বুধবার, মে ৮, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * অবৈধভাবে টিভি চ্যানেলের প্রদর্শন বন্ধে কার্যক্রম শুরু   * কক্সবাজার ডিসি সাহেবের ৬৯ তম বলি খেলা ও বৈশাখি মেলার আসর ১০ ও ১১ মে   * তুচ্ছ ঘটনায় কক্সবাজারে ছুরি মেরে ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা   * বৈরী আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের ফ্লাইট কক্সবাজারে অবতরণ;   * আপত্তিকর অবস্থায় ধরা ইউপি সদস্য মাইরের ভিডিও গণমাধ্যমে।   * গাজীপুরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত   * হেলিকপ্টারে চড়ে শ্বশুরবাড়ি এলেন বিদেশি নববধূ   * ফেনী জেলায় আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার   * নোয়াখালী জেলায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি-নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর;   * শেষ হচ্ছে জমজমাট প্রচারণা,উপজেলা নির্বাচন ৮ মে কচুয়ায় স্বতন্ত্রের ব্যানারে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী  

   পর্যটন
দেখে এসেছি নয়নাভিরাাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন
  Date : 16-04-2019

”মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। ভ্রমন করে না অথবা করতে চায় না এমন মানুষ এই দুনিয়ায়  পাওয়া বড় দুস্কর। একঘেঁয়ে জীবন যাত্রায় মানুষ যখন হাঁপিয়ে ওঠে, তখন তার অন্তত কিছু সময়ের জন্য একটু আরাম, একটু বিরাম ও একটু শান্তির খোঁজে বেরিয়ে পড়েন সৃষ্টিকর্তার অপারময় সৃষ্টির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখার জন্য কাছে বা দূরে কোথাও। একজন পর্যটক হিসেবে আপনি ঘুরে আসতে পারেন সারা বিশ্ব। ঢাকার বাইরে ঘুরে আসতে চান? তবে স্বল্প মূল্যে পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন দেশের দর্শনীয় স্থানসমুহ। আমাদের সুজলা-সুফলা নদী মাতৃক এই দেশের মধ্যেই রয়েছে পাহাড়, পর্বত সমুদ্র, জঙ্গল, স্থাপত্য, পুরাকীর্তি ইত্যাদি। পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য রয়েছে বিনোদনের নানান ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক সম্পদের অফুরন্ত সম্ভার। পর্যটক হিসেবে আপনি যদি ভ্রমণ করতে চান, মাথার ওপর নীল চাঁদোয়া, মেঘে-বৃষ্টিতে ভেজা বাতাস, পায়ের নিচে অন্য এক পৃথিবী উপভোগ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্রগ্রামের রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন। ঘুরে এসে ভ্রমণ পিপাসু পাঠকদের উদ্দেশে লিখেছেন- মোঃ রিয়াজ উদ্দিন

 

পাঠকদের ভ্রমনের সুবিধার্থে প্রাকৃতিক সুন্দর্যের পর্যটন স্থল সাজেকের বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ-

 

সাজেকঃ
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উল্লেখ্যযোগ্য পর্যটন স্থল। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যুগে যুগে ভ্রমনকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ আমাদের বাংলাদেশ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শাসক এদেশ শাসন করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন সুরম্য প্রাসাদ, মসজিদ, মিনার ইত্যাদি তৈরী করেছেন।
এগুলোর সাথে প্রকৃতির মনোরম সৌন্দর্য যেমন পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার তো আছেই। এছাড়াও এদেশের বন, জঙ্গল, অরণ্য, পাহাড় ইত্যাদি এখন আমাদের দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়েছে। এরকমই একটি পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্র সাজেক। সাজেক নদী হতে সাজেক ভ্যালীর নামকরণ হয়েছে। বাংলাদেশ এর রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন সাজেক। এর আয়তন ৬০৭ বর্গমাইল(১৫৭২ বর্গ কি.মি)। বাংলাদেশ এর সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হলো এই সাজেক। সাজেক ভ্যালিতে যাওয়ার পথটা একটু বেশিই সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর। উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তা। দুই পাশে সবুজ গাছগাছালি। দূরে দাঁড়িয়ে উঁচুউঁচু পাহাড়। আকাশ পরিষ্কার থাকায় নীল দেখাচ্ছিল। নীল আকাশ, সাদা মেঘের ভেলা, সবুজ গাছের সারি আর নির্মল বাতাস, এর থেকে ভালো কোনো দৃশ্য আর হতে পারে না।
সাজেক ইউনিয়নের মধ্যে সাজেক ভ্যালি একটি বিখ্যাত পর্যটন আকর্ষণ। এর সবখানেই মেঘ, পাহাড় আর সবুজের মিতালী চোখে পড়ে। সাজেকে তিনটি হ্যালিপ্যাড রয়েছে; যা থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের অপুর্ব দৃশ্য দেখা যায়। এখানে ২৪ ঘন্টায় প্রকৃতির তিনটি রুপের দেখা মিলে। কখনো প্রচন্ড গরম, তার কিছুই পরেই হয়তো চারদিকটা ঢেকে যায় মেঘের চাদরে; মনে হয় যেন একটা মেঘে উপত্যকা। তার কিছু পরেই বৃষ্টি। রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অব¯িত সাজেক। সেভেন সিস্টার্সের এক সিস্টার হলো মিজোরাম। সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙামাটির লংগদু, পূর্বে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা অবস্থিত। সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে ট্রাকিং করে কংলাকে পাহাড়ে যাওয়া যায়। কংলাক হচ্ছে সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া। কংলাকে যাওয়ার পথে মিজোরাম সীমান্তে বড়বড় পাহাড়, আদিবাসীদের জীবন যাপন, চারদিকে মেঘের আনাঘোনা ভ্রমনপিপাসুদের দৃষ্টি কাড়ে এবং ক্লান্তি দুর করে। এখানে সাজেক বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে। বিজিবির এই ক্যাম্পটি খুবই দৃষ্টিনন্দন এবং এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত। বিজিবি সদস্যদের সুষ্ট পরিকল্পনায়, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের দ্বারাই বর্তমানে এর ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সাজেকের ভ্রমনরত পর্যটকদের প্রায় সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। সারাবছরই এখানে যাওয়া যায়। উঁচু উঁচু পাহাড় থাকা সত্বেও এখানে পাহাড় ধস বা রাস্তাধসের কোনো ঝুঁকি নেই। রুইলুইপাড়া ও কংলাকপাড়া’ সমন্বয়ে সাজেক গঠিত। রুইলুই পাড়ার উচ্চতা প্রায় ১৭২০ ফুট। কংলাক পাহাড়ের উচ্চতা ১৮০০ফুট। সাজেকের মূলত লুসাই, পাংখোয়া এবং ত্রিপুরা আদিবাসীরা বসবাস করে। এখানকার কলা ও কমলা বেশ বিখ্যাত। সাজেক ভ্যালি থেকে রাঙামাটির অনেকটা অংশই দেখা যায়। একারণে সাজেক ভ্যালিকে রাঙামাটির ছাদ বলা হয়। এখানে সকালের সূর্যোদয় ও সূর্য়াস্তের দৃশ্য সত্যিই নয়নাভিরাম এবং মনে হবে আমরা আকাশের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। কংলাক পাহাড়ের উপর ৩৫টি পরিবার বসবাস করে লোকসংখ্যা প্রায় ২১০-২২০ জন। মানুষ কম কিন্তু তারপরও এখানে চার ধর্মের লোক বাস করে-মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান। এখানে দাড়িয়ে চারপাশ অনেক সুন্দরভাবে দেখা যায়। কংলাকে যাওয়ার পথে কমলাবাান চোখে পড়ে। শুধু তাই নয়, বুনো কলাগাছের ছড়াছড়ি। কলাও ধরেছে, কিন্তু কেউ খায় না। মাঝে মাঝে আনারসের চাষ ও রাবারের বাগান করা হয়েছে। পাহাড়ি রাস্তায় চলতে চলতে দু’পাশের সৌন্দর্য দেখে যেন চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না। আর তখনই মনে পড় গেল-
আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি
তুমি এই অপরুপ রুপে বাহির হলে জননী
ওগো মা তোমায় দেখে দেখে আখিঁ না ফেরে....

রাঙামাটি, বান্দরবন-খাগড়াছড়ি, পাহাড়ি অঞ্চলের মেয়েরা খুবই পরিশ্রমী হয়। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বেঁচে থাকার জন্য। ছেলেরা বাচ্চা কোলে নিয়ে হেলে-দুলে হেঁটে বেড়ায়। সাজেকেও এর ব্যত্যয় হয়নি। একই দৃশ্য দেখতে পেলাম। বাঁশের তৈরী ঝুড়িতে কাঁচা হলুদ ভর্তি করে পিঠের ওপর নিয়ে মেয়েরা নিচ থেকে পাহাড়ে উঠে যাচ্ছে। যে উচ্চতায় সাধারন মানুষ বাঁশে ভর করে উঠে সেখানে ওরা হলুদ ভর্তি ঝুড়ি নিয়ে হাটুর জোরেই উঠে গেলো। আর আমরা তা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম আর বিস্মিত হলাম!
সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে নির্মিত ও পরিচালিত সাজেক রিসোর্ট। এটা জনসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত নয়। তিনতলা বিশিষ্ট রিসোর্টটি সত্যিই সুন্দর! এছাড়া আরো সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর তিন তলায় দাঁড়িয়ে চারদিকের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মনে হবে চতুর্দিকের পাহাড়গুলো যেনো ঘুমিয়ে আছে। সেখানে দাঁড়িয়ে মনে হলো মহান আল্লাহ না জানি কত সুন্দর! যার সৃষ্টি এত সুন্দর! সন্ধ্যার পর সাজেকের সত্যিকারের সৌন্দর্য দেখা যায়। তখন আকাশের তারাগুলো খুব কাছে মনে হয়। মনে হয় গোনাও যাবে। এতো নীল এত সবুজ চোখকে এমন ভাবে আকৃষ্ট করেছে যে এর আকর্ষণ শেষ হয় না। তার চেয়েও বড় কথা হলো, মন বলবে এখনই তো চলে যেতে হবে যত পার দেখে নাও।
কিভাবে যাবেনঃ খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেকের দুরুত্ব প্রায় ৭০ কি.মি। আর দীঘিনালা থেকে প্রায় ৪৯ কি.মি.। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ি থেকে। রাঙামাটি থেকে নৌপথে কাপ্তাই হয়ে অনেকটা পথ পায়ে হেঁটেও সাজেকে যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি অথবা দীঘিনালা হতে স্থানীয় গাড়িতে করে সাজেকে যাওয়াই হচ্ছে বর্তমানে সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম। তবে একসঙ্গে বেশি মানুষ গেলে চান্দের গাড়িতেই সবচেয়ে মজা। এক্ষেত্রে ১০নং বাঘাহাইট পুলিশ ও আর্মি ক্যাম্পের অনুমতি নিতে হয়। শুধু তাই নয় মূলত অনুমতির জন্য ভ্রমনরত সদস্যদের তথ্য ক্যাম্পে জমা দিতে হয়। একে আর্মি এসকর্ট বলা হয়। আর্মির পক্ষ থেকে গাড়িবহর দ্বারা পর্যটকদের গাড়িলোকে নিরাপত্তার সাথে সাজেক পৌছে দেয়া হয়। দিনের দুটি নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে সাজেক যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। পর্যটকদের সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। সাজেক যাওয়ার পথে বাঘাইহাটে একটি অপরুপ সুন্দর ঝর্ণা রয়েছে, যার নাম হাজাছড়া ঝর্ণা। অনেক পর্যটক মূল রাস্তা হতে সামান্য ট্রাকিং করে গিয়ে ঝর্ণাটির সৌন্দর্য উপভোগ করেন। সমাপ্ত-

 


বিঃদ্রঃ প্রিয় পাঠক, সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান  ভ্রমনের বিস্তারিত জানতে নিয়মিত পড়–ন পরবর্তী পর্বগুলী।

 

লেখক: সম্পাদক, মানবাধিকার খবর

 Email-md.reaz09@yahoo.com



  
  সর্বশেষ
অবৈধভাবে টিভি চ্যানেলের প্রদর্শন বন্ধে কার্যক্রম শুরু
কক্সবাজার ডিসি সাহেবের ৬৯ তম বলি খেলা ও বৈশাখি মেলার আসর ১০ ও ১১ মে
তুচ্ছ ঘটনায় কক্সবাজারে ছুরি মেরে ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা
বৈরী আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের ফ্লাইট কক্সবাজারে অবতরণ;

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308