শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারকে অস্থিতিশীল করছে যুক্তরাজ্য : অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ;   * ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’   * বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন   * চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;   * ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;   * গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অগ্নিকাণ্ড   * কক্সবাজারের টেকনাফে ধরা পড়ল ৪০০ কেজি ওজনের তলোয়ার মাছ   * মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর   * ট্রাকচাপায় সড়কে ঝড়ল অটোরিকশা চালকের প্রাণ   * ৭নং ওয়ার্ডে এনজিও সংস্থা প্রত্যাশী এর সেমিনার অনুষ্ঠিত ;  

   সারাদেশ
সামাজিক ও মানবিক কাজে এক অনন্য উচ্চতায় একজন অর্চনা বিশ্বাস
  Date : 23-02-2022

সামাজিক ও মানবিক কাজে গুরুত্বপুর্ন অবদান রেখে অনন্য উচ্চতায় দরিদ্র এবং কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া অর্চনা বিশ্বাস ( ইভা). গ্রামের আরও ৫টি মেয়ের মত তার বেড়ে ওঠা, বাব কাকা কৃষক, ছোট কাক প্রফেসর ও কাকিমা শিক্ষিকা ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি সমাজ তথা পরিবারের অনেক কিছুই ভালোমন্দ দেখতে পেতেন। নিজ পরিবারে মাকে নির্যাতিত হতে দেখেছেন।দেখেছেন নারীদের উপর অনেক অন্যায় অত্যাচার। গ্রামের মেয়েদের সমস্ত সমস্যা দেখে তার কিশোরী মনকে আঘাত করতো। পরবর্তীতে যশোর শহরের বস্তিতে মায়েদের একই সমস্যা দেখতেন, এসব সমস্যা দেখার জন্য তিনি সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের কাছে গিয়েয়েছেন এবং তাদের সমস্যা অনুধাবন করেছেন, ফলে এই মায়েদের জন্য তার কিছু করার মানুসিকতা তৈরী হয়।
গ্রামে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে সমাজের অনেক অন্যায় অসংগতি তার চোখে পড়ে। তখন থেকেই তিনি প্রতিবাদ করতে শুরু করেন, স্কুলে প্রায়ই মেয়েদের উত্যক্ত করা হতো, তখন থেকেইতিনি ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিবাদ গড়ে উত্যক্তকারীকে ধরে মারপিট করে জুতের মালা পরিয়ে মহল্লায় ঘুরাতেন।
এসময় তিনি অনুধাবন করেন এই প্রতিবাদ তার একার নয়, তাই সবাইকে সংগবদ্ধ করেই প্রতিবাদ করতে হবে ।
ছোট বেলা থেকেই তার উদ্যেশ্য ছিলো নারীদের জন্য অবশ্যই কিছু করবেন, তাই সমাজের অন্যায় অসংগতির বিরুদ্ধে অবচেতন মনেই সক্রিয়ভাবে মেয়েদেরকে একতাবদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত হতে থাকেন।
১৯৭১ সালে যুদ্দের সময় তিনি ভারতে চলেযান। ফিরে আসেন ১৮ ই ডিসেম্বর ১৯৭১. আবারও তিনি সক্রিয়ভাবে নিজের কাজ শুরু করেন, তার জন্য তার বাবা ও পরিবারের অনেক কস্ট সহ্য করতে হয়, সমাজের এবং রাস্ট্রের অনেক কটুক্তি শুনতে হয়েছে, তবুও তিনি পিছনে ফিরে তাকাননি, এসব কিছুর মধ্যে তার উপলব্ধি হয় রাস্ট্র ও সমাজ ব্যাবস্থা না পাল্টালে তার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে। এর জন্য প্রয়োজন নিজের যোগ্যতা বৃদ্ধি ও শিক্ষা গ্রহণ করা। ভালো নেতা হতে গেলেও লেখাপড়া দরকার, দরকার সমাজটাকে শিক্ষিত করা, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত ও সচেতন করা। ১৯৭৬ সালে ভালবেসে বিয়ে করেন একজনকে, সে ধর্মে মুসলমান, এর পর থেকে তারা যশোর শহরে বসবাস শুরু করেন তারা,।
বন্ধু ও কাকা মামার সহায়তায় জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন, টিকে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন, এ সময়ে পাশে পান জাগরনীচক্র ফাউন্ডেশনের পরিচালক জনাব আজাদুল কবির আরজু কে,তিনি তার প্রতিসঠানে ২০০ টাকা বেতনে কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করেন, তখনও তিনি এসএসসি পাস করেননি। শিক্ষিকা হিসাবে বস্তিবাসী শিশুদের নিয়ে স্কুল করেন, সামান্য বেতনে সংসার ও ছেলে মানুষ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার জাগরনীচক্রের কাজকেও ভালবেসে ফেলেন তিনি, কারন এখানে তিনি তার স্বপ্ন পুরনের আশা দেখতে পান। সাথে সাথে তিনি অল্প শিক্ষিত হিসাবে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন, যেমন উচ্চশিক্ষিত না বলে সব ক্ষেত্রে তার প্রাধান্য থাকতে নেই, বেশি শিক্ষিত শিক্ষকেরা সব সময় তাকে অন্য চোখে দেখতেন,তাতে তিনি অপমান বোধ করতেন। জড়তা কাজ করতো জীবনের অনেক স্বপ্ন শিক্ষিত না হওয়ার কারনে বাস্তবে রুপদিতে পারতেন না, অবমুল্যায়িত হওয়া এবংহীনমন্যতায় ভুগতেন তিনি।
পরবর্তীতে তিনি স্বামীর সহযোগিতায় ও অনুপ্রেরণায় পড়াশোনা শুরু করেন,১৯৮৩ সালে এসএসসি, ১৯৮৫ সালে এইসএস সি, ও ১৯৯০ সালে মাস্টার্স পাসকরেন অর্চনা বিশ্বাস। এই শিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে একাধারে সংসার, ছেলের দেখাশোনা ও চাকরির ঠিকঠাক দ্বায়িত্ব পালন ছাড়াও সামাজিক অনেক দ্বায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। লেখাপড়া শেষ করে পরবর্তীতে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে তিনি যা অর্জন করেন তা হল কর্ম ক্ষেত্রে ৪০টির বেশি অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট, চাকরিতে সম্মানজনক পদলাভ ( শিক্ষিকা, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী, প্রকল্প পরিচালক ইত্যাদি).
বর্তমানে তিনি জয়তী সোসাইটি নামক একটি নারী ও শিশু উন্নয়নমুলক প্রতিসঠানের পরিচালকের দ্বায়িত্ব পালন করছেন। সমাজে, পরিবারে একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হয়েছে,চাকরি সুবাদে থাইল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ফিলিপাইন,লাওস,ভারত, হংকং, নেপাল সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজের সুযোগ পেয়েছেন, হীনমন্যতা কেটেছে, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে,অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে সফলতা পেয়েছেন, পরিবারে কতৃত্ব প্রতিসঠা পেয়েছে, মুসলিম পরিবারে বিয়ে করা সত্ত্বেও দুই পরিবারের সু সম্পর্ক সৃস্টি করতে পেরেছেন। নারীদের অধিকার রক্ষায় পাড়ায় পাড়ায় সংগঠন গড়ে তুলেছেন, যারা এখন অনেক যোগ্য ও সংগঠিত, যার সংখ্যা প্রায় ১৫০০০. তারা নারীদের উপর নির্যাতন,যৌতুক ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে একত্রে প্রতিবাদ করে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের সচেতন ও দক্ষ করেছেন, তার স্বপ্ন নারীদের গতানুগতিকতার বাইরে আনা, তাও অনেকাংশে সফল হয়েছেন, যশোর শহরে মেয়েরা এখন মটর সাইকেল স্বাচ্ছন্দে চালাতে পারে তারই কারনে। নারীদের শিক্ষা, চিকিৎসা আত্মসামাজিক উন্নয়নে তিনি এখনও নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। এমন একজন অর্চনা বিশ্বাস আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে রইবেন।



  
  সর্বশেষ
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারকে অস্থিতিশীল করছে যুক্তরাজ্য : অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ;
ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308