সদর, নওগা। উল্লেখ্য ওয়াহিদ হাসান কম্বোডিয়ায় ট্যুরিষ্ট ভিসা নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে দেশে ফিরতে পারছে না।
তিন বছর জেল খেটে ফিরলো ৪ যুবক :
অন্যদিকে ভাল চাকুরির প্রলোভনে দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধ ভাবে তিন বছর আগে চার য্বুক ভারতে যায়। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হয়।
ভারতে ৩ বছর জেল খাটার পর ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকালে ভারতের হরিদাসপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বেনাপোল চেকপোষ্ট বিজিবির কাছে ৪ বাংলাদেশী যুবককে হস্তান্তর করে। পরে বিজিবি তাদেরকে বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পোর্ট থানার পুলিশ তাদেরকে পরিবারের হাতে তুলে দেন। ফেরত আসা বাংলাদেশি যুবকরা হলো ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার হামিরবি গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে আসাদুল (২৪), নবাব আলীর ছেলে আরিফ খান (২৪),জিন্নাত আলীর ছেলে পয়সা খান (২৯)ও সাত্তার মিয়ার ছেলে জাহিদ (২৩)। ফেরত আসা জাহিদ জানান, ভারতে ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে তাদের এলাকার মুজিদ নামে এক দালালপ্রতি জনের কাছ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে নিয়ে যায়। পরে দালাল তাদের কোলকাতা স্টেশন এলাকায় কাজ করার সময় কর্তব্যরত পুলিশ তাদের আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে। ৩ বছর জেল খেটে দেশে ফিরলাম।
বেনাপোল আইসিপি বিজিবি ক্যাম্পে কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার বাকী বিল্লাল জানান, দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের মাধ্যমে তাদেরকে স্বদেশ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ফেরত আনা হয়েছে। তাদেরকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ হস্তান্তর করা হয়েছে। বেনাপোল পোর্ট থানার এএসআই
বাংলাদেশি আট যুবতী ভারতে উদ্ধার :
ভারতে পাচার করে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করানো ৮ বাংলাদেশি যুবতীকে উদ্ধার করেছে ভারতের জাতীয় অনুসন্ধান বিষয়ক ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এ অভিযানে আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ২০ জনকে। বাংলাদেশ থেকে যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করার জন্য নারী পাচার বিরোধী অভিযান চালানো হয় হায়দরাবাদের বিভিন্ন স্থানে। দু’দিনের এই অভিযান পরিচালিত হয় আম্বারপেত, মোঘলপুরা ও বালাপুরে। এতে যৌথভাবে অংশ নেয় হায়দরাবাদের গোয়েন্দা এজেন্সি, হায়দরাবাদ ও রাচাকোন্দা পুলিশ কমিশনারেট। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেকান ক্রনিকল। গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে এসব অভিযান চালানো হয়। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে নারীদের পাচার করে জোর করে তাদেরকে দিয়ে পতিতাবৃত্তি করানো হচ্ছে অথবা তাদেরকে দিয়ে গোপন পতিতালয় চালানো হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ২১ সেপ্টেম্বর অভিযান চালানো হয় মোঘলপুরা এবং আম্বারপেত এলাকায়। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ৭ যুবতীকে। আটক করা হয় ১৮ জনকে। আর ২২ সেপ্টেম্বর অভিযান চালানো হয় বালাপুরে। সেখান থেকে ৮ বাংলাশিকে উদ্ধার ও বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ দেখতে পেয়েছে ওইসব যুবতীকে অবৈধ উপায়ে ভারতে নেয়া হয়েছে। দালালরা বাসা ভাড়া নিয়ে তাতে ওইসব যুবতীকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করাতো। পুলিশ বিষয়টিতে নিশ্চিত হয়েছে। হায়দরাবাদ পুলিশের সিনিয়র একজন কর্মকর্তা বলেছেন, উদ্ধার অভিযান সম্পর্কিত আলাদা তিনটি মামলা করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া যুবতী এবং তাদেরকে দিয়ে দেহব্যবসা করানো ব্যক্তিরা বাংলাদেশি। জানা গেছে, সীমান্ত এলাকায় অবস্থানরত এক ব্যক্তি পাচারে সহযোগিতা করে। উদ্ধার হওয়া যুবতীরা বর্তমানে ভারত সরকারের হেফাজতে রয়েছে। সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষে তাদেরকে দেশে পাঠানো হবে।

উদ্ধার কাজে সহায়তায় দিয়ে আসছেন যারা :
মানবাধিকার খবরের সম্পাদক ও প্রকাশক রোটা. মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, পাচার হয়ে যাওয়া নারী-শিশু উদ্ধার কাজে দু’দেশে যাদের সহযোগীতা-সহায়তা পেয়েছেন তারা হচ্ছেন, কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, কাউন্সিলর ও হেড অব চ্যাঞ্চেলর মিয়া মো. মাইনুল কবির, ফাষ্ট সেক্রেটারী (প্রেস) মো. মোফাক্কারুল ইকবাল, কাউন্সিলর বি এম জামাল হোসেনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ও কাজী রিয়াজুল হক, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি গিরিশ চন্দ্র গুপ্ত, পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নপরাজিৎ মূখার্জি, রাজ্য সভার সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, লোকসভার সংসদ সদস্য ও চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান শ্রীমতি প্রতিমা ম-ল, আলিপুর ভবানী ভবনে দক্ষিন ২৪ পরগনায় জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রীমতি শান্তি দাস, জেলা ইন্টেলিজেন্ট ব্রাঞ্চের নিবেদিতা তালুকদার এডিশন সেক্রেটারি ফরেনার্স গভ পশ্চিমবঙ্গ হোম ডিপার্টমেন্ট গৌরাঙ্গ সরকার। জেলা শিশুরক্ষা সমিতির কর্মকর্তা অনিন্দ ঘোষ, কলকাতার সল্টলেকে বিকাশ ভবনে অবস্থিত শিশু রক্ষা প্রোগ্রাম ম্যানেজার সুচরিতা, প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি অমর সাহা, মানবাধিকার খবর পত্রিকার কলকাতা প্রতিনিধি দিশা বিশ্বাস, ভারত প্রতিনিধি মনোয়ার ইমাম, বারাসাত প্রতিনিধি প্রদীপ রায় চৌধুরী, মানবাধিকার খবরের কলকাতাস্থ আইন উপদষ্টা রাজীব মুখার্জি, নিলোৎপল মৈত্র প্রমুখ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : ভারতীয় কিশোরী উদ্ধোরের খবরটি আন্তর্জাতিক পাতায় পড়–ন।



  
  সর্বশেষ
খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক
কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান
৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308