শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক   * কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান   * ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত   * মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি   * দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * রশিদ মিয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান ;   * কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন;   * বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলো মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য  

   প্রবন্ধ
বাঙালির দুর্গোৎসব: ইতিহাস ফিরে দেখা
  Date : 01-10-2016

শ্যামল ভট্টচার্য

আমি ধর্মবিশারদ নই কিংবা সেই অর্থে ধর্মপ্রাণ মানুষও নই। তবে মানবধর্মে বিশ্বাস করি। বাংলার প্রকৃতি আমাকে আকুলিত করে। দুর্গাপূজার বিষয়ে কিছু লেখা আমার জন্য দুঃসাহস বলতে পারেন। এ বিষয়ে অন্য সবাই যা জানেন, আমিও তা-ই জানি। জানি যে এটি হিন্দু বাঙালির শ্রেষ্ঠ সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছর মহা ধুমধামে এটি উদ্যাপিত হয় শরৎকালে যখন বাংলার প্রকৃতি অতি মনোরম। তখন গ্রীষ্মকাল প্রায় অপগত। বর্ষার অতিবর্ষণ নেই, বাতাস স্বাদু, সারা দিন আকাশে অলোক মেঘের আনাগোনা, মাঠভর্তি সবুজ ধানের ছায়া, ধানের বুকে দুধ জমছে, তার সুগন্ধে বাতাস আমোদিত, নদীগুলো তাদের স্ফীত কায়া সংবরণ করছে, ধানের শিষে ‘রৌদ্র-ছায়ায় লুকোচুরি খেলা’ চলেছে, বর্ষায় সতেজ পত্রপল্লবে মর্মর ধ্বনি, ফুল আর ফলের সমারোহ, চারদিকে ধানের গন্ধের সঙ্গে ফল-ফুলের গন্ধ মিশে পুরো প্রকৃতি বিপুল সমারোহ সাজিয়ে কিসের আগমনের যেন প্রতীক্ষা করছে। উৎসবের সঙ্গী হওয়ার জন্যই কি?

দুর্গাপূজা আর শারদোৎসব এভাবেই একাকার হয়ে যায়। তাই এই উৎসবের নাম শারদীয় দুর্গোৎসব। শরৎকালে এখানে দুর্গা দেবীর অকালবোধন। আর একটি বোধনও আছে বসন্তকালে। তখন তিনি বাসন্তী। একই পূজাপদ্ধতি, কিন্তু ততটা জনপ্রিয় নয়। তাই আমার মনে হয় এটি ঋতুরই উৎসব। এমন উজ্জ্বল দিন বাংলার বারো মাস্যায় নেই। ঐতিহ্যগতভাবে যে সময়টাকে বসন্তকাল ধরা হয়, সে সময়টায় সূর্য কিন্তু সরাসরি মাথার ওপর থেকে অগ্নি বর্ষণ করে। অগ্নিঝরা দীর্ঘতম দিন। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস। জ্যৈষ্ঠের ঝড় তো বাংলায় সুপরিচিত। রবীন্দ্রনাথ এটাই মেনে নিয়েছেন। বলেছেন ঋতুরাজ বসন্ত। সংস্কৃত-সাহিত্য অনুসরণ করতে গিয়ে এই প্রমাদ ঘটে থাকতে পারে। উত্তরাখন্ড, যেটা বর্তমান উত্তর ভারতের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দুটি তীর্থক্ষেত্র কেদারনাথ আর বদ্রিনাথ, সেখানে এখন বাংলার শরৎকালের আবহাওয়া। মহাপ-িত রাহুল সাংকৃত্যায়ন অন্তত সেই কথা বলেছেন তাঁর জয় যৌধেয় উপন্যাসে। কেদার-বদ্রি এ সময় অলোকানন্দা আর মন্দাকিনীর শান্ত জলধারায় সিক্ত হচ্ছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে, নদী দুটি স্বর্গ থেকে প্রবাহিত হয়েছে। হিন্দুর স্বর্গ মহাশূন্যে নয়। আরও উত্তরে ইলাবৃতবর্ষ নামে কোনো এক স্থানে। সাংকৃত্যায়ন জানিয়েছেন, স্থানটি উরাল অঞ্চলে হতে পারে। খননকাজের সময় এখান থেকে বহু প্রাচীন এক পাথরের দুর্গামূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। পুরাণে বর্ণিত স্বর্গের বর্ণনার সঙ্গে এই অঞ্চলের মিল আছে। এতেই মনে হয় প্রাচীনকালে আর্য নামে কোনো জাতি যদি এই উপমহাদেশে এসে থাকে, তাহলে তারা এই অঞ্চল থেকে এসেছিল এবং দুর্গাপূজা বহু প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত।

আমরা জেনেছি বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসামের কিয়দংশ (শিলচরসহ), ওডিশা, বিহার, ঝাড়খন্ড, অরুণাচল আর নেপাল ছাড়া ভারতের কোথাও দুর্গাপূজা হয় না। একই সময়ে ভারতের অন্যান্য অংশে যে পূজা অনুষ্ঠিত হয় তাকে ‘দশহরা’ বা ‘দশেরা’ বলে। দ্বীপরাষ্ট্র ফিজিতে এ দেশের মতোই দুর্গোৎসব পালিত হয়। এই এলাকার বাইরে প্রথিবীর যেখানেই হিন্দু বাঙালির অবস্থিতি আছে, সেখানেই বাংলা নিয়মে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে এই পূজা হয়। অবশ্য পাঁজি-পুঁথির তিথি-নক্ষত্র মিলিয়ে হয় না।

দুর্গা বৈদিক দেবী নন, পৌরাণিক দেবী। বেদ শ্রুতিশাস্ত্র আর পুরাণ স্মৃতিশাস্ত্র। কিছুটা ইতিহাসভিত্তিক। অবশ্য মৌখিক ইতিহাস। অষ্টাদশ পুরাণের মধ্যে মার্ক-েয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীপুরাণের চ-ী অংশে দুর্গা দেবীর কাহিনি আছে। দুর্গা কালী আর চ-ী একই আদ্যাশক্তির বিভিন্ন রূপ। এই আদ্যাশক্তি দুর্গারূপে মহিষাসুর নিধন করেছিলেন বলে আরেক নাম মহিষাসুরমর্দিনী। আদ্যাশক্তি এই দেবী বিভিন্ন রূপ ধরে বিভিন্ন অসুর নিধন করে দেবতাদের বারবার রক্ষা করেছিলেন বলে মার্ক-েয় চ-ীতে বর্ণনা আছে। অসুররা দেবতাবিরোধী শক্তি। তারা একবার দেবতাদের হটিয়ে স্বর্গ দখল করে নিয়েছিলেন এমন বর্ণনা আছে। এসব বর্ণনা থেকে প্রাগিতিহাসের কিছু আভাস পাওয়া যায়। প-িত ব্যক্তিরা এ বিষয়টি গবেষণা করে চলেছেন। ‘অসুর’ কারা? অধিকাংশ গবেষক মনে করেন, প্রাচীন আসেরীয় সভ্যতার লোকেরা ওই নামে পরিচিত ছিল। তাদের দেবতার নামও ছিল অসুর। আসেরিয়ার পরাক্রমশালী দিগ্বিজয়ী সম্রাট ছিলেন অসুর বাণী পাল। তাঁর রাজত্বকাল খ্রিষ্টপূর্ব ৬৬৮ থেকে ৬২৭। তাঁর বিশাল সা¤্র                াজ্য ছিল কাস্পিয়ান সাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত। দক্ষিণের সীমানা ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত ছুঁয়ে। আফগানিস্তান, ইরান তখন এই উপদ্বীপের অন্তর্গত ছিল। অসুর বাণী পাল যতখানি বিদ্যোৎসাহী ছিলেন, ততটাই ছিলেন নিষ্ঠুর। সুতরাং তাঁকে ভয় করার কারণ ছিল। সর্বোপরি তাঁর শিরস্ত্রাণে মহিষের শিং ব্যবহার করা হতো। বোধকরি সে কারণেই অসুরবিনাশী দেবতার স্মরণ নেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল। এসব বিচার প-িত-গবেষকেরা করবেন। সব ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে ইতিহাসের কিছুটা ক্ষীণ যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে প্রথম দুর্গাপূজা শুরু করেন রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের মহারাজা কংসনারায়ণ রায়, ষোড়শ শতকের গোড়ার দিকে। তখন দিল্লির সম্রাট ছিলেন আকবর। কংসনারায়ণ বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ছিলেন। কথিত আছে, সেই পূজা উপলক্ষে তখনকার দিনে নয় লাখ টাকা খরচ করা হয়েছিল।



  
  সর্বশেষ
খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক
কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান
৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308