সোমবার, মে ১৩, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে এয়ার অ্যারাবিয়ার ফ্লাইটে ত্রুটি, শারজাহগামী ১৬৪ জন যাত্রী হোটেলে   * চট্টগ্রাম বোর্ডে এবারও শীর্ষে বন্দর নগরীর স্কুলগুলো   * চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় মোবাইল চার্জার এর পরিবর্তে ল্যাপটপ   * চিতলমারীতে বিশ “মা” দিবস পালিত   * কচুয়ায় বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   * ২দিন ব্যাপী কক্সবাজারের ডিসি সাহেবের বলীখেলা সম্পন্ন: চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ   * কুড়িগ্রামে গরীবের আলু, কাঁচা মরিচেও চোখ মধ্যস্বত্তভোগীদের   * রামগঞ্জ শিশু পার্ক সামনে ফিটফাট ভিতরে ফাঁকা মাঠ   * কচুয়ার রাধামাধব মন্দিরে শ্রীশ্রী অক্ষয় তৃতীয়া উদযাপন   * বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য এক হার না মানা মা  

   প্রচ্ছদ
আমরা এখনও আইনের সু-শাসন দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি
  Date : 10-12-2017

১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতির সামগ্রিক অবস্থা ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী রিয়াজুল হকের সাথে মানবাধিকার খবরের একান্ত সাক্ষাৎকারের বিশেষ অংশ তুলে ধরা হলো ঃ

মানবাধিকার খবর ঃ ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার কি জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকারের ৩০টি ধারার প্রয়োজনীয় সম্পর্কে পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ ১০ই ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, ১৯৪৮ সালের এই দিনে বিশ্বের শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের উদ্যোগে প্যারিসে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের মানবতাবাদী অধিকার সংরক্ষণের ঘোষণা জারী করা হয় সে সম্মেলনে। এটাকে আমরা মানবাধিকারের সনদও বলতে পারি। সে সম্মেলনকে “প্যারিস প্রিন্সিপাল” হিসেবে বলা হয়, এতে জাতিসংঘের একটা গাইড লাইন রয়েছে যে প্রত্যেকটা দেশে অন্তত একটি করে “জাতীয় মানবাধিকার কমিশন” থাকতে হবে। যা কিনা রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট আইনের বলে এই কমিশন গঠিত হবে জাতিসংঘের প্রত্যেকটি সদস্য রাষ্ট্র এ ঘোষণা মানবাধিকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে। বাংলাদেশ সংবিধানে ১৯৭২ সালে এই ঘোষণাগুলো সংবিধানের “ফান্ডামেন্টাল রাইটস থ্রি’তে সু-স্পষ্ট ভাবে সন্নিবেশিত হয়ে গৃহীত হয়। যদিও এ ঘোষনাগুলো সবার জন্য বাধ্যতামূলক ছিল না তবুও সব রাষ্ট্র জাতিসংঘের ঘোষনাগুলোকে সাদরে গ্রহণ করে তাদের মানবাধিকার সংবিধানে ও দলিলে বিষয়টি রেখেছে। বাংলাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন হয় ২০১০ এ, ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদে সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ এর ভিত্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়। জাতিসংঘের ঘোষণাতে ছিল সাম্যের কথা, সমতার কথা, ন্যায় বিচারের
কথা, বৈষম্যহীনতার কথা, প্রত্যেকটা মানুষ যে জন্মগত ভাবে সমান অধিকার রাখে, সব রকম সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অধিকার তার আছে এগুলো তিরিশটি অনুচ্ছেদে সু-স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মানবাধিকার খবর ঃ বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি সামগ্রিক ভাবে কি অবস্থায় আছে বলে আপনি মনে করেন?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ জাতিসংঘের মানবাধিকারের হাই-কমিশনার বলেছিলেন এ বছরটি মানবাধিকার পরিস্থিতির কঠিন একটা সময়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে প্যালেস্টাইন সমস্যা, সিরিয়া সমস্যা, ইরাক সমস্যা ইত্যাদি। সেদিন স্পেনে যে ঘটনাটি ঘটলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে, আমাদের বাংলাদেশও এ সমস্যা থেকে মুক্ত নয়, যেমন কিছুদিন পর পর জঙ্গী ঘটনা ঘটছে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিলক্ষিত হচ্ছে, মাথা গজিয়ে উঠছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও জঙ্গী বাদ। যেমন হলি আর্টিজান থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় তাদের হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছে, এটা আমাদের জন্য মানবাধিকারের অনেক বড় হুমকি। এছাড়াও দেশের মানুষ তাদের বিভিন্ন অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে, যদিও সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। মানুষের প্রধান ৫টি মৌলিক চাহিদা হচ্ছে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা। মোটামোটি ভাবে আমরা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। চিকিৎসা সেবাকেও আমরা দোর-গোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি, আমরা শিক্ষার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কিছু পর্যায়ে অবৈতনিক ঘোষণা দিয়েছি। সরকার জনগণের উদ্দেশ্যে এও বলেছে আমরা আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করব। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে সব ধরণের পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে। তার পরেও আমি বলব সরকারী পদক্ষেপের সুবিধা মানুষ পুরোপুরি ভাবে পাচ্ছেনা, কারণ এসব কাজে দায়িত্বরত কিছু অসাধু কর্মকর্তার অসৎ কারসাজিতে মানুষ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালে গেলে রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা পায়না, অথচ প্রত্যেকটা জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে স্যাটেলাইট ক্লিনিক করে দেয়া হয়েছে। আবার লোকজন থানায় কেইস দিতে গেলে বা মামলা করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করছে না, আমরা এখনও আইনের সু-শাসন দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি, যারা আইনকে অবজ্ঞা করছে তারা পুলিশ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সামনেই ঘুরফেরা করছে অথচ কেউ তাদের কিছু বলতে পারছে না, তাদের গ্রেফতারও করতে পারছে না, যদিও পুলিশ চাইলে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে সেটা আমরা জঙ্গী দমনে প্রমান পেয়েছি, কিন্তু কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনের কারণে পুলিশ তার হাত খুলে কাজ করতে পারছে না আর তাই মানবাধিকার চরম ভাবে লংঘন হচ্ছে। সেজন্য বলব মানবাধিকার বিষয়ে আমরা গর্ববোধ করার মত অবস্থানে আসিনি। সে পর্যায়ে যেতে মানবাধিকার কমিশন ও সরকারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

মানবাধিকার খবর ঃ মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন ও হত্যা নির্যাতন সহ বহিঃ বিশ্বের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর যে জাতিগত নিধন হচ্ছে, অত্যাচার ও নির্যাতন হচ্ছে, অগ্নি সংযোগ হচ্ছে, নির্বিচারে মানুষকে হত্যা, নারীদেরকে ধর্ষণ করছে, মায়েদের সামনে সন্তানদের আগুনে নিক্ষেপ করা, এটা শুধুমাত্র মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় এটা গণহত্যার শামিল, এটা একটা জাতীকে চীরতরে নিঃশেষ করে দেয়ার ভয়ংকর পরিকল্পনা, এ ব্যাপারে আমর বহুবার সোচ্চার ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছি, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ভাবে জঘন্য চিত্রগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সম্প্রতি যে “পারমানবিক ট্রাইব্যুনাল” হলো কুয়ালালামপুরে সেখানে আমরা প্রতিবাদ করেছি ও সাক্ষ্য দিয়েছি, ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত “মানবাধিকার কনফারেন্স” -এও আমরা বলেছি, সেখানে তুর্কির প্রেসিডন্টেও উপস্থিত ছিলেন, ২৫ আগষ্ট থেকে যখন নির্যাতনটি শুরু হয় আমরা জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটের হাই কমিশনার বরাবর আমাদের প্রতিবাদ জানাই, যেহেতু মিয়ানমার এশিান রাষ্ট্র তাই আমরা “এশিয়ান সেক্রেটারী জেনারেল” এর কাছেও প্রতিবাদ জানাই, বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের “মানবাধিকার কমিশন” গুলোকেও আমরা আমাদের আহ্বান জানাই, যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ইত্যাদি যারা ম্যাটার করতে পারবে। আমরা মানবাধিকার কমিশনের “গ্লোবাল ফোরাম” এ লিখিত আহ্বান জানিয়েছি। আমরা এশিয়া প্যাসিফিকের চেয়ারম্যানের কাছেও লিখেছি। পাশাপামি প্রতিবেশী দেয় ভারতের কাছেও আমরা লিখিত প্রতিবাদ জানাই। আমরা মায়ানমারকেও অমানবিক ঘটনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছি, তাদের দেশের মানবাধিকার কমিশন অবশ্য আমাদের কাছে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। আমাদের সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন রকম মহান উদ্যোগ নিয়েছে, বিশেষ করে আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্ববাসী দেখেছে, তাঁর দেয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি সকল আশ্বাস তিনি পূর্ণ করেছেন। যার কারণে বিশ্বাবাসী তাঁকে “মাদার অব হিউম্যানিটি” খেতাব দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মত এমন একটা রাষ্ট্রের পক্ষে এ মানুষগুলোর মানবাধিকার সংরক্ষণ করা খুব কঠিন ব্যাপার। ২৫ আগষ্টের পর থেকে প্রায় ছয় লক্ষ পঁচিশ হাজার রোহিঙ্গা এদেশে এসেছে। এদের মধ্যে পয়ষট্টি ভাগ নারী ও শিশু, যার সংখ্যা চার লাখেরও বেশী। তাদের মধ্যে শিশুরা বিভিন্ন প্রকার পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হবার ঝুকিতে রয়েছে। যদিও সরকার পান করার উপযোগী পানির ব্যবস্থা সহ আশ্রয় কেন্দ্র গড়েছেন, তথাপি ঝুকি থেকেই যায় এতগুলো মানুষ যেখানে বসবাস করছে। তাদের জন্য স্যানিটেশনেও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আমরা কিন্তু অনেক বড় আতঙ্কের মধ্যে আছি, এতগুলো মানুষের মধ্যে “সেক্সসুয়াল ভায়োলেন্সের আশঙ্কা রয়েছে। যদিও আর্মি, পুলিশ ও আইন শৃংখলা বাহিনী সেখানে কর্তব্যরত আছে, তবুও কোন রকম পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠিন হয়ে যাবে। মায়ানমার যে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে তাদের হত্যা করে, জুলুম করে, নির্যাতন করে নিজের দেশ থেকে বের করে দিল, এ সমস্যার সমাধান এখন মায়ানমারকেই করতে হবে। আমরা যেটা করতে পারি সেটা হচ্ছে মিয়ানমারের উপর আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা। সেটা সরকার এর পক্ষ থেকে করা হয়েছে এবং মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকেও অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ২৪ আগষ্ট জাতি সংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান তার একটি বিশেষ রিপোর্ট পেশ করেন, আমরা সে রিপোর্টটি যেন বাস্তবায়ন হয় সে জন্য চাপ প্রয়োগ করছি। ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ৫ দফার প্রস্তাব দিয়েছেন, তার মধ্যে কফি আনানের রিপোর্টটি যেন বাস্তবায়ন হয়, অতি সত্ত্বর মায়ানমার যেন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যায়, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি সেইফ জোন করে যেন তাদের রাখা হয়, রোহিঙ্গাদের যেন সব ধরণের নিরাপত্তা দেয়া হয় ও তাদের সাধারণ নাগরিকের অধিকার দেয়া। যদি ৫ দফা গৃহিত হয় তাহলে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ এ ধরণের নিরাপত্তার হুমকি থেকে রেহাই পাবে।

মায়ানমারে রোহিঙ্গা সহ আরো অনেক মিলিট্যান্ট গ্রুপ রয়েছে, এরাও যেকোন সময়ে উগ্র হয়ে যেতে পারে। আমাদের সরকার জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো পারসেন্ট টলারেন্স ঘোষণা দিয়েছে। আমরা কোন জঙ্গীদের আমাদের ভূমি ব্যবহার করতে দিবনা, তারপরেও আশংকাতো থেকেই যায এতো মানুষ এক সঙ্গে এসেছে কে ভাল কে জঙ্গী বোঝার কোন উপায়ও নেই। এরা যেকোন রকম সমস্যা সৃষ্টি করবেনা তাও বলা যাবে না। এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশে হবে তা কিন্তু নয় মায়ানমারের এই বিষফোড়া তাদের দেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ছড়িয়ে পড়বে, ছড়িয়ে পড়বে জঙ্গীবাদ। তাই মায়ানমার যে পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে আমি বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে বলবো তারা যেন নিজের এবং বিশ্বের শান্তির কথা ভেবে রোহিঙ্গাদের অতিসত্ত্বর ফেরত নিয়ে যায়। পাশাপাশি তাদের নাগরিক সকল অধিকার যেন ফিরিয়ে দেয়।

মানবাধিকার খবর ঃ বাংলাদেশের সাথে ভারত ও মায়ানমার সিমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশীদের হত্যা নির্যাতন সহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, হত্যা নির্যাতন বন্ধে উভয় দেশ উদ্যোগ নিলেও কোন কাজে আসছে না, এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য ও পরামর্শ কি?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ আমরা এ যাবত ৪ দফা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে পরিদর্শন করেছি। তদের মুখেই শুনেছি পালিয়ে আসার সময়ও তাদের পেছন থেকে গুলি করে মেরেছে, মাটিতে পুতে রাখা বোমা ফেটেও অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যেটা পাশবিকতার হিটলরের গ্যাস চেম্বারকেও হার মানিয়েছে। মায়ানমার হয়তো বুঝতে পারছে না দেয়ালে পীঠ ঠেকে গেলে মানুষ অনেক কিছু করতে বাধ্য হয়, তেমনি রোহিঙ্গা মিলিট্যান্ট একসময় জঙ্গীসংগঠন হয়ে ছড়িয়ে পড়বে সবদিকে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত মায়ানমারের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে পারত কারণ তারাও নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। চীন ও এ হুমকি থেকে মুক্ত নয় অথচ তারা “সিকিউরিটি কাউন্সিলে” ভেটো দিল, যেখানে তাদের সাম্যের কথা, মানবতার কথা বলা উচিত ছিল। তাই রোহিঙ্গাদের জঙ্গী তৎপরতার দিকে ধাবিত না করে রাশিয়া, চীন ও ভারতের দরকার মায়ানমারকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান টানা, নয়তো এর কুপ্রভাব বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ ভোগ করবে। এ ধরণের পরিস্থিতিতে একটা দেশে টেরোরিষ্ট মিলিট্যান্ট গ্রুপ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক।

মানবাধিকার খবর ঃ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার রক্ষা ও জনকল্যাণমূলক একটি প্রতিষ্ঠান। কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই স্বাধীন ভাবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে পারছে কি?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ মানবাধিকার কমিশন রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত সম্পূর্ণ একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, একটা আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র এ কমিশন তৈরী করে। আমরা সব সময় স্বাধীন ভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে খবর পেয়েছি মানবাধিকার লঙ্ঘন হ”েছ আমরা ছুটে গিয়েছি, যেমন নাসির নগরেও ছুটে গেছি তাদের পরিস্থিতির কথা শুনে। পুলিশ যখন কোন ভিকটিমের কেইস নিতে চায়না আমরা খবর পেলে তাদের কেইস নিতে মবাধ্য করি। যদি কোন মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে অথবা গুম হচ্ছে আমরা তাদের জন্য বিভিন্ন স্তরে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাপ সৃষ্টি করছি। আমাদের প্রতি সরকারের সুনজর থাকা সত্ত্বেও আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণে আমাদের প্রয়োজনীয় লজিষ্টিক সাপোর্ট নেই, পাশাপাশি আমাদের পর্যাপ্ত জনবলের অভাব রয়েছে। তাই তাঁদের সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করে এ ধরনে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। আমরা যদি আমাদের প্রয়োজনীয় জনবল পেয়ে যাই তাহলে আমরা মানবাধিকার কার্যক্রমে অনেক বেশী কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবো। আমাদের আইনে আছে প্রত্যেকটা উপজেলায় আমাদের নিজস্ব অফিস থাকতে হবে। আমি অনেকটা জোর করেই সারা দেশ জুড়ে মাত্র দুটি অফিস করতে পেরেছি, একটি হচ্ছে রাঙ্গামাটিতে আরেকটি খুলনাতে অবস্থিত। আমাদের ইচ্ছে আছে প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে কার্যক্রম চালাতে ও অফিস করতে, কিন্তু সেজন্য আমাদের পর্যাপ্ত জনবল ও লজিষ্টিক সাপোর্ট দিতে হবে।

মানবাধিকার খবর ঃ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সমাজে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে কি কি কাজ করছে? ভবিষ্যতে কি ধরণের কাজ করতে চায়?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ আমি আগেই বলেছি সরকার কর্তৃক জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ এর ভিত্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ২০১০ সাল প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এর আগে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আরেকটি কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, যা কিনা একজন আপিল বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে হয়েছিল। আমি এই কমিশনের জন্ম লগ্ন থেকেই সাথে আছি। তখন এই কমিশনের কোন লজিষ্টিক সাপোর্ট ছিল না। এই কমিশন আসার পর আমরা কাজ করতে শুরু করি। প্রথমেই আমরা একটা জরিপ করেছিলাম, আমাদের কোথায় কোথায় ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন রয়েছে, আমরা পেয়েছিলাম রিলিজিয়াস মাইনরিটি, আমাদের ইথনিক মাইনরিটি, আমাদের নারী, আমাদের শিশুরা, এই যে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি রয়েছে আমরা সেগুলোকে আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করেছি, তারপর প্রত্যেকটা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ করার জন্য সেই থিমের উপর ভিত্তি করে একটি থিমেটিক কমিটি গঠন করেছিলাম যেমন ঃ রিলিজিয়াস মাইনরিটি থিম, ইথনিক মাইনরিটি থিম এর উপর ভিত্তি করে থিমেটিক কমিটি গঠন করি। সমাজে অন্য গোত্রের লোকও রয়েছে যেমন ঃ বেদে, ঋষী, কুমার, কামার, জেলে ও মুচি ইত্যাদি তাদের জন্যও আমরা কমিটি গঠন করেছি। আমাদের প্রত্যেকটি কমিটি গঠিত হয়েছিল এন,জি,ও প্রতিনিধি ও কিছু সরকারী কর্মকর্তা দ্বারা। যে যে জায়গায় ঝুঁকি রয়েছিল আমরা সেগুলিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। তাদের জন্য যে আইন প্রণয়ন করার দরকার ছিল সেই আইনের খসরা আমরা সরকারের কাছে জমা দিই, যেমন শিশু আইনের যে খসরা আমরা দিয়েছিলাম পরবর্তীকালে সেটার আলোকে সরকার একটি শিশু আইন প্রণয়ন করে ২০১৩ সালে। আমরা বাল্য বিবাহ নিরোধের জন্য একটা খসড়া দিয়েছিলাম যার অনেকাংশ সরকার নিয়ে বাকিটা তাদের মত করে সাজিয়ে একটি বাল্য বিবাহ আইন প্রণয়ন করে, যেগুলো আমাদর খসড়াতে উল্লেখ ছিল না। আমরা প্রত্যেকটা জেলাতে বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে এন,জি,ও প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, মিডিয়া পিপলস ও মানবাধিকার কর্মী নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সভা-সেমিনার করে গণ সচেতনতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেছি। আমরা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার ও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে সম্প্রচার করেছি। অটিজমের উপর আমরা ডকুমেন্টারি করেছি, জঙ্গী তৎপরতা ও বাল্যবিবাহ নিয়েও ডকুমেন্টারি তৈরী করেছি। এগুলো ব্যয়বহুল ব্যাপার, এগুলো আমরা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে দেখাবার চেষ্টা করব। আরেকটি কথা না বললেই নয় একটি এন,জি,ও প্রতিষ্ঠান সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরে রেজিষ্ট্রেশন করে মানবাধিকার কমিশন নাম দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিভিন্ন জায়গায় অফিস খুলে লোকজন থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে কাজ করছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি এ ধরনের ভূয়া প্রতিষ্ঠানের সাথে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ মানবাধিকার কমিশনের দুটি অফিস রয়েছে প্রধান কার্যালয় ছাড়া, একটি রাঙ্গামাটিতে ও একটি খুলনাতে। যখন আমরা সরকারকে এই ভুয়া মানবাধিকার কমিশন নামের এন,জি,ও টির কথা জানাই, তখন সরকার মানবাধিকার কমিশন নামের এন,জি,ও টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাদের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করে দেয়। তারপরেও শোনা যায় তারা মানবাধিকার কমিশন নাম ধারণ করে গোপনে মতাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। হাতিয়ে নিচ্ছে মানুষের কষ্ট অর্জিত টাকা, এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। অথচ আমাদের সেবা জনগণের জন্য বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে, আমরা জনগণের জন্য আইনজীবি থেকে শুরু করে সমস্ত আইনি পদক্ষেপ বিনামূল্যে নিয়ে থাকি। টাকা গ্রহণ করবার আমাদের কোন নিয়ম বা সুযোগ কোনটাই নেই। জনগণ একটি দরখাস্ত না লিখতে পারলেও আমরা তা লিখে দিই, সাথে ষ্ট্যাম্পও ফ্রি দিয়ে থাকি। অভিযোগকারী নিজে এসে অভিযোগ দাখিল করতে পারে, তাদের কোন উকিল নিয়োগ করতে হয়না। অর্থাৎ মানবাধিকার কমিশনের সেবা পেতে কোন পয়সা খরচ করতে হবে না। আমাদের বেতন-ভাতা ও খরচ রাষ্ট্র বহন করছে। আমর াআবার এমন প্রতিষ্ঠানের কথাও শুনেছি যারা বিনামূল্যে মানুষকে আইনি সহায়তা করছে, অসহায় মানুষের পাশে দাড়াচেছ। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই, এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার কাজ।

মানবাধিকার খবর ঃ মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্বের একমাত্র নিয়মিত সৃজনশীল জনপ্রিয় বাংলা প্রকাশনা মানবাধিকার খবর তার লেখনি ও সংবাদ প্রকাশের মাধমে অধিকার বঞ্চিত অসহায় মানুষের সেবা প্রদান করছে। এছাড়া দেশ-বিদেশ থেকে নারী ও শিশু উদ্ধার, আইনি সহায়তা, চিকিৎসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ত্রাণ বিতরণ ও দারিদ্রের সহায়তা সহ নানাবিদ সমাাজিক কাজ করে যাচ্ছে। মানবাধিকার খবরের কর্মকান্ড সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ আমি আপনাদের কয়েকটি সংখ্যা পড়ছি বিশেষ করে ভাল লেগেছে ভারত বা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যাওয়অ নারী ও শিশু উদ্ধার কাজটি। এসব কাজ করতে বিভিন্ন মানুষের সরণাপন্ন হয়েছেন, পুলিশের কাছে গেছেন, কোট-আদালতে গিয়েছেন এই কাজগুলি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ, আমাদের দেশের সমস্যা এটা রাষ্ট্রের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব না বা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে একা করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা মানবাধিকার খবর যে কাজগুলো করেছেন আমি এতটুকু জানি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ এবং আমি সাধুবাদ জানাই আপনাদের, কারণ আপনারা সমস্যা চিহ্নিত করেছেন এবং সমাধানের ক্ষেত্রেও সাধ্যমত চেষ্টাও করেছেন। আমি আশা করব আপনারা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এ কাজগুলো করে যাবেন যেন ভূয়া সংগঠনগুলোর মত কোন অপবাদ আপনাদের স্পর্শ করতে না পারে। আপনারা সতর্কতার সহিত এভাবে মানব সেবা করে যান। একদিন আপনারা অবশ্যই স্বীকৃতি পাবেন।

মানবাধিকার খবর ঃ দীর্ঘ সময় গঠনমূলক সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কাজী রিয়াজুল হক ঃ কষ্ট ও সময় করে সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।
রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত সম্পূর্ণ একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, একটা আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্র এ কমিশন তৈরী করে। আমরা সব সময় স্বাধীন ভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে খবর পেয়েছি মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে আমরা ছুটে গিয়েছি, যেমন নাসির নগরেও ছুটে গেছি তাদের পরিস্থিতির কথা শুনে। পুলিশ যখন কোন ভিকটিমের কেইস নিতে চায়না আমরা খবর পেলে তাদের কেইস নিতে মবাধ্য করি। যদি কোন মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে অথবা গুম হচ্ছে আমরা তাদের জন্য বিভিন্ন স্তরে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাপ সৃষ্টি করছি। আমাদের প্রতি সরকারের সুনজর থাকা সত্ত্বেও আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণে আমাদের প্রয়োজনীয় লজিষ্টিক সাপোর্ট নেই, পাশাপাশি আমাদের পর্যাপ্ত জনবলের অভাব রয়েছে। তাই তাঁদের সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করে এ ধরনে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। আমরা যদি আমাদের প্রয়োজনীয় জনবল পেয়ে যাই এবং পর্যাপ্ত লজিষ্টিক সাপোর্ট পাই তাহলে আমরা মানবাধিকার কার্যক্রমে অনেক বেশী কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবো। আমাদের আইনে আছে প্রত্যেকটা উপজেলায় আমাদের নিজস্ব অফিস থাকতে হবে। আমি অনেকটা জোর করেই সারা দেশ জুড়ে মাত্র দুটি অফিস করতে পেরেছি, একটি হচ্ছে রাঙ্গামাটিতে আরেকটি খুলনাতে অবস্থিত। আমাদের ইচ্ছে আছে প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে কার্যক্রম চালাতে ও অফিস করতে, কিন্তু সেজন্য আমাদের পর্যাপ্ত জনবল ও লজিষ্টিক সাপোর্ট দিতে হবে।

মানবাধিকার খবর ঃ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সমাজে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে কি কি কাজ করছে? ভবিষ্যতে কি ধরণের কাজ করতে চায়?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ আমি আগেই বলেছি সরকার কর্তৃক জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ এর ভিত্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ২০১০ সাল প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এর আগে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আরেকটি কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, যা কিনা একজন আপিল বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে হয়েছিল। আমি এই কমিশনের জন্ম লগ্ন থেকেই সাথে আছি। তখন এই কমিশনের কোন লজিষ্টিক সাপোর্ট ছিল না। এই কমিশন আসার পর আমরা কাজ করতে শুরু করি। প্রথমেই আমরা একটা জরিপ করেছিলাম, আমাদের কোথায় কোথায় ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন রয়েছে, আমরা পেয়েছিলাম রিলিজিয়াস মাইনরিটি, আমাদের ইথনিক মাইনরিটি, আমাদের নারী, আমাদের শিশুরা, এই যে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি রয়েছে আমরা সেগুলোকে আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করেছি, তারপর প্রত্যেকটা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ করার জন্য সেই থিমের উপর ভিত্তি করে একটি থিমেটিক কমিটি গঠন করেছিলাম যেমন ঃ রিলিজিয়াস মাইনরিটি থিম, ইথনিক মাইনরিটি থিম এর উপর ভিত্তি করে থিমেটিক কমিটি গঠন করি। সমাজে অন্য গোত্রের লোকও রয়েছে যেমন ঃ বেদে, ঋষী, কুমার, কামার, জেলে ও মুচি ইত্যাদি তাদের জন্যও আমরা কমিটি গঠন করেছি। আমাদের প্রত্যেকটি কমিটি গঠিত হয়েছিল এন,জি,ও প্রতিনিধি ও কিছু সরকারী কর্মকর্তা দ্বারা। যে যে জায়গায় ঝুঁকি রয়েছিল আমরা সেগুলিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। তাদের জন্য যে আইন প্রণয়ন করার দরকার ছিল সেই আইনের খসড়া আমরা সরকারের কাছে জমা দিই, যেমন শিশু আইনের যে খসরা আমরা দিয়েছিলাম পরবর্তীকালে সেটার আলোকে সরকার একটি শিশু আইন প্রণয়ন করে ২০১৩ সালে। আমরা বাল্য বিবাহ নিরোধের জন্য একটা খসড়া দিয়েছিলাম যার অনেকাংশ সরকার নিয়ে বাকিটা তাদের মত করে সাজিয়ে একটি বাল্য বিবাহ আইন প্রণয়ন করে, যেগুলো আমাদর খসড়াতে উল্লেখ ছিল না। আমরা প্রত্যেকটা জেলাতে বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে এন,জি,ও প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, মিডিয়া পিপলস ও মানবাধিকার কর্মী নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সভা-সেমিনার করে গণ সচেতনতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেছি। আমরা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার ও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে সম্প্রচার করেছি। অটিজমের উপর আমরা ডকুমেন্টারি করেছি, জঙ্গী তৎপরতা ও বাল্যবিবাহ নিয়েও ডকুমেন্টারি তৈরী করেছি। এগুলো ব্যয়বহুল ব্যাপার, এগুলো আমরা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে দেখাবার চেষ্টা করব। আরেকটি কথা না বললেই নয় একটি এন,জি,ও সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরে রেজিষ্ট্রেশন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নাম দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিভিন্ন জায়গায় অফিস খুলে লোকজন থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে কাজ করছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি এ ধরনের ভূয়া প্রতিষ্ঠানের সাথে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ মানবাধিকার কমিশনের দুটি অফিস রয়েছে প্রধান কার্যালয় ছাড়া, একটি রাঙ্গামাটিতে ও একটি খুলনাতে। যখন আমরা সরকারকে এই ভুয়া মানবাধিকার কমিশন নামের এন,জি,ও টির কথা জানাই, তখন সরকার মানবাধিকার কমিশন নামের এন,জি,ও টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাদের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করে দেয়। তারপরেও শোনা যায় তারা মানবাধিকার কমিশন নাম ধারণ করে গোপনে মতাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। হাতিয়ে নিচ্ছে মানুষের কষ্ট অর্জিত টাকা, এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। অথচ আমাদের সেবা জনগণের জন্য বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে, আমরা জনগণের জন্য আইনজীবি থেকে শুরু করে সমস্ত আইনি পদক্ষেপ বিনামূল্যে নিয়ে থাকি। টাকা গ্রহণ করবার আমাদের কোন নিয়ম বা সুযোগ কোনটাই নেই। জনগণ একটি দরখাস্ত না লিখতে পারলেও আমরা তা লিখে দিই, সাথে ষ্ট্যাম্পও ফ্রি দিয়ে থাকি। অভিযোগকারী নিজে এসে অভিযোগ দাখিল করতে পারে, তাদের কোন উকিল নিয়োগ করতে হয়না। অর্থাৎ মানবাধিকার কমিশনের সেবা পেতে কোন পয়সা খরচ করতে হবে না। আমাদের বেতন-ভাতা ও খরচ রাষ্ট্র বহন করছে। আমর াআবার এমন প্রতিষ্ঠানের কথাও শুনেছি যারা বিনামূল্যে মানুষকে আইনি সহায়তা করছে, অসহায় মানুষের পাশে দাড়াচেছ। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই, এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার কাজ।

মানবাধিকার খবর ঃ মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্বের একমাত্র নিয়মিত সৃজনশীল জনপ্রিয় বাংলা প্রকাশনা মানবাধিকার খবর তার লেখনি ও সংবাদ প্রকাশের মাধমে অধিকার বঞ্চিত অসহায় মানুষের সেবা প্রদান করছে। এছাড়া দেশ-বিদেশ থেকে নারী ও শিশু উদ্ধার, আইনি সহায়তা, চিকিৎসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ত্রাণ বিতরণ ও দারিদ্রের সহায়তা সহ নানাবিদ সমাাজিক কাজ করে যাচ্ছে। মানবাধিকার খবরের কর্মকান্ড সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

কাজী রিয়াজুল হক ঃ আমি আপনাদের কয়েকটি সংখ্যা পড়ছি বিশেষ করে ভাল লেগেছে ভারত বা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যাওয়অ নারী ও শিশু উদ্ধার কাজটি। এসব কাজ করতে বিভিন্ন মানুষের সরণাপন্ন হয়েছেন, পুলিশের কাছে গেছেন, কোট-আদালতে গিয়েছেন এই কাজগুলি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ, আমাদের দেশের সমস্যা এটা রাষ্ট্রের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব না বা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে একা করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা মানবাধিকার খবর যে কাজগুলো করেছেন আমি এতটুকু জানি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ এবং আমি সাধুবাদ জানাই আপনাদের, কারণ আপনারা সমস্যা চিহ্নিত করেছেন এবং সমাধানের ক্ষেত্রেও সাধ্যমত চেষ্টাও করেছেন। আমি আশা করব আপনারা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এ কাজগুলো করে যাবেন যেন ভূয়া সংগঠনগুলোর মত কোন অপবাদ আপনাদের স্পর্শ করতে না পারে। আপনারা সতর্কতার সহিত এভাবে মানব সেবা করে যান। একদিন আপনারা অবশ্যই স্বীকৃতি পাবেন।

মানবাধিকার খবর ঃ দীর্ঘ সময় গঠনমূলক সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কাজী রিয়াজুল হক ঃ কষ্ট ও সময় করে সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।

সাক্ষাৎকার গ্রহনে- মোঃ রিয়াজ উদ্দীন

সহযোগীতায়- রুবিনা শওকত উল্লাহ, আব্দুল্লাহ আল জোহাইফা, নাজমিন আক্তার বকুল ও মিনি আক্তার ইভা।



  
  সর্বশেষ
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে এয়ার অ্যারাবিয়ার ফ্লাইটে ত্রুটি, শারজাহগামী ১৬৪ জন যাত্রী হোটেলে
চট্টগ্রাম বোর্ডে এবারও শীর্ষে বন্দর নগরীর স্কুলগুলো
চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় মোবাইল চার্জার এর পরিবর্তে ল্যাপটপ
চিতলমারীতে বিশ “মা” দিবস পালিত

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308