|
দুই হাত ছাড়াই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ॥ |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
গতবছর এক দুর্ঘটনায় দুই হাতই হারাতে হয় সিয়াম আহাম্মেদ খানকে (১৭)। কিন্তু হাত হারিয়েও দমে যাননি সিয়াম। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। অন্যের ঘাড়ে বোঝা হয়ে না থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য অনেক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন সিয়াম। বড় হয়ে ইউএনও হতে চান তিনি। দাঁড়াতে চান প্রতিবন্ধীদের পাশে। সিয়াম আহাম্মেদ খানের মা নাজমা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে লেখাপড়া করাতে হচ্ছে। হাত অকেজো হওয়ার কারণে অনেক কষ্ট হয়। আমার ছেলেকে যেন সমাজে অবহেলা না করা হয় সেজন্য যতদূর পারব তাকে লেখাপড়া করাব। বাবা ফারুক আহাম্মেদ খান বলেন, আমি একজন গরিব মানুষ। তবুও ধার দেনা করে ওর চিকিৎসা করতে এই পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করেছি। এখন পথে বসেছি, আর পারছি না। এতো কষ্টের পরও ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি। হাইকোর্ট থেকে পল্লী বিদ্যুৎকে ৫০ লাখ টাকা দিতে বললেও এখনও কোনো টাকা পাইনি।নড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল খালেক বলেন, সিয়ামের দুর্ঘটনার পর কলেজ ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা মিলে ওর চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আরো বলেন, সিয়াম মেধাবী ছাত্র। ফলে কলেজ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে তাকে। সিয়াম অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করছে। তার ইচ্ছাশক্তি প্রকট। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, পড়ালেখার বিষয়ে সিয়াম ও নড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। লেখার সহযোগিতার্থে সিয়ামকে একজন রাইটার দেয়া হয়েছে। ওর পড়ালেখার জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় সমাজসেবা তহবিল থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। সব সময় সিয়ামকে আমরা সাহায্য সহযোগিতা করে যাব। ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল বাড়ি থেকে জোহর নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় বিঝারী এলাকায় ইরিবোর মাঠে মাটিতে পড়ে থাকা পল্লী বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে তার দুই হাত পুড়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করলে সংক্রমণ দেখা দেয়ায় চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে কবজির ওপর থেকে হাত দুটো কেটে ফেলেন সিয়ামের।
|
|
|
|
|