শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারকে অস্থিতিশীল করছে যুক্তরাজ্য : অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ;   * ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’   * বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন   * চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;   * ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;   * গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অগ্নিকাণ্ড   * কক্সবাজারের টেকনাফে ধরা পড়ল ৪০০ কেজি ওজনের তলোয়ার মাছ   * মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর   * ট্রাকচাপায় সড়কে ঝড়ল অটোরিকশা চালকের প্রাণ   * ৭নং ওয়ার্ডে এনজিও সংস্থা প্রত্যাশী এর সেমিনার অনুষ্ঠিত ;  

   স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
কিডনি রোগের কারণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
  Date : 01-10-2017



আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ কিডনি। কিডনির প্রতি অযতœ বা অনিয়মের ফলে জীবন হুমকির মুখে পরতে পারে যে কোন বয়সে। কিডনি ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকবে। আমরা সবাই কম বেশি কিডনি রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানি। কিন্তু কিডনির রোগ সম্পর্কে হয়ত অনেকেই সঠিকভাবে জানি না। যেহেতু সুস্থ জীবনের জন্য কিডনির সুস্থতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেহেতু বিভিন্ন ধরনের কিডনি রোগের কারণ, ঝুঁকি এবং কিডনি রোগ থেকে দূরে থাকার উপায়, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানা জরুরী। আজকে আমরা এ সম্পর্কেই জানব-

কিডনির কাজ এবং ভূমিকা:

আমাদের শরীরে যে দুটো কিডনি আছে তাদের কাজ হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় ১৭০ লিটার রক্ত পরিশোধিত করে শরীরকে সুস্থ রাখা। দুটো কিডনিতে প্রায় ২০-২৫ লাখ ছাঁকনি রয়েছে, যা অনবরত রক্তকে পরিশোধিত করে যাচ্ছে। কিডনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে এবং দেহের অস্থিগুলোকে শক্তিশালী করে থাকে।

কিডনি রোগের কারণ : ১. কিডনি রোগের অন্যতম প্রধাণ কারণ কিডনির প্রদাহ। কিডনির প্রদাহকে নেফ্রাইটিস বলে, যা কিডনির ছাঁকনি বা ফিল্টার মেমর্বেনকে ক্ষতবিক্ষত করে। এই রোগের কারণে শরীর থেকে অত্যাবশ্যক চৎড়ঃবরহ বেরিয়ে যায়। ২. উচ্চ রক্তচাপও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও হতে পারে কিডনি রোগ। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগ নয়, তবু কিডনিকে আক্রান্ত করে কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করে। ৩. যাদের রক্তচাপ অতিরিক্ত কম থাকে, তাদেরও হঠাৎ করে কিডনি খারাপ হতে পারে।

কিডনি রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ : কিডনির রোগে আক্রান্তরা শুরুর দিকে সমস্যা টের পান না। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুরুর দিকে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের শারীরিক দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, বমি বা বমি ভাব, পায়ে পানি আসা-এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। রোগনির্ণয় : কিডনির পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে প্রস্রাব পরীক্ষা এবং রক্তে ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ নির্ণয় করা। শুধু রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা এবং রক্তের ক্রিয়েটিনিন ও সুগার পরীক্ষা করেই জানা যায় কিডনি রোগ আছে কি না।

চিকিৎসা : ১. যারা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে চান, তাদের জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইধষধহপবফ উরবঃ গ্রহণ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং জীবনাচার মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। ২. কিডনি ৯০ শতাংর্শ অকেজো হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনই হলো বেঁচে থাকার একমাত্র উপায়। ৩. গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী কিডনি রোগে ভোগে থাকে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ রোগীর কিডনি অকেজো হতে পারে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখলে কিডনি রোগ থেকে রেহাই পাবার সম্ভাবনা আছে।

৪. শিশুদের ক্ষেত্রে টনসিলাইটিস, প্রস্রাবে প্রদাহ ও চর্মরোগের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা করতে হবে।

কিডনি সুরক্ষার জন্য বিশেষ কিছু খাবার নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। চলুন খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক- ১. ক্যাপসিকাম: কিডনি সুস্থ রাখতে ক্যাপসিকাম হতে পারে প্রথম পছন্দ। সালাদ কিংবা যেকোন রান্নাকে সুস্বাদু করতে এর জুড়ি নেই। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, বি-৬, ফলিক এসিড এবং ফাইবার বা আঁশ। এছাড়াও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপিন, যা কিনা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। ২. বাঁধাকপি ও ফুলকপি: বাঁধাকপি ও ফুলকপিকে বলা যায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এর খনি। এরা শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিকেলস এর বিরুদ্ধে কাজ করে কিডনিকে শক্তিশালী করে। পাশাপাশি ক্যান্সার এবং হৃদরোগ প্রতিরোধেও এরা কাজ করে। দামে সস্তা হলেও এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি-৬ ও ফলিক এসিড। ফুলকপির একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে, এটি শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সহায়তা করে।৩. রসুন: রসুনের গুণের কথা আমাদের সবারই জানা। এটি কিডনি প্রদাহ উপশম করার পাশাপাশি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিডনি রোগীদের জন্য রসুন বেশ উপকারী। ৪. পেঁয়াজ: পেঁয়াজের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ফ্লাভোনয়েড। এটি রক্তনালীতে চর্বি জমা প্রতিহত করে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিডনিরোগজনিত উচ্চরক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ক্যান্সার প্রতিরোধেও এর ভূমিকা রয়েছে। ৫. আপেল: বলা হয়ে থাকে প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে ডাক্তার থেকে দূরে থাকা যায়। নিয়মিত আপেল খাওয়ার অভ্যাস করলে তা কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে, হৃদরোগ এবং ক্যানসার প্রতিরোধেও এর ভূমিকা অনন্য। ৬. ডিমের সাদা অংশ: অনেকেই সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ডিমকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু ডিমের সাদা অংশে যে প্রোটিন রয়েছে তা কিডনির জন্য খুবই দরকারি। ৭. মাছ: মাছকে বলা হয়ে থাকে নিরাপদ প্রোটিনের উৎস। দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মাংসের চেয়ে মাছের ভূমিকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি মাছে রয়েছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড। এটি কিডনি, হার্ট ও লিভারের বিভিন রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া কোলেস্টেরল কমাতেও এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ৮. অলিভ ওয়েল: যেসব দেশে রান্নায় অলিভ ওয়েল বা জলপাই তেল ব্যবহার করা হয় সেসব দেশে কিডনি রোগ, হৃদরোগ, ক্যান্সার ইত্যাদির হার তুলনামূলকভাবে কম হয়। অলিভ ওয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পলিফেনল, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে চমৎকার কাজ করে। রান্নায় অথবা সালাদে অলিভ ওয়েল যোগ করলে বাড়তি স্বাদ ও পুষ্টির যোগান বাড়ে।

কিডনি নষ্ট হলে ডায়ালাইসিস করে চিকিৎসা করার সামর্থ্য বাংলাদেশে ১০ শতাংশেরও নেই। সচেতন হলে স্বল্প ব্যয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাংলাদেশে বর্তমানে দুই কোটি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। এভাবে কিডনি রোগী বৃদ্ধি পেতে থাকলে ২০২০ সালে বাংলাদেশে তিন কোটি ৮০ লাখ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত হবে বলে জরিপে জানা গেছে। জেনে রাখা দরকার, প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ৪০ হাজার রোগী কিডনি অকেজো হওয়ার কারনে অকালে মৃত্যুবরণ করে। তাই কিডনি রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যাবশ্যক।

 



  
  সর্বশেষ
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারকে অস্থিতিশীল করছে যুক্তরাজ্য : অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ;
ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308