বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * কুড়িগ্রামের সার সংকটের সারকথা, কৃষকদের মানববন্ধন   * সাতক্ষীরার তালায় টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন   * ধর্ষণ মামলায় ভৈরব সার্কেল কর্মরত এএসপি নাজমুস সাকিবকে গ্রেফতার না করায় বাদীর ক্ষোভ   * ৪ কোটি টাকার কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার, শ্রীপুরে আঞ্চলিক সড়কের ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ   * কালীগঞ্জ রোকেয়া মনসুর মনসুর মহিলা কলেজে নবীন বরণ ও সাংস্কৃতকি অনুষ্ঠান   * পূজামণ্ডপে বশিৃঙ্খলার চষ্টো করা হলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হব-ে সাতক্ষীরা পুলশি সুপার মনরিুল ইসলাম   * কুড়িগ্রামে দুধকুমারের পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, প্লাবিত সব নিম্নাঞ্চল   * সাতক্ষীরায় শিক্ষক কর্মচারীদের অবসর ভাতা প্রদান   * মিস অ্যান্ড মিসেস এলিগ্যান্স বাংলাদেশ ২০২৫ অনুষ্ঠিত   * চিতলমারীতে ড্রেনের পানি উপচে পড়ছে সড়কে, জনদুর্ভোগ চরমে  

   বিশেষ প্রতিবেদন
আট বছরেও বিচার পেল না ফেলানীর পরিবার
  Date : 11-02-2019

সীমান্তে হত্যাকান্ডের নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত : উপেক্ষিত মানবাধিকার  

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আট বছর আগে যে হত্যাকা- বিশ^ বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ঝড় তুলেছিল সারা দুনিয়াজুড়ে। থমকে দাঁড়িয়েছিল মানবতা। সকল নৃশংসতা যেখানে হার মেনেছিল। সেই হত্যার বিচার এখন পর্যন্ত পেল না কিশোরী ফেলানীর পরিবার। এই ধরণের জঘন্যতম হত্যা কা-ের বিচার কার্য দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে চরমভাবে মানবাধিকার উপেক্ষিত হচ্ছে। ফেলানী হত্যাটি বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের ওপর ভারত সরকারের সীমান্ত ভূমিকার একটি নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।
এখন থেকে আট বছর আগে জীবিকার সন্ধানে সেদিন মা-বাবার সঙ্গে ইটভাটায় কাজ করতে ভারতে গিয়েছিল ১৪ বছর বয়সী বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানী। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরবেলা কাঁটাতারের প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে নিজ দেশে ফেরার চেষ্টা করে ফেলানী। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কিশোরী ফেলানীকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলি করার পর তাকে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। চার ঘণ্টা প্রাণ নিয়ে পানি পানি করে চিৎকার করতে থাকে ফেলানী। কিন্তু ভারতীয় নরপিশাচদের কাছে এক ফোটা পানিও পায়নি বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানী। এক সময় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত এলাকায়
কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় ছটফট করতে করতে তার মৃত্যু ঘটে। দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারের বেড়ার ওপরেই ঝুলিয়ে রাখা হয় ফেলানীর নিথর দেহ। এই অমানবিক ঘটনার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিএসএফ’র পৈশাচিক-বর্বোরচিত এই হত্যাকা- নিয়ে দুনিয়াজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনা চলতে থাকে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এই হত্যাকা-ের জন্য বিএসএফের তীব্রনিন্দা জানায়। শুধু তাই নয় কথিত বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশীর এই দেশটির প্রতি ভারতীয়দের কেমন দৃষ্টিভঙ্গি সেটিও দেখতে পায় বিশ্ববাসী। ফেলানী হত্যাকে বাংলাদেশের ওপর ভারতের আগ্রাসী ভূমিকার নিকৃষ্ট উদাহরণ উল্লেখ করে নিন্দা জানায় বিভিন্ন সংস্থা। বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড়ের পর বিএসএফের ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের কনেস্টেবল অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দ-বিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন এবং বিএসএফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু বিএসএফ’র নিজস্ব আদালত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে (জিএসএফসি) ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দুই দফায় যে প্রহসনমূলক বিচার হয়েছিল তাতে ফেলানি হত্যার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ রায়ে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় বাংলাদেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে। ফলে মামলাটি আবার পুনর্বিচেনার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ফেলানীর পিতা নুরুল ইসলাম নুরু এবং ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) অভিযুক্তের শাস্তি এবং পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে রিট আবেদন করে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবির মামলাটি দুবার শুনানি ছাড়া সেই মামলারও কোনো অগ্রগতি নেই। আজও সেই বিচারের পথ চেয়ে আছে হতভাগা কিশোরীর পরিবার। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে ফেলানী খাতুন হত্যা মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। হত্যার আট বছরেও ন্যায়বিচার নিয়ে এখনো সন্দেহ প্রকাশ করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
হত্যা প্রসঙ্গে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বিএসএফের বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার না পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মাসুমের সহযোগিতায় রিট আবেদন করেছি। ভারতের সর্বোচ্চ এ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেন, আমি ভারতের কাছে মেয়ে ফেলানী হত্যার সুষ্ঠু ও ন্যয় বিচার চাই। বিচারের তারিখ বারবার পরিবর্তন হওয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি। ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে কাঁটাতারের বেড়ায় নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ। আমি ভারতের উচ্চ আদালতে তার ফাঁসি চাই। তিনি বলেন,অমিয় ঘোষের ফাঁসি হলে ফেলানীর আত্মা শান্তি পাবে।।
অন্যদিকে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামের আইন সহায়তাকারী ও কুড়িগ্রাম আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্রাহাম লিংকন সাংবাদিকদের জানান, কাঁটাতারে ফেলানী হত্যার ঘটনা ৭ বছর পেরিয়ে ৮ বছওে পড়েছে। ন্যায়বিচার না পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করেছেন ফেলানীর বাবা। রিট আবেদনের ভিত্তিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারণ থাকলেও বেঞ্চ পুনর্গঠনের কারণে পিছিয়ে গেছে বিচারিক কার্যক্রম। বিলম্ব হলেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। ওই হত্যার পর থেকে সীমান্তে হত্যার বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচনায় আসে। ভারত সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। ফেলানীর হত্যার পরও অসংখ্য বাংলাদেশিকে প্রতিনিয়ত জীবন দিতে হচ্ছে প্রতিবেশী এই দেশটির সীমান্তরক্ষীর হাতে।



  
  সর্বশেষ
কুড়িগ্রামের সার সংকটের সারকথা, কৃষকদের মানববন্ধন
সাতক্ষীরার তালায় টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন
ধর্ষণ মামলায় ভৈরব সার্কেল কর্মরত এএসপি নাজমুস সাকিবকে গ্রেফতার না করায় বাদীর ক্ষোভ
৪ কোটি টাকার কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার, শ্রীপুরে আঞ্চলিক সড়কের ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308