শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’   * বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন   * চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;   * ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;   * গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অগ্নিকাণ্ড   * কক্সবাজারের টেকনাফে ধরা পড়ল ৪০০ কেজি ওজনের তলোয়ার মাছ   * মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর   * ট্রাকচাপায় সড়কে ঝড়ল অটোরিকশা চালকের প্রাণ   * ৭নং ওয়ার্ডে এনজিও সংস্থা প্রত্যাশী এর সেমিনার অনুষ্ঠিত ;   * কুড়িগ্রামে অযৌক্তিক রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন  

   সাক্ষাতকার
বন খেকো গাছ চোরদের কাজ সুন্দরবনে আগুন পরিকল্পিত
  Date : 01-05-2016

গত ১৪ বছরে সুন্দরবনে আগুন লেগেছে প্রায় ২০ বার। আগুন লাগার পেছনের কারণ কী? প্রচ- তাপদাহ? নাকি নাশকতা? অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

 

এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় বনদস্যুরা গাছ কেটে তা লুকাতেই কখনো কখনো বনে আগুন দিচ্ছে। কেউবা বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে পুড়িয়ে দিচ্ছে বন।

১৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্প এলাকায় ফের আগুন লাগে। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। চার দিনের ব্যবধানে এ আগুন লাগে।

ঘটনার পর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বনাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, আশপাশে খুব বড় কোনো গাছ নেই। পুড়ে যাওয়া বনের মাঝে মাঝে দেখা যায় কেটে নেওয়া গাছের পুড়ে যাওয়া মুথা, সদ্য কেটে নেওয়া গাছের গুড়ি।

যদিও চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. বেলায়েত হোসেন গাছ কেটে নিয়ে বনে আগুন দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের বনসংলগ্ন রাজাপুর গ্রামের জুবায়ের কবির অগ্নিকা-ের এলাকা থেকে ফিরে জানান, এবারের অগ্নিকা- আগেরবারের চেয়ে বেশ বড় ধরনের। বারবার আগুন লাগা রহস্যজনক। ইচ্ছা করেই আগুন লাগানো হয়েছে।

একই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেনও অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন।

 

তাপদাহে আগুন?

প্রখর সূর্যের তাপে ও অধিক ঘনত্বের কারণে বনের তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়। তখন মরা গাছের ঘর্ষণে একটি আগুনের ফুলকির সৃষ্টি হয়। যা বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটায়।

এই কারণে কি সুন্দরবনে আগুন লাগে? এমন প্রশ্ন আসতেই পারে। কিন্তু বিজ্ঞানের ভাষায় আগুনের ফুলকির সৃষ্টি হতে হলে ওই এলাকার গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি হতে হবে। সেদিক থেকে সুন্দরবনে তাপমাত্রা থাকে অনেক কম। তাহলে সুন্দরবনে বার বার আগুন কেন লাগে প্রশ্নটা থেকেই যায়।

বন বিভাগ ও সংশ্নিষ্টদের মতে, বনখেকোরা গাছ কেটে তা লুকাতে বনে আগুন দিচ্ছে, পাশাপাশি স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরার সুবিধার্থে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।

বনজীবী অথবা মৌয়ালদের ফেলে যাওয়া বিড়ি-সিগারেট বা রান্নার আগুন এ জন্য কম দায়ী নয়।

 

১৪ বছরে ২০ বার

সবশেষ ১৮ এপ্রিল নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় আগুনে পুড়েছে লতাগুল্ম প্রজাতির গাছ। এর মাত্র চার দিন আগে ১৩ এপ্রিল সুন্দরবনের একই এলাকার নাংলি, আব্দুলা’র ছিলা, পঁচাকুড়ালিয়া ও নাপিতখালী এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের প্রায় ৯ একর বনভূমি পুড়ে যায়। বন বিভাগের সূত্রমতে জানা যায়, গত ১৪ বছরে সুন্দরবনে আগুন লেগেছে প্রায় ২০ বার।

 

১ম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০০২ সালের ২২ মার্চ সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে কটকাতে। পুড়ে যায় প্রায় ১ একর ছন বন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় পুড়ে যায় ৩ একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় আগুনে পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছন বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজী এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৩ একর বন। এ ঘটনার ৫ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় ৪.৫ একর বনভূমি। এরপর ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর কিছুদিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর এক দিন পর কলমতেজির টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকার দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকার ৫০ শতক, ৩ দিন পর ধানসাগর স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২.৫ একর বনভূমি।

২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় ৫ একর বন পুড়ে যায়। পরে ২০১১ সালের মার্চ মাসে দুই দফা বনে আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে ৩ একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ তারিখের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকার আগুন লাগে।

এসব ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জেলে ও বনজীবীদের দায়ী করে তদন্ত রিপোর্ট দিলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

২৭ মার্চের ১৭ দিন পর ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় ৮.৫ একর বন।

মাছ ধরতে বনে আগুন:

বনখেকোরা গাছ কেটে তা লুকাতে যেমন বনে আগুন দিচ্ছে, তেমনি স্থানীয় জেলেরাও কম দায়ী নয়।

এ ব্যাপারে সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ১৩ এপ্রিল সুন্দরবনের আগুন লাগার ঘটনা ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে বনে আগুন দেওয়া হয়েছে, এমনটাই প্রমাণ পেয়েছে বন বিভাগ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে বনের ভেতর মাছ ধরার সুবিধার্থে প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে সুন্দরবনের এই এলাকায় আগুন দেওয়া হয়ে। এর সাথে জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালী ও বন বিভাগের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

১৩ এপ্রিল সুন্দরবনে আগুন লাগানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ছয়জনকে আসামি করে ১৭ এপ্রিল সকালে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহমুদ টিটু বাদী হয়ে বন আইনে আদালতে ১টি মামলা করেন।

সবশেষ ১৮ এপ্রিল ২০১৬ আগুন লাগে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে অন্যতম শুষ্ক বিল এলাকা নাংলিতে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ১৩ এপ্রিল আগুন লাগার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আদালত ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাশকতার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে বনসংলগ্ন এলাকার দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধি



  
  সর্বশেষ
ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;
ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308