শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’   * বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন   * চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;   * ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;   * গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অগ্নিকাণ্ড   * কক্সবাজারের টেকনাফে ধরা পড়ল ৪০০ কেজি ওজনের তলোয়ার মাছ   * মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর   * ট্রাকচাপায় সড়কে ঝড়ল অটোরিকশা চালকের প্রাণ   * ৭নং ওয়ার্ডে এনজিও সংস্থা প্রত্যাশী এর সেমিনার অনুষ্ঠিত ;   * কুড়িগ্রামে অযৌক্তিক রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন  

   পর্যটন
দেখে এসেছি নয়নাভিরাাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন
  Date : 20-05-2019

                                      সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমার সাথে লেখক ও তার পরিবার

    (চতুর্থ পর্ব)                                        

”মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। ভ্রমন করে না অথবা করতে চায় না এমন মানুষ এই দুনিয়ায়  পাওয়া বড় দুস্কর। একঘেঁয়ে জীবন যাত্রায় মানুষ যখন হাঁপিয়ে ওঠে, তখন তার অন্তত কিছু সময়ের জন্য একটু আরাম, একটু বিরাম ও একটু শান্তির খোঁজে বেরিয়ে পড়েন সৃষ্টিকর্তার অপারময় সৃষ্টির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখার জন্য কাছে বা দূরে কোথাও। একজন পর্যটক হিসেবে আপনি ঘুরে আসতে পারেন সারা বিশ্ব। ঢাকার বাইরে ঘুরে আসতে চান? তবে স্বল্প মূল্যে পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন দেশের দর্শনীয় স্থানসমুহ। আমাদের সুজলা-সুফলা নদী মাতৃক এই দেশের মধ্যেই রয়েছে পাহাড়, পর্বত সমুদ্র, জঙ্গল, স্থাপত্য, পুরাকীর্তি ইত্যাদি। পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য রয়েছে বিনোদনের নানান ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক সম্পদের অফুরন্ত সম্ভার। পর্যটক হিসেবে আপনি যদি ভ্রমণ করতে চান, মাথার ওপর নীল চাঁদোয়া, মেঘে-বৃষ্টিতে ভেজা বাতাস, পায়ের নিচে অন্য এক পৃথিবী উপভোগ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্রগ্রামের রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন। ঘুরে এসে ভ্রমণ পিপাসু পাঠকদের উদ্দেশে লিখেছেন- মোঃ রিয়াজ উদ্দিন

 পাঠকদের ভ্রমনের সুবিধার্থে প্রাকৃতিক সুন্দর্যের পর্যটন স্থল বান্দরবান বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ-

বান্দরবান ঃ সবুজ আর পাহাড়ের অনন্য রূপ মিলেমিশে রয়েছে বান্দরবানে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ ছুটে যায়।  উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে নীলগিরি, স্বর্ণমন্দির, মেঘলা, শৈল প্রপাত, নীলাচল, মিলনছড়ি, চিম্বুকসহ বেশ কয়েকটি জায়গা। বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৪৭ কি.মি. দক্ষিণ পূর্ব দিকে লামা উপজেলার অংশে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট ওপরে বাংলাদেশের নতুন পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরির অবস্থান। যাকে বাংলাদেশের দার্জিলিং হিসেবে অবহিত করা যায়। নীলগিরি যেতে হলে আগে থেকে ল্যান্ডক্রুজার জিপ ভাড়া করতে হবে। চাদের গাড়ি ও ডিজের চালিত অটোতে যাওয়া যায়। এ ছাড়া রয়েছে স্বর্ণমন্দির। বর্তমানে স্বর্ণমন্দির উপাসনালয়টি বান্দরবান জেলার একটি অন্যতম পর্যটন স্পট হিসেবে পরিগণিত হয়। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই ”বৌদ্ধ ধাতু জাদী”কে স্বর্ণমন্দির নামকরণ করা হয়। 

 

এটির নির্মাণশৈলী মিয়ানমার, চীন ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ টেম্পলগুলোর আদলে তৈরি করা হয়। তারপর যেতে পারেন মেঘলা। বান্দরবান জেলা শহরে প্রবেশের ৭ কি.মি. আগে মেঘলা পর্যটন এলাকাটি অবস্থিত। এটি সুন্দর কিছু উঁচু নিচু পাহাড়বেষ্টিত একটি লেককে ঘিরে গড়ে উঠে। ঘন সবুজ গাছ আর লেকের স্বচ্ছ পানি পর্যটককে প্রকৃতির কাছাকাছি টেনে নেয় প্রতিনিয়ত। শৈল প্রপাত। শৈল প্রপাত বান্দরবান শহর হতে ৭ কি.মি. দক্ষিণ পূর্বে চিম্বুক বা নীলগিরি যাওয়ার পথে দেখা যাবে। পাহাড়ের চূড়া থেকে চারদিকের সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য অবগাহন এখানে প্রকৃতিপ্রেমীদের টেনে আনে। ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর চট্টগ্রাম থেকে সোজা বান্দরবান। এতে খরচ পড়বে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।

বান্দরবানে পর্যটন কর্পোরেশনের একটি হোটেল আছে মেঘলাতে। যার ভাড়া রুম প্রতি ৭৫০ হতে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। হোটেলগুলোতে রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা আছে। বান্দরবানে সব হোটেলে খাবারের মানের চেয়ে দামটা বেশি।

 

বান্দবনের বর্ণনাতীত অনেক সুন্দরের সন্ধান পাওয়া যাবে, কিন্তু বান্দরবনের সামনে সবকিছুই যেন মলিন মনে হয়। একেবারে খাঁটি সত্য হলো, এমন ঘুমঘুম সুন্দর জায়গা পৃথিবীতে আর একটিও নেই। শরতের আকাশ শুভ্রতার প্রতীক। শরতে আকাশ ভরে থাকে সাদা মেঘে। কিন্তু শরতেও আকাশ কালো হয়, মেঘ নামে, অঝোরধারায় বৃষ্টি ঝরে। সাহিত্য হয়, হয় ফটোগ্রাফি। বাকরহিত করে তারপর সৃষ্টিশীল ভাবনায় মন হয় আন্দোলিত। আজ সেসব অনেক কিছু হওয়ার গল্প বলব। যে গল্পের শুরু ঢাকা থেকে হলেও প্রকৃত শুরু বান্দরবান শহর থেকে! শেষ পর্যন্ত আসব না, আসব না করে বান্দরবান পর্যন্ত চলে এলাম। এসেই যখন পড়েছি, তখন কেবলই সামনে চলা। রাঙামাটি থেকে আমরা জিপ নিয়ে ছুটলাম বান্দরবনের উদ্দেশ্যে। চালক জুয়েল যথারীতি আমাদের সফর সঙ্গী। এই পাহাড়ি জনপদের সব রাস্তা ও স্পট তার চেনা জানা। জুয়েল আমাদেরকে বলল স্যার সন্ধ্যার আগে যেতে না পারলে নীলাচলের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যাবে না। তাই সে দ্রুত গতিতে যেতে লাগল। রাঙ্গামাটি থেকে বান্দরবন যাওয়ার পথে পাহাড়ি জনপদে দেখা হয়ে যায় আমাদের পূর্ব পরিচিত ও ঘনিষ্টজন খাগড়াছড়ির জনপ্রিয় জননেত্রী বাসন্তী চাকমা এর সাথে। পথিমধ্যে দেখা হওয়ায় আমাদের ভ্রমণের আনন্দ আরো বেড়ে যায়। এর আগে তিনি আমাদের ভ্রমণের খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। পথে প্রথমে ঝিরিঝিরি শুরু, কিছুক্ষণ সেই ঝিরিঝিরি অঝোরধারার রূপ পেল। আমরা খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম, পাহাড়ে বৃষ্টি না হলে কী জমে! এভাবেই বৃষ্টি মাথায় ঘুমাব ঘুমাব করেও না ঘুমিয়ে প্রকৃতির সব সুন্দর গিলে গিলে চলে এলাম বান্দরনে নীলাচলে। পাহাড়ের পাদদেশে নয়নাভিরাম সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে থাকলাম। দেশ বিদেশ থেকে আগত অনেক পর্যটকদের ভিড় পরিলক্ষিত হল। একদল পাহাড়ী মানুষ তখন সেখানে গেয়ে যাচ্ছিল আঞ্চলিক গান। সে এক অন্যরকম অনুভূতি। রাত নেমে অন্ধকার গাড় হতে লাগলো আমরা পাহাড় বেয়ে নিচের দিকে আসতে থাকলাম, বান্দরবন শহরের অদূরে রেস্ট হাউসে রাত্রিযাপনের জন্য । বান্দরবন শহরের পাহাড়গুলি যেভাবে দাঁড়িয়ে, তা দেখি আর ভাবি, নিশ্চিত এ তার উদ্যাপনের ভঙ্গিমা, প্রকৃতির সামনে সবকিছু তুচ্ছ বোঝাতেই তার এমন উদ্যাপন।সেদিন রাতে পাহাড়ের কাছে শুধু একটি কথাই জানতে চেয়েছিলাম, কেন আমরা সত্যিকার অর্থে মানুষ হতে পারছি না। 

 

পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত বান্দরবন শহরের সর্বোচ্চ উচ্চতায় একটি পাহাড়ে হিলটপ রেস্ট হাউজ পুরোটাই আমাদের জন্য বরাদ্ধ। দ্বিতীয় তলায় বিশাল সুপ্রসস্থ নান্দনিক ভি.আই পি ‘নীলগিরি’ নামক স্যুটরুমে আমাদের থাকার ব্যবস্থা। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, এই রেস্ট হাইজটি নাকি দেশের সবচেয়ে নান্দনিক ও আধূনিক সুযোগ সুবিধায় নির্মিত। আমরা রেস্ট হাউজের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে থাকলাম। যা আজকের লেখায় বলে শেষ হবে না। তবু একটু বলি, আসলে মারমা নৃ-গোষ্ঠী ও রেস্ট হাউজের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আথিতেয়তা তুলনা হয়না এবং ভুলবার নয়।
রাতের বেলায় পাহাড়ের ওপর চলে মেঘের লুকোচুরি। পাহাড়ে নেমে এসেছে রাত। চারদিকে গাঢ় অন্ধকার। কিন্তু এই রাতেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সামনে পাহাড়ের সারি। আকাশভরা তারা। প্রকৃতি আলো করে উঠেছে পূর্ণিমার চাঁদ। মায়াবী এই আলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে কেমন যেন রহস্যময় করে তুলেছে। আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো দাঁড়িয়ে শুনছি ব্যাঙের ডাক, ঝিঁঝি পোকার একটানা শব্দ। জোনাকি পোকার দল আলো জ্বেলে আমাদের চারপাশে উড়ছে। মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে প্যাঁচা বা বাদুড়ের ডাক। আরও, আরও অনেক দূরে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশে বৈদ্যুতিক বাতির আলোকসজ্জা। এ যেন অপার্থিব কোনো দৃশ্য, যা আমাদের কাছে খুব অচেনা। ভালো লাগায় ভরে গেল মনটা। রাতের এই রূপ দেখতে দেখতে এক সময় আমরা ঘুমিয়ে গেলাম।

আজ শুধু এইটুকু থাক, এই গল্প তুলে রেখে চলুন শুনি বান্দরবনের সেই ভোরের গল্প। চোখের সামনে রাতের অন্ধকার ভেদ করে সূর্য উদয় হলো, আহা, কতদিন এভাবে ভোর দেখা হয় না। পাখির ডাকে সকাল হলো। কিন্তু এ কী! সূর্য কোথায়? এ যে মেঘের পালক। চারদিকে হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা সাদা মেঘ।

এমনকি ঘরের দরজা-জানালা দিয়ে মেঘ ঢুকে ভিজিয়ে দিচ্ছে আমাদের। একসময় একপশলা বৃষ্টিও নিয়ে এল সেই মেঘ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা পাওয়া গেল। হঠাৎ করেই যেন দৃশ্যপট পাল্টে গেল। উজ্জ্বল সোনালি আলোয় ঝকঝক করে উঠল প্রকৃতি। চারদিকে সবুজের সমারোহ। পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে। রঙিন প্রজাপতি, ফড়িংয়ের দল উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবারও মনে হলো এ কী স্বপ্ন, না সত্যি?
আমাদের চারপাশের এই সৌন্দর্য কোনো কল্পনা নয়, এ সত্যি। আমরা দাঁড়িয়ে আছি বান্দরবানের উঁচু পাহাড়ের ওপর হিল টপ রিসোর্ট খোলা অলিন্দে। সেদিন রাঙ্গামাটি থেকে বান্দরবান পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল বলে রাতের রূপ দিয়েই শুরু হয়েছিল আমাদের সময়। খোলা চত্বরে দাঁড়িয়ে সামনে তাকিয়ে মনে হলো নজরুলের সেই গানখানি, ‘আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ।’ খোলা বারান্দায় সকালের নাশতা করতে করতে দেখা যায় নীল আকাশ, পাহাড়, সবুজ বনবনানী। পাহাড়ের কোলজুড়ে সাজানো আছে ছোট ছোট পাহাড়ি বাড়িঘর । সেদিন আমরা বেলা বাড়ার আগেই ভোর সাতটার সময় স্বদলবলে চলে যাই নীলগিরির সৌন্দর্য দেখার জন্য। পাহাড়ী রাস্তার রাজা জিপ ছুটে চলল, গাড়ির জানালা থেকে দেখতে থাকি মেঘের রাজ্য।

পুরো বিষয়টাই স্বর্গীয় মনে হচ্ছিল আমাদের কাছে। এ যেন বিশাল এক মেঘের বন। আহা কী চমৎকার! জীবনে এমন অসাধারণ দৃশ্য না দেখে বাঁচলেই বা কী! আমরা সকাল আটটায় নীলগীরি রিসোটে পৌঁছায়। এই রিসোটি সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত। এখানে সুন্দর একটি রেস্তোরা রেেয়ছে, এই রেস্তোরায় সকালে নানারকম সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। এখানে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার হেলিপ্যাড। নাস্তা শেষে ঘুরে বেড়ানো যায় এই রিসোটের চারপাশ। একদম উঁচুতে রয়েছে অভিনব একটি সেতু, যা দুটি পাহাড়কে এক করেছে। সেখানেই তৈরি হচ্ছে সুইমিংপুল। ইচ্ছে হলে গা এলিয়ে দিয়ে এই রেস্তোরায় বসে চা-কফি পান করতে পারেন বা গান শুনতে পারেন। একা বসে বই পড়তে চান? খোলা বারান্দায় বসে ছবি আঁকতে চান? দল বেঁধে বসে গল্প করতে বা গান গাইতে বা আড্ডা হই হুল্লোড় করতে চান? অথবা দুজনে নিভৃতে বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান? তাহলে নীলগীরি যেতে পারেন। বান্দরবান শহর থেকে এক ঘণ্টার পাহাড়ি পথ। রিসোর্টটির সুন্দর স্থাপত্য, আধুনিক সুবিধা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে সহজেই। সকাল গড়িয়ে বেলা বাড়তে থাকল। বারান্দায় বসে সামনে তাকিয়ে থাকতে থাকতে দেখতে পেলাম আকাশজুড়ে মেঘের যে খেলা চলছে, তারই ছায়া পড়েছে পাহাড়ে। যেখানে কালো মেঘ, সেখানে পাহাড় কালো; যেখানে রোদ, সেখানে প্রকৃতি উজ্জ্বল। পাহাড়ে একসঙ্গে এত রূপ, আমি কখনো দেখিনি আগে। জুন থেকে অক্টোবর মাসে গ্রীষ্ম ও শরৎকালে এখানে ক্ষণে ক্ষণে প্রকৃতি তার রূপ বদলায়। কবির ভাষায়, ‘আকাশজুড়ে মেঘের খেলা, কোথায় বা সীমানা/ দেশে দেশে খেলে বেড়ায় কেউ করে না মানা।’ আরও জেনে নিন নীলগীরির অদূরে সাইরু পাহাড়। সাইরু নামের একটি পাহাড়ি মেয়ের ভালোবাসার গল্প, যা লেখা আছে এই পাহাড়ে। শীতকালটা আবার অন্য রকম ভালো। মেঘ আর রোদের আনাগোনা চলতেই থাকে। আবার সাইরু থেকে ফেরার পথে দেখে নিতে পারেন চিম্বুক, শৈলপ্রপাত। কিনতে পারেন পাহাড়িদের তৈরি পোশাক, পেঁপে, জাম্বুরা, আনারস, জুমের সবজি, বাংলা কলা, হলুদের ফুল, আদার ফুল, স্কোয়াশ ইত্যাদি। আমরা চিম্বুক পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখে চলে যাই স¦র্ণ মন্দিরে। বান্দরবন শহরের অদূরেই এই স্বর্ণ মন্দির। ধর্মীয় স্থাপত্যে তৈরী এই মন্দির দেখে আমরা চলে আসি হিলটপ রেস্ট হাউজে। তখন দুপুর গড়িয়ে যায়।

আমরা বান্দরবনের পাহাড়ি পাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে ২৬ডিসেম্বর হিলটপ রেস্ট হাউজে দুপুরের সুস্বাধু টাটকা খাবার খেয়ে বিকেলে ছুটলাম পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। পাহাড়ি রাস্তা বান্দরবন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িতে কয়েকদিন ভ্রমণে আমাদের সাথে থাকা চালক জুয়েল রানীরহাট নামক জায়গায় পৌঁছে দিলো। আমরা অন্য একটি গাড়িতে করে সন্ধ্যায় কক্সবাজারে পৌঁছাই। মানবাধিকার খবরের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানে আলম সাকি আমাদেরকে গ্রহন করার জন্য আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন। তিনি আমদেরকে গ্রহনের পর নিয়ে গেলেন একটি নিরিবিলি রিসোর্টে। সেখানে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করলেন এবং আমাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। রাতের খাবার শেষে আামরা ঘুমিয়ে পড়ি। পরের দিন ২৭ডিসেম্বর ভোরে চলে যাই সেন্টমার্টিনের জাহাজ ধরার জন্য টেকনাফে। জানে আলম সাকি আগে থেকেই সেন্টমার্টিনে যাওয়া-আসার সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন।

বিঃদ্রঃ প্রিয় পাঠক, সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ভ্রমনের বিস্তারিত জানতে নিয়মিত পড়–ন পরবর্তী পর্বগুলী।

লেখক: সম্পাদক, মানবাধিকার খবর

 Email-md.reaz09@yahoo.com



  
  সর্বশেষ
ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;
ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308