শনিবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * হারানো বিজ্ঞপ্তি   * সাতক্ষীরায়জেলাপ্রশাসকেরকাছেজুলাইশহীদওআহতদেরস্বীকৃতিরদাবিতেস্মারকলিপিপ্রদান   * ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে চিতলমারীতে এমপিও শিক্ষকদের কর্মবিরতি   * কুড়িগ্রামে সাংবাদিক নির্যাতন: শোকজের জবাব শুনতে আদালতের ‘বিব্রতবোধ`   * একসাথে জুটি বাঁধলেন শিপন মিত্র ও দীপান্বিতা রায়।   * দিয়ামনি ই কমিউনিকেশনের খুলনা কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত   * কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা   * র‍্যাব-১১ এর অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ ২৫ মামলার আসামি গ্রেফতার।   * গাড়ি পোড়ানোর মামলায় মির্জা আব্বাস দম্পতিসহ ১৬৭ নেতাকর্মী অব্যাহতি   * মওদুদ আব্দুল্লাহ শুভ্র( ব্যুরো চীফ- কুমিল্লা) :- র‍্যাব-১১ এর অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ ২৫ মামলার আসামি গ্রেফতার।  

   বিশেষ প্রতিবেদন
মানবাধিকার খবরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন মায়ের কাছে ফিরেছে ভারতীয় কিশোরী বৈশাখী
  Date : 03-06-2017


বৈশাখীর পরিবারের সাথে মানবাধিকার খবর’র সম্পাদক
মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন
মোঃ রিয়াজ উদ্দিন/মনোয়ার ইমাম
গত বছর জুন মাসে প্রেমের টানে বাংলাদেশী যুবক স্বপনের সাথে পালিয়ে আসে ভারতীয় কিশোরী বৈশাখী কান্ডার (১৫)। অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বরিশালের বানরীপাড়া থেকে উদ্ধার হয়ে গত বছর ১ডিসেম্বার আবার ফিরে যায় মায়ের কাছে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দঃ ২৪ পরগনা সুন্দরবনের কোলে গোসবা থানার জটিরামপুর গ্রামে। বাংলাদেশ থেকে উদ্ধার হওয়া স্কুল ছাত্রি বৈশাখী কেমন আছে মায়ের কাছে জানতে অনুসন্ধান চালায় মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্বের একমাত্র নিয়মিত সৃজনশীল বাংলা প্রকাশনা মানবাধিকার খবর। গত ২এপ্রিল গোসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্রী সুবিদ ঢালীর আমন্ত্রনে আমরা চলে যাই সেখানে। গোসবা থানায় এই ব্যাপারে একটি মামলা রয়েছে। ঘটনার বিবরণ ও অনুসন্ধানের পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে আমরা কলকাতা থেকে ঐ দিন খুব সকালে শিয়ালদাহ থেকে দক্ষিণের ট্রেনে উঠে চলে যাই ক্যানিং। ক্যানিংয়ে হচ্ছে পূর্ব ভারতের রেল ওয়ের সুন্দরবন কোলের সর্বশেষ স্টেশন। ক্যানিংহর নেমে বাসে করে চলে যাই গদখালী নামক স্থানে। এর পর আমরা ট্রলারে বঙ্গোপ সাগর থেকে উঠে আসা সুন্দরবনের বিশাল খরস্রোত গোসবা নদী পাড়ি দিয়ে পৌছায় গোসবা থানার মূল দ্বীপে। গোসবা থানাটি ৭/৮ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। প্রাকৃতি দৃশ্যে ভরপুর কলকাতার সর্বদক্ষীনে সুন্দরবনের কোল ঘেষে থানাটি । এই নদীতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর কুমিরের বসবাস। যা হোক আমরা সাতসকালে গোসবা থানায় যেয়ে দেখি থানার বড় বাবু (ওসি) সুবিদ আলী সরকারী পোশাকে অপেক্ষা করছেন। আমরা থানায় পৌছাতে তিনি আমাদেরকে মিষ্টি হাঁসি দিয়ে স্বাগতম জানান। ভারতীয় পুলিশের মুখ উজ্বল কারিদের মধ্যে সুবিদ ঢালী একজন। সরকারী চাকুরীর পাশাপাশি সবসময় তিনি মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। যার কারনে তিনি বৈশাখীকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে যথেষ্ট সময় ও শ্রম ব্যয় করেছন। তার অন্যতম আন্তরিকতার কারনে বৈশাখী আজ তার মায়ের কাছে ভালোই আছে। বৈশাখী উদ্ধারে তিনি মানবাধিকার খবর কে একাধিকার সহযোগীতার জন্য অনুরোধ জানান। বৈশাখী মায়ের কাছে ফিরে আসার পিছনে মানবাধিকার খবরের সহযোগীতা কথা তুলে ধরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। স¥ৃতি রোমন্থনের সময় বৈশাখী ও তার মা নিবেদিতা কান্ডার উপস্থিত ছিলেন। ওসি আগে থাকতে বৈশাখীর ও তার মাকে খবর দিয়ে থানায় নিয়ে আসে। আমাদের পরিচয় জানতে পেরে বৈশাখী ও তার মা বাধ ভাঙা খুশিতে আতœহারা হয়ে পড়ে। বৈশাখী জানায় তার মায়ের কাছে এখন সে খুবই ভাল আছে। আর বৈশাখীর মা নিবেদিতা কান্ডার বলেন আমার মেয়েকে কাছে ফিরে পেয়ে আমি খুবই খুশি। আপনাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের সহযোগীতা না পেলে হয়তো মেয়েকে ফিরে পেতাম না। বৈশাখী না বুঝে বাংলাদেশী যুবকের ফাদে পড়ে চলে যাওয়াটা ভুল স্বীকার করে বলেন, মাকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি। মা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আমি আবার ও লেখাপড়ায় মন দিয়েছি। বৈশাখী তার মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা নেই। বৈশাখী রাঙ্গাবালিয়া যে স্কুলে পড়ে সেই স্কুলটিও আমাদের কে ঘুরিয়ে দেখান। তাদের জটিরামপুর গ্রামের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখান। স্থানীয় খাবার দিয়ে আমাদের কে আপ্যায়ন করেন। তাদের পরিবারের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। আমাদের কে আবার ও তাদের বাড়িতে আসার আমন্ত্রন জানান । বৈশাখীদের বাড়ি থানা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। বৈশাখীদের বাড়ি পরিদর্শনের সময় আমাদের সাথে ছিলেন গোসবা থানার এস আই বিষুদেব রায় চৌধুরী।
উল্লেখ্য যে, গত বছর ৮ জুলাই বৈশাখীর মা নিবেদিতা কান্ডার কলকাতার আলীপুর ভবানী ভবনে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পুলিশ সুপার শান্তি দাসকে এক লিখিত অভিযোগ জানান। আমার নাবালিকা কন্যা বৈশাখী গোসাবা থানার রাঙা বেলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাড়ির পাশে রয়েছে একটি রিসোর্ট। সেখানে ঠিকাদার অনিমেশ মন্ডলের লোকজন ঐ রিসোর্টে কাজ করত। তার কন্যা কুমারী বৈশাখীকে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আসার পথে অনিমেশ ও লেবার স্বপন মল্লিক প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করত। অশ্লীল কথাবার্তা, কু প্রস্তাব দিত। বৈশাখী আমাদের জানালে আমরা তাদেরকে এ ধরনের কথাবার্তা না বলার জন্য নিষেধ করি। কোন কথা কর্ণপাত না করে বৈশাখীকে প্রতিনিয়ত তারা উত্ত্যক্ত করতে থাকে। গত ২১ জুন সকাল ১০টায় বৈশাখী স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। সর্বত্র খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ঠিকাদার অনিমেশকে জিজ্ঞাসা করলে, সে বলে তার লেবার স্বপন মল্লিক বৈশাখীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসবা থানায় গত বছর ২৫ জুন এ বিষয়ে একটি ডায়েরি করা হয়। যার সং-১২৬। বৈশাখীর মা বলেন, অনিমেশ ও তার স্ত্রীর সহযোগীতায় স্বপন তার নাবালিকা কন্যাকে অপহরণ করে অসৎ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পাচার করেছে। তার মেয়েকে উদ্ধার ও পাচারকারীদের শাস্তি কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে বৈশাখীর মা অনিমেশকে ১নং ও তার স্ত্রীকে ২নং সর্ব সাং কদমতলা মোড়, বেহালা ঠাবুর পুকুর, কলকাতা, ফোনঃ ৯০৫১০৬৬৩৬৫ এবং স্বপন মল্লিককে ৩নং সাং- কলাভিটা, পোঃ বেশার পল্লী, বানরীপাড়া, বরিশাল, বাংলাদেশ, ফোনঃ ০১৮২৭-৯১৮৭১১ কে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করে।
বৈশাখীর মা জানান, নিখোঁজের সময় সে থ্রিপিচ (চুরিদার) পরে ছিল। তার উচ্চতা ৪.৭ ফুট, গড়ন মাঝারি, রং ফর্সা, বয়স ১৫ বছর।
 
ডান থেকে গোসাবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবীধ ঢালী সাথে বৈশাখী ও তার মা, মানবাধিকার খবর
সম্পাদক এবং তদন্ত কর্মকর্তা বিষ্ণুদেব রায় চৌধুরী
নিখোঁজের পর অভিযোগের ভিত্তিতে মানবাধিকার খবর অনুসন্ধান করে জানতে পারে, বৈশাখী স্বপনের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। তখন বৈশাখীর মা-বাবা বৈশাখীকে অন্যত্র বিবাহ দেওয়ার উদ্যোগ নিলে সে স্বপনের সাথে পালানো চেষ্টা করে। স্বপন তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা করে ২ দিন সীমান্ত এলাকায় থেকে অবৈধ পথে বালাদেশে প্রবেশ করে সরাসরি স্বপনের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বানরী পাড়ায় চলে আসে। বৈশাখীর মা আরও অভিযোগ করেন, বানরী পাড়া থানায় ফোনে অভিযোগ করলে তাকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে স্বপনের পক্ষে কথা বলে । এ ব্যাপারে বানরীপাড়া থানাও ওসি জিয়াউল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন বরিশাল র‌্যাব-৮ আমাদেরকে না জানিয়ে তাকে গত ২২ জুলাই উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। পশ্চিম বঙ্গের দঃ চব্বিশ পরগনা গোসাবা থানার ওসি সুবিদ ঢালী মানবাধিকার খবরকে জানান বাংলাদেশে উদ্ধারকৃত বৈশাখীকে ভারতে ফেরত আনার ব্যাপারে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে সব ধরনের কাগজপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে বৈশাখীকে ফেরত পাবার জন্য অপেক্ষা করছি। এ ব্যাপারে মানবাধিকার খবরের কাছে সবধরনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ভারতীয় দূতাবাস জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহায়তায় বরিশালের উজিরপুর থানা থেকে র‌্যাব-৮ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী মনিরা বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন ভারতীয় নাবালিকা মেয়ে বৈশাখী বরিশালের বানরীপাড়া অবস্থান করছেন জানতে পেরে আমরা উদ্ধারে তৎপর হই। তার ব্যাপারে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত বছর ২২ জুলাই সন্ধ্যায় উজিরপুর থেকে উদ্ধার করি র‌্যাব-৮ এর সহায়তায়। জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক এড. সালমা আলী এ প্রতিবেদককে বলেন মেয়েটি বর্তমানে আমাদের গাজীপুর সেফহোমে রয়েছে। তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আমরা এ ব্যাপারে ভারতীয় দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি। আশাকরি, খুব শীঘ্রই সকল আইন প্রক্রিয়া শেষ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির কাছে হস্তান্তর করেছি।
লেফটেন্যান্ট রুহুল আমিন জানান, মেয়েটি স্বীকার করেছে জামবাড়ী গ্রামের স্বপন মল্লিক কলকাতায় তাদের বাড়িতে রঙের কাজ করতেন। এক পর্যায়ে স্বপনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। অভিযানে স্বপন মল্লিককে আটক করা যায়নি।

বৈশাখীর পরিবারের সাথে মানবাধিকার খবর’র সম্পাদক
মানবাধিকার খবর প্রতিবেদন
মোঃ রিয়াজ উদ্দিন/মনোয়ার ইমাম
গত বছর জুন মাসে প্রেমের টানে বাংলাদেশী যুবক স্বপনের সাথে পালিয়ে আসে ভারতীয় কিশোরী বৈশাখী কান্ডার (১৫)। অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বরিশালের বানরীপাড়া থেকে উদ্ধার হয়ে গত বছর ১ডিসেম্বার আবার ফিরে যায় মায়ের কাছে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দঃ ২৪ পরগনা সুন্দরবনের কোলে গোসবা থানার জটিরামপুর গ্রামে। বাংলাদেশ থেকে উদ্ধার হওয়া স্কুল ছাত্রি বৈশাখী কেমন আছে মায়ের কাছে জানতে অনুসন্ধান চালায় মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্বের একমাত্র নিয়মিত সৃজনশীল বাংলা প্রকাশনা মানবাধিকার খবর। গত ২এপ্রিল গোসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্রী সুবিদ ঢালীর আমন্ত্রনে আমরা চলে যাই সেখানে। গোসবা থানায় এই ব্যাপারে একটি মামলা রয়েছে। ঘটনার বিবরণ ও অনুসন্ধানের পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে আমরা কলকাতা থেকে ঐ দিন খুব সকালে শিয়ালদাহ থেকে দক্ষিণের ট্রেনে উঠে চলে যাই ক্যানিং। ক্যানিংয়ে হচ্ছে পূর্ব ভারতের রেল ওয়ের সুন্দরবন কোলের সর্বশেষ স্টেশন। ক্যানিংহর নেমে বাসে করে চলে যাই গদখালী নামক স্থানে। এর পর আমরা ট্রলারে বঙ্গোপ সাগর থেকে উঠে আসা সুন্দরবনের বিশাল খরস্রোত গোসবা নদী পাড়ি দিয়ে পৌছায় গোসবা থানার মূল দ্বীপে। গোসবা থানাটি ৭/৮ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। প্রাকৃতি দৃশ্যে ভরপুর কলকাতার সর্বদক্ষীনে সুন্দরবনের কোল ঘেষে থানাটি । এই নদীতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর কুমিরের বসবাস। যা হোক আমরা সাতসকালে গোসবা থানায় যেয়ে দেখি থানার বড় বাবু (ওসি) সুবিদ আলী সরকারী পোশাকে অপেক্ষা করছেন। আমরা থানায় পৌছাতে তিনি আমাদেরকে মিষ্টি হাঁসি দিয়ে স্বাগতম জানান। ভারতীয় পুলিশের মুখ উজ্বল কারিদের মধ্যে সুবিদ ঢালী একজন। সরকারী চাকুরীর পাশাপাশি সবসময় তিনি মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। যার কারনে তিনি বৈশাখীকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে যথেষ্ট সময় ও শ্রম ব্যয় করেছন। তার অন্যতম আন্তরিকতার কারনে বৈশাখী আজ তার মায়ের কাছে ভালোই আছে। বৈশাখী উদ্ধারে তিনি মানবাধিকার খবর কে একাধিকার সহযোগীতার জন্য অনুরোধ জানান। বৈশাখী মায়ের কাছে ফিরে আসার পিছনে মানবাধিকার খবরের সহযোগীতা কথা তুলে ধরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। স¥ৃতি রোমন্থনের সময় বৈশাখী ও তার মা নিবেদিতা কান্ডার উপস্থিত ছিলেন। ওসি আগে থাকতে বৈশাখীর ও তার মাকে খবর দিয়ে থানায় নিয়ে আসে। আমাদের পরিচয় জানতে পেরে বৈশাখী ও তার মা বাধ ভাঙা খুশিতে আতœহারা হয়ে পড়ে। বৈশাখী জানায় তার মায়ের কাছে এখন সে খুবই ভাল আছে। আর বৈশাখীর মা নিবেদিতা কান্ডার বলেন আমার মেয়েকে কাছে ফিরে পেয়ে আমি খুবই খুশি। আপনাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের সহযোগীতা না পেলে হয়তো মেয়েকে ফিরে পেতাম না। বৈশাখী না বুঝে বাংলাদেশী যুবকের ফাদে পড়ে চলে যাওয়াটা ভুল স্বীকার করে বলেন, মাকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি। মা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আমি আবার ও লেখাপড়ায় মন দিয়েছি। বৈশাখী তার মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা নেই। বৈশাখী রাঙ্গাবালিয়া যে স্কুলে পড়ে সেই স্কুলটিও আমাদের কে ঘুরিয়ে দেখান। তাদের জটিরামপুর গ্রামের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখান। স্থানীয় খাবার দিয়ে আমাদের কে আপ্যায়ন করেন। তাদের পরিবারের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। আমাদের কে আবার ও তাদের বাড়িতে আসার আমন্ত্রন জানান । বৈশাখীদের বাড়ি থানা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। বৈশাখীদের বাড়ি পরিদর্শনের সময় আমাদের সাথে ছিলেন গোসবা থানার এস আই বিষুদেব রায় চৌধুরী।
উল্লেখ্য যে, গত বছর ৮ জুলাই বৈশাখীর মা নিবেদিতা কান্ডার কলকাতার আলীপুর ভবানী ভবনে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পুলিশ সুপার শান্তি দাসকে এক লিখিত অভিযোগ জানান। আমার নাবালিকা কন্যা বৈশাখী গোসাবা থানার রাঙা বেলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাড়ির পাশে রয়েছে একটি রিসোর্ট। সেখানে ঠিকাদার অনিমেশ মন্ডলের লোকজন ঐ রিসোর্টে কাজ করত। তার কন্যা কুমারী বৈশাখীকে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আসার পথে অনিমেশ ও লেবার স্বপন মল্লিক প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করত। অশ্লীল কথাবার্তা, কু প্রস্তাব দিত। বৈশাখী আমাদের জানালে আমরা তাদেরকে এ ধরনের কথাবার্তা না বলার জন্য নিষেধ করি। কোন কথা কর্ণপাত না করে বৈশাখীকে প্রতিনিয়ত তারা উত্ত্যক্ত করতে থাকে। গত ২১ জুন সকাল ১০টায় বৈশাখী স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। সর্বত্র খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ঠিকাদার অনিমেশকে জিজ্ঞাসা করলে, সে বলে তার লেবার স্বপন মল্লিক বৈশাখীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসবা থানায় গত বছর ২৫ জুন এ বিষয়ে একটি ডায়েরি করা হয়। যার সং-১২৬। বৈশাখীর মা বলেন, অনিমেশ ও তার স্ত্রীর সহযোগীতায় স্বপন তার নাবালিকা কন্যাকে অপহরণ করে অসৎ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পাচার করেছে। তার মেয়েকে উদ্ধার ও পাচারকারীদের শাস্তি কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে বৈশাখীর মা অনিমেশকে ১নং ও তার স্ত্রীকে ২নং সর্ব সাং কদমতলা মোড়, বেহালা ঠাবুর পুকুর, কলকাতা, ফোনঃ ৯০৫১০৬৬৩৬৫ এবং স্বপন মল্লিককে ৩নং সাং- কলাভিটা, পোঃ বেশার পল্লী, বানরীপাড়া, বরিশাল, বাংলাদেশ, ফোনঃ ০১৮২৭-৯১৮৭১১ কে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করে।
বৈশাখীর মা জানান, নিখোঁজের সময় সে থ্রিপিচ (চুরিদার) পরে ছিল। তার উচ্চতা ৪.৭ ফুট, গড়ন মাঝারি, রং ফর্সা, বয়স ১৫ বছর।
 
ডান থেকে গোসাবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবীধ ঢালী সাথে বৈশাখী ও তার মা, মানবাধিকার খবর
সম্পাদক এবং তদন্ত কর্মকর্তা বিষ্ণুদেব রায় চৌধুরী
নিখোঁজের পর অভিযোগের ভিত্তিতে মানবাধিকার খবর অনুসন্ধান করে জানতে পারে, বৈশাখী স্বপনের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। তখন বৈশাখীর মা-বাবা বৈশাখীকে অন্যত্র বিবাহ দেওয়ার উদ্যোগ নিলে সে স্বপনের সাথে পালানো চেষ্টা করে। স্বপন তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা করে ২ দিন সীমান্ত এলাকায় থেকে অবৈধ পথে বালাদেশে প্রবেশ করে সরাসরি স্বপনের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বানরী পাড়ায় চলে আসে। বৈশাখীর মা আরও অভিযোগ করেন, বানরী পাড়া থানায় ফোনে অভিযোগ করলে তাকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে স্বপনের পক্ষে কথা বলে । এ ব্যাপারে বানরীপাড়া থানাও ওসি জিয়াউল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন বরিশাল র‌্যাব-৮ আমাদেরকে না জানিয়ে তাকে গত ২২ জুলাই উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। পশ্চিম বঙ্গের দঃ চব্বিশ পরগনা গোসাবা থানার ওসি সুবিদ ঢালী মানবাধিকার খবরকে জানান বাংলাদেশে উদ্ধারকৃত বৈশাখীকে ভারতে ফেরত আনার ব্যাপারে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে সব ধরনের কাগজপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে বৈশাখীকে ফেরত পাবার জন্য অপেক্ষা করছি। এ ব্যাপারে মানবাধিকার খবরের কাছে সবধরনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ভারতীয় দূতাবাস জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহায়তায় বরিশালের উজিরপুর থানা থেকে র‌্যাব-৮ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী মনিরা বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন ভারতীয় নাবালিকা মেয়ে বৈশাখী বরিশালের বানরীপাড়া অবস্থান করছেন জানতে পেরে আমরা উদ্ধারে তৎপর হই। তার ব্যাপারে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত বছর ২২ জুলাই সন্ধ্যায় উজিরপুর থেকে উদ্ধার করি র‌্যাব-৮ এর সহায়তায়। জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক এড. সালমা আলী এ প্রতিবেদককে বলেন মেয়েটি বর্তমানে আমাদের গাজীপুর সেফহোমে রয়েছে। তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আমরা এ ব্যাপারে ভারতীয় দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি। আশাকরি, খুব শীঘ্রই সকল আইন প্রক্রিয়া শেষ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির কাছে হস্তান্তর করেছি।
লেফটেন্যান্ট রুহুল আমিন জানান, মেয়েটি স্বীকার করেছে জামবাড়ী গ্রামের স্বপন মল্লিক কলকাতায় তাদের বাড়িতে রঙের কাজ করতেন। এক পর্যায়ে স্বপনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। অভিযানে স্বপন মল্লিককে আটক করা যায়নি।



  
  সর্বশেষ
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বেইমান সময় : মোহাম্মদ মহসীন
হারানো বিজ্ঞপ্তি
সাতক্ষীরায়জেলাপ্রশাসকেরকাছেজুলাইশহীদওআহতদেরস্বীকৃতিরদাবিতেস্মারকলিপিপ্রদান
ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে চিতলমারীতে এমপিও শিক্ষকদের কর্মবিরতি

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308