বাগেরহাট সংবাদদাতা:
বাগেরহাটে সাত বছরের এক শিশুকে চুরির অভিযোগে লোহার রডের সঙ্গে বেঁধে নির্মম নির্যাতন ঘটনা ঘটেছে। বাগেরহাটের মংলা শ্রমক্যাণ রোডের দিনমজুর সামীমের ছেলে শাকিল। ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে মংলা শহরের টেডার্স মসজিদ সামনের রাস্তায় দুটি লোহার রড কুড়িয়ে যায় শাকিল। এ রড দুটি নিয়ে মংলা শহরের মেসার্স রফিকুল ইসলাম আয়রন স্টোরের সামনে একটি ভাঙ্গারীর দোকানে বিক্রি করতে যায় শাকিল। এ সময় ভাঙারী ব্যবসায়ী আবুল হোসেন (৫০) ও তার কর্মচারী শুক্কুর (৪৮) চুরির অভিযোগ এনে শিশু শাকিলকে লোহার রডের সঙ্গে বেঁধে ফেলে। শুরু হয় শাকিলের প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতন। যা দেখে আশপাশের লোকজন হতবাক হয়ে পড়ে। অনেকে শিশুটি বাঁচাতে ছুটে গেলেও মন গলেনি ভাঙারী ব্যবসায়ী আবুল ও শুকুরের। এক পর্যায়ে শিশু শাকিলকে হাত বেঁধে পিটিয়ে রোদে বসিয়ে রাখা হয়। খবর পেয়ে মংলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শাকিলকে উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কর্মচারী শুক্কুর হোসেনকে আটক করে পুলিশ। পরে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার পরিবারে কাছে দুপুরের দিকে হস্থান্তর করা হয়।
ঐদিন বিকেলে এ ঘটনায় শিশু নির্যাতনের অভিযোগে মংলা একটি মামলা হয়েছে।
মংলা থানা পুলিশের শহর উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) উত্তম চ্যাটার্জি বলেন, “দুপুর ১২টার দিকে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক মংলা ট্রেডার্স মসিদ রোডে সেমার্স রফিকুল আয়র ষ্টোরের সামনে যাই। এ সময় দেখি চুরির অভিযোগে আমানবিক ভাবে শিশু শাকিলকে হাত পিছনে দিয়ে বেঁধে রোদে বসিয়ে রেখেছে ভাঙরী ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও তার কর্মচারী শুক্কুর। পরে শিশু শাকিলকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রড চুরির অভিযোগে বেলা ১২টার দিকে শিশু ছেলেটিকে মেরে বেঁধে তার পায়ের ওপর রড দিয়ে তপ্ত রোদে বসিয়ে রাখা হয়। ব্যাপারটি মর্মান্তিক দেখে এ সময় কয়েকজন ছেলেটিকে উদ্ধার করতে চাইলেও বাধা দেয় ভাঙারী ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ও তার কর্মচারী শুক্কুর আলী। এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার শিশু শালিক বলেন, “আমি দুটি ছোট রড রাস্তায় পেয়েছি। যখন বিক্রি করতে তাদের কাছে যাই তারা আমাকে টাকা না দিয়ে চুরি করেছিস বলে মারপিট করে এবং বেঁধে রাখে। অনেক চিৎকার করলেও তারা আমারে ছাড়ে নাই। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করেছে।"
মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনায় থানায় শিশুটির পিতা দুজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ভাঙারী দোকানের কর্মচারী শুক্কুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপর আসামি আবুল হোসেকেকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান ওসি।