রবিবার, জুলাই ৬, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * কচুয়ায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও গাছের চারা বিতরণ প্রতিনিধি: রাকিব হোসাইন , কচুয়া (বাগেরহাট)   * কুড়িগ্রামে এনসিপি`র `দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা`   * মতলব উত্তরের দক্ষিণ টরকী একাদশ ক্লাবের উদ্যোগে ফুটবল টূর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত   * মতলব উত্তর থানা ও এখলাছপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ডিসির পরিদর্শন   * রাঙ্গামাটি শহরের একটি বাসা থেকে বিচারকের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ;   * বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত   * কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন ও সাবেক জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত;   * জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন চিতলমারী সীমান্তে নগরমান্দ্রায় বালু উত্তোলনের মহোৎসব   * কক্সবাজারের উখিয়ায় অপহরণ চক্রের ১সদস্যকে গ্রেফতার করেছে. র‍্যাব-১৫   * কুমিল্লার মুরাদনগরের আলোচিত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী সহ গ্রেফতার ৪ জন  

   ইসলাম
ঈদ-উল্ ফিতর ঃ জয় হোক মানবতার
  Date : 03-06-2017


শান্তি আর মানবতার বাণী নিয়ে ধরায় আসে পবিত্র ঈদ। ভ্রাতৃত্বের মোহনী সুরে ডেকে যায় বারংবার। উন্মোচিত হয় সৌহার্দ আর সম্পৃতির দ্বার। প্রবাহিত হয় খুশির জোয়ার। আনন্দের বন্যা বয়ে যায় সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
ঈদ-উল ফিতর উৎসব হিসেবে যেমন আনন্দের তেমনি তাৎপর্যের। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ আর মাৎসর্য এই ষড়রিপুগুলোকে নিয়ন্ত্রণের অদম্য বাসনা নিয়ে এবং আত্মগঠন ও জাতি গঠনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলিম বিশ্ব পালন করে ঈদ-উল ফিতর।
ঈদ-উল-ফিতর সর্বাধিক অর্থবহ একটি মহান দিবস। আত্মত্যাগ, সহমর্মিতা আর ভালোবাসায় ভরপুর এক স্বর্গীয় পরশ। যা পাপ পঙ্কিল সমাজ থেকে স্বার্থপরতার মূলোচ্ছেদ ঘটিয়ে শান্তিময় সমাজ ও দেশ গড়তে উৎসাহ প্রদান করে। প্রতি বছর ঈদ আসে ধনী-দরিদ্রের আকাশ-পতাল প্রভেদ দূরীভূত করতে সাম্য ও অধিকারের মহান শিক্ষা নিয়ে। ঈদ-উল্ ফিতরের প্রাক্কালে এক মাস রোজা রাখার বিধান দিয়ে ইসলাম তার অনুসারীদের এই মহান শিক্ষাই দেয় অনাহারে থাকা ক্ষুধার যন্ত্রণা কত বেদনার; কত নিস্পৃহ।
কিন্তু এই রোজা বা ঈদ থেকে আমরা কতটুকু শিক্ষা নিজেদের চরিত্রে লালন করতে পারি এটাই ভাবনার বিষয়। আমরা কি পেরেছি অন্নহীন-বস্ত্রহীন মানুষের দুঃখ বুঝে তাদের মুখে খাবার কিংবা শরীরে বস্ত্র তুলে দিতে? আজও অনাহারে অর্ধাহারে অগণিত মানুষ হাত পাতছে অন্যের দ্বারে।
ঈদের ছুটিতে শহরের লাখ লাখ মানুষ পাড়ি জমায় গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু বাড়ী যাবার পূর্বে ফুতপাতে যে হত দরিদ্র মানুষকে অন্ন-বস্ত্রহীন দেখেছিল তার খবর কে রাখে। একবারও কি ঈদ আয়োজনের অর্থ থেকে তাদের জন্য হয়েছে কোন বরাদ্ধ?
নির্বাচন এলে প্রার্থীদের কত অঙ্গীকার! ঈদের ব্যানার ফেস্টুনে সে দৃশ্য কম নয়। কিন্তু সে অঙ্গীকার পূরণে বাস্তবতা কতটুকু? শিল্পপতি, ধনবান, রাজনীতিবদদের কেউ কেউ বিতরণ করেন যাকাতের শাড়ি কিংবা লুঙ্গি। আর তা আনতে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হয়ে প্রাণ হারানোর নির্মম ঘটনা শুনিনি এমন নয়। যাকাত গরিবের প্রতি ধনীর করুণা নয় বরং ধনীর সম্পদে গরিবের অধিকার। বাংলাদেশ দারিদ্র্য প্রধান দেশ। তারপরেও এদেশের কিছু কিছু বিত্তবানদের বিদেশী ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বাদ দিলাম সে কথা। শুধুমাত্র এ দেশের ব্যাংকে যে পরিমান টাকা জমা আছে তা থেকে যদি যাকাত প্রদান করা হয় তাহলে এক বছরের যাকাতের অর্থ দিয়ে এ দেশের হত দরিদ্র মানুষেরা পাঁচ বছর চলতে পারবে সুতরাং ৮৯.৭% মুসলমানের এ দেশে যাকাতের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ কাজ থেকে আমরা আছি অনেক দূরে।
ঈদ যে ভ্রাতৃতের শিক্ষা দেয় তা আমরা নিজেদের জীবনে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেবেছি? পবিত্র করআনের ভাষ্য “ইন্নামাল মু’মিনুনা ইখওয়া-নিশ্চয়ই মুমিন মুসলমানেরা ভ্রাতৃ সম্পর্কীয়।” হাদিস শরিফে বলা হয়েছে মুসলমানেরা একটি দেহের ন্যায়।’ শরীরের একটি অংশ কাটলে যেমন সমগ্র শরীরে ব্যথা অনুভূত হয় তেমনি পৃথিবীর কোন প্রান্তে একজন মুসলমান নির্যাতিত হলে কিংবা কষ্ট পেলে গোটা মুসলিম জাতি তার পাশে এসে দাড়াবে। তাহলে, আরকানের রোহিঙ্গা মুসলমানরা কি আমাদের ভাই নয়? যদি তাই হতো তবে অথৈ সমুদ্র মাঝে অজানা পথে আমরা তাদের ছেড়ে দিতাম! আমরা তাদেরকে বলতাম ঠাঁই হবে না এদেশের বুকে! অবশ্যই না। বরং আমাদের মুখ থেকেই বেরিয়ে যেত- “আয় ভাই আমাদের বুকে, থাক আমাদের সাথে”
আজ পৃথিবীতে অর্ধশত মুসলিম দেশ রয়েছে। রয়েছে প্রায় দুইশতকোটি মুসলমান। আছে মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি। প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, কোথায় সেই ওআইসি? তারা কি দায়িত্ব মুক্ত মিয়ানমার, ইরাক, সিরিয়া, মিশরে মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো থেকে!
ঈদের শিক্ষা নৈতিকতার অবক্ষয় নয়। রমজানের রোজা আমাদেরকে শিখিয়েছিলো  কুপ্রবৃত্তি পরিহার করে নৈতিক পদস্খলন থেকে দূরে থাকতে, খোদাভীতির চেতনা বাস্তব চরিত্রে লালন করতে। আমরা কি পেরেছি? তাহলে কেন ঘটছে নারীর শীলতাহানী ? এক সময় প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ জাতীয় ঘটনার অবতারণায় আমরা শিউরে উঠতাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ সেই ঘটনাগুলোকেও যেন হারাতে বসেছি। চলছে শয়তানি, নোংড়ামি, আর বদরামির প্রতিযোগিতা। মাইক্রোতে, বাসে, ট্রাকে এমনকি নৌকায়ও ঘটছে এমন ঘটনা। জলপথ আর স্থলপথ শেষ; এখন অবশিষ্ট শুধু আকাশপথ। হতভাগ্য লম্পটগুলোর হাত থেকে জানিনা সে পথটিও রক্ষা পাবে কি না! অথচ ইতিহাস বলে, ঈদ ও রোজার প্রকৃত শিক্ষা মুসলমানেরা যখন ধারণ করেছিল তখন উন্মুক্ত হয়ে কোন নারী হেটে গেলেও কেউ তার দিকে ফিরে তাকাতো না। দল-মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জীবনে নেমে এসেছিল শান্তির ছায়া। সুখে-দুঃখে, জীবনে-মরনে এক সাথে ছিল তাদের প্রতিটি কাজ।
হায়! আজ আমরা কোন পথে?
ঈদের জামাতে কী চমৎকার দৃশ্য! একসাথে দাঁড়ানো, একসাথে বাসা, একসাথে সিজদা আর কোলাকুলি। যা আমাদের শিক্ষা দেয় শৃঙ্খলাপূর্ণ শান্তিময় সমাজ গঠনে। কিন্তু পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র আমাদের ভূমিগুলো গোলযোগে ভরপুর। প্রতি মূহুর্তে ঘটছে রক্তক্ষয়। কখনও শিয়া-ছুন্নির দ্বন্দ্ব, কখনো রাজনৈতিক সংঘাত। চলছে দুর্বলদের ওপর সবলদের অত্যাচার। ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে আমরা অনেক দূরে। তাইতো আজ আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে মানবতা। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে “তোমরা পরস্পর সংঘবদ্ধ হয়ে আল্লাহর রজ্জুকে আকড়ে ধরো এবং বিচ্ছিন্ন থেকো না।”
(সূরা আলে ইমরান-১০৩)
নবী করিম (স) বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেছিলেন, “আমি তোমাদের নিকট রেখে যাচ্ছি দুটি নির্দেশনামা, তোমরা কখনও পথভ্রষ্ট হবে না যদি এই দুটো জিনিসকে মেনে চলতে পার। এক-আল্লাহর কিতাব কুরআন আর দুই-আমার সুন্নাহ-রীতি পদ্ধতি।”
জানিনা কবে শুভবোধদয় হবে বিশ্ব মুসলিমের। ঈদের শিক্ষা আকড়ে ধরার মাধ্যমে ফিরে আসবে মানবতা। আরকানে রোহিঙ্গাদের জীবনে আসবে সোনালী দিন আর বিশ্ব জুড়ে বন্ধ হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন।
সমাগত ঈদে এই প্রত্যাশা রেখে শেষ করেছি- ঈদ-উল-ফিতর জয় হোক মানবতার।
লেখক ঃ ধর্মীয় গবেষক, জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত আলোচক ও সহকারী সম্পাদক, মানবাধিকার খবর



  
  সর্বশেষ
কচুয়ায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও গাছের চারা বিতরণ প্রতিনিধি: রাকিব হোসাইন , কচুয়া (বাগেরহাট)
রামগতি পৌরসভার ১৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
কুড়িগ্রামে এনসিপি`র `দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা`
মতলব উত্তরের দক্ষিণ টরকী একাদশ ক্লাবের উদ্যোগে ফুটবল টূর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308