শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * তথ্য গোপন করে উপাচার্যের পদে আব্দুল মঈন;   * কুড়িগ্রামে ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন রাজা   * ফেনীর ঈদ বাজারে ব্র্যান্ডের শো-রুম চাঙ্গা, সাধারণ দোকানে মন্দা;   * কচুয়া এপির মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান   * শ্রীপুরে বেতন-বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ,পুলিশ- শ্রমিক সংঘর্ষ   * কক্সবাজারের রামুতে সাড়ে ৭ কোটি টাকা মূল্যের ক্রিস্টাল মেথ জব্দ, গ্রেপ্তার-১   * হেঁটে হজ পালন করতে যাওয়া কক্সবাজার জেলার টেকনাফের জামিল এখন ইরানে;   * মহেশখালীর আলোচিত কিলার লোকমান প্রকাশ আজরাইল গ্রেফতার ;   * গাজীপুরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক পরিবার পেল ঢেউটিন ও নগদ অর্থ   * প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে `স্বাধীনতা পুরস্কার` গ্রহণ করলেন কুড়িগ্রামের কীর্তিমান সন্তান এস এম আব্রাহাম লিংকন  

   প্রবন্ধ
১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ঘোষনা ও জাতিসংঘ
  Date : 03-01-2021

প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থানের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার ও মানুষের অস্তিত্ব রক্ষায় সহজাত ক্ষমতার সৃজনশীল বিকাশ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপনের প্রয়োজনীয় কতিপয় অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার।
শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সমাজে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মানবাধিকারের প্রভাব অনস্বীকার্য। প্রাচীনতম আইন ব্যাবিলনের রাজা হাম্মুরাবি নিয়মাবলীতে মানবাধিকার সংরক্ষনের কথা পাওয়া যায়। খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মদিনার বহু ধর্মভিত্তিক সমাজে হযরত মুহম্মদ (স:) কর্তৃক প্রনীত ‘মদিনার সনদ’-এ মদিনার সকল নাগরিকই সমান অধিকার ভোগ করবে, এ কথা বলা হয়েছে। ক্লাসিকাল যুগে, মধ্যযুগে ও রেনেসাঁর যুগের বিভিন্ন দার্শনিক যেমন ফ্রান্সের বদিন ও রুশো, ইতালির হুগো, গ্রোসিয়াস, ইংল্যান্ডের ভেটেল জনলক ও ক্লার্কস্টোন এবং জার্মানীর কার্ল মার্ক্স্ প্রমুখের লেখা থেকে মানবাধিকারের প্রাথমিক ধারনা পাওয়া যায়। এরা প্রত্যক্ষ করেন যে, প্রত্যেক মানুষ ‘মানুষ’ হিসেবে কতগুলো প্রাকৃতিক অধিকার লাভ করে থাকে। পরবর্তীকালে বিশে^র বিভিন্ন দেশের প্রজা-সাধারন স্বৈর শাসকদের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হতে থাকে এবং স্বেচ্ছাচারী শাসকগন কর্তৃক তাদের মৌলিক অধিকারসমূহ ব্যাপকভাবে লংঘিত হতে থাকে। তখন উপযুক্ত দার্শনিকগনের চিন্তাধারার আলোকে বিপ্লবের নায়কগন বিভিন্ন দেশে চার্টার, বিল, পিটিশন ও ডিক্লারেশন প্রণয়ন করেন, যাতে মানুষের কতগুলো ন্যূনতম অধিকারের দাবি স্থান পায়। এ সকল দলিল প্রনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। এই সব দলিলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে ইংল্যান্ডের ১২১৫ সালে প্রনীত ‘মেগনা কার্টা’ ১৬২৮ সালে প্রনীত ‘পিটিশন অব রাইট্স্’, ১৬৮৯ সালে প্রনীত ‘বিল অব রাইট্স্’, ১৬৯১ সালে প্রনীত ‘ভার্জিনিয়া বিল অব রাইট্স্’, ১৭৭৬ সালে উত্তর আমেরিকার ১৩টি উপনিবেশিক দেশের প্রতিনিধিগন কর্তৃক প্রনীত ‘ডিক্লারেশন অব ইনডিপেন্ডেন্স’ এবং ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সে প্রনীত ‘ডিক্লারেশন অব দি রাইট্স্ অব ম্যান এন্ড সিটিজেন’ ইত্যাদি।
জাতিসংঘের পূর্বসুরি ‘লীগ অব নেশন্স্’- এ মানবাধিকার বলে কোনো কথার উল্লেখ ছিলনা। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধকালীন ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র জার্মানী ও ইতালি কর্তৃক সংঘটিত নৃশংসতা ও বর্বরতা বিশ^বিবেককে স্তম্ভিত ও হতবাক করে দেয়। এ সময়ে ইহুদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার স্থানচ্যুত এবং নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ক্ষমতা সম্বলিত আইনসমূহ, নিবর্তনমূলক পুলিশি তল্লাশি ও বাজেয়াপ্ত করনের অনুমতি সংক্রান্ত আইনসমূহ এবং নাৎসী জার্মানী কর্তৃক ১৯৩৮ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত কনসেন্ট্রেইশন ক্যাস্প বা মৃত্যুশিবিরে ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হত্যার অনুমতি সম্বলিত আইনসমূহ বিশ^জাতিসত্ত¡ার সম্মিলিত ক্ষোভ ও ক্রোধের উদ্রেক করে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার সংরক্ষনের বিষয়কে ত্বরান্বিত করে। বিশে^র জাতিসমূহ অনুধাবন করে যে, ব্যক্তি-স্বাধীনতার সংরক্ষন রাষ্ট্রসমূহের একক স্বেচ্ছাচারে আর ছেড়ে দেয়া যেতে পারেনা। তারা অনুধাবন করে যে, ব্যক্তি যেহেতু জাতিসমূহের স্থাপক ও একক, সুতরাং তার মানবিক মর্যাদা ও মূল্যের স্বীকৃতি ছাড়া বিশে^র জাতিসমূহের মধ্যে প্রকৃত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনা। এটা সাধারন ভাবেও বিবেচ্য যে, যে জাতি নিজের নাগরিকদের অধিকারকে অগ্রাহ্য করে, সে অন্য জাতির নাগরিকদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারেনা। তাই বিশ^বাসী ব্যক্তি-মানবাধিকারকে আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষনের ব্যাপারে বিশেষভাবে তৎপর হয়ে ওঠে। যুদ্ধ সমাপ্তির পূর্ব থেকেই বিশ^ নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বিবৃতি ঘোষনা ও প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারীতে কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের ‘চার স্বাধীনতার বার্তা’ (ফোর ফ্রিডম মেসেজ), ১৯৪১ সালের ১৪ আগষ্টের ‘আটলান্টিক চার্টার’ এবং ১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাসে জাতিসংঘের গৃহীত ঘোষনা মানবাধিকার সংরক্ষনের সনদের প্রত্যশা করে। ১৯৪৪ সালে ডাম্বর^টন ওক্স্-এ জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা আলোচনার মধ্যেও মানবাধিকার প্রসঙ্গটি স্থান পায়। ১৯৪৫ সালের জুনে সান্ফ্রান্সিস্কোতে একটি সনদ অনুমোদনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের এ সনদটিই ছিল সর্বপ্রথম গৃহীত একটি আন্তর্জাতিক দলিল, যাতে মানব জাতির আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা উন্নয়নে সম্মতি ব্যক্ত করে। এ সনদে মোট নয়টি স্থানে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার কথা সরাসরি উল্লেখ থাকলেও মানবাধিকারের কোনো সংজ্ঞা ছিলনা। পরবর্তীকালে, ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে গৃহীত জাতিসংঘের সার্বজনীন ঘোষনা (ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন) হলো বিংশ শতাব্দীর মানবাধিকার আইনের প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন। এ ঘোষনা যে দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত, তা’ হলো সকল মানুষই বন্ধনহীন অবস্থায় এবং সমমর্যদা ও সম-অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাদেরকে বুদ্ধি ও বিবেক দেয়া হয়েছে এবং তাদের সবার উচিত ভ্রাতৃসুলভ মনোভাব নিয়ে পরস্পরের প্রতি আচরন করা। সম্বলিত মানবাধিকারের সার্বজনিন ঘোষনা ৩০টি ধারা রয়েছে।
মানবাধিকার কথাটির ধারনা আগে থাকলেও ব্যাপকভাবে ছিলনা এবং তা যথাযথভাবে প্রয়োগ হতো না। আর প্রয়োগ হলেও শুধু একক রাষ্টের মধ্যে নিহিত ছিল। জাতিসংঘের অধীনেই মানবাধিকার ধারনাটি বিশ^ব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তাই বিশ^ব্যাপি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জাতিসংঘের সেরা কয়েকটি কৃতিত্বের মধ্যে অন্যতম একটি হলো বিশ^ব্যাপী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
১০ ডিসেম্বর বিশ^ মানবাধিকার দিবস ; এই একটি দিনকে উদযাপনে সীমাবদ্ধতায় না রেখে প্রতিটি মূহুর্তেই মানবতার কাজ করতে হবে পুরো প্রাণী-জাতির কল্যানে। বিশ^বাসী এক হয়ে পৃথিবীকে মুক্ত করতে হবে সন্ত্রাস থেকে। মুক্ত করতে হবে যুদ্ধে থেকে। শরণার্থীদের ফিরিয়ে দিতে হবে নিজ ভূূমিতে। পৃথিবীর ১টা মানুষও যেন অনাহারে না থাকে। একটা মানুষও যেন গৃহহীনভাবে না থাকে। এই ধরিত্রী যেন হয় সকল ধর্ম-বর্ণের। এই প্রচেষ্টায় আমরা মানুষ হয়ে আমাদের সকলকে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যেতে হবে।



  
  সর্বশেষ
তথ্য গোপন করে উপাচার্যের পদে আব্দুল মঈন;
কুড়িগ্রামে ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন রাজা
ফেনীর ঈদ বাজারে ব্র্যান্ডের শো-রুম চাঙ্গা, সাধারণ দোকানে মন্দা;
কচুয়া এপির মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308