মােঃজানে আলম সাকী, ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম : দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর অবশেষে সরানো হয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসকে। তাকে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
গত ২০ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা-৪ এর সিনিয়র সহকারী সচিব আম্বিয়া সুলতানার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। আদেশে আরও বলা হয়েছে, ২৩ নভেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হয়ে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় তিনি অপরাহ্ণে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এদিকে, মন্ত্রণালয়ের আদেশের পরপরই সিডিএ অফিস আদেশ জারি করে। মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশের সূত্র ধরে সিডিএ সচিব রবীন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ২৩ নভেম্বর (রবিবার) অপরাহ্ণ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসকে অবমুক্ত ঘোষণা করেন।
দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর ধরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) প্রধান প্রকৌশলীর পদ আঁকড়ে ছিলেন কাজী হাসান বিন শামস। প্রধান প্রকৌশলীর পদ ছাড়াও তিনি একাই আটটি পদ আঁকড়ে রাখেন বিভিন্ন সময়। তবে তার মূল পদ ছিল ‘নির্বাহী প্রকৌশলী’। এ পদে থেকেই তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (১-২) এবং প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসেছেন। এছাড়াও, সিডিএর বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকও হয়েছেন তিনি। যার মধ্যে ছিল চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের মতো মেগা প্রকল্পও।
অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত কাজী হাসান বিন শামস অবৈধভাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, তার মামা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন এবং সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদকে ব্যবহার করে দখল করে নেন আটটি পদ।
নির্বাহী প্রকৌশলী তার মূল পদ হলেও বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-১ (চলতি দায়িত্ব), ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, পদাধিকার বলে নগর উন্নয়ন কমিটির সদস্য সচিব, পদাধিকার বলে বিশেষ প্রকল্প অনুমোদন কমিটির চেয়ারম্যান, পদাধিকার বলে ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এছাড়াও, আর্থিক সংক্রান্ত ও নকশা অনুমোদন, ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র অনুমোদন, নগর উন্নয়ন কমিটির ছাড়পত্র অনুমোদন ও বিশেষ প্রকল্পের ছাড়পত্র অনুমোদন সংক্রান্ত বিভিন্ন গোঁজামিল নথি অনুমোদনে কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে কাজী হাসান বিন শামসের বিরুদ্ধে।