মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * কুড়িগ্রামে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৯ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা   * চট্টগ্রামে অস্ত্র মামলায় যুবকের ২২ বছরের কারাদণ্ড   * চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াসের অ্যাকশন   * চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ১ কেজি সোনাসহ আটক ৩   * চট্টগ্রামের জন্য সুখবর দিলো আবহাওয়া অফিস   * উৎপাদনে ফেরার ১৫ দিন পর আবারও চাঁদপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ   * আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুমিল্লা আদর্শ সদরে বিনা ভোটে নির্বাচিত হচ্ছেন সব প্রার্থী;   * চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   * কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সিএনজি ষ্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, দু‘গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া   * ককস বাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার শপৎ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন ;  

   শিশু-কিশোর
কিশোর অপরাধ ও প্রতিকার
  Date : 03-11-2018

মোঃ মেহেদি হাসান (সনি)
কিশোর অপরাধ বা ঔাঁবহরষব উবষরহয়ঁবহপু সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে আমাদের জানতে হবে কিশোর অপরাধ কি? কিশোর অপরাধ প্রত্যয়টি আধুনিক সমাজতত্বের আলোচনার অন্যতম প্রত্যয়। এটিকে একটি অন্যতম সামাজিক সমস্যা হিসেবে সমাজবিজ্ঞান চিহ্নিত করেছে। সাধারণত উন্নত, অনুন্নত কিংবা উন্নয়নশীল  সকল দেশেই কিশোর অপরাধ প্রত্যয়টি সামাজিক সমস্যা হিসেবে গন্য করা হয়।বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশ গুলোতে বিশেষ করে শিল্পায়োন ও নগরায়নের ফলে এ সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে যা দেশের ভবিষ্যত সম্ভাবনাকে অংকুরে বিনষ্ট করছে।
কিশোর অপরাপধের সংজ্ঞা:- অপরাধের সঙ্গে বয়সের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত বিশেষ করে শান্তির ক্ষেত্রে বয়স্ক ও কিশোর অপরাধের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হতো না। পরবর্তীতে বেলজিয়ামের প্রখ্যাত সমাজ তত্ববিদ এভলাকুইটিল সর্বপ্রথম গবেষণা করে আবিষ্কার করেছিলেন কিশোর ও বয়ষ্ক মানুষের মাঝে অপরাধের মধ্যে ভিন্নতা। শিল্প বিপ্লবের পরবর্তীকালে কিশোর ও বয়স্ক অপরাধ শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে বিভিন্ন সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়। ফলে অপরাধ দমন এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে আসে পরিবর্তন। এর ফলশ্রুতিতে কিশোর অরাধের বিষয়টি ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিচার বিশ্লেষণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সাধারণ অর্থে সমাজে যে প্রচলিত রীতি বা আইন আছে তা যদি কোন কিশোর ভঙ্গ করে তাকে বলে কিশোর অপরাধ। কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক/বালিকা দেশের প্রচলিত আইন অমান্য বা লংঘন করলে কিংবা সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হলে তাকে কিশোর অপরাধ বলা হয়। এখানে কিশোর অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিজ্ঞানীদের সংজ্ঞা প্রদান করা হলোঃ-
অপরাধ বিজ্ঞানী লুলমান এর মতে, কিশোর অপরাধ বলতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর উপর পরিবার ও সমাজের নিয়ন্ত্রনহীনতা বুঝায়।উড়ড়ঢ় এর মতে, “শিশু ও কিশোরদের দ্বারা সংঘটিত সামাজিক ভাবে নির্ধারিত কোন কাজ যদি প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নির্ধারিত আইনের আওতায় আসে তবে তা কিশোর অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
অপরাধ বিজ্ঞানী ঈধাবহ ্ ঋবৎফরহধহফ এর মতে, সমাজ কর্তৃক আকাংঙ্খিত আচরণ প্রর্দশনে কিশোরদের ব্যর্থতাই হলো কিশোর অপরাধ।
অপরাধ বিজ্ঞানী অ.ঠ ঔড়যহ এর মতে, কিশোর অপরাধ হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট বয়সীমার মধ্যে দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গকারী এবং সামাজিক নিয়ম লঙ্ঘনকারী যার চরিত্র সংশোধন কিংবা পুনঃবাসনের জন্য একটি নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা আদালতের সম্মুখীন হতে হয়।
উপরোক্ত সংজ্ঞা গুলো বিশ্লেষণ করলে আমরা কিশোর অপরাধের নি¤েœাক্ত বৈশিষ্ট গুলি দেখতে পাইঃ-
ক। কিশোর অপরাধ একটি আচারণ বিশেষ (অনাকাংক্ষিত আচরণ)
খ। এ ধরণের আচরণ ব্যক্তিবর্গের জন্য-হুমকি স্বরুপ গ। এ ধরণের আচরণ রাষ্ট্রীয় আইন ও সমাজ বিরোধী ঘ। এ ধরণের আচরণ অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে যেখানে বিবেচ্য বয়স বিভিন্ন দেশের প্রচলিত আইন/ষধংি/জঁষবং দ্বারা পরিচালিত।
কিশোর অপরাপধ নির্ধারণে বয়সীমা: যুক্তরাষ্টে ১৬ বছরের নিচের বয়সীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধকে কিশোর অপরাধ বলে চিহ্নিত করা হয়। দন্ডবিধি ৮২ ধারায় বলা হয়েছে ৭ বছরের নিচে কোন শিশুর কাজকে অপরাধ বলে বিবেচিত হবে না যদি না সে বিশেষ কোন সময় বা পরিস্থিতিতে তার কৃতকর্মের প্রকৃতি এবং ফলাফল সম্পর্কে বিচার করার সব ক্ষমতা অর্জন করে।অপরাধ বিজ্ঞানী রবার্ট মার্টন তার ঈড়হঃবসঢ়ড়ৎধৎু ঝড়পরধষ ঢ়ৎড়নষবস বইতে কিশোর অপরাধীদের বয়স ৭ থেকে ১৪ বছর নির্ধারণ করেছেন। সার্বিক আলোচনা শেষে আমরা ধরেনিতে পারি, কিশোর অপরাধের সময়সীমা ৭ বছরের উর্ধ্বে এবং ১৮ বছরের নিচে।
কিশোর অপরাধের কারণ: অপরাধ বিজ্ঞানী সাইরলব্রট কিশোর অপরাধের কারণ হিসেবে ৪টি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। যথাঃ-
১. ঊহারৎড়হসবহঃধষ (পরিবেশ গত)
২.  চযুংরপধষ (শারীরিক)
৩. ওহঃবষষবপঃঁধষ (বুদ্ধিগত)
৪. ঊসড়ঃরড়হধষ (ভাবগত)
কিশোর অপরাধের বহুবিধ কারণ থাকতে পারে। তবে কিশোর অপরাধ যেহেতু একটি সামাজিক প্রপঞ্চ সেহেতুতা সমাজের প্রভাবশালী মূল্যবোধ দ্বারা সংজ্ঞায়িত হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায় যে, কিশোর অপরাধকে আমরা নৈতিক ভাবে এবং সামাজিক ভাবে বিশ্লেষণ করব। তবে অধিকাংশ সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী কিশোর অপরাধের কারণ গুলোতে আমরা প্রচলিত ৫টি পর্যায়ে ভাগ করতে পারি। যথা-
ক) সামাজিক কারণ খ) অর্থনৈতিক কারণ
গ) মনস্তাত্বিক কারণ ঘ) রাজনৈতিক কারণ
ঙ) ভৌগলিক কারণ
নি¤েœ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আলোচনা করা হলোঃ-
ক) সামাজিক কারণ সমূহ:
১) পারিবারিক কারণ: একজন কিশোরের উপর পরিবারের প্রভাব অনেক খানি। বাবা মার বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে অনেক কিশোর কিশোরী তার বাবা মাকে হারাচ্ছে। এ কারণে কিশোরের স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব বিকাশে সমস্যা দেখা দেয়। তারা অসংলগ্ন আচরণ অথবা সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়।
২) সামাজিক শোষণ: আমাদের সমাজ ব্যবস্থা অনেক সময় কিশোর অপরাধের জন্য অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন আমাদের সমাজ ব্যবস্থা উক্ত কিশোর কিংবা কিশোরের পরিবারকে কোননা কোন ভাবে শোষণ করে তখন উক্ত কিশোর সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।
৩) মাতৃ¯েœহের বৈষম্যও সামাজিকীকরণের অভাব: পরিবার শিশুর সামাজিককীকরণের অন্যতম প্রধান বাহন। একটি শিশু যদি তার পরিবার থেকে ভাল আচরণ, শিক্ষা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস অর্জন করে তাহলে ঐ শিশুবা কিশোরের পক্ষে সমাজচ্যুত কিংবা বর্হিভূত আচরণ করা সম্ভব নয়। আবার অনেক সময় কোন কোন পরিবারের পিতা-মাতাকে যদি তাদের এক সন্তান অপেক্ষা অন্য সন্তানকে বেশি ভালোবাসেন ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করেন অর্থাৎ যেকোন ভাবে উক্ত সন্তানকে বঞ্চিত করে তাহলে উক্ত কিশোর পরিবার ও সমাজের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যায়। ফলে কিশোর অপরাধ সংঘটিত হয়।
৪) ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্তা: ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থার ফলে কিশোরেরা অনেক সময় শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং অপরাধ কার্যে জড়িয়ে পড়ে। যেমন স্কুলে নিয়মিত হাজিরা ব্যবস্থা যদি শিথিলতা করা হয় অথবা শিক্ষক যদি পুরষ্কার ও প্রশংসার কথা ভুলে গিয়ে হাজিরার প্রতি অত্যাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয় তখন কিশোরদের চরিত্রে স্কুল পালানোর প্রবণতা দেখা দেয়।
৫) সঙ্গদোষ: কিশোরদের মন স্বাভাবিক ভাবে কোমল কল্পনা প্রবণ ও অনুকরণ প্রিয় হয়ে থাকে। তারা যাদের সাথে চলাফেরা করে তারা যদি অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তাদের অনুকরণে কিশোররা বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হতে পারে।
৬) শিল্পায়োন ও শহরায়নের প্রভাব: শহরায়ন ও শিল্পায়োন কিশোর অপরাধের জন্য অন্যতম দায়ী। সমগ্র বিশ্বব্যাপী টৎনধহরুধঃরড়হ এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। শিল্পায়োন ও নগরায়নের ফলে চরম জনাকীর্ণ এলাকায় কিশোরদের চলাফেরা গল্প গুজব এবং বিভিন্ন ধরনের লোকের সাথে দলদ্ধভাবে এবং অবাধ মেলামেশার ফলে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা গড়ে ওঠে। এছাড়া শহরায়ও ও শিল্পায়োনের ফলে কর্মজীবি মানুষের ঘনঘন আবাসস্থল পরিবর্তন কিশোর অপরাধের জন্য দায়ী।
খ) অর্থনৈতিক কারণ:
১) দারিদ্রতা: দারিদ্রতা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা। বাংলাদেশের সকল অপরাধের মূলে রয়েছে এই দারিদ্রতা। দারিদ্রতা কিশোর অপরাধ বণ্টনে ও ভূমিকা রাখে। অনেক সময় টাকার লোভ দেখিয়ে দারিদ্র শিশুদের হরতাল, পিকেটিং কিংবা মাদকদ্রব্য চোরাচালান প্রভৃতি কার্যে লিপ্ত করা হয়, ফলে কিশোর অপরাধ সংঘটিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউটটের তথ্যানুযায়ী প্রতি বছর প্রায় ৬৯% কিশোরকে দারিদ্রের জন্য কিছু না কিছু অপরাধ করতে হয়।
২) মুদ্রাস্ফীতি: দেশে বিভিন্ন অস্থিতিশীল কারণে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে মানুষ চাহিদা অনুযায়ী যোগান পায় না। এ অবস্থায় নূন্যতম চাহিদা পূরণ করতে কিশোররা চুরি, ডাকাতি, কিংবা বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।
৩) সহজলভ্য শিশুশ্রম : শিল্পকারখানা ভিত্তিক নগরজীবন কর্ম সংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে শিশুশ্রম বিক্রি হয়। শিশু-কিশোররা বাসার কাজ, কুলিগিরি, ইটভাঙ্গা প্রভৃতি কাজ করে অর্থ উপার্জন করে। এদের প্রতি নমনীয় ও উদার মনোভাব পোষণকরে শাস্তিবা নিয়ন্ত্রয়ন ব্যবস্থা শিথিল করা হয়। ফলে এমতবস্থায় অনেক সময় শিশুরা তাদের অর্জিত অর্থ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজে ব্যয় করার সুযোগ পায়। যেমন: জুয়া খেলা, মদ্যপান, গাজা খাওয়া, অশ্লীল ছবি দেখা ইত্যাদি।
গ) মনস্তাত্ত্বিক কারণ:
১) অতি আদর বা শাসন: অতি মাত্রায় সন্তানকে আদর কিংবা অতি মাত্রায় শাসন করলে উক্ত ছেলে- মেয়েরা কিশোর অপরাধ করে। অনেক পিতামাতা আছে যারা সন্তানদের অতি মাত্রায় ¯েœহ করে এবং সকল দোষ ত্রুটি ক্ষমা করে দেয়। ফলে সন্তানেরা অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে এই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং সন্তানরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আবার অত্যধিক শাসনের ফলে শিশু কিশোরদের মনোবল ভেঙ্গে যায় এবং একসময় এরা অপরাধ প্রবণ হয়ে ওঠে।
২) দাম্পত্য কলহ: দাম্পত্য কলহ একটি অন্যতম সমস্যা। পারিবারিক মন্ডলে শিশু-কিশোররা যদি ঝগড়া বিবাদ দেখে তাহলে তার স্বাভাবিক বিকাশে বিঘœ সৃষ্টি হয়। তারা যদি সহসাই অজ্ঞ আচরণ, হিংসাত্ত্বক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে তাহলে তাদের পক্ষে কিশোর অপরাধী হয়ে পড়া অসম্ভব নয়।
৩) পিতামাতার আকাঙ্খা: অনেক অভিবাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করে থাকেন। কিন্তু পারিপার্শি¦ক বা বিভিন্ন কারণে হয়ত সন্তানরা অভিভাবকের আশা পূরণে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয় এবং বিভিন্ন অপরাধ কর্ম যেমন মাদক দ্রব্য সেবন করে।
৪) নিঃসঙ্গতা: বর্তমান নগর কেন্দ্রিক সভ্যতার উদ্ভবের ফলে পিতা-মাতা উভয়ই কর্মব্যস্ত থাকেন শহরের অধিকাংশ পেশাজীবি পিতা- মাতা, বাসা-বাড়ি অপেক্ষা কর্মস্থলে সময় বেশি দেওয়ার কারণে সন্তানেরা নিঃসঙ্গতা ভোগ করে। ফলে তারা নিঃসঙ্গতা থেকে পরিত্রানের জন্য বন্ধুদের সাথে আড্ডা, অশ্লীল সিনেমা দেখা, মাদক গ্রহণসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
ঘ) রাজনৈতিক কারণ:
১) রাজনৈতিকঅস্থিতিশীল পরিবেশ: কিশোর বয়সটি বিপদজনক বয়স। এই বয়সে তার অত্যধিক ভাবে ভাবপ্রবণ আদর্শবাদী ও বাক প্রয়োগশীল হয়। এই বয়সেই তারা জীবন মরণ সম্মুখে বেপরোয়া হয়। ভুল আদর্শে প্রণোদিত হয়ে ওরা রাজনৈতিক আদর্শে জড়িয়ে পড়ে।
২) রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতা: ক্ষমতা লোভী বহু নেতা কিশোরদের আবেগ প্রবণতার সুযোগ নিয়ে থাকেন। জনতাকে জাগানোর নামে কিশোরদের অসম্পূর্ণ হাতে জাগিয়ে তোলেন। প্রায়ই ওদের শিকার হয়ে নিজের ও পরিবারের সর্বনাশ ডেকে আনে।
ঙ) ভৌগলিক কারণ:
১) গ্রামের তুলনায় শহরের অপরাধ প্রবনতা বেশি: সাধারণত এবড়মৎধঢ়যরপধষ ওসঢ়ধপঃ কিশোর অপরাধের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। অধিকাংশ সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ একমত যে ভৌগলিক কারণে স্থানভেদে অপরাধের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন সমতল অপেক্ষা পাহাড়ি এলাকায় বা দুর্গম এলাকায় অপরাধ বৃদ্ধি পায় ঠিক তেমনি গ্রাম অপেক্ষা শহরের ছেলে মেয়েরা বেশি পরিমানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এর অন্যতম কারণ হল শিল্পায়োন ও নগরায়ন।
২) শীত প্রধান দেশের চেয়ে গ্রীষ্ম প্রধান দেশে অপরাধ বেশি: গ্রীষ্ম মন্ডলে খুব সহজেই বয়স বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
এছাড়া আরো কিছু উল্লেখ যোগ্য কারণ আছে-
* আধুনিক সংস্কৃতর প্রভাব
* উপযুক্ত চিত্তবিনোদনের প্রভাব
* নৈতিক কারণ
* দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজ
* বংশগত কারণ
বাংলাদেশ কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উপায়: বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ বর্তমানে একটি মারাতœক সমস্যা হিসেবে আতœপ্রকাশ করেছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রনের উপায় নি¤েœাক্ত ভাবে সম্পাদন করা যায়। যথাঃ-
* প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা * সংশোধন মূলক ব্যবস্থা
* পুনর্বাসন মূলক ব্যবস্থা
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে ঃ-
* পরিবারের ভূমিকা। * পিতামাতার দায়িত্ব। * বিদ্যালয়ের ভূমিকা।
* জ্ঞানমূলক সামাজিক পরিবেশ। * সুস্থ বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
* পরিত্যক্ত শিশুদের পুনর্বাসন করা।
কিশোর অপরাধ সংশোধনের প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা: বাংলাদেশের কিশোর অপরাধীদের সংশোধনের জন্য ঢাকার অদূরে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে একটি সংশোধনী প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান তিনটি দিক রয়েছে। যথা-
* কিশোর আদালত । * কিশোর হেফাযত। * সংশোধনী প্রতিষ্ঠান।
শেষ কথা ঃ কিশোর অপরাধীদের চরিত্র সংশেঅধনের জন্যে পূর্নবাসন ব্যবস্থা একটি বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক পদ্ধতি। যদি বৃত্তমুলক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং কিশোরদের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে পূনর্বাসন করা যায় তাহলে ভবিষতে তারা আর কোন অপরাধের সুযোগ পাবেনা। পরিশেষে বলতে চাই উপরোক্ত বিষয়ের প্রতি আমাদের উচিত যথাযথ দৃষ্টিপাত দেওয়া এবং সমাজ থেকে কিশোর অপরাধ বিতাড়িত করতে সহায়তা করা।



  
  সর্বশেষ
কুড়িগ্রামে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৯ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা
চট্টগ্রামে অস্ত্র মামলায় যুবকের ২২ বছরের কারাদণ্ড
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াসের অ্যাকশন
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ১ কেজি সোনাসহ আটক ৩

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308