শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * তথ্য গোপন করে উপাচার্যের পদে আব্দুল মঈন;   * কুড়িগ্রামে ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন রাজা   * ফেনীর ঈদ বাজারে ব্র্যান্ডের শো-রুম চাঙ্গা, সাধারণ দোকানে মন্দা;   * কচুয়া এপির মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান   * শ্রীপুরে বেতন-বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ,পুলিশ- শ্রমিক সংঘর্ষ   * কক্সবাজারের রামুতে সাড়ে ৭ কোটি টাকা মূল্যের ক্রিস্টাল মেথ জব্দ, গ্রেপ্তার-১   * হেঁটে হজ পালন করতে যাওয়া কক্সবাজার জেলার টেকনাফের জামিল এখন ইরানে;   * মহেশখালীর আলোচিত কিলার লোকমান প্রকাশ আজরাইল গ্রেফতার ;   * গাজীপুরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক পরিবার পেল ঢেউটিন ও নগদ অর্থ   * প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে `স্বাধীনতা পুরস্কার` গ্রহণ করলেন কুড়িগ্রামের কীর্তিমান সন্তান এস এম আব্রাহাম লিংকন  

   সাক্ষাতকার
দেশটা নামে স্বাধীন বাংলাদেশ, কিন্তু আইন-কানুনে পাকিস্তান
  Date : 18-04-2018

মানবাধিকার খবরের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ প্রদেশ বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল আলম খান  বাংলাদেশ প্রদেশ বাস্তবায়ন পরিষদের রাষ্টীয় কাঠামো শাসন ব্যবস্থা সম্বলিত ১৪ দফার বাস্তবায়ন সম্পর্কে যা বলেন তা থেকে গুরুত্ব পূর্ণ অংশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে  তুলে ধরা হল।
সিরাজুল আলম খান ঃ ব্রিটিশদের করা ১৮৬১ সালের যে আইন করেছিলো তা এখনো বলবৎ, যে আইন দিয়ে পাকিস্তান আমাদের শাসন করেছে সে আইনে এই স্বাধীন বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে এটা জনগণের জন্য এক ধরনের পরাধীনতা। ব্রিটিশরা শাসন শোষনের উদ্দেশ্যে ১৮৬১ সালে যেসব আইন করেছিলো তা আজো বহাল আছে। বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বলেছে ব্রিটিশরা এ দেশ শাসনের উদ্দেশ্যে ১৮৬১ সালে যেসব আইন করেছিলো তা দিয়ে আজও কাজ চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের সংখ্যা বারো শতাধিক। এর প্রায় সবই ব্রিটিশ আমলে প্রণীত, পাকিস্তান আমলেও এসব আইনের পরিবর্তন করা হয়নি। এসব আইন হলো উপনিবেশিক আইন। এ ধরনের আইন দিয়ে বিদেশি শক্তিরা তাদের উপনিবেশে (অধীনস্ত দেশ) করে থাকে, তার নামই পরাধীনত এ ধরনের আইন ও বিধিমালা দিয়েই ব্রিটিশ পাকিস্তানিরা আমাদেরকে শাসন, শোষণ এবং নির্যাতন করতো। ৯ মাস ব্যাপীসশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে এই দীর্ঘ কালের সংগ্রাম শেষ হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এ দেশ স্বাধীন হতে ২ লাখ মা-বোনের মান-সম্ভ্রম ও ৩০ লাখ বাঙালি শহীদের রক্তের বিনিময়ে এসেছে। বাংলার মানুষ হাজার বছর ধরে কোটি কোটি নর-নারী সীমাহীন দুর্দশা-দুর্ভোগকে উপেক্ষা করে ইতিহাস সৃষ্টির লক্ষে সংগ্রাম করেছে, যার ফলশ্রুতিতে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর মাত্র কয়েকদিন প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ পরিচালনা করে। কিন্তু অবাক বিস্ময়ে বাঙালিরা এবং বিশ্ব দেখলো বাংলাদেশ সরকার ব্রিটিশ পাকিস্তানিদের আইন-কানুন বজায় রেখেই এই দেশকে শাসন করা শুরু করলেন। তারপর জিয়া, এরশাদ, খালেদা, হাসিনা সকলে একইভাবে এইসব ঔপনিবেশিক আইনের মাধ্যমে দেশ শাসন করেছে এবং এখনো করছে। কার্যত যা হলো স্বাধীনতার এতোদিন পরেও দেশটা নামে স্বাধীন বাংলাদেশ, কিন্তু আইন-কানুনে ‘পাকিস্তান’। এ প্রসঙ্গে বলতে হয় ‘যে আইন ও বিধির দ্বারা বিদেশি শাসকরা শাসন করে সে আইন ও বিধি বদলিয়ে নিজেদের উপযোগী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই স্বাধীনতার মূল কথা। বিদেশি শাসক বদলিয়ে দেশীয় শাসকদের ক্ষমতায় বসিয়ে ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও শাসন ব্যবস্থা দিয়ে দেশ পরিচালনা করা জনগণের জন্য এক ধরনের পরাধীনতা; যাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় “অভ্যন্তরীন’ পরাধীনতা। গণপ্রজাতন্ত্রী, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির জন্য ১৯৭২ সালে প্রবর্তিত সংবিধানের পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবো, প্রচলিত সংবিধান বস্তুতপক্ষে অভ্যন্তরীন পরাধীনতা, অভ্যন্তরীন উপনিবেশবাদ সংরক্ষণ করার জন্য একটি অকাট্য দলিল, যার প্রায় সকল ধারা-উপধারাই জনগণের গণতন্ত্র চর্চা মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শ্রমজীবি-কর্মজীবি, পেশাজীবি জনগোষ্ঠীর কাঙ্খিত মুক্তির প্রতিবন্ধক। এই সংবিধান সাধারণ জনগণ যারা তাদের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে শ্রমজীবি-কর্মজীবি-পেশাজীবি হিসেবে সমাজে বিভাজিত তাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনায় ও রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারণে অংশীদার করার বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়েই কেবলমাত্র দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেয়। এই সংবিধান রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে সকল রাষ্ট্রীয় ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের জন্ম দিয়েছে, তা ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলের চেয়ে নতুন কিছু নয়। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলেই প্রবর্তিত জনগণের অধিকার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার উপযোগী অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়াবলীকে, বিকশিত করার পরিবর্তে পরিকল্পিত ভাবেই বর্জন করা হয়েছে, তাই স্বাধীন দেশ পরিচালনা করার উপযোগী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পক্ষে প্রচলিত সংবিধানই সীমাহীন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। এই সংবিধান কার্যত জনগণের অধিকার, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং জনগণের কর্তৃত্ব কায়েমের পরিবর্তে দল বা মহল বিশেষকে ক্ষমতায়িত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে চলছে। এই কারণে এই সংবিধানকে ভিত্তি করেই গত ৪৮ বছরে গণতন্ত্র চর্চার পরিবর্তে রাষ্ট্র-পরিচালনায় ব্যক্তিশাসন এক দলীয় শাসন, দলীয় শাসন সামরিক শাসন সহ মহল বিশেষের পর্যায়ক্রমিক পালাবদল হচ্ছে। কিন্তু দেশের এ সকল আইনে গণতন্ত্র রক্ষা হচ্ছেনা। তাই আমরা ব্রিটিশ-পাকিস্তানি নির্যাতন ও শোষণমূলক আইন-কানুন জরুরিভিত্তিতে সংস্কার করে এই পরাধীনতা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে ১৯৭২ সালের (ফেব্রুয়ারী মাসে) আমার উত্থাপিত ১৫ দফা সুপারিশমালা গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত হলোনা। এদিকে ৪৮ বছর পার হয়ে যাচ্ছে এখনো পরাধীন আমলের আইন-কানুন দিয়ে চলছে। জে এসডির ১০ দফা, আমার ১৪ দফা উত্থাপিত হয়েছে। এ হলো স্বাধীন দেশ উপযোগী নতুন ধারার রাজনীতি -এর কর্মসূচি। সেই প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করলে দেশের পরিস্থিতি আজ এমন হতো না। পুরোনো সংবিধান দিয়ে বর্তমান সংকট নিরসন করা কনোভাবেই সম্ভব নয়। এই পরাধীনতাকে নির্মূল করার জন্য আমাদের প্রস্তাব-১। দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ও ফেডারেল সরকার গঠন করতে হবে। ২। নি¤œ কক্ষ (তিনশত) ও উচ্চ কক্ষ (দুইশত) সদস্য নিয়ে দুইক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ (পার্লামেন্ট) গঠন করতে হবে। ৩। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকতে হবে। ৪। ৯টি প্রদেশ, প্রাদেশিক সরকার ও প্রাদেশিক পরিষদ থাকতে হবে।  ৫। প্রত্যেক প্রাদেশিক পরিষদে একশত পঞ্চাশ (১৫০) সদস্যের প্রতিনিধি থাকবে। এ তৃতীয়াংশ আসবে শ্রেণী পেশার প্রতিনিধি হিসেবে। উচ্চ কক্ষে প্রাদেশিক পরিষদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। ৬। ‘স্ব-শাসিত’ উপজেলা ব্যবস্থা থাকবে। ‘স্ব-শাসিত’ ব্যবস্থা সংসদ সদস্য ও আমরঅ প্রভাব মুক্ত থাকতে হবে। ৭। প্রবাসীদের অর্থায়নে প্রতি উপজেলা ও পৌরসভায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে হবে। ৮। সিটি কর্পোরেশন সমূহে মেট্রোপলিটন সরকার গঠন করতে হবে। ৯। উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট, মেগা-সী-পোর্ট ও কানেকটিভিটি স্থাপন করতে হবে। ১০। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ থেকে গঠিত হবে নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার। ১১। জাতীয় অর্থনৈতিক কমিশন (ঘঊঈ) গঠন করতে হবে। ১২। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (ঘঊঈ) গঠন করতে হবে। ১৩।উচ্চকক্ষে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। ১৪। ২০২০ সাল নাগাদ প্রত্যেক নাগরিককে বছরে কমপক্ষে দুই লক্ষ টাকা হারে পাঁচ সদস্যের প্রতি পরিবারের জন্য দশ লক্ষ টাকা আয় নিশ্চিত করতে হবে।          অনুলিখন-রুবিনা শওকত উল্লাহ।




  
  সর্বশেষ
তথ্য গোপন করে উপাচার্যের পদে আব্দুল মঈন;
কুড়িগ্রামে ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন রাজা
ফেনীর ঈদ বাজারে ব্র্যান্ডের শো-রুম চাঙ্গা, সাধারণ দোকানে মন্দা;
কচুয়া এপির মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308