মোঃ এমরান আলী রানা, নাটোর থেকে:
নাটোরে বড়াইগ্রাম ট্রাজেডির দুই বছর পেরিয়ে গেলেও রিজুর মোড় দূর্ঘটনা প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহিৃত হয়নি। নাটোরে সড়ক বিভাগের দূর্ঘটনা প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর স্মরণকালের ভয়াবহ সড়ক দূর্ঘটনায় ৩৮জন নিহত হওয়ার রিজুর মোড়ে ও তার কয়েক বছর আগে মহিষভাঙ্গা মোড়ের আর এক দূর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়। সড়ক দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় দেশের সকল মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ ও দূর্ঘটনা প্রবন এলাকাকে ব্লাক স্পট হিসেবে চিহ্নিত করে তা সংস্কারের মাধ্যমে নিরাপদে সহজভাবে যান বাহন চলাচলের উপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে নাটোরে রাজশাহী-পাবনা মহাসড়কের নাটোর অংশে চাঁদপুর বাজার, চাঁদপুর গোরস্থান, নাটোর পুলিশ লাইন, হয়বতপুর বাজার, আহম্মদপুর বাজার, বনপাড়া বাজার এবং গড়মাটি বাজারকে ব্লাক স্পট হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। এসব স্পটে রাস্তার বাঁক সোজা করে রাস্তা প্রস্তত করে সহজভাবে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। এরমধ্যে একমাত্র পুলিশ লাইন এলাকার ব্লাক স্পটটি মহাসড়কে ডিভাইডার দেয়া হবে। এজন্য ব্যয় করা হচ্ছে পাঁচ কোটি টাকা, তাবে এ বরাদ্দ অপর্যাপ্ত হওয়ায় আরো বৃদ্ধি পাবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ চার মাস হলো এসব এসব ব্লাক স্পটের কাজ শুরু করে দিয়েছে এবং আগামী বছরের প্রথম দিকে শেষ হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, নাটোর বগুড়া মহাসড়কের জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে একটি সহ আরো পাঁচটি ব্ল্যাক স্পট নির্ধারণ করে প্রয়োজনে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিকে নাটোরের ঘটনা প্রবন মহাসড়ক হিসেবে পরিচিত হাটিকুমরুল মহাসড়কে ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর দুপুরে বড়াইগ্রামের রিজুর মোড়ে যাত্রীবাহী বাস অথৈই পরিবহন ও কেয়া পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩৮জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরেও সেই রিজুর মোড় সড়ক ও জনপথ বিভাগের ব্লাক স্পট তালিকভূক্ত হতে পারেনি। এমনকি ঐ দূর্ঘটনার দিন রাতে ঘটনাস্থল পরির্দশনে আসা সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের নিজেও তখন পর্যন্ত ওই রিজুর মোড়টিকে ব্লাক স্পটের আওতায় না আনায় বিষ্ময় প্রকাশ করে গেছেন। এছাড়াও বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাশ দিয়ে প্রতিদিন কম গতির মোটরসাইকেল, সিএনজি অটো রিক্সা ও চার্জার অটো রিক্সা, নছিমান, করিমন, ভুটভুটি এবং গরু-মহিষের গাড়ি চলাচলের পৃথক সড়ক রয়েছে। এরপরেও মুল মহাসড়ক দিয়ে কম গতির ওই সব গাড়ি মাঝে মধ্যেই মূল মহাসড়কে ওঠে পড়ায় ওই মহা সড়কে চলাচলকারী বাস-ট্রাকসহ শত শত ভারী যানবাহন এবং প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস সাথে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, মোট ৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে নাটোর অংশে বনপাড়া-কাছিকাটার মধ্যে প্রায় প্রতি বছরই গড়ে সড়ক দূর্ঘটনায় ৫০ জনেরও বেশী মানুষ মারা যান। এরমধ্যে এই মহাসড়কের সবচেয়ে বেশী দূর্ঘটনা প্রবন এলাকা হিসেবে পরিচিত কাছিকাটা, আইরমাড়ি ব্রীজ, মানিকপুর কলা বাগান, রয়না ভরট হাট, রিজুর মোড়. রাজ্জাকের মোড়, রাজাকার মোড়, মহিষ ভাঙ্গা মোড় ও আগ্রান বাজার। এই নয়টি স্পট কেন দূর্ঘটনা প্রবন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে প্রথম ধাপের ব্লাক স্পটের আওতাভূক্ত হতে পারেনি তা জানতে চাইলে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম জানান, দূর্ঘটনা প্রবণ ব্ল্যাক স্পট নির্ধারণের প্রথম পর্যায়ের কাজে নিয়োজিত কনসালটেন্ট রিজুর মোড়ের দূর্ঘটনার আগেই ঠিক করে ফেলেছিল। তিনি আরো জানান, নতুন ভাবে দ্বিতীয় পর্যায়ে এবারে নাটোর-বগুড়া মহা সড়কে ডি সি অফিসের সামনে সহ তিনটি এবং বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহা সড়কে রিজুর মোড়, রাজ্জাকের মোড় ও রাজাকারের মোড়ে আরো ছয়টি ব্ল্যাক স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই সব ব্ল্যক স্পট নির্মাণের কাজও খুব শিঘ্রই শুরু হবে বলে তিনি জানান। নাটোর পুলিশ লাইনের সামনের মহাসড়কটিতে কোন বাঁক না থাকার পরেও প্রথম তালিকায় সেখানে ডিভাইডার দিয়ে বিশেষভাবে রাস্তা প্রশস্ত করণের কাজ করে এবং দ্বিতীয় তালিকায় একইভাবে জেলা প্রশাসক অফিসের সামনেও কোন বাঁক না থাকার পরে ওই অংশটিকে প্রথম ব্ল্যাক স্পটের আওতায় আনা হল সে ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ওই দুই জায়গায় যাত্রীবাহী বাস থামায় সেখানে যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ওই দুই স্পটে সড়ক দূর্ঘটনার আশঙ্কা অনেক বেশী। এই মহামরণের মহাসড়কটি দূর্ঘটনা প্রবন পয়েন্টগুলির কবে নাগাদ ব্ল্যাক স্পটের তালিকাভূক্ত হয়ে সড়ক দূর্ঘটনা কমিযে আনবে এখন সে প্রশ্নই বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর এলাকাবাসীর।