|
জঙ্গিদের ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ’ করতে বদ্ধপরিকর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোশতাক রাইহান
সারাদেশে বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান নেয়া জঙ্গিদের ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ’ করতে বদ্ধপরিকর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গি দমনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিদের ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ’ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এজন্য নেয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। জঙ্গিদের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা পেয়েছেন। জঙ্গি যত বড় বা দুর্ধর্ষই হোক না কেন তাদের ধরা পড়তেই হবে।
ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অভিযান থেকে তারা দেখেছেন, জঙ্গিরা সব সময় সঙ্গে গ্রেনেড ও আগ্নেয়াস্ত্র রাখছে। পুলিশের প্রথম লক্ষ্য জঙ্গিদের গ্রেফতার করা। গ্রেফতার করে তাদের কাছ থেকে তথ্য নেয়া। কিন্তু জঙ্গিরা পুলিশের ঘেরাটোপের মধ্যে থেকেও আত্মসমর্পণ করতে চায় না। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। এ কারণে পুলিশকে পাল্টা অভিযানে নামতে হয়। অভিযানের সময় জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করুক, পুলিশ সেটাই চায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া পরিচয়পত্র ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সুবিধাজনক স্থানে বাসা ভাড়া নিচ্ছে জঙ্গিরা। এমনকি বাড়িওয়ালাকে জমা দেয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য খতিয়ে দেখার আগেই পালিয়ে যাচ্ছে তারা। এ সময়ের মধ্যে জঙ্গিরা তাদের উদ্দেশ্য সফল করারও চেষ্টা করছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি স্থানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় এবং হামলায় হতাহতের ঘটনায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি সারাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা মনে করছেন, শীর্ষ কয়েকজন জঙ্গি এখনও পলাতক, যারা পাল্টা হামলার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিচ্ছেন। এ কারণে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সব জেলার পুলিশ সুপারদের (এসপি) জরুরি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে।
জরুরি সতর্কবার্তা পাঠানোর পরদিন সোমবার পুলিশ সদর দফতরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয় বিষয়ে মূলত এ বৈঠক। তবে বৈঠকের সুনির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা জানানো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা দেয়া হয়েছে। সবাই যেন সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশি নাগরিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিশেষ স্থাপনার সামনে জোর নজরদারিসহ দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দারা বাড়িটি চিহ্নিত করতে পেরেছে বলেই অভিযান চালানো সম্ভব হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। জনগণ জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না, সেহেতু তারা টিকতে পারবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ডিএমপিতে ডাটাবেজ সিস্টেম চালু হওয়ায় জঙ্গিরা এখন রাজধানীতে বাসা ভাড়া নিতে পারছে না। এছাড়া সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও মনিটরিং থাকায় বাড়িওয়ালারাও সতর্ক।
তিনি বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে সফটওয়্যারভিত্তিক ডাটাবেজ শুরু হওযার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ২৪৯টি পরিবারের নিবন্ধন ডাটাবেজে সংরক্ষণ করেছে ডিএমপি। যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখের উপরে।
অপরাধীদের ধরতে ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়িওয়ালা, ভাড়াটিয়া ও মেস সদস্যদের তথ্য নিবন্ধন আরও জোরদার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। একই সঙ্গে ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সন্দেহজনক কিছু পরিলক্ষিত হলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় তথ্য দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। বলেন, জঙ্গিদের পালিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তাদের ধরা দিতেই হবে।
|
|
|
|
|