বাংলার জন্য ক্লিক করুন

|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|

   তথ্য - প্রযুক্তি -
                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                 
ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতা : সর্বক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই এই গ্রহের শ্রেষ্ঠতম বুদ্ধিমান প্রানী হিসেবে পরিচয় দিয়ে এসেছে। সেই সূচনা লগ্ন থেকে ধাপে ধাপে মানুষের মেধার বিকাশের মাধ্যমে আমরা এই আধুনিক সভ্যতাটি পেয়েছি । এর মধ্যে অনেকগুলো যুগ আমরা পার করে এসেছি। কখনো প্রস্তর যুগ, কখনো লৌহ যুগ, কখনো তাম্র যুগ কিংবা কখনো ব্রোঞ্জ যুগ। বর্তমানে আমরা যে যুগে বাস করছি, তাকে বলা হয় তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ। এ যুগের ব্যাপারে একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়। আর তা হলো, “যে দেশ তথ্য ও প্রযুক্তিতে যতো এগিয়ে, সে দেশ ততো বেশি শক্তি ও সমৃদ্ধশালী।”
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীতায় ধীরে ধীরে তথ্য ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের দরবারে রূপ নিচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে। সরকারী-বেসরকারী সর্বক্ষেত্রে হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। ই-মেইল থেকে শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং, রাইড শেয়ারিং থেকে শুরু করে অনলাইনে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় সবই সম্ভব হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে। এতে যেমন কাজগুলো সহজ হয়ে গিয়েছে, তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে সময়। আজ থেকে ২০/৩০ বছর আগে এদেশের মানুষ যা কল্পনাও করতে পারেনি। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির মাধ্যমে তা সম্ভব করে দেখিয়েছে এদেশের সরকার। এদেশ থেকে প্রতিবছর অনেক ছাত্র-ছাত্রী পাস করে বের হয়। কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেও কোন চাকরি পায় না। তাদের এই বেকারত্ব সমস্যা দূরী-করণে সরকার হাতে নিয়েছে “লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং” নামের একটি উদ্যোগ। এসব বেকার যুবকদেরকে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে করে তারা ফ্রিল্যান্সিং করে পরিবারের তথা দেশের উন্নতিতে নিজেকে কাজে লাগাতে পারে। পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে অবস্থান নেওয়া আমাদের দেশ এখন প্রযুক্তি রপ্তানিতেও অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। বিশ্বের সব নামি-দামি ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে কাজ করছে আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী। যাদের রেমিটেন্সের টাকায় সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের অর্থনীতি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার বুদ্ধির কারনে এবং তার বিবেক বিবেচনার কারনে। কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ এই চিন্তাভাবনাগুলো মানুষ করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারে বলেই আমরা শ্রেষ্ঠ। তবে তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে আমাদের শ্রেষ্টত্ব ভিন্ন এক মাত্রা পেয়েছে। যে কম্পিউটার ছিলো একটা নির্বোধ যন্ত্র, তাকে আমরা বোধশক্তি দিতে সক্ষম হয়েছি এবং হচ্ছি। আপনি হয়তো পড়ে অবাক হচ্ছেন যে, জটিল-কঠিন হিসাব করা কম্পিউটারকে আমি কেন নির্বোধ-যন্ত্র বলছি! নির্বোধ-যন্ত্র এই জন্যে বলছি, কারন কম্পিউটার কাজ করে ব্যবহারকারির নির্দেশ অনুযায়ী; নিজে থেকে চিন্তাভাবনা করে তার কাজ করার কোনো ক্ষমতা নেই। যতোক্ষন পর্যন্ত আপনি তাকে কোনো কমান্ড না দিবেন, ততোক্ষন পর্যন্ত সে কোনো কাজ করবে না। যেমন ধরুন, আপনি কম্পিউটারে গান শুনছিলেন, ঠিক সেই সময় আপনার ফোনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কল আসলো। আপনি স্বভাবতঃ কী করবেন ? নিশ্চয়ই গান থামিয়ে রাখবেন। কথা শেষ হওয়ার পর আবার চালু করবেন। ঠিক এই জায়গাটাতেই কম্পিউটার নির্বোধ। কেমন হতো, যদি আপনার পোজ্ কিংবা প্লে করা না লাগতো! কম্পিউটার এমনিতেই বুঝে যেতো কি করতে হবে। তাহলে জিনিসটা আরো মজার হতো, তাই না? এটাকেই বলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে সোফিয়ার কথা। সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়া কথা বলা এক রোবট, যে কি-না স্মার্টলি সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ইংরেজিতে বলা হয়- Artificial Intelligence বা এ.আই. (A.I.)। “জন ম্যাকার্থি” নামক আমেরিকান একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ধারনা প্রদান করেন। তাকে এ.আই.-এর জনক বলা হয়।
আমরা সবাই জানি যে, কম্পিউটার কাজ করে ইলেকট্রনিক সিগ্নালের মাধ্যমে। পাওয়ার আছে মানে কম্পিউটার চলবে আর পাওয়ার না থাকলে, কম্পিউটার বন্ধ। কম্পিউটার সায়েন্সের ভাষায় ইলেকট্রনিক সার্কিটে বিদ্যুৎ থাকলে ‘১’ ধরা হয়। আর না থাকলে ‘শূণ্য’ ধরা হয়। ডিজিট বা সংখ্যা ‘১’ এবং ‘০’-এর উপর নির্ভরশীল বলে এসব সার্কিটকে বলে ডিজিটাল সার্কিট। তেমনি প্রতিটি ডিজিট অর্থাৎ ‘০’ এবং ‘১’-কে বলে এক একটি বিট। এ রকম ৪টি বিটকে একত্রে বলে নিবল ; আর ৮ বিটকে একত্রে বলে বাইট। আমরা নিশ্চয়ই সবাই কিলোবাইট, মেগাবাইট কিংবা গিগাবাইটের কথা শুনেছি। ১০২৪ বিটকে বলা হয় এক কিলোবাইট, তেমনি ১০২৪ কিলোবাইটের সমান হয় এক মেগাবাইট। আবার ১০২৪ মেগাবাইটের সমান এক গিগাবাইট। এমন লক্ষ কোটি বিট বাইট মিলে তৈরি হয় কম্পিউটার প্রোগ্রাম। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে, এমন কিছু বিশেষ প্রোগ্রামের সমষ্টি যেখানে পূর্ব থেকেই কম্পিউটারকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া থাকে ; কোন্ কাজ করলে কী আউটপুট আসবে।
আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের অজান্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে আসছি। যেমন আপনি যখন গুগল কিংবা ফেসবুকে কিছু সার্চ করেন, দেখবেন সেই বিষয় সম্পর্কিত অনেক কিছুই আপনার সামনে চলে আসে। ফেসবুক বা অন্য কোনো সোস্যাল মিডিয়ায় আপনি যখন কারো পোস্টে লাইক, কমেন্ট বা রিয়্যাক্ট করেন, তারপর থেকে আপনার টাইম-লাইন জুড়ে শুধু তার পোস্টই থাকে ; কিন্তু কেন ? এর কারন হচ্ছে ফেসবুকের সার্ভারে থাকা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সফ্ট্ওয়্যার আপনার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে এবং সফটওয়্যারটি তার অ্যালগরিদম (Algorithm) অনুযায়ী আপনার যেসব জিনিস পছন্দ, সেগুলো সাজেস্ট করে থাকে। অনলাইন মার্কেটিং সেক্টরে এজন্য এ.আই. গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে। Amazon, E-bay কিংবা আলিবাবার মতো বড় বড় অনলাইন মার্কেটিং কোম্পানীগুলো এ.আই.-কে কাজে লাগিয়ে তাদের কাস্টমারদেরকে পছন্দের প্রোডাক্ট সাজেস্ট ক’রে এবং ইম্প্রেশন সৃষ্টি ক’রে অনেক বেশী সেল্ পাচ্ছে। গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটার থেকে শুরু করে মোটামুটি সব জায়গায় এ.আই.-এর ব্যবহার রয়েছে।
বাংলাদেশের এ.আই. প্রযুক্তিও পিছিয়ে নেই। রাইড-শেয়ারিং সার্ভিস প্রোভাইডার ‘পাঠাও’ তাদের মোবাইল অ্যাপে যুক্ত করেছে এ.আই. প্রযুক্তি। যাতে ক’রে তারা তাদের কাস্টোমারদেরকে আরো ভালো সার্ভিস প্রদান করতে পারে। বাংলাদেশের একদল তরুণ উদ্ভাবক তৈরি করেছে ‘ডিজিটাল ড্রাইভার’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মোবাইল অ্যাপস্। যার মাধ্যমে চালক গাড়ি চালানো অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য চোখ বন্ধ করলেই তার ফোনে উচ্চস্বরে বেজে উঠবে সংকেত। ফলে তন্দ্রাচ্ছন্নতার কারনে সৃষ্ট দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাবে। এছাড়া, আরো অনেক নতুন নতুন উদ্ভাবন হচ্ছে এ.আই. প্রযুক্তি ব্যবহার করে। হয়তো কোন একদিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে চালক ছাড়া গাড়ি তৈরির প্রযুক্তি আমরা রপ্ত করতে পারবো। বিশ্বের বাজারে ‘টেস্লা’-র মতো নামিদামি চালকবিহীন গাড়ির পাশে স্থান পাবে আমাদের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন গাড়ি। এজন্য আমি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলবো, চাকরির পিছনে না ছুটে আপনারা মেধার পিছনে ছুটুন। দক্ষতা অর্জনের পিছনে ছুটুন। নতুনত্বের পিছনে ছুটুন। দেখবেন, সফলতা একদিন আসবে ; আসতেই হবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতা : সর্বক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
                                  

মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই এই গ্রহের শ্রেষ্ঠতম বুদ্ধিমান প্রানী হিসেবে পরিচয় দিয়ে এসেছে। সেই সূচনা লগ্ন থেকে ধাপে ধাপে মানুষের মেধার বিকাশের মাধ্যমে আমরা এই আধুনিক সভ্যতাটি পেয়েছি । এর মধ্যে অনেকগুলো যুগ আমরা পার করে এসেছি। কখনো প্রস্তর যুগ, কখনো লৌহ যুগ, কখনো তাম্র যুগ কিংবা কখনো ব্রোঞ্জ যুগ। বর্তমানে আমরা যে যুগে বাস করছি, তাকে বলা হয় তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ। এ যুগের ব্যাপারে একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়। আর তা হলো, “যে দেশ তথ্য ও প্রযুক্তিতে যতো এগিয়ে, সে দেশ ততো বেশি শক্তি ও সমৃদ্ধশালী।”
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীতায় ধীরে ধীরে তথ্য ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের দরবারে রূপ নিচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে। সরকারী-বেসরকারী সর্বক্ষেত্রে হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। ই-মেইল থেকে শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং, রাইড শেয়ারিং থেকে শুরু করে অনলাইনে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় সবই সম্ভব হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে। এতে যেমন কাজগুলো সহজ হয়ে গিয়েছে, তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে সময়। আজ থেকে ২০/৩০ বছর আগে এদেশের মানুষ যা কল্পনাও করতে পারেনি। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির মাধ্যমে তা সম্ভব করে দেখিয়েছে এদেশের সরকার। এদেশ থেকে প্রতিবছর অনেক ছাত্র-ছাত্রী পাস করে বের হয়। কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেও কোন চাকরি পায় না। তাদের এই বেকারত্ব সমস্যা দূরী-করণে সরকার হাতে নিয়েছে “লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং” নামের একটি উদ্যোগ। এসব বেকার যুবকদেরকে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে করে তারা ফ্রিল্যান্সিং করে পরিবারের তথা দেশের উন্নতিতে নিজেকে কাজে লাগাতে পারে। পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে অবস্থান নেওয়া আমাদের দেশ এখন প্রযুক্তি রপ্তানিতেও অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। বিশ্বের সব নামি-দামি ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে কাজ করছে আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী। যাদের রেমিটেন্সের টাকায় সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের অর্থনীতি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার বুদ্ধির কারনে এবং তার বিবেক বিবেচনার কারনে। কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ এই চিন্তাভাবনাগুলো মানুষ করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারে বলেই আমরা শ্রেষ্ঠ। তবে তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে আমাদের শ্রেষ্টত্ব ভিন্ন এক মাত্রা পেয়েছে। যে কম্পিউটার ছিলো একটা নির্বোধ যন্ত্র, তাকে আমরা বোধশক্তি দিতে সক্ষম হয়েছি এবং হচ্ছি। আপনি হয়তো পড়ে অবাক হচ্ছেন যে, জটিল-কঠিন হিসাব করা কম্পিউটারকে আমি কেন নির্বোধ-যন্ত্র বলছি! নির্বোধ-যন্ত্র এই জন্যে বলছি, কারন কম্পিউটার কাজ করে ব্যবহারকারির নির্দেশ অনুযায়ী; নিজে থেকে চিন্তাভাবনা করে তার কাজ করার কোনো ক্ষমতা নেই। যতোক্ষন পর্যন্ত আপনি তাকে কোনো কমান্ড না দিবেন, ততোক্ষন পর্যন্ত সে কোনো কাজ করবে না। যেমন ধরুন, আপনি কম্পিউটারে গান শুনছিলেন, ঠিক সেই সময় আপনার ফোনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কল আসলো। আপনি স্বভাবতঃ কী করবেন ? নিশ্চয়ই গান থামিয়ে রাখবেন। কথা শেষ হওয়ার পর আবার চালু করবেন। ঠিক এই জায়গাটাতেই কম্পিউটার নির্বোধ। কেমন হতো, যদি আপনার পোজ্ কিংবা প্লে করা না লাগতো! কম্পিউটার এমনিতেই বুঝে যেতো কি করতে হবে। তাহলে জিনিসটা আরো মজার হতো, তাই না? এটাকেই বলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে সোফিয়ার কথা। সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়া কথা বলা এক রোবট, যে কি-না স্মার্টলি সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ইংরেজিতে বলা হয়- Artificial Intelligence বা এ.আই. (A.I.)। “জন ম্যাকার্থি” নামক আমেরিকান একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ধারনা প্রদান করেন। তাকে এ.আই.-এর জনক বলা হয়।
আমরা সবাই জানি যে, কম্পিউটার কাজ করে ইলেকট্রনিক সিগ্নালের মাধ্যমে। পাওয়ার আছে মানে কম্পিউটার চলবে আর পাওয়ার না থাকলে, কম্পিউটার বন্ধ। কম্পিউটার সায়েন্সের ভাষায় ইলেকট্রনিক সার্কিটে বিদ্যুৎ থাকলে ‘১’ ধরা হয়। আর না থাকলে ‘শূণ্য’ ধরা হয়। ডিজিট বা সংখ্যা ‘১’ এবং ‘০’-এর উপর নির্ভরশীল বলে এসব সার্কিটকে বলে ডিজিটাল সার্কিট। তেমনি প্রতিটি ডিজিট অর্থাৎ ‘০’ এবং ‘১’-কে বলে এক একটি বিট। এ রকম ৪টি বিটকে একত্রে বলে নিবল ; আর ৮ বিটকে একত্রে বলে বাইট। আমরা নিশ্চয়ই সবাই কিলোবাইট, মেগাবাইট কিংবা গিগাবাইটের কথা শুনেছি। ১০২৪ বিটকে বলা হয় এক কিলোবাইট, তেমনি ১০২৪ কিলোবাইটের সমান হয় এক মেগাবাইট। আবার ১০২৪ মেগাবাইটের সমান এক গিগাবাইট। এমন লক্ষ কোটি বিট বাইট মিলে তৈরি হয় কম্পিউটার প্রোগ্রাম। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে, এমন কিছু বিশেষ প্রোগ্রামের সমষ্টি যেখানে পূর্ব থেকেই কম্পিউটারকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া থাকে ; কোন্ কাজ করলে কী আউটপুট আসবে।
আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের অজান্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে আসছি। যেমন আপনি যখন গুগল কিংবা ফেসবুকে কিছু সার্চ করেন, দেখবেন সেই বিষয় সম্পর্কিত অনেক কিছুই আপনার সামনে চলে আসে। ফেসবুক বা অন্য কোনো সোস্যাল মিডিয়ায় আপনি যখন কারো পোস্টে লাইক, কমেন্ট বা রিয়্যাক্ট করেন, তারপর থেকে আপনার টাইম-লাইন জুড়ে শুধু তার পোস্টই থাকে ; কিন্তু কেন ? এর কারন হচ্ছে ফেসবুকের সার্ভারে থাকা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সফ্ট্ওয়্যার আপনার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে এবং সফটওয়্যারটি তার অ্যালগরিদম (Algorithm) অনুযায়ী আপনার যেসব জিনিস পছন্দ, সেগুলো সাজেস্ট করে থাকে। অনলাইন মার্কেটিং সেক্টরে এজন্য এ.আই. গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে। Amazon, E-bay কিংবা আলিবাবার মতো বড় বড় অনলাইন মার্কেটিং কোম্পানীগুলো এ.আই.-কে কাজে লাগিয়ে তাদের কাস্টমারদেরকে পছন্দের প্রোডাক্ট সাজেস্ট ক’রে এবং ইম্প্রেশন সৃষ্টি ক’রে অনেক বেশী সেল্ পাচ্ছে। গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটার থেকে শুরু করে মোটামুটি সব জায়গায় এ.আই.-এর ব্যবহার রয়েছে।
বাংলাদেশের এ.আই. প্রযুক্তিও পিছিয়ে নেই। রাইড-শেয়ারিং সার্ভিস প্রোভাইডার ‘পাঠাও’ তাদের মোবাইল অ্যাপে যুক্ত করেছে এ.আই. প্রযুক্তি। যাতে ক’রে তারা তাদের কাস্টোমারদেরকে আরো ভালো সার্ভিস প্রদান করতে পারে। বাংলাদেশের একদল তরুণ উদ্ভাবক তৈরি করেছে ‘ডিজিটাল ড্রাইভার’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মোবাইল অ্যাপস্। যার মাধ্যমে চালক গাড়ি চালানো অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য চোখ বন্ধ করলেই তার ফোনে উচ্চস্বরে বেজে উঠবে সংকেত। ফলে তন্দ্রাচ্ছন্নতার কারনে সৃষ্ট দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাবে। এছাড়া, আরো অনেক নতুন নতুন উদ্ভাবন হচ্ছে এ.আই. প্রযুক্তি ব্যবহার করে। হয়তো কোন একদিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে চালক ছাড়া গাড়ি তৈরির প্রযুক্তি আমরা রপ্ত করতে পারবো। বিশ্বের বাজারে ‘টেস্লা’-র মতো নামিদামি চালকবিহীন গাড়ির পাশে স্থান পাবে আমাদের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন গাড়ি। এজন্য আমি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলবো, চাকরির পিছনে না ছুটে আপনারা মেধার পিছনে ছুটুন। দক্ষতা অর্জনের পিছনে ছুটুন। নতুনত্বের পিছনে ছুটুন। দেখবেন, সফলতা একদিন আসবে ; আসতেই হবে।

এই নিয়ম না মানলে খেলতে পারবেন না পাবজি!
                                  

পাবজি খেলার সময় আপনি কি ব্যবহার করেন বিভিন্ন মুড, কোড বা চিটস? তাহলে আগামী ১০ বছর আপনি খেলতে পারবেন না পাবজি।

জনপ্রিয় ও সমালোচনার শীর্ষস্থানে থাকা এই গেমটি খেলার সময়, খেলাটিকে সহজ ও জেতার উপযোগী করে তোলার জন্য একাধিক চিট নথিভুক্ত করে গেমের মধ্যে। পাবজি এখন থেকে আর এই চালাকিকে প্রশ্রয় দেবে না।

 

জানা গেছে, পাবজি সকল মানুষকেই সমানভাবে খেলার সুযোগ করে দেয়। কিন্তু যারা খেলায় ফাঁকি দিয়ে চিট ব্যবহার করে জিততে চায় তাদের জন্য এই কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে পাবজি। মোবাইল গেমিং দুনিয়ায় এরকম পদক্ষেপ আগে কোন গেমকে নিতে হয়নি।

প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, যারা পাবজি খেলতে খুব ভালোবাসেন, তারা ১০ বছর যদি পাবজি খেলতে না পারে তার জন্য ব্যবহার করবে না এই চিটস বা মুড।

তেন্সেন্ট গেম জানিয়েছে, থার্ড পার্টি অ্যাপের মাধ্যমে এই ধরনের চিটস জোগাড় করছে পাবজি খেলোয়াড়রা। যার ফলে অনায়াসে তাদের ফোনে ঢুকে পড়ছে হ্যাকারদের নজর। পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে গেমস।

গত সেপ্টেম্বরে পাবজি প্রায় ৩৫০০ জন খেলোয়াড় এর ওপর ১০ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

 
তথ্য প্রযুক্তি
                                  

 

তথ্য ও যোগাযোগ

মোঃ মেহেদি হাসান (সনি)

 

সূদুর প্রাচীনকালে প্রচলিত ছিল ও (আই) অর্থ্যাৎ ইনফরমেশন বা তথ্য । মানুষ যখন শিকারে যেত তখন শিকার কীভাবে করতে হবে , কী শিকার করতে হবে এ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে শিকারে যেত । শিকার যুগের পর আসে কৃষি যুগ । এ যুগে তারা সংগ্রহ করত কৃষি বিষয়ক । কীভাবে ফসলের বীজ বপন করতে হয় , কোন সময়টায় ফসল বুনতে হয় । তখন মানুষ কীভাবে ফসল কাটতে হয় ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতো । পরবর্তী সময় কালে প্রাপ্ত তথ্যকে সংগ্রহ করে রাখার জন্য টেকনোলজি বা প্রযুক্তির সহায়তা নিতে লাগলো । বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্যকে ধরে রাখার জন্য প্রযুক্তির সহায়তার নানান ধরনের আবিস্কার হলো। তথ্যকে পক্রিয়াজাত করা , সংস্কার করা , সংরক্ষন করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তে লাগলো । এই সময়কে আইটি বা তথ্য প্রযুক্তি বলে ধরে নেয়া যেতে পারে।
তথ্যই শক্তি ঃপৃথিবীতে বেঁচে থাকার স্বার্থে তথ্যের প্রয়োজন। যার নিকট যত বেশি তথ্য রয়েছে সে তত বেশি শক্তিশালী । পরিবেশ, খাদ্য, জীবন-ব্যবস্থা, প্রতিবেশী , আবহাওয়া,কর্ম, সুযোগ, শিক্ষা গবেষণা, প্রতিযোগি ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের তথ্য একান্ত প্রয়োজন যদি আমাদের কাছে তথ্য আসা বন্ধ হয়ে যায় তবে হয়তো আমাদের বেঁচে থাকা সম্ভব হবে না । বেঁচে থাকার তাগিদে প্রযুক্তি যে তথ্য সংগ্রহ সাহায্য করে তা নিসন্দেহে মূল্যবান , কারণ এক সময় বলা হতো জ্ঞানই শক্তি বর্তমানে বলা হয় তথ্যই শক্তি । সম্প্রতি বাংলাদেশের উপকুলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর এর আঘাতে লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে সমগ্র উপকূল কিন্তুু ৯১ এর জলোচ্ছাসের চেয়ে প্রাণহানী ঘটেছে তুলনা মূলক কম এর একটি মাত্র কারণ হল যথাসময়ে জনগননের নিকট পর্যাপ্ত তথ্য প্রবাহ। সভ্যতার বিকাশের ক্ষেত্রে তথ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর সেই তথ্য আমাদের সকলের প্রয়োজন , প্রয়োজন তথ্যের মহাসড়কে প্রবেশ করা ।
পরবর্তীতে অর্থাৎ বর্তমান সমযে আইটির সাথে যুক্ত হয়েছে কমিউনিকেশন অর্থাৎ যোগাযোগ । আইটির সাথে কমিউনিকেশন যুক্ত হয়ে এমন এক প্রত্যয় গড়ে তুললো যা সকলের সামনে খুলে দিল এক নতুন দিগন্তের । তথ্যেও সহজ প্রাপ্যতা , অবাধ প্রবেশধিকার ইত্যাদি প্রত্যয় নিয়ে গড়ে উঠলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি । সাধারণত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্যের আদান প্রদান বা যোগাযোগ করাকেই বলা হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি । আর এ কাজের জন্য নিত্যনতুন উদ্ভাবন করা হচ্ছে নানান ধরনের প্রযুক্তি পন্য । এসব তথ্যকে নিয়ে যাচ্ছে মানুষের হাতের নাগালে , ফলে যোগাযোগ হয়ে যাচ্ছে সহজ থেকে সহজতর ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে আমাদের শিক্ষার সম্পর্কিত করা হচ্ছে তখন আমাদের সামনে এসে দাড়াচ্ছে দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ
১। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা এবং
২। শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ।
অনেকেই এই বিষয় দুটোকে একসাথে গুলিয়ে ফেলেন । কিন্তুু বিষয় দুটো সম্পূর্ণ পৃথক । প্রথমটি একটি বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেমন পদার্থ বিজ্ঞান , সাধারন গনিত ইত্যাদি । দ্বিতীয়টি পাঠদানের সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করা । আমাদের বর্তমান শিক্ষানীনিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযক্তিকে শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়ে আসা হয়েছে । এরই ধারাবাহিকতায় সরকার ষষ্ঠ শ্রেনিতে বিষয় হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা নামে একটি বিষয় যুক্ত করেছে । এখন দেখা যাক ,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইটি শিক্ষা এবং শিক্ষায় আইসিটি এর মধ্যে পার্থক্যটা কী ? সহজ কাথায় বলতে গেলে , যখন আইসিটি আরো কিছু ব্যবহার দেখতে পাই ,যেমন- শিক্ষামূলক বিভিন্ন ওয়েবসাইট , স্মার্ট ক্লাশরুম , ই-লাইব্রেরী , মোবাইল মাধ্যমে ইংরেজী শেখানো , ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে ক্লাশ নেয়া , স্টুডেন্ট ডেটাবেস , ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি ।
প্রযুক্তি মানুষকে পরিবর্তিত বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা তথ্য জ্ঞান দক্ষতা কৌশল প্রবণতা এবং যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ করে তোলে। কার্ল মার্কেসের ভাষায় বিশ্বের প্রযুক্তি হচ্ছে মানুষের প্রতিদিনের সাথী । মানুষ এই প্রযুক্তির সাথে প্রতিদিন অব্যাহতভাবে গায়ে গায়ে লেগে আছে । এ লেগে থাকা হয় জ্ঞান -দক্ষতা বা শারীরিক আকারে চলতে পারা। সোজা সরল ও সংক্ষেপ বলা যায় প্রযুক্তি মানুষকে যোগায় জীবন সহায়ক ব্যবস্থা বা লাইপ সার্পোট সিস্টেম , যে কারণে মানুষ পৃথিবীতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার শক্তি অর্জন করে।
তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে মানুষের জীবন হয়েছে এখন অনেক সহজ সরল এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় । ঘরে বসে বিশ্ব ভ্রমন , মার্কেটিং ব্যাংকিং বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস কিংবা ভার্চুয়াল ওযার্ল্ডে ঘোরা ঘুরি করা এখন একেবারে সহজ। তাইতো এখন মানুষের এমন কোন কাজ নেই যেখানে প্রযুক্তির ছোয়া লাগেনি । একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পৃথিবীর দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য খুলে দিয়েছে অপার সম্ভাবনার দুয়ার । ইতিহাসের ধারাাবাহিকতায় কৃষি বিল্পব , শিল্প বিল্পবের পর বর্তমান পৃথিবীর নতুনতর এক বিল্পব মুখোমুখি হতে চলেছে যার নাম তথ্য বিল্পব ।একথা বলার পর অপেক্ষা রাখে না যদি এই শতাব্দীকে নতুন কোন নামে অভিহিত করা হয় তবে তার জন্য উপযুক্ত । বর্তমান শতাব্দীর গ্লোবালইজেশনের ফলে একটি দেশের উন্নয়ন এবং দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি নিয়ামকের ভূমিকা পালন করছে । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হাতিয়ার হচ্ছে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট । কমিপউটার এবং ইন্টারনেটের বদৌলতে পৃথিবী এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিনত হয়েছে । বলা চলে পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয় নয আঙ্গুলের ডগায় চলে এসেছে । কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যপক ব্যবহার এবং সফল প্রয়োগ যে কোন অনুন্নত দেশকে উন্নত করতে অগ্রনী ভূমিকা পালনে সচেষ্ট ।কম্পিউটার এমন এক ধরনের প্রযুক্তি যার মাধ্যমে শিক্ষা , চিকিৎসা , বিনোদন , অর্থনীতি , রাজনীতি , বিনিয়োগ ,ব্যবসা , বানিজ্য , পরিকল্পনা , গবেষণা, নিযন্ত্রণ , ডিজাইন , ইত্যাদি বিষয়াকে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংযুক্ত করা সম্ভব। আর এই তথ্য প্রবাহ একটি সম্বন্বিত সূত্রে গ্রথিত হয়ে পৃথিবীর সকল জাতি , ধর্ম , বর্ণ - গোষ্ঠির মানুষকে সম্বন্বিত তথ্য প্রবাহের সঙ্গে অবিরাম সংযুক্ত রাখতে সচেষ্ট । আমরা দেখেছি বিংশ শতাব্দীতে তথ্যেও আদান প্রদান হয়েছে টেলিগ্রাফ, টেলিফোন,টেলিফ্যাক্স , টেলেক্স, পোষ্টাল, কুরিয়ার সার্ভিস ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে কিন্তু বর্তমানে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব অগ্রগগতি সাধিত হওয়ায এখন আর এই সমস্ত ম্যাধ্যম নতুন কিছুনয়। এখন প্রেরক প্রতিটি ক্ষেত্রেই কত দ্রুত ও কত সুষ্ঠভাবে প্রয়োজনীয় বার্তা প্রাপকের কাছে পৌছাতে পারবে এই ভাবনায় এখন উদ্ভাবকের ভিত্তি হিসাবেকাজ করছে।
কম্পিউটার এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিটি অভূতপূর্ব,যুগান্তকারী অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্য বিল্পব সাধিত করেছে তার নাম ইন্টারনেট । আজ সমস্ত উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে বা তথ্যের মহাসড়কে প্রবেশ করে চলেছে। কম্পিউটার ভিত্তিক তথ্য বিনিময়ের অপূর্ব এই প্রায় সব ধরনের তথ্য ব্যবস্থা এই জি আই ্আই এর অন্তভুক্ত; তথ্যেও এই মহা রাজ পথে যার অবস্থান যত দৃঢ় হবে ঠিক সেই অনুপাতে তথ্য আর জ্ঞানের ভান্ডার চলে যাবে তার নিয়ন্ত্রনে , যা ছাড়া ভবিষ্যতে টিকে থাকা সম্ভব নয় । তথ্যের মহাসড়কে ইন্টারনেট একত্রিত করে চলেছে -, টেলিফোন, কনফারেন্সি, সরাসরি বিপনন, শিক্ষা গবেষনা, অফিস ব্যবস্থাপনা, টিভি সম্প্রসার, প্রতিরক্ষা ইত্যাদিকে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি সংগ্রহ করতে পারেন অতিদ্রুত প্রায় নিখরচায় ঘরে বসেই । মুহূর্তের মধ্যেই বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত বিভিন্ন ব্যাক্তিগন বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জরুরী মিটিং সম্পূন্ন করতে পারেন । আপনি একজন আইনজীবি আদালতে বসেই মামলা নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন অথবা আপনি একজন ডাক্তার রোগীর রোগ নির্নয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন এসব সমস্যার সমাধান দিতে পানে ইন্টারনেট । আপনি আপনার সমস্যা প্রয়োজনীয় ঠিকানায় মেইল করে জেনে নিতে পারেন । ঘরে বসেই বিখ্যাত সব লাইব্রেরী ক্যাটালগ খুজে দেখতে পারেন, জেনে নিতে পারেন আপনার প্রয়োজনীয় উপকরণটি সেখানে আছে কিনা । আমেরিকার লাইব্রেরী অব কংগ্রেস তৈরী করেছে লাইব্রেরী অব কংগ্রেস মার্ভেল:সংক্ষেপে এলসি মার্ভেল যার মাধ্যমে খুজে দেখতে পারেন তাদের সংগৃহিত দলিলপত্র । এমন আরো অনেক তথ্যের ভান্ডার রয়েছে ইন্টারনেটের ইনফরমেশন সুপার হাইওয়েতে যেমন ঘরে বসে একজন সাহিত্যরসিক ডুবে যেতে পারেন আয়ারল্যান্ডেরন সাহিত্যতের আর্কাইভের চকিউরিয়াতেচ পেতে পারেন একজনস্থাপত্য শিল্পী ভেনিসের স্থাপত্য শিল্পী ভেনিসের স্থাপত্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশধীকার । এসব বিষয়ে আগ্রহ না থাকলে নিছক ব্যাক্তিগত সখের খবর জেনে নিতে পারেন । হয়তোবা অনীল ও নীলার ভালোবাস বিনিময়ের ঘটতে পারে আপনার জীবনে অনুরুপ ঘটনা । এক সময়ে বলা হতো কম্পিউটার চলে এলে অনেকের চাকুরী যাবে ,বেকারত্ব বাড়বে কিন্তু আপনার বাস্তবে কথাটির সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটতে চলেছে-, কম্পিউারই দিতে পারে লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মেও সংস্থান ।
দেশ এবং বিদেশের আইটিটি প্রফেশনালদের চাহিদা অনেক বেশী । ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে প্রায় ৬ মিলিয়ন আইটি পেশাজীবির প্রয়োজন । শুধুমাত্র ভারতেই প্রয়োজন হবে ৫লাখ আইটি প্রফেশনাল (ন্যসকমের স্ট্যাডি অনুযায়ী)। বাংলাদেশে যদি ৬ মিলিয়নের মধ্যে ৫০,০০০ আইটি প্রফেশনাল সরবারহ করতে পারে তাহলে দেশের বর্তমান রেমিট্যান্স দিগুন করা সম্ভব ।
আউটসোর্সিং ঃবর্তমান বিশ্বায়নে সারা পৃথিবীতে জুড়ে চলছে আইসিটির আউটসোর্সিং জোয়ার । আইটিসির উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত জন্ম নিয়েছে নতুনতর এক অর্থনীতি যার নাম জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনিতি বা নলেজ ইকোনমি। জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনীতি বিকাশের সাথে সাথে আমেরিকার , ইউরোপ কিংবা বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোতে প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে বিপুল পরিমান তথ্য প্রসেসিং বা প্রক্রিয়াকরণ । যার ফলে উন্নয়নশীল দেশ সমূহে আইসিটি এনাবল্ড সার্ভিসেস কে কাজে লাগিয়ে অর্জন করছে বিপুল পরিমান বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন এর ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে দেশের বিপুল সংখ্যক প্রশিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠির।
কম্পিউটার জগৎ আগষ্ঠ ২০১৬ সালের সংখ্যায় প্রকাশিত একটি রির্পোটে দেখা যায়– বাংলাদেশের বার্ষিক আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটি আসে পোশাক শিল্প থেকে যার পরিমান প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা । অন্যদিকে বিশ্বের হেলথকেয়ার ইনফরমেটিক্সের (প্রটোকল ডিজাইন ডাটাবেজ, টেলিমেডিসিন, টার্মিনোলজি ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটিং এবং মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশন) প্রায় ২০ লাখ ১কোটি টাকা । আর আমরা যদি সেই একলাখ কোটি টাকা । এর যদি ২০ শতাংশের ছোট একটা অংশ ও মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশনের হয় তাহলে এর বাজার প্রায় ১ কোটি টাকা । আর আমরা যদি সেই এক লাখ ২ কোটি টাকার ২০ ভাগের একটি একটা ক্ষুদ্র অংশও প্রতিযোগিতা করে নিতে পারি তবে এর পরিমান দাড়াবে ৫ হাজার কোটি টাকা ।
আউটসোর্র্সিং এ বাংলাদেশের সম্ভবনার কারণ হিসেবে যে বিষয় গুলো দেখা যায় তা হলো-;
ক্স ভৌগলিক ভাবে বাংলাদেশের এবং দক্ষিণ এশিয়াস্থ দেশ গুলো ১২ ঘন্টা টাইম জোন এ অন্তভ্ক্তু এর ফলে যখন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে রাত্রি যার ফলে প্রায় ২৪ ঘন্টা কাজ করার সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশীরা ।
ক্স আমাদের রয়েছে প্রচুর প্রশিক্ষিত তথ্য প্রযুক্তিবিদ এবং ইংরেজী ভাষা জানা এক ঝাঁক উদ্দমী তরুন তরুনী যারা ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম ।
ক্স বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমের বাজার মূল্য খুবই কম । এখানকার শিক্ষিত বেকার জন শক্তি স্বল্প বেতনে উন্নত মানের সেবা প্রদানে সক্ষম । এ ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে ভালো করতে পারে । যারা প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ আমাদের গার্মেন্টস শিল্প।সাধারণত একটি ইন্ডাষ্ট্রি গড়তে যে পরিমান বৈদিশিক বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে ,আইসিটি এনাবল্ড সার্ভিসের যে কোন সেক্টরে এর বিনিয়োগের পরিমান চার ভাগের এক ভাগ লাগবে।
যদি প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও স্থিতিশীল কর্ম পরিবেশ গড়ে তোলা যায় তাহলে আউটসোর্র্সিংয়ের বিশাল বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে তেমন সমস্যা হবে না ।

 

 

 

 

 

মহাকাশে যাচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’
                                  

এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’। ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইচ টিপে উদ্বোধনের পর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা  স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠানো হবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট সদস্য দেশের তালিকায় নাম লেখাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে রাশিয়ার উপগ্রহ  কোম্পানি ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ (অরবিটাল স্লট) কেনা হয়েছে। মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমায় প্রায় ২১৯ কোটি টাকায় ১৫ বছরের জন্য এই কক্ষপ কেনা হয়েছে। স্যাটেলাইট পাঠানোর কাজটি বিদেশে হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাংলাদেশ থেকেই।
এজন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট থেকে গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের যন্ত্রপাতিও আমদানি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের নির্দিষ্ট তারিখ আগে  থেকে বলা সম্ভব হয় না। এপ্রিলের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে অর্থাৎ ৭ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৫৪৪  কোটি টাকা। আর ঋণ হিসেবে এইচএসবিসি ব্যাংক বাকি ১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য রাখা হবে। এই কৃত্রিম উপগ্রহ স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও  বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা দেবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ট্যারিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারা দেশে নিরবচ্ছিন যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল থাকা, পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।  দেশের টিভি চ্যানেলগুলো স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ বছরে ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এই স্যাটেলাইট চালু হলে সে টাকা এখন থেকে  দেশেই থেকে যাবে।
একই সঙ্গে এই স্যাটেলাইটের তরঙ্গ ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সম্ভাবনা রয়েছে। স্যাটেলাইটের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হলে আশপাশের কয়েকটি দেশে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার  সেবা দেয়ার জন্য জিয়োসিক্রোনাস স্যাটেলাইট সিস্টেম (৪০ ট্র্যান্সপন্ডার, ২৬ কেইউ ব্র্যান্ড, ১৪ সি ব্যান্ড) এর গ্রাউন্ড সিস্টেমসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে এই স্যাটেলাইটের তরঙ্গ ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সম্ভাবনা রয়েছে। স্যাটেলাইটের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হলে আশপাশের কয়েকটি দেশে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার  সেবা দেয়ার জন্য জিয়োসিক্রোনাস স্যাটেলাইট সিস্টেম (৪০ ট্র্যান্সপন্ডার, ২৬ কেইউ ব্র্যান্ড, ১৪ সি ব্যান্ড) এর গ্রাউন্ড সিস্টেমসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যাবে।


গজমহল ট্যানারী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২ দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা
                                  

॥ মুহাম্মদ আবদুল কাহহার, হাজারীবাগ ॥
ঢাকাস্থ হাজরীবাগের গজমহল ট্যানারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা সম্পন্ন হয়েছে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারী, রবিবার বেলা ১১ টায় মেলা উদ্বোধন করেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জনাব মো: সেলিম। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগে আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষার্র্থীরা অংশ নেন।
বিদ্যালয়ের ২নং ভবনের ৫টি কক্ষে বিজ্ঞান মেলায় শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন বিষয়ের ১৮টি প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়।
মেলা চলে প্রতিদিন ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরনী পর্বে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জনাবা সুফিয়া খাতুন এর সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জনাব মো. আরিফ ও মো. কোরবান আলী।
এ সময়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব মো. হাবিবুর রহমান।
প্রতিষ্ঠান প্রধান ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সচিব জনাবা সুফিয়া খাতুন তার বক্তৃতায় বলেন, বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান মনস্ক, দক্ষ, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক হওয়া প্রয়োজন।
 পুরস্কার বিতরনী শেষে উপস্থিত অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেলার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।





গুগলে বাংলা নলেজ গ্রাফ চালু
                                  

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক ::

‘বাংলা নলেজ গ্রাফ’ চালু করেছে মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল। এর ফলে এখন থেকে বাংলা বর্ণে বাংলা শব্দ লিখলেই গুগল খুঁজে এনে দেবে সেই শব্দের সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় তথ্য। এছাড়া উইকিপিডিয়ার তথ্যগুলোও এখন গুগল সার্চে সহজে পাওয়া যাবে। সঙ্গে থাকবে বানান ঠিক করে দেয়া বা ‘স্পেল চেক’ সেবা।

 

বিশ্বের ৪১টি ভাষায় পাওয়া যায় ‘নলেজ গ্রাফ’। বিশ্ব জুড়ে ১০০ কোটিরও বেশি বিষয় গুগলের তথ্যভাণ্ডারে রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে সে সম্পর্কে ৭০০০ কোটি তথ্য। এবার সেসব তথ্য বাংলা বর্ণেও চলে আসবে হাতের নাগালে।

গুগলের বাণিজ্যিক কৌশলে এর আগেও আঞ্চলিক ভাষা গুরুত্ব পেয়েছে। গত দশ বছর ধরে ভিডিও`র বাজারে রাজত্ব করেছে ইউটিউব। এ বার সেই বাজারে ভিড় জমতে শুরু করেছে। ভাগ বসাতে চাইছে নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন ও ফেসবুক। এই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে ইউটিউব-এর বাজি আঞ্চলিক বাজার। আর,এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বাংলা ভাষা।

 

 

 

 

মানবাধিকার খবর/মোশতাক রাইহান

আউটসোর্সিংয়ের নতুন খাত খুঁজে পেয়েছি: জুনায়েদ আহমেদ পলক
                                  

মানবািধকার খবর রিপোর্ট

জুনায়েদ আহমেদ পলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘আইটি আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা নতুন একটি খাত খুঁজে পেয়েছি। সেটি হলে অ্যাকাউন্টিং বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও)। এটাকেই এখন থেকে ফোকাস করা হবে যাতে তরুণরা এতে উৎসাহিত হয়।’

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের আইসিটি বিভাগ সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

‘এগিয়ে যাওয়ার তিন বছর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে পলক বলেন, ‘২০১২ সাল নাগাদ আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ও সেবা রফতানি করে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করবো। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এই লক্ষ্যমাত্রা ১ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে এই আয় ৭০০ মিলিয়ন ডলার।’

সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি বিভাগের গত তিন বছরের অর্জন, সাফল্য ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইটি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ, আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ অনেকে।

ইয়াহু শেষ, নতুন নাম আলতাবা
                                  


অনলাইন ডেস্ক |

ইয়াহু থেকে আলতাবাইয়াহু আর ইয়াহু থাকছে না। বদলে যাচ্ছে নাম। ইয়াহু হয়ে যাচ্ছে আলতাবা। ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মারিসা মেয়ার ইয়াহু পরিচালনা বোর্ড থেকেও সরে দাঁড়াচ্ছেন। ভেরিজন কমিউনিকেশন ইয়াহুকে কিনে নেওয়ার চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর এই পরিবর্তনগুলো আসবে।

ইয়াহু পরিচালনা বোর্ড এর মূল ইন্টারনেট ব্যবসা অর্থাৎ ডিজিটাল বিজ্ঞাপন, ইমেইল ও মিডিয়া সম্পদগুলো ৪৮৩ কোটি মার্কিন ডলারে ভেরিজনের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।

গত বছরে দুবার ইয়াহুর বিশাল তথ্যভান্ডার হ্যাক হওয়ার তথ্য ফাঁস হয়। ভেরিজনের কর্তৃপক্ষ বলছে, এই হ্যাকিংয়ের ঘটনা তারা তদন্ত করবে।

চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর ইয়াহুর আরও পাঁচ পরিচালক বোর্ড থেকে সরে দাঁড়াবেন। গতকাল সোমবার ইয়াহু এ তথ্য প্রকাশ করে। অন্যান্য পরিচালকেরা আলতাবার সঙ্গে থেকে যাবেন। নতুন কোম্পানির বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন এরিক ব্র্যান্ট।

ভাইবার হোয়াটসএ্যাপ ইমোতে কলরেট বসছে !
                                  

 


        
নিজস্ব প্রতিবেদক | মানাধিকার খবর |
 

বিনা টাকায় কথা বলার দিন শেষ হচ্ছে। ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, ইমোর মতো স্মার্টফোন এ্যাপ ব্যবহার করে ভয়েস কল করা হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক কলরেট প্রতিনিয়ত কমে আসছে। আন্তর্জাতিক কলরেট হ্রাসে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। সরকারের রাজস্ব বাড়াতে বিটিআরসি এখন এ্যাপগুলো ব্যবহারের নীতিমালা তৈরির চিন্তা করছে। মোবাইল ফোনে এ ধরনের ‘ওভার দ্য টপ’ (ওটিটি) এ্যাপ ব্যবহার করে ভয়েস কলের সুবিধা নিয়ে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্তে নিতে যাচ্ছে বিটিআরসি। ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, ইমোর ব্যবহার নিয়ে দুনিয়াজুড়েই চিন্তা করা হচ্ছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ ওটিটি নিয়ে এ কথা জানিয়েছেন।

ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, অবৈধ ভিওআইপি কলের কারণে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। আবার ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, ইমোর মতো স্মার্টফোন এ্যাপে ভয়েস কল সুবিধার কারণে আন্তর্জাতিক ফোনকল ব্যবসায় বাংলাদেশ মার খাচ্ছে। অবৈধ ভিওআইপি বন্ধের নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু স্মার্টফোন এ্যাপগুলোর বিষয়ে কিছু করা হচ্ছে না। বিশ্বব্যাপী এসব এ্যাপ কিভাবে ব্যবহার হবে তা নিয়ে চিন্তা করা যাচ্ছে। ডাটার ওপর ভিত্তি করে বিনা টাকায় কথা বলার বিষয়টি বিশ্বব্যাপীই আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এখান থেকেও কিভাবে ‘রেভিনিউ’ আনা যায় এ বিষয়ে আমাদের একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে ভয়েস কল বলতে আর কিছু থাকবে না। সব ডাটাভিত্তিক হয়ে যাবে। তখন টুজি, থ্রিজি নেটওয়ার্কগুলো দারুণভাবে মার খাবে। হোয়াটসএ্যাপ, ইমো, ভাইবার, মাইপিপল এ্যাপগুলোর মাধ্যমে শুধু বিদেশ থেকে কল করা হচ্ছে না, দেশের মধ্যেও এখন ডাটা ব্যবহার করে ভিডিও ও ভয়েস কল করা হচ্ছে। ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই এ্যাপগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক কল কমছে। সরকারের রাজস্ব বাড়াতে এসব এ্যাপ নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা অল্পদিনের মধ্যে এসব এ্যাপ বিষয় একটা সিদ্ধান্তে যাব।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট বাড়ানোর আগে বৈধ পথে গড়ে প্রতিদিন ১২ কোটি মিনিট ইনকামিং কল দেশে আসত। ২০১৫ সালের আগস্টে কল টার্মিনেশন রেট দেড় সেন্ট থেকে বাড়িয়ে দুই সেন্ট করার পর এখন দৈনিক গড়ে সাড়ে ৬ থেকে ৭ কোটি মিনিটে নেমে এসেছে। বিদেশ থেকে ইনকামিং কল কমার জন্য দাম বাড়ানোকেই মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে না। এখানে আরও অনেক কারণেই কল কমে আসছে। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় স্কাইপে, ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, ইমোর মতো ভিওআইপি এ্যাপের মাধ্যমে ভয়েস কলের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। এ সুবিধা ভয়েস কল কমার আরও একটি কারণ। এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করা জরুরী হয়ে পড়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সারা দুনিয়ায় স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৩৯০ কোটি ছড়িয়ে গেছে। ফলে মানুষ খুব সহজেই ইন্টারনেট সংযোগ পাচ্ছে। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই এসব এ্যাপ ব্যবহার করা যাচ্ছে। শতকরা ৪৫ ভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ওটিটি অএ্যাপ ব্যবহার করছেন। ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে স্মার্টফোন ওটিটির ব্যবসার আকার দাঁড়াবে ৬২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তখন ভয়েস কল বহুগুণ কমে যাবে। বিশ্বের অনেক দেশই ফোরজি (চতুর্থ জেনারেশন) চালু করেছে। এ বছর দেশেও ফোরজি চালু করা হবে। ফোরজি চালু হলে তো ডাটাই ব্যবহার হবে। এরপর ফাইভজি চলে আসবে। ফাইভজি মানে মেশিন টু মেশিন। ডাটা ছাড়া আর কিছু থাকবে না। কোন আইজিডব্লিউ (ইন্টারনেট গেটওয়ে) ও আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) এসব থাকবে না। উন্নত দেশগুলোতে আইজিডব্লিউ নেই। কল আদান-প্রদানে আইজিডব্লিউর কোন প্রয়োজন নেই। মাঝখান থেকে আইজিডব্লিউগুলো সুবিধা ভোগ করছে।

উল্লেখ্য, দেশে জঙ্গী তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের জানুয়ারিতে সরকার ভাইবার, ট্যাঙ্গো, হোয়াটসএ্যাপসহ কয়েকটি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ও ভিওআইপি এ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করে দিয়েছিল। অল্প কিছুদিন পর সরকার তা আবার খুলে দেয়।

 

 

অনলাইনে কনটেন্ট চুরি ঠেকাতে ডিএমসিএ
                                  

ডেস্ক | মানাধিকার খবর |

ডিএমসিএ বা ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট অ্যাক্ট নামে একটি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় অনলাইনে প্রকাশিত সকল আধেয় (কনটেন্ট) কে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব।

অনলাইনের কনটেন্টে কপিরাইটের সিম্বল (©) না থাকলেও এই সুরক্ষা পাওয়া যাবে। সে জন্য প্রয়োজন স্রেফ নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং এতদসংক্রান্ত কিছু জ্ঞান ও ধারনা।

যে কোনও কনটেন্ট, হোক তা অনলাইনের, প্রিন্ট কিংবা অন্য কোনও মিডিয়ার, কপিরাইট আইন দিয়ে সুরক্ষিত। কপিরাইটের লঙ্ঘন প্রতিহত করতে চাই সারাক্ষণের নজরদারি। কিছু ব্যবস্থা নিলেই এই অপরাধ প্রতিহত করা সম্ভব। আর এটা এতটাই কঠোর ও কার্যকর যে, আপনি যদি নিজের কনটেন্ট অনলাইনের দুই জায়গায় হুবহু ব্যবহার করেন, কিংবা কপি-পেস্ট করেন নিজেও বিপাকে পড়ে যেতে পারেন।
অনলাইন কনটেন্ট চুরি প্রতিহত করা কেনো জরুরি?

মূলত সকল মিডিয়াতেই কপিরাইট গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এর মধ্য দিয়েই যিনি কনটেন্ট তৈরি করেন তাতে তার নিজের একটা বৈধ মালিকানা নিশ্চিত হয়। লেখক, শিল্পী সকলের ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রযোজ্য। এই কপিরাইটের মাধ্যমেই তারা তাদের লেখাটি বা চিত্রকর্মটি কোথায় ব্যবহার হচ্ছে না হচ্ছে তার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন। এখানে কপিরাইট সংরক্ষিত না থাকলে অন্য কেউ আপনার কাজটিকে চুরি করে নিতে পারে কিংবা ব্যবহার করতে পারে। এতে যিনি সৃষ্টি করেছেন তার ভাগ্যে কিছুই জোটে না, অন্য কেউ বড় মুনাফা হাতিয়ে নেয়, এমনটাও দেখা গেছে। কপিরাইট যাতে কেউ লঙ্ঘন করতে না পারে সে দায়িত্ব কপিরাইট হোল্ডারের নিজেরই। সুতরাং ইন্টারনেটে আপনার কনটেন্ট অন্য কেউ ব্যবহার করছে কি করছে না তার ওপর নজরদারির দায়িত্বও আপনারই।

অনলাইন কনটেন্টেন্টের জন্য কপিরাইট বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ‘কপি’ বাটনে স্রেফ একটি ক্লিক করেই একটি সাইট থেকে অন্য সাইটে কনটেন্ট চুরি করে নেওয়া সম্ভব। ডিজিটালের এই যুগে এই কপি পেস্টের মতো অপরাধ হরহামেশাই ঘটছে।

অনলাইনের টেক্সট কপি করার বিষয়টি এই আলোচনায় গুরুত্ব দিতে চাই। আগেই বলেছি মনিটরিং বা নজরদারিই সব।

মনিটরিংয়ের এ কাজে গুগল পান্ডা হতে পারে আপনার বড় উপকারী বন্ধু। আপনি যদি গুগল পান্ডার শরণাপন্ন হন কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

প্রশ্ন থাকবেই- গুগল পান্ডা কী? এটি গুগল সার্চের একটি অ্যালগরিদম। ২০১১ সালে এটি ভার্চুয়াল জগতে ছাড়ে গুগল। ২০১৬তে একটি আপডেটেড ভার্সনও এসেছে। মূলত মানসম্মত কনটেন্টের সার্চ রেজাল্টকে উন্নত করা আর নিম্নমানের বিশেষ করে যারা কপি-পেস্ট করে তাদের সনাক্ত করাই এই গুগল পান্ডার কাজ।

কেবল তাই নয়, কনটেন্টগুলো সনাক্ত করে তা সার্চ ইঞ্জিন থেকে হটিয়ে দিতেও গুগল পান্ডা ভূমিকা রাখে। কেউ যদি আপনার কনটেন্ট নিয়ে নিজের ওয়েব সাইটকে উচ্চতর র্যাংকিংয়ের ধান্ধায় থাকে গুগল তাকে ধরে ফেলে আর কপিরাইট লঙ্ঘণকারী হিসেবে চিহ্নিত করে।
বিশেষজ্ঞরা ওয়েব কনটেন্টের কপিরাইট সংরক্ষণের জন্য কয়েকটি প্রধান পথ বাতলে দিয়েছেন।

এক. প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

আপনার কনটেন্ট চুরি প্রতিরোধে কিছু সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা আগে থেকেই নেওয়া সম্ভব। এতে চোররাও মনে করবে আপনি নিজের কপিরাইটের বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক এবং ধরে ফেলতে পারেন। এ জন্য আপনাকে তিনটি কাজ করতে হবে-

ক. ডিএমসিএ বা ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট অ্যাক্ট’র আওতায় আপনার ওয়েবসাইটটি নিবন্ধিত করে নিন। আর তাদের একটি ব্যাজ আপনার সাইটে রাখুন। এতে সম্ভাব্য কপিরাইট লঙ্ঘণকারীরা জানবে আপনি আপনার কনটেন্টের অধিকার সংরক্ষণ করছেন।

খ. ওয়েব সাইটে কপিরাইটের একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দিন। এতে স্পষ্ট হবে আপনি কনটেন্টের কপিরাইটের আইনগত দিকটিতে সতর্ক। ফলে কনটেন্ট চোররা ভয় পাবে। আর জানতেও পারবে আপনার সাইটের কনটেন্ট কপি করা অবৈধ একটি কাজ। ‘ডু নট কপি’ লেখা একটি ব্যাজও ঝুলিয়ে রাখতে পারেন সাইটে।

গ. আপনার কনটেন্ট যে আপনারই তা প্রমাণ করতে ড্রাফটগুলো কম্পিউটারে সেভ করে রাখুন যাতে প্রয়োজন হলে তা উপস্থাপন করা সম্ভব হয়।

দুই. নকল কনটেন্ট সনাক্তকরণ ও পর্যবেক্ষণ টুলস ব্যবহার

কপিরাইট লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়তে ইন্টারনেটেই মিলবে অনেক ব্যবস্থা। এখানে কয়েকটি টুলসের কথা তুলে ধরছি।

ক) গুগল সার্চ ব্যবহার করুন। আপনার কনটেন্টের যেকোনও বিশেষ অংশ লিখে সার্চ দিন। কোটেশন মার্কগুলো ব্যবহার করুন, তাতে সার্চ থেকে সুনির্দিষ্ট করে তথ্য পাওয়া যাবে।

খ) আরেকটি পথেও কাজটি করা যায়, তাতে সময়ও বাঁচে। সেটি হচ্ছে কম্পিউটারে ‘গুগল অ্যালার্ট’ সেট করে রাখা। এতে যে কোনও সময় সার্চের আওতায় রাখা শব্দ বা বাক্যগুলো কোথাও কপি পেস্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে তা আপনার ই-মেইলে চলে আসবে।

গ) চৌর্যবৃত্তি ধরে ফেলার মনিটরিংয়ে দুটি টুলসের নাম প্লাগিয়াম ও প্লাগিয়ারিজমা। এর মাধ্যমে কোনও সাইটে আপনার কনটেন্ট প্রকাশিত হলে আপনি ওই সাইটের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন কিংবা ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

ঘ) আপনার সাইটে ‘কপিগেটর’ সার্ভিসটি যোগ করে নিতে পারেন। এটি আপনার সাইট ফ্রি মনিটর করবে আর যখনই ইন্টারনেটে একই ধরনের কনটেন্ট পাবে তথ্য দেবে। এই সার্ভিসটি নকল কনটেন্টকে দুই ভাবে সনাক্ত করে একটি ‘হুবহু’ আরেকটি ‘কাছাকাছি’। এতে কনটেন্ট যারা হুবহু কপি করেন তারা তো ধরা পড়েনই একই সঙ্গে যারা কপি করে কিছুটা এদিক সেদিক করে তা ব্যবহার করছেন তারাও রেহাই পান না।

ঙ) কখনো কখনো আমরা নিজেরাও ভুল করে নকল করে ফেলি। এর থেকে মুক্ত থাকতে নিজেকেও সতর্ক হতে হবে। সে জন্য কপিগেটরের মতো প্ল্যাগস্পটার নামে আরেকটি সার্ভিস রয়েছে। এটি আপনার নিজের ওয়েব সাইটের কনটেন্টের ওপর নজরদারি করবে। ব্যাচ সার্চ ফিচার টুল ব্যবহার করে এ পদ্ধতিতে আপনি জানতে পারবেন ভুল করে হলেও আপনার নিজের সাইটে অন্যের কনটেন্ট ঢুকে পড়েছে কিনা। এই প্রোগ্রামটি আপনার পোস্ট কিংবা ওয়েবসাইটে নকল কনটেন্ট কত ভাগ তা নির্দেশ করবে। এতে চোর ধরতে গিয়ে আপনি নিজেই যাতে চোর বনে না যান, সেটা নিশ্চিত হবে।

ধরে ফেলাই শেষ কথা নয়, কনটেন্ট চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণও জরুরি। আপনি যখন নিশ্চিত হয়ে যাবেন কেউ আপনার কনটেন্ট চুরি করে ব্যবহার করেছে, তখন পরিস্থিতি বুঝে আপনাকে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে কিছু নির্দেশিকা রয়েছে সে জন্য।
এক. যতটা বেশি সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করে নিন, যাতে নকল হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করা সহজ হয়। সম্ভব হলে সকল নকল কনটেন্টের স্ক্রিনশট রাখুন।

দুই. কপিরাইট লঙ্ঘণকারীর সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য যোগাড় করে ফেলুন। তথ্য না পাওয়া গেলে তাদের ডোমেইন নেম ধরে ওয়েবমাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এবার ভদ্রোচিত ভাষায় একটি চিঠিতে তাদের জানিয়ে দিন তাদের সাইটে আপনার কনটেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে বিনা অনুমতিতে। তাদের বলুন নকলকৃত কনটেন্ট যেনো মুছে ফেলা হয়। এই চিঠিতে আপনার কাছে কনটেন্ট নকলের যেসব তথ্য রয়েছে তার সবগুলোই উল্লেখ করুন ও প্রমাণ দিন। এই প্রথম ই-মেইলটি পেলে অধিকাশ নকলকারীই তাদের চুরি করা কনটেন্ট মুছে ফেলেন।

তিন. ‘হুইজ’ (Whois) সার্ভিসটি ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের মালিকের বৈধ নাম ও ফোন নম্বর পাওয়া সম্ভব। হুইজের সার্চ বক্সে ডোমেইন নামটি বসিয়ে সার্চ দিলে তাদের সব তথ্যই বের হয়ে আসবে। এখান থেকেই আপনি তাদের সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক ভঙ্গিমায় যোগাযোগ করতে পারেন। আর কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করতে পারেন।

চার. অপরাধীর সঙ্গে আপনার এই আলোচনা যদি ফলপ্রসূ না হয়, তাদের ওয়েবসাইট হোস্টিং কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এটাও হুইজ সার্ভিস থেকে জানা যাবে। এবার হোস্টিং কোম্পানির কাছে বিষয়টি জানান। তারা যদি জানতে পারে তাদের হোস্ট করা একটি সাইট কনটেন্ট চুরি করছে তারা সেগুলো সরিয়ে দেবে। এমনকি তারা এ ধরনের সাইটকে তাদের ক্লায়েন্ট তালিকা থেকে বাদ দিয়েও দিতে পারে।

পাঁচ. এতেও যদি আপনি কোনও ফল না পান, কপিরাইট লঙ্ঘনকারীকে একটি আনুষ্ঠানিক ‘সিজ অ্যান্ড ডেসিস্ট’ (ক্ষান্ত হও, নিবৃত থাকো) পত্র পাঠান। এর মাধ্যমে আপনি তাদের জোর দিয়ে এটাও বলতে পারবেন, তারা যেনো এরই মধ্যে যেসব কনটেন্ট চুরি করে ব্যবহার করেছে সেগুলো সরিয়ে দেয়, নয়তো তাদের আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। অনলাইনেই এই ‘সিজ অ্যান্ড ডেসিস্ট’ পত্রের অনেক স্যাম্পল পাওয়া যায় যা দেখে আপনি এমন একটি চিঠি তৈরি করতে পারবেন।

ছয়. ডিএমসিএ’র ৫১২ নং ধারার আওতায় আপনি ‘নোটিস অ্যান্ড টেক ডাউন’ (জানাও এবং সরিয়ে ফেলো) সুবিধাটি পাবেন। এতে কনটেন্টের কপিরাইট হোল্ডার তার কনটেন্ট চুরি হলে সনাক্ত করার পাশাপাশি তা যেখানে ব্যবহার হয়েছে সেখানে কারো প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিতে পারে।

সাত. গুগলের কাছে কপিরাইট লঙ্ঘনের একটি অভিযোগ ঠুকে দিন। গুগলও নকল হওয়া কনটেন্ট হয় সরিয়ে দিতে পারে নয়তো তা অকেজো করে দিতে পারে। এমনকি এ ধরনের অপরাধীকে সাবস্ক্রাইবারের তালিকা থেকে বাদ দিতেও পারে গুগল। এক্ষেত্রে ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট অ্যাক্টের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে পারে গুগল ।

আট. আর সবশেষে আইনি ব্যবস্থা। উপরের কোনও উদ্যোগই ফলপ্রসূ না হলে আইনের আশ্রয় নিলে চৌর্যবৃত্তি যারা করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।

পর্যটক হারাচ্ছে সুন্দরবন
                                  



পর্যটক হারাচ্ছে সুন্দরবন। কয়েক বছরের ব্যবধানে এ বন ভ্রমণে পর্যটক কমেছে অর্ধেকের বেশি। দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও কমছে ব্যাপকহারে। ফলে সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা খুলনা অঞ্চলের পর্যটনশিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা এ খাতে বিনিয়োগ করে লোকসান গুনছেন।
বন সংরক্ষক, খুলনা কার্যালয়ে সুন্দরবন পূর্ব এবং পশ্চিম বন বিভাগের দেওয়া গত পাঁচ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে সুন্দরবনে এসেছিলেন দেশি-বিদেশি মিলিয়ে মোট ২ লাখ ২৭ হাজার ৩৮ জন পর্যটক। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সংখ্যাটা এক লাখে নেমে আসে। অর্থাৎ মাত্র চার বছরের ব্যবধানে পর্যটকের সংখ্যা কমে অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। মাঝের ২০১২-১৩ অর্থবছরে পর্যটক ছিলেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৭ জন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট পর্যটকের সংখ্যা আরও কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৪০ জনে। শুধু দেশি পর্যটক নয়, উল্লেখযোগ্য হারে কমছে বিদেশি পর্যটকও। বন বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন ৪ হাজার ১৬ জন। পরের কয়েক বছরে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমবেশি হয়েছে। তবে সম্প্রতি তা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ছিল আগের বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি, ৪ হাজার ৩৭০ জন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৬২ জন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৮৬৮ জন। কিšদ চলতি অর্থবছরের  ১১ মাসের (২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ১৫ নভেম্বর) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই সময়ে বিদেশি পর্যটক এসেছেন মাত্র ১ হাজার ৬১০ জন। রাজনৈতিক অ¯িদরতা ও সাম্প্রতিক কয়েকজন বিদেশি হত্যা এর পেছনে ভূমিকা রেখে থাকতে পারে বলে পর্যটন ব্যবসায় যুক্তদের ধারণা। সুন্দরবনের বন বিভাগ জানায়, পর্যটকদের নির্ধারিত প্রবেশ ফি দিয়ে এবং ¯দানবিশেষে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকতে হয়। অভয়ারণ্য এলাকায় যেতে দেশি পর্যটকদের ১৫০ টাকা ও বিদেশিদের ১ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব দিতে হয়। ১০০ ফুটের নিচের নৌযানকে প্রতিদিন অব¯দানের জন্য তিন হাজার টাকা এবং ১০০ ফুটের বেশি নৌযানকে চার হাজার টাকা দিতে হয়। সুন্দরবনে পর্যটকদের যাওয়ার ব্যব¯দা করে এমন তিনটি ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে কথা বলেও পর্যটক হ্রাসের তথ্য পাওয়া  গেছে। তারা বলছেন, চলতি বছর ভরা মৌসুমেও বিদেশি পর্যটকের দেখা নেই। রয়েল বাংলা ট্যুরিজমের ব্যব¯দাপনা পরিচালক খোকন আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ বছর দেশি পর্যটক কম পাচ্ছি। তেমনি চলতি নভেম্বর মাসে একজনও বিদেশি পর্যটক পাইনি। বেঙ্গল ট্যুরসের কর্মকর্তা আজম খান বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় কয়েকজন বিদেশি নিহত হওয়ার পর আমাদের ২৪টি গ্রুপ ট্যুর বাতিল হয়ে গেছে। গত বছর হরতাল-অবরোধের মধ্যেও যা পর্যটক ছিল, এবার তা-ও পাচ্ছি না। পরি¯িদতির জন্য রাজনৈতিক অ¯িদতিশীলতা ছাড়াও প্রচারের অভাবকে দায়ী করেন সুন্দরবন ট্যুরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি মো. আলম। তিনি বলেন, বিদেশিরা সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের প্রতি ঝুঁকতে শুরু করেছেন। এ অব¯দা থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জানতে চাইলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (সুন্দরবন পশ্চিম) সাঈদ আলী খান বলেন, বাঘের বংশ বৃদ্ধির জন্য সুন্দরবন প্রবেশে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় সহজে সব পর্যটক ভিতরে ঢুকতে পারছেন না। ফলে দেশি-বিদেশি পর্যটক কমে গেছে বলে মনে হচ্ছে। সুন্দরবন নিয়ে প্রচারণার ব্যাপারে তিনি বলেন, সামনে আরও নতুন নতুন প্রকল্প আসছে। তখন প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ঘুরে আসুন রূপসী বাংলার সাজেক ভ্যালী থেকে
                                  

বাংলার পর্যটন
ঘুরে আসুন রূপসী বাংলার সাজেক ভ্যালী
মমতাজ আক্তার:


সকাল-সন্ধ্যা প্রায় সময়ই মেঘের খেলা সাজেকের অন্যতম আকর্ষণ। আপনার চোখ যেদিকে যাবে, দেখবেন শুধুই মেঘ আর রংয়ের খেলা। আর আপনি যদি সর্বোচ্চ চূড়া থেকে নিচে দূরের গ্রামগুলোর দিকে তাকান তাহলে মনে হবে পটে আঁকা যেন এক আধুনিক কোনো ছোট্ট শহর!
বদলে যাওয়া সাজেকের মানুষের মাঝেও এসেছে এক অনন্য পরিবর্তন। এই বদলে যাওয়াকে অনেক ¯দানীয় লুসাই ও ত্রিপুরাদের ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও কারও কারও আছে ভিন্ন ভিন্ন মত। সবচেয়ে যা দেখবেন রাতের সাজেক যা আপনাকে অনেক সুন্দর একটা দৃশ্য দিবে। বিদ্যুৎ নেই তবুও সোলারের মাধ্যমে এখানে চলে সবকিছু। সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ খুললেই মনে হবে, মেঘের চাদরে ঢাকা রয়েছে এই সাজেক। এই মধুর পাহাড়ের উঁচু থেকে মেঘে মেঘে লাফ দিতে ইচ্ছা করতে পারে যে কারোর! প্রাকৃতিক নিসর্গ সাজেক পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পর্যটনবান্ধব সাজেক প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টার ফসল আজকের সাজেক।
এই সাজেকে একসময় যেখানে বিশ্রামের ব্যব¯দা ছিল না, ছিল পানির কষ্ট। এখন সবকিছুই হাতের নাগালে। আর পর্যটকদের ভিড়ও রয়েছে চোখে পরার মতো। সাজেকের মূল কেন্দ্র রুইলুইতে পানির সংকট দূর করতে নির্মিত হয়েছে জলাধার। পাশেই গণশৌচাগার। চালু করা হয়েছে ‘পাহাড়ি রেস্তোরাঁ’।
মনমুগ্ধকর অত্যাধুনিক দুটি রিসোর্ট নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই দুটিতেই রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের বিশেষ সুবিধা। এছাড়াও বেসরকারি উন্নয়ন সং¯দা (এনজিও) আলোর উদ্যোগে ‘আলো রিসোর্ট’ ইতোমধ্যে চালু। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে দীঘিনালা হয়ে যেতে হয় সাজেকে। পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার হচ্ছে এই সাজেক ইউনিয়ন যাকে দেশের বৃহত্তম ইউনিয়নও বলা হয়ে থাকে। এটি দীর্ঘ ৬৭ কিলোমিটার পাহাড়ি সড়কে যেতে যেতে লাগবে এক অন্যরকম আনন্দ। মুক্ত বাতাস আর প্রকৃতির নিদর্শন আর আঁকাবাঁকা মসৃণ সড়কের দুই ধারে তাকাতেই যেন এমন ভরে যায় সব মানুষের। আর ঐতিহ্যবাহী চাঁদের গাড়িতে ঝুলে সাজেক যেতে তো মজায় আলাদা। কাচালং নদী অতিক্রম করে দীর্ঘ ভ্রমণে মুহূর্তের জন্যও খারাপ লাগে না। ২/৩ ঘণ্টার এই ভ্রমণে সাজেক উপত্যকা উঠার আগে ঝরনায় গা ভিজিয়ে নেওয়া যায়। এক সময়ের কমলার জন্য বিখ্যাত সাজেকে এখনো মিষ্টি কমলা পাওয়া।
কিভাবে যাবেন:
চট্টগ্রাম থেকে শান্তি পরিবহনে দীঘিনালা। সেখান থেকে মোটর সাইকেল কিংবা জীপে করে ৪৫ কিলোমিটার দূরে সাজেক। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত শ্যামলী, শান্তি, ইউনিক, সৌদিয়া ও এসআলম পরিবহনের বাসও রয়েছে।
কোথায় থাকবেন:
সাজেকে সেনাবাহিনী ও বিজিবি পরিচালিত দুইটি রিসোর্ট রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সং¯দা আলো’র একটি রিসোর্ট আছে। কম টাকায় কটেজেও রাতযাপন করা যাবে।
খেয়াল রাখবেন:
সাজেকে পানির খুবই সংকট। এখানে পাহাড়িদের দেওয়া পানি নষ্ট করবেন না। তাছাড়া পানির বোতল, পলিথিন, প্লাস্টিক নির্দিষ্ট ¯দানে ফেলবেন। যত্রতত্র ফেলে প্রকৃতিকে ধ্বংস করবেন না।

দেশের পুরাকীর্তির ঐতিহ্য রক্ষার্থে ও সৌন্দর্যের বিকাশে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে
                                  

 

 

দেশের পুরাকীর্তির ঐতিহ্য রক্ষার্থে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধিকল্পে সৌন্দর্যময় বিকাশ সাধনে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে।

দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ - ভুটান - ভারত - নেপালের পুরাকীর্তির অপার সৌন্দর্য বিকাশ সাধনে জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রকল্প হিসেবে এশিয়ান ডেভোলপমেন্ট (এডিবি) ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশের নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ মন্দির,দিনাজপুরের বাসন্তী মন্দির,বগুড়ার মহাস্থানগড় এবং বাগেরহাটের বিশ্ব ঐতিহ্য ষাট গুম্বজ মসজিদ - খানজাহান আলী মাজার রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশ পর্যটন অধিদপ্তর কর্তৃক ঐতিহাসিক ষাট গুম্বজ মসজিদের বৃহৎ ঘোড়া দিঘির পাড় জুড়ে দর্শনার্থী ও ভ্রমন পিপাসুদের ভ্রমণকে আরামদায়ক ও সমৃদ্ধ করতে অসংখ্য আধুনিকতার ছোয়ায় উন্নতমানের ভিজিটর সেড তৈরী, আধুনিক টয়লেট, পায়ে চলার মসৃন রাস্তা এবং দর্শনার্থীদের অবকাশ যাপনে রেস্ট হাউজ নির্মান, নবরুপায়নে অবকাঠামো, হযরত খানজাহান আলী (রঃ) এর বসতভিটা সংরক্ষণ এবং এখান থেকে কাঠালতলা পর্যন্ত ১ কিঃমিঃ নতুন সড়ক নির্মিত হয়েছে।

যেটি দীর্ঘদিন মাটির নিচে চাপা পরে ছিল। এটিকে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় পুরাকীর্তির ঐতিহ্যস্থান হিসেবে স্বীকৃতির দাবি রাখে। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে খানজাহান আলী মাজার প্রাঙ্গনে প্রবেশের অদূরেই দেশি-বিদেশী অসংখ্য পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে পর্যটন বান্ধব একটি আন্তর্জাতিকমানের হোটেল মোটেল নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহন উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, খানজাহান আলী দিঘির পশ্চিম পার্শ্ব জুড়ে পর্যটকদের নির্বিঘেœ ঘুরে বেড়াবার জন্য একটি রাস্তা ও অপার নৈসর্গিক সৌন্দর্য সাধনে বনায়ন, সবুজ ঘাস ও ফুল বাগানের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অধিন খুলনা বিভাগীয় প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টোডিয়ান (জিম্মাদার) গোলাম ফেরদৌস জানান, 'দেশের এ সকল বিশ্ব ঐতিহ্য ম-িত এলাকা সমুহের উন্নয়নকল্পে এশিয়ান ডেভোলপমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক বাগেহাটে পুরাকীর্তি রক্ষায় ২৪কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান এগুলোর পুর্নাঙ্গতা পেতে দ্রুত তার সাথে নির্মান কাজ এগিয়ে চলেছে। পর্যটন কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমনে সরকারের রাজস্ব আয় হবে পুর্বের তুলনায় কয়েক গুন।

ষাট গুম্বজ দর্শনের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকার টিকেটের স্থলে বিশ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। এমনকি ষাট গুম্বজ মসজিদে জুম্মার নামায আদায়সহ সেখানেও বিশ টাকা টিকিট নিতে হয়। তবে এ বেলায় বিষয়টি দর্শনার্থী ও স্থানীয়দের বেলায় এই টিকেটের হার সহনীয় করার জন্য ভুক্তভুগীরা সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন। এখানে একটি যাদু ঘর রয়েছে। যেটি দর্শনার্থী পিপাসুদের জ্ঞান সাগরের গভীরে প্রবেশে সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারে এজন্য বর্তমানে যাদু ঘরটির সংস্কারের কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলেছে।

পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতের জৌনপুর থেকে ৩৬০জন সঙ্গীসহ ইসলাম প্রচার তথা সমাজ সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে এ অঞ্চলে আসেন মহান সাধক হযরত খানজাহান (রঃ)। প্রথমে চাপাইনবাবগঞ্জের ভিতর দিয়ে রাজশাহীর জাহানাবাদে ঘাটি করেন। এরপর যশোরের বারো বাজার হয়ে আসেন বাগেরহাটে। এরপর খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরা-বাগেরহাটসহ বরিশালের একাংশ নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল খলিফাতাবাদ রাজ্য যার রাজধানী ছিল বাগেরহাট।

এসো হে পথিক সখা এ পবিত্র প্রিয় বাগেরহাট

সবুজ সুন্দর শ্যাম রমনীয় ছায়াতরু বাটে।

পীর খানজাহানের সুভাশীষ নিয়ে যাও প্রানে

তোমার চলার পথ প্রসন্ন হোক ছন্দগানে।

 

লেখক: আজাদ রুহুল আমিন, সাবেক জেলা প্রতিনিধি বিটিভি ও চ্যানেল ওয়ান। সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাগেরহাট প্রেসক্লাব।

 

পুরাকীর্তির আধাঁর ‘মহাস্থানগড়’
                                  

 

মমতাজ আক্তার

 

প্রাচীন পুরাকীর্তি ও স্থাপত্যের অনি:শেষ এক দেশ বাংলাদেশ। আর সেই দেশের অন্যতম এক প্রাচীন পুরাকীর্তির নাম মহাস্থানগড়। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে গড়ে উঠেছে মহাস্থানগড়। পূর্বে এর নাম ছিল পু-্রবর্ধন বা পু-্রনগর। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।

 

বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্খিত মহাস্থানগড়।  বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কি.মি উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে মহাস্থান গড় অবস্থিত।  আয়তাকার ধ্বংসস্তূপটি উত্তর-দক্ষিণে ১৫০০ মিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৪০০ মিটার বিস্তৃত এবং এর চারপাশ নদী সমতল থেকে গড়ে ৬ মিটার উঁচু প্রতিরক্ষা প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। প্রাচীরের অভ্যন্তরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণের সর্বোচ্চ স্থানটি জুড়ে রয়েছে শাহ সুলতান মাহীসওয়ারের মাযার ও মুগল সম্রাট ফররুখ সিয়ার এর একটি মসজিদ। এই মসজিদ ঘিরে একটি আধুনিক মসজিদ নির্মিত হয়েছে এবং সম্প্রতি এটি সম্প্রসারিত হয়েছে। এ কারণে ভবিষ্যতে এখানে কোন খননকাজ পরিচালনার সুযোগ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সুরক্ষিত নগরটির উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক একটি গভীর পরিখা দ্বারা বেষ্টিত ছিল। উত্তর ও পশ্চিম দিকে এই পরিখা পুরোপুরি এবং দক্ষিণ দিকে আংশিক চিহ্ন পরিদৃষ্ট হয়। পূর্ব দিকে তখন করতোয়া নদী প্রবাহিত ছিল। পরিখা ও নদীটি সম্ভবত নগর-দুর্গের পরিপূরক প্রতিরক্ষার কাজ করে থাকবে। উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে ৮ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে নগরের বাইরে বিভিন্ন স্থানে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত বহু ঢিবি দেখা যায়। এগুলি প্রাচীন প্রাদেশিক রাজধানীর শহরতলির সাক্ষ্য বহন করে।

ইতিহাসসূত্রে জানা যায় সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন (১০৮২-১১২৫) যখন গৌড়ের রাজা ছিলেন তখন এই গড় অরক্ষিত ছিল । মহাস্থানের রাজা ছিলেন নল যার বিরোধ লেগে থাকত তার ভাই নীল এর সাথে। এসময় ভারতের দাক্ষিণাত্যের শ্রীক্ষেত্র নামক স্থান থেকে এক অভিশপ্ত ব্রাহ্মণ এখানে অসেন পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে। কারণ তিনি পরশু বা কুঠার দ্বারা মাতৃহত্যার দায়ে অভিশপ্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনিই এই দুই ভাইয়ের বিরোধের অবসান ঘটান এবং রাজা হন। এই ব্রাহ্মণের নাম ছিল রাম। ইতিহাসে তিনি পরশুরাম নামে পরিচিত। কথিত আছে পরশুরামের সাথে ফকির বেশী আধ্যাত্মিক শক্তিধারী দরবেশ হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর যুদ্ধ হয়। (১২০৫-১২২০) যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত ও নিহত হন।

লক্ষ্মীন্দর বেহুলার বাসর ঘর, গকুল

বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাচীন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মহাস্থানগড়ে মাজার জিয়ারত করতে এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান হতে বহু লোক সমাগম ঘটে। দর্শনের জন্য রয়েছে মনোমুগ্ধকর অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থান। যেতে পারেন মাজার শরীফে।  মহাস্থান বাস স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা পশ্চিমে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ অবস্থিত। কথিত আছে মাছের পিঠে আরোহন করে তিনি বরেন্দ্র ভূমিতে আসেন। তাই তাকে মাহী সওয়ার বলা হয়। কথিত আছে হযরত মীর বোরহান নামক একজন মুসলমান এখানে বাস করতেন। পুত্র মানত করে গরু কোরবানী দেয়ার অপরাধে রাজা পরশুরাম তার বলির আদেশ দেন এবং তাকে সাহায্য করতেই মাহী সওয়ারেরর আগমন ঘটে।

পাশাপাশি গড়ের পশ্চিম অংশে রয়েছে ঐতিহাসিক কালীদহ সাগর এবং পদ্মাদেবীর বাসভবন। গড়ের পূর্বপাশে রয়েছে করতোয়া নদী এর তীরে ‘শীলাদেবীর ঘাট’। শীলাদেবী ছিলেন পরশুরামের বোন। এখানে প্রতি বছর হিন্দুদের স্নান হয় এবং একদিনের একটি মেলা বসে। এই ঘাটের পশ্চিমে জিউৎকুন্ড নামে একটি বড় কুপ আছে। কথিত আছে এই কুপের পানি পান করে পরশুরামের আহত সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত। যদিও এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি। মহাস্থান গড় খননের ফলে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ অনেক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে যা গড়ের উত্তরে অবস্থিত জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এখানে দেকতে পাবেন প্রাক মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও মুসলিম যুগের কাঁচাপাকা ঘরবাড়ি, রাস্তা, নর্দমা, কূপ, মন্দির, মসজিদ, তোরণ, বুরুজ ইত্যাদি৷ এসব ছাড়াও সেসময়কার নগরজীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যাদি যেমন রৌপ্য ও তাম্র মুদ্রা, কালো মসৃণ মৃৎপাত্র, পোড়ামাটির ফলক, মূর্তি সহ মাটি ও ধাতব দ্রব্যাদি ইত্যাদি পাওয়া গেছে মহাস্থান গড় ছাড়াও আরও বিভিন্ন স্থানের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন এখানে সংরক্ষিত আছে।

মহাস্থানগড় বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ২কি.মি দক্ষিণ পশ্চিমে একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে যা সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। স্তম্ভের উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোন বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি গোসল খানা ।এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই বেশি পরিচিত।

গাবিন্দ ভিটা, মহাস্থানগড়

এছাড়া আশে পাশেই দেখতে পাওয়া যায় খোদার পাথর ভিটা, মানখালীর কু-, বৈরাগীর ভিটা, বন্দুকধরা, হাতিবান্ধা, হাতিডোবা পুকুর, ধোপাপুকুর বা ধোপা পক্রা, মনিরঘোন, গোবিন্দভিটা, বিষপত্তন ও পদ্মার বাড়ী, ভীমের জাঙ্গাল, কাঞ্জিরহাঁড়ি এবং ছেলীরধাপ, ভাসু বিহার, সম্রাট ফারুক শিয়া......রর আমলের মসজিদ, গোদার ধাপ, কানাইয়ের ধাপসহ আরও শতাধিক উল্লেখযোগ্য প্রাচীন ঐতিহ্য।

আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের শহর মহাস্থানগড় কিন্তু এখন সেই রাজধানী নেই, রয়েছে ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের সব প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ ও প্রতœতাত্ত্বিক বহু নিদর্শন। ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে মহাস্থানগড়ের ব্যাপক পরিচিতি।

আর তাই দেশের এই প্রাচীন স্থাপত্য ও নিদর্শন দেখার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ুন এখনই।

যাতায়াত ব্যবস্থা :

মহাস্থানগড়ের অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। বাসে ঢাকা থেকে সাড়ে ৪ ঘন্টার পথ বগুড়া। বগুড়া থেকে মহাস্থানগড়ের বাস পাওয়া যায়। ঢাকা ও বগুড়া থেকে ভাড়া গাড়িতেও পৌঁছানো যায় মহাস্থানগড়ে। স্থানীয় এলাকা ঘুরে দেখার জন্যে আছে প্রচুর রিকশা। ঢাকা থেকে ভাড়া গাড়িতে চেপে সব দেখে দিনের দিনেই ফিরেও আসা যায়।

 

মালয়েশিয়ায় স্বল্প পুঁজিতে নিরাপদে ব্যবসা ও স্থায়ীভাবে বসবাস
                                  

 

মালয়েশিয়া থেকে ফিরে শাহীন আলম জয়:                                    

 

আগামী ২০২০ সালের মধ্যে মালয়েশিয়া উন্নত বিশ্বের অন্যতম সদস্য দেশ হবার প্রক্রিয়াতে রয়েছে। এ কারণেই মালেয়শিয়ার সরকার তাদের ব্যবসার বাজার সবার জন্য উন্মুক্ত ও সহজ করে দিয়েছে। পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম খরচে ও নিরাপদে বিনিয়োগ করা যায় দেশটিতে।

নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীদের আস্থার ও বিশ্বস্ততার প্রতীক এখন মালয়েশিয়া। চীন, ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো আমারাও এই সুযোগটি গ্রহণ করতে পারি অতি সহজেই।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির এই দেশটিতে বড় ধরনের বিনিয়োগের পাশাপাশি এখন স্বল্প পুঁজির ব্যবসারও দুয়ার অবারিত বাংলাদেশিদের জন্য। স্বল্প পুঁজিতে প্রায় ৫০ ধরনের আধুনিক ও রুচিসম্মত ব্যবসা করার সুযোগ রয়েছে দেশটিতে।

এই বিষয়ে পদ্ধতিগত ও আইনগত দিক নিয়ে বিস্তারিত জানতে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন চেইন শপ এর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে,ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার খুলে, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করে, ইন্টেরিয়রের কাজ করে, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অফিস স্থাপন, সেলুন, টেইলারিং, কারওয়াশ, রেন্ট-এ-কার এর ব্যবসা খুলে ও পুরনো গাড়ি কেনাবেচা, সাইবার ক্যাফে খুলে, মোবাইল লোড-ফটোকপির দোকান দিয়ে, টেইলারিং শপ খুলে, ফলের দোকান সাজিয়ে, প্রিন্টিং ব্যবসা করে পর্যাপ্ত আয়ের সুযোগ আছে মালয়েশিয়ায়।

এছাড়া কিছুটা বড় পরিসরে জমি লিজ নিয়ে সবজি আবাদ/কৃষি খামার, মৎস্য চাষের মত ব্যবসা করা যায়। ঈওউই লাইসেন্স করে কনস্ট্রাকশন ও রিনোভেশনের কাজ করা যায় অতি সহজেই। এসবের বাইরে আছে স্বল্প পুঁজির হোম স্টে ব্যবসা। এছাড়া এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট, সফটওয়ার বা আইটি রিলেটেড ব্যবসা করার অবারিত সুযোগ রয়েছে।

হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজেট হোটেল, বুটিক হাউজ, আইসক্রিম বা কফি শপ, জুস কর্নার, বিউটি শপ বা স্পা সেন্টার, বিউটি পার্লার বা ফুলের দোকানের রয়েছে অনেক চাহিদা। ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগের এই ব্যবসাগুলো এখন নিয়ন্ত্রণ করছে মূলত চাইনিজ, ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা। কিন্তু মালয়েশিয়ার বিশাল বাজার এখনো উন্মুক্ত। এই বিপুল চাহিদা আমরা আমাদের জনগোষ্ঠি দ্বারা অতি সহজেই পূরণ করতে পারি।

কেকে, ৭/১১, বারজায়া গ্রুপ, হান্ড্রেড প্লাস ও মাইনিউজ.কম এর মতো মালয়েশীয় চেইন শপের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত ম্যাকডোনাল্ডস ও কেএফসি’র ফ্র্যাঞ্চাইজি বা ব্র্যাঞ্চ পাওয়া যায় মালয়েশিয়ায়। এছাড়া নতুন আরো শতাধিক প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া শুরু করেছে। বৈধ ভিসাধারি যে কেউ যোগাযোগ করলে এদের ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া সমস্যা নয়।

প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই পুরো মালয়েশিয়ায় কয়েক হাজার দোকান বা শাখা আছে। রেমলি নামে যে কিয়স্ক (ক্ষুদ্র দোকান) এখন ভালো ব্যবসা করছে তাদেরও গোটা মালয়েশিয়ায় ২১ শ’ শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আরো নতুন নতুন শাখা দিচ্ছে।

ব্যয়ামাগার, ফিজিওথেরাপী, আলট্রাসনোগ্রাফি, প্যাথলজি সেন্টার  দিয়েও মানবিক সেবা একই সঙ্গে ব্যবসা করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে দেশটিতে।

ফেরতযোগ্য জামানত হিসাবে অল্প পরিমাণ টাকা ব্যাংকে রেখে কোম্পানি খুলে এসব চেইন শপ এর ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া যাবে। এরপর নিতে হবে দোকান ভাড়া। মালয়েশিয়াতে দোকান ভাড়া নিতে বাংলাদেশের মতো ২০/২৫ লাখ টাকা জামানত রাখার দরকার হয় না। উপরন্তু দোকান ভাড়া পাওয়া যায় তুলনামূলক কম খরচে ও অতি সহজে।

যেমন, ১৬শ’ বর্গফুট দোকান মাত্র ১,৮০০ থেকে ২,০০০ রিঙ্গিতে ভাড়া পাওয়া যায় কুয়ালালামপুরের যেকোন হার্টপয়েন্টে। এর অর্থ হলো, চলতি মাসের ভাড়া ও দুই মাসের অগ্রীম ভাড়া দিয়ে দোকান পাওয়া যাবে মালয়েশিয়ায়। উপরন্তু অনেক অফিস বা দোকান ডেকোরেশন করাই থাকে, যা সরাসরি ব্যবহার করা যায়।

আর দোকান ডেকোরেশনের খরচ কিছু থাকলেও লাখ লাখ টাকার পণ্য পাওয়া যায় জামানত ছাড়াই। পণ্য বিক্রি করে তারপর টাকা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানীকে। লাভের কমিশনের পুরোটাই থাকবে নিজের কাছে। অনেক কোম্পানি তো প্রয়োজনীয় ফার্নিচার এমনকি এসি, ফ্রিজটাও দিয়ে দেয় ব্যবহার করার জন্য। এভাবে ৫০ হাজার টাকা ডিপোজিট রেখে মাসে ১০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকার পণ্য পাওয়া যায় অনায়াসে।

এছাড়াও মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক কোম্পানির অধীনে বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা করলে পাঁচ বছর পরে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব (পিআর) পাওয়া যায় বেশ সহজেই। ২ বছর পর পর ভিসা নবায়ন করে আজীবন বসবাস করা যায় এবং ৫ বছর পর স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়।

ইতিমধ্যে গত কয়েক বছরে বহু বাংলাদেশী স্থায়ী নাগরিকত্ব বা মালয়েশিয়ান চধংংঢ়ড়ৎঃ পেয়েছে। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করলে পি.আর রিফিউজড হবার সম্ভবনা থাকে না। এই ধরনের কোম্পানীর ক্ষেত্রে বড় সুবিধা হলো- কোনো মালায় নাগরিকের সুপারিশ প্রয়োজন হয় না। এমনকি অন্য কোনো সংস্থা থেকেও কোনো প্রত্যয়নপত্র (রিকমেন্ডেশন লেটার) দেখাতে হয় না। আন্তর্জাতিক কোম্পানীর অধীনে ব্যবসায়ি ভিসা নিলে মালয়েশিয়া থেকে পৃথিবীর ৭৩টি দেশে মাত্র তিন শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব।

তাহলে আর দেরি না করে নিজের ও পরিবারের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য নিজ ব্যবসার পরিকল্পনা করে ফেলুন। আর শিক্ষাগত যোগ্যতার সর্বশেষ সনদ নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয়ার জন্য তৈরি হোন। এর মধ্যেই ব্যবসার পরিকল্পনাটি প্রস্তাবনা আকারে তৈরি করে নিতে হবে।

মালেয়শিয়াতে দুইভাবে কোম্পানী ওপেন করে ব্যবসা করা যায়। মালয়েশিয়ায় ঙভভংযড়ৎব ঈড়সঢ়ধহু (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়সঢ়ধহ) অধীনে ১০০ ভাগ ফরেন শেয়ারে বা ঝফহ. ইযফ. কোম্পানীর মাধ্যমে ঊসঢ়ষড়ুসবহঃ চধংং নিয়েও যে কেউ বৈধ ভিসা নিয়ে সপরিবারে বসবাস ও ব্যবসা করতে পারেন অতি সহজেই। তবে ঝফহ. ইযফ. কোম্পানীর অধীনে ভিসা প্রাপ্তির জটিলতা অনেক বেশী। ঠরংধ জবহবধিষ করার সময়ে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, সেই ক্ষেত্রে ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়সঢ়ধহু অধীনে ভিসা প্রাপ্তির কোন জটিলতা নেই বললেই চলে।

কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স, অ্যাকাউন্ট ওপেনিং (অঞগ কার্ডসহ) সব ধরনের ব্যবসা স্থাপনে সকল প্রকার আইনগত সহযোগিতা করে আসছে ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজু।

মালয়েশিয়ায় নাগরিকত্ব পেতে এবং বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা পেতে কি কি করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলে অবস্থিত ঢাকা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস-এ। যোগাযোগের ঠিকানা, মডর্ণ ম্যানশন, ৫৩ মতিঝিল ৯ম তলা (শাপলা চত্বর)  বা/এ ঢাকা-১০০০, ই-মেইলে:  লড়ুধশযধঁৎধ@মসধরষ.পড়স, প্রাথমিক তথ্যর জন্য ফোনে কথা বলতে পারেন ০১৭৪৭৩৩৮০৯৪, নাম্বারে। আরোও জানতে ভিজিট করতে পারেন।

ঘুরে আসতে পারেন গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক
                                  

 

আতাউর রহমান,গাজীপুর :

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক । জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এই স্থানটি সব সময়ই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। সাফারী পার্কটি দক্ষিণ এশীয় মডেল বিশেষ করে থাইল্যান্ডের সাফারী ওয়ার্ল্ড এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার বালি সাফারী পার্কের কতিপয় ধারনা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কটি ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন বাঘের বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে সাফারী পার্কটি অবস্থিত। ৩৬৯০ একর জায়গা নিয়ে উন্নত বিশ্বের আধুনিক সাফারি পার্কের আদলে এটি তৈরি করা হয়েছে। একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক ২০১০ সালে ৬৩.৯৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ধরে পার্ক প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক, গাজীপুর এর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়। সাফারী পার্কের চারদিকে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থায়ী ঘেরা এবং উহার মধ্যে দেশী/বিদেশী বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি ও অবাধ বিচরণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে পর্যটকগণ চলমান যানবাহনে অথবা পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করে শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ লাভ করবেন। সাফারী পার্কের ধারনা চিড়িয়াখানা হতে ভিন্নতর। চিড়িয়াখানায় জীবজন্তুসমূহ আবদ্ধ অবস্থায় থাকে এবং দর্শনার্থীগণ মুক্ত অবস্থায় থেকে জীবজন্তু পরিদর্শন করেন। কিন্তু সাফারী পার্কে বন্যপ্রাণীসমূহ উন্মুক্ত অবস্থায় বনজঙ্গলে বিচরণ করবে এবং মানুষ সতর্কতার সহিত চলমান যানবাহনে করে জীবজন্তুসমূহ মুক্ত অবস্থায় পরিদর্শন করতে পারে।

এই সাফারি পার্কটি ৫টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। ১. কোর সাফারি। ২. সাফারি কিংডম। ৩. বায়োডাইভার্সিটি পার্ক। ৪. এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক। ৫. বঙ্গবন্ধু স্কয়ার।

কোর সাফারি : কোর সাফারী পার্ক ১৩৩৫ একর এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কোর সাফারী’ পার্কের মধ্যে ২০ একরে বাঘ, ২১ একরে সিংহ, ৮.৫০ একরে কালো ভাল্লুক, ৮ একরে সিংহ, ৮.৫০ একরে কালো ভাল্লুক, ৮ একরে আফ্রিকান চিতা, ৮১.৫০ একরে চিত্রা হরিণ, ৮০ একরে সাম্বার ও গয়াল, ১০৫ একরে হাতি, ৩০ একরে মায়া ও প্যারা হরিণ আছে।

আফ্রিকান সাফারি পার্কের জন্য বরাদ্দ ২৪০ একর। যার মধ্যে বাঘ, সিংহ, সাদা সিংহ, জেব্রা, জিরাফ, ওয়াল্ডিবিস্ট, অরিক্স, ব্ল্যাক বাক, ভাল্লুক ও অন্যান্য বন্যপ্রাণি। এখানে গাড়ি ছাড়া কোনও পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন না। দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে দুটি জিপ ও দুটি মিনিবাস। পর্যটক বা দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করে গাড়ি বা জিপে করে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে রাখা বন্যপ্রাণি দেখতে পারবেন।

সাফারি কিংডম: সাফারী কিংডমে পর্যটকগণ পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারবে এবং প্রাণিকূলকে ছোট-খাট বেস্টনীর মধ্যে আবদ্ধ রাখা আছে। সাফারী কিংডমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর নৈপূণ্য ও খেলাধুলা প্রদশর্ণের মাধ্যমে পর্যটকদের চিত্তবিনোদন, বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা। সাফারী কিংডম ৫৭৫.০ একর এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ৫৫৬ একরের মধ্যে তৈরি করা এই অংশে ঢুকতে গেইটের পাশেই ম্যাকাও ল্যান্ড। এখানে আছে নীল-সোনালি ম্যাকাও, সবুজ ম্যাকাও, আফ্রিকান গ্রে প্যারট, টিয়া, পেলিকেন, লুটিনো রিংনেক প্যারটসহ প্রায় ৩৪ প্রজাতির পাখি। সবগুলোই আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছে। ম্যাকাও ল্যান্ডের পাশেই মেরিন অ্যাকুরিয়াম। রয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ। ক্রোকোডিল ফিস, টাইগার ফিস, লুকিয়ে থাকা ব্ল্যাক গোস, অস্কার। রয়েছে চিকলেট মাছ। এর প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, জিরাফ ফিডিং স্পট, পেলিকেন আয়ল্যান্ড, বোটিং ও লেকজোন; বৃহৎ আকারের গাছপালা ঘেরা ক্রাউন্ট ফিজেন্ট এভিয়ারী, ধনেশ এভিয়ারী, প্যারট এভিয়ারীসহ দেশি-বিদেশী পাখির পাখীশালা (আরধৎ), কুমির পার্ক, অর্কিড হাউজ, প্রজাপতি কর্ণার, শকুন ও পেঁচা কর্ণার, এগ ওয়ার্ল্ড, কচ্ছপ-কাছিম ব্রিডিং সেন্টার, লামচিতা হাউজ, ক্যাঙ্গারু বাগান, হাতী-শো গ্যালারী, ময়ুর/মেকাউ ওপেন ল্যান্ড, সর্প পার্ক, ফেন্সি কার্প গার্ডেন, ফেন্সি ডার্ক গার্ডেন, লিজার্ড পার্ক, ফুডকোট, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও জলাধার ইত্যাদি।

অবমুক্ত ও বেস্টনিতে রাখা বন্যপ্রাণী : পার্কে বন ও অবমুক্ত প্রাণীর নিরাপত্তার জন্য ২৬ কিলোমিটার বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে দেশি-বিদেশি পর্যটক গাড়িতে বসে বিচরণ অবস্থায় বন্যপ্রাণী অবলোকন করতে পারেন। পার্কে বাঘ, সিংহ, ভালুক চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, ওয়াইল্ডবিষ্ট, ব্লেসবক, উটপাখি, ইমু প্রভৃতি অবমুক্ত করা হয়েছে। বন ও প্রাণী বৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য সেখানে স্থাপন করা হয়েছে আন্তর্জাতিকমানের প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র।

ন্যাচারেল হিস্ট্রি মিউজিয়াম: এখানে প্রায় ২০০০ প্রজাতির মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর দেহাবশেষ, স্পেসিমেন ও ষ্টাফিং সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য গাছপালা। প্রায় ৩০০ প্রজাতির গাছ-পালার হারবেরিয়াম সিট তৈরী করে মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সাফারী পার্কে ন্যাচারেল হিস্ট্রি মিউজিয়াম নির্মাণ যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এতে পর্যটক, শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দ বিপদাপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করতে পারবেন। তাছাড়া ডাটাবেজ হতে শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দ বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের সকল প্রকার তথ্য পেতে সমর্থ হবেন।

বঙ্গবন্ধু স্কয়ার : প্রায় ৩৮ একর এলাকা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার।প্রধান ফটকের সামনে রয়েছে বিশাল পার্কিং এলাকা। এখানে নির্মাণ করা হয়েছে আকর্ষণীয় মুরাল ও মডেলসহ প্রধান ফটক, ফোয়ারা, জলাধার ও লেইক। তথ্যকেন্দ্র, পার্ক অফিস, ডরমেটরি, বিশ্রামাগার, নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম, ঐরাবতী বিশ্রামাগার, ময়ূরী বিশ্রামাগার, ইকো-রিসোর্ট, ডিসপ্লেø ম্যাপ, আরসিসি বেঞ্চ ও ছাতা। আরো আছে বিরল প্রজাতির কিছু বন্য প্রাণি আছে যেগুলো কখনও এশিয়া অঞ্চলে সচরাচর দেখা যায় না। এগুলোর মধ্যে  আল পাকা, ক্ষুদ্রকায় ঘোড়া, ওয়ালাবি, ক্রাউন ক্রেইন, মান্ডারিং ডাক ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে দুটি বিশাল আকার পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ, একটির নাম টাইগার রেস্তোরাঁ অপরটি সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ। এই দুটো রেস্টুরেন্টে বসেই কাচের মধ্যে দিয়ে সিংহ এবং বাঘ দেখতে দেখতে খাওয়াদাওয়া করা যাবে।

প্রবেশ ফি একেক জনের জন্য একেক রকম। বয়স্কদের জন্য ৫০টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ২০ টাকা, শিক্ষার্থীদের ১০ টাকা, শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থী গ্রুপ ৪০ থেকে ১০০ জন ৪০০ টাকা, আর যদি শিক্ষার্থী গ্রুপ ১০০ জনের বেশি হয় তাহলে ৮০০ টাকা এবং  বিদেশি পর্যটকদের জন্য পাঁচ ইউএস ডলার।

চিড়িয়াখানায় আপনি খাঁচার মধ্যে আর পশুপাখিরা আপনাকে দেখতে আসছে। ব্যাপারটা কেমন! এরকম না হলেও অনেকটা কাছাকাছি অনুভূতির স্পর্শ পাবেন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। ইচ্ছে করলে যে কোনও দিন পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক থেকে।


   Page 1 of 2
     তথ্য - প্রযুক্তি
ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতা : সর্বক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
.............................................................................................
এই নিয়ম না মানলে খেলতে পারবেন না পাবজি!
.............................................................................................
তথ্য প্রযুক্তি
.............................................................................................
মহাকাশে যাচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’
.............................................................................................
গজমহল ট্যানারী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২ দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা
.............................................................................................
গুগলে বাংলা নলেজ গ্রাফ চালু
.............................................................................................
আউটসোর্সিংয়ের নতুন খাত খুঁজে পেয়েছি: জুনায়েদ আহমেদ পলক
.............................................................................................
ইয়াহু শেষ, নতুন নাম আলতাবা
.............................................................................................
ভাইবার হোয়াটসএ্যাপ ইমোতে কলরেট বসছে !
.............................................................................................
অনলাইনে কনটেন্ট চুরি ঠেকাতে ডিএমসিএ
.............................................................................................
পর্যটক হারাচ্ছে সুন্দরবন
.............................................................................................
ঘুরে আসুন রূপসী বাংলার সাজেক ভ্যালী থেকে
.............................................................................................
দেশের পুরাকীর্তির ঐতিহ্য রক্ষার্থে ও সৌন্দর্যের বিকাশে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে
.............................................................................................
পুরাকীর্তির আধাঁর ‘মহাস্থানগড়’
.............................................................................................
মালয়েশিয়ায় স্বল্প পুঁজিতে নিরাপদে ব্যবসা ও স্থায়ীভাবে বসবাস
.............................................................................................
ঘুরে আসতে পারেন গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক
.............................................................................................
ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতিকন্যা জাফলং
.............................................................................................
রানীনগরে দেড় হাজার বছরের প্রাচীন নিদর্শন!
.............................................................................................
সার্ফিং বাংলাদেশকে তুলে ধরবে সারা বিশ্বে -তথ্যমন্ত্রী
.............................................................................................
রানীনগরে দেড় হাজার বছরের প্রাচীন নিদর্শন!
.............................................................................................
ঘুরে আসতে পারেন দিল্লীর ঐতিহাসিক স্থান ডলস মিউজিয়ামঃ
.............................................................................................

|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308
    2015 @ All Right Reserved By manabadhikarkhabar.com    সম্পাদকীয়    আর্কাইভ

   
Dynamic SOlution IT Dynamic POS | Super Shop | Dealer Ship | Show Room Software | Trading Software | Inventory Management Software Computer | Mobile | Electronics Item Software Accounts,HR & Payroll Software Hospital | Clinic Management Software Dynamic Scale BD Digital Truck Scale | Platform Scale | Weighing Bridge Scale Digital Load Cell Digital Indicator Digital Score Board Junction Box | Chequer Plate | Girder Digital Scale | Digital Floor Scale