শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক   * কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান   * ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত   * মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি   * দিশেহারা সুগন্ধা দাশের পাশে দাঁড়াল চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসন   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ;   * রশিদ মিয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান ;   * কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন;   * বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলো মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য  

   রাজনীতি
দুর্ধর্ষ জঙ্গি মারজান সাদ্দাম নিহত
  Date : 07-01-2017

 


     

 

রাজধানীর গুলশানে জঙ্গি হামলার ছয় মাস পর ওই ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশক নুরুল ইসলাম মারজান পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, নব্য জেএমবির অন্যতম সংগঠক মারজানের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে ওই জঙ্গি সংগঠনের উত্তরাঞ্চলের কমান্ডার সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল।

গত বৃহস্পতিবার শেষরাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের রায়েরবাজার এলাকায় ওই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বিদেশিদের হত্যা করার ছবি মারজানের মাধ্যমে বাইরে প্রচার করা হয়েছিল। তার গতিবিধি সম্পর্কে গোপনে তথ্য পেয়ে চেকপোস্টে তল্লাশি চালাতে গেলে সিটিটিসি ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। এতে মারজান ও সাদ্দাম নিহত হলেও তাদের আরেক সহযোগী পালিয়ে যায়। গোয়েন্দা পুলিশের মতে, সাদ্দাম রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাসহ ১০টি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি।

 

সিটিটিসি ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিবিরোধী ধারাবাহিক অভিযানে তাঁরা জানতে পারেন যে মারজান রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে নতুন হামলার ছক কষছে। গোপন সূত্রে তার গতিবিধির খবর পেয়ে তল্লাশি শুরু করলে দুই সহযোগীসহ মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় মারজান পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত হলেও একজন পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বোমা ও অস্ত্রসহ কিছু আলামত জব্দ করেছে। এর সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। তবে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। এদিকে দুই জঙ্গির লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পড়ে আছে। গতকাল পর্যন্ত তাদের কোনো স্বজন সেখানে যায়নি। আজ শনিবার দুজনের ময়নাতদন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।

গত বছরের ১ জুলাই গুলশানে হামলার পর তদন্তে নেমেই গোয়েন্দা পুলিশ ওই ঘটনায় মারজানের সংশ্লিষ্টতাসহ তার সম্পর্কে নানা তথ্য পায়। তখন মারজানের নামও প্রকাশ করা হয়। পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, মারজান একসময় ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সাথি। পরে সে নব্য জেএমবির শীর্ষস্থানীয় কমান্ডারে পরিণত হয়। নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ মারজানই গুলশানে হামলার স্থানটি নির্বাচন করেছিল। পাঁচ হামলাকারী হলি আর্টিজান বেকারি থেকে মারজানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। বিদেশিদের হত্যার ছবি প্রচার করেছিল মারজান। হামলার পর হামলাকারীদের ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে বার্তাও পাঠিয়েছিল সে। তাকে নব্য জেএমবির আইটি বিশেষজ্ঞও বলা হতো।

তামিম ও মারজানকে ধরার ধারাবাহিক অভিযানে গত বছরই নিহত হয়েছে তামিমসহ ৩৬ জঙ্গি। তবে মারজানের হদিস মিলছিল না। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলে ধর্মযাজক, মন্দিরের পুরোহিত, বিদেশি হত্যাসহ কয়েকটি ঘটনায় সাদ্দাম ছিল মূল পরিকল্পনাকারী। শীর্ষ পর্যায়ের এই দুই জঙ্গি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও ডিএমপি বা সিটিটিসি ইউনিটের কেউ বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি। এর আগে প্রতিটি অভিযানের পরই সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

তবে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। নিহতদের একজন মারজান, যাকে গুলশান হামলার পর থেকে পুলিশ খুঁজছিল। আর সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল ছিল উত্তরাঞ্চলে জেএমবির অন্যতম সংগঠক। রংপুরে কুনিও হোশি হত্যাসহ কয়েকটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। ’

বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে গতকাল সকালে রাজধানীতে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ওই সময় তিনি বলেন, ‘মারজান ও সাদ্দামকে অনেক দিন ধরে খোঁজ করা হচ্ছিল। দুজনই ধরার সময় নিহত হয়। কোনো জঙ্গিই রেহাই পাবে না। মুসাও বাদ যাবে না। তারা শিগগিরই আমাদের হাতে ধরা পড়বে। বাংলাদেশে পালিয়ে থাকার কোনো অবস্থান তাদের থাকবে না। ’ নিহত দুই জঙ্গির বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে যেসব কিলিং হয়েছে এর সঙ্গে সাদ্দাম জড়িত ছিল। মারজান হলো পরিকল্পনাকারীদের একজন। সে একটু উঁচু পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব দিত। দুজন নিহত হওয়ার পর তারা অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব কিছুই আমরা কন্ট্রোল করে ফেলেছি, এটি আমি বলব না। আমি বলব, আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা জঙ্গি, যারা সন্ত্রাসী তারা কোনো স্থানে কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছে না। কাজেই হয় তারা আমাদের কাছে একের পর এক আত্মসমর্পণ করছে, নতুবা বন্দুকযদ্ধে নিহত বা আমাদের কাছে ধরা পড়ছে। ’

যেভাবে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ :

সিটিটিসি ইউনিটের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ধারাবাহিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের কাছে তথ্য আসে যে মারজান রাজধানীতেই অবস্থান করছে। মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে নতুন হামলার ছক কষছে সহযোগীদের নিয়ে। এরই মধ্যে তার দাড়ি বড় হয়ে গেছে। ফলে তাকে শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন হবে বলেও মনে করছিলেন কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন সূত্রে সবশেষে খবর মেলে, সহযোগীদের নিয়ে মোহাম্মদ বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে যাবে মারজান। এমন খবর  পেয়ে ওই এলাকায় তল্লাশি শুরু করেন সিটিটিসি ইউনিটের সদস্যরা।

জানতে চাইলে সিটিটিসি ইউনিটের উপকমিশনার মহিবুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের একটি দল রাতে বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি চেকপোস্ট বসায়। রাত ৩টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে তারা সেখানে আসে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গ্রেনেড ছোড়ে এবং গুলি করে। পরে পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে দুজন আহত হয়। পরে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। ’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, রাত ৩টা ৪০ মিনিটে মোহাম্মদপুর থানার একটি গাড়িতে করে একজন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ দুজনের লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। নিহত একজনের বয়স আনুমানিক ২৮, আরেকজনের ৩২ বছরের মতো। তাদের মাথা ও বুকে গুলি লেগেছে। গতকাল তাদের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। এখনো সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত হয়নি। নিহত ব্যক্তিদের কোনো স্বজনও আসেনি।

গতকাল বিকেলে মোহাম্মদপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার ও ওসি জামালউদ্দিন মীর ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানেন না বলে দাবি করেন। তাঁরা জানান, তখনো থানায় কোনো মামলা বা জিডি হয়নি। এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তবে মিডিয়া সেন্টারে যোগাযোগ করা হলেও গত রাত পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি। ডিএমপির নিউজ পোর্টালেও এ নিয়ে কোনো খবর প্রকাশ করা হয়নি।

জানতে চাইলে সিটিটিসি ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ছবির সঙ্গে মিলিয়ে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি, নিহতরা মারজান ও সাদ্দাম। পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য অন্য জঙ্গিদের মতোই তাদের ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা হবে। স্বজনরাও শনাক্ত করতে পারবে। আপাতত তাদের লাশ মর্গে রাখা হবে। ’

ডিসি মহিবুল ইসলাম বলেন, ‘মারজান কোথায় ছিল তা এখনো আমরা নিশ্চিত না। তবে আমাদের কাছে খবর ছিল মারজান মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে যাবে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা ওখানে অবস্থান নিই। সাদ্দাম কোথায় ছিল তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। ’

গুলশানে হামলার স্থান ঠিক করেছিল মারজান :

গুলশানে হামলার এক মাস ১২ দিন পরই তদন্তে মারজানের নাম উঠে আসে। গত বছরের ২৬ জুলাই মিরপুরের কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হওয়ার পর বেশ কিছু আলামত জব্দ করে সিটিটিসি ইউনিট। মূলত সেখান থেকে জব্দ নথি, ছবি এবং আটক জঙ্গি রিগ্যানের দেওয়া তথ্যে মারজান সম্পর্কে জানতে পারেন কর্মকর্তারা। গত বছরের ১২ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে মারজানকে গুলশান হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে বর্ণনা করে সিটিটিসি ইউনিটপ্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ এই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেই হলি আর্টিজানের ভেতর থেকে রক্তাক্ত লাশের ছবি বাইরে পাঠানো হয়েছিল। সিটিটিসি ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলার আগে অন্য দুটি স্থানে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করেছিল নব্য জেএমবির সদস্যরা। সেই জায়গাগুলো রেকিও করা হয়েছিল। তবে মারজান একদিন হলি আর্টিজান বেকারি ঘুরে গিয়ে জেএমবির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তামিমকে জানায়, হামলার জন্য সে হলি আর্টিজানকে নির্বাচন করেছে।

গত বছরের আগস্টের শুরুতে সিটিটিসি ইউনিটের মোবাইল অ্যাপস ‘হ্যালো সিটি’তে ছবি প্রকাশ করার পর মারজানের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়। তদন্তকারীরা একে একে তুলে ধরেন জঙ্গিপনায় মারজানের ভয়াবহ রূপ। তাঁরা জানান, বাংলা ও ইংরেজি ছাড়াও আরবি ও ফারসি ভাষায় মারজান খুব দক্ষ। গুলশানে হামলার স্থান নির্বাচন করে পুরো অপারেশনের নির্দেশনাকারী হিসেবে কাজ করে মারজান। পাঁচ হামলাকারী ভেতরের পরিস্থিতি জানিয়ে তার কাছে ছবি ও তথ্য পাঠায়। নৃশংস ওই হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যার তথ্য পেয়ে মারজান ঘটনাস্থলে থাকা জঙ্গিদের অভিনন্দন বার্তা পাঠায়। বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে সেই ছবি ও তথ্য হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীর কাছেও পাঠায়। কয়েকটি হাত ঘুরে হামলার ছবি ও তথ্য চলে যায় দেশের বাইরে।

গত বছরের ২৭ আগস্ট তামিম চৌধুরীসহ তিনজন নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় পুলিশের অভিযানে নিহত হয়। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরে আরেক জঙ্গি আস্তানা থেকে তিন জঙ্গির স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে মারজানের স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তিও ছিল বলে জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। পরে কারাহেফাজতে সন্তান প্রসব করেন প্রিয়তি। এর মধ্যে পাবনায় মারজানের বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাঁর ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না পুলিশ।

শিবিরের সাথি থেকে জঙ্গি কমান্ডার :

সিটিটিসি ইউনিট সূত্র মতে, মারজানের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আফুরিয়ায়। মো. নাজিম উদ্দিন ও সালমা খাতুনের ১০ সন্তানের মধ্যে মারজান চতুর্থ। গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে সে পাবনা শহরের পুরনো বাঁশবাজার আহলে হাদিস কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি পাবনা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে জিপিএ ৫ পেয়ে দাখিল ও আলিম পাস করে। ২০১৪ সালে সে ভর্তি হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, মারজান ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রাখে। আর ভর্তি হয়নি। ওই বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে পুলিশের তল্লাশিতে উদ্ধার হয় কয়েকটি ল্যাপটপ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নথিপত্র। তাতে দেখা যায়, মারজান ছিল শিবিরের সাথি।   

মারজানের ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর তা শনাক্ত করে তার বাবা তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ছেলের বিয়ের খবর পেলেও আট মাস ধরে পরিবারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। জানা যায়, মারজান বেশির ভাগ সময় চলাফেরা করত নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সঙ্গে। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সময় দুজন মিরপুরে এক জঙ্গি আস্তানায় অবস্থান করছিল। সেখানে বসেই তারা যোগাযোগ রাখে হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের সঙ্গে।

উত্তরাঞ্চলে হত্যার নেতৃত্বে ছিল সাদ্দাম :

২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আলুটারী গ্রামে জাপানের নাগরিক কুনিও হোশিকে হত্যার মাধ্যমে কিলিং মিশন শুরু করেছিল নব্য জেএমবি। ওই হত্যাকাণ্ডের হোতা হিসেবে ধরা হয় সাদ্দামকে। হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিরা যে অস্ত্র ব্যবহার করত সেগুলো সাদ্দামের হেফাজতে রাখা হতো বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। কুনিও হত্যা মামলায় দায়ের করা চার্জশিটেও আসামি ছিল সাদ্দাম। সাদ্দামকে বলা হয় নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার। বিশেষ করে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে নব্য জেএমবি যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তার বেশির ভাগের পরিকল্পনাকারী ছিল সে। সাদ্দাম জঙ্গিদের কাছে রাহুল, চঞ্চল, সবুজ, রবিসহ বেশ কয়েকটি নামে পরিচিত ছিল। জাপানি হত্যা মামলার চার্জশিটে তার চারটি নাম দেওয়া হয়। চার্জশিট অনুযায়ী, সাদ্দামের বাবার নাম আলম মিয়া ওরফে জোলা ওরফে তজু আলম এবং মায়ের নাম সুফিয়া বেগম। বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার চরবিদ্যানন্দ গ্রামে।

সিটিটিসি ইউনিট সূত্র মতে, হত্যা ও হামলার ১০টি মামলার আসামি ছিল সাদ্দাম। ওই সব মামলার মধ্যে আছে রংপুরের কাউনিয়ায় মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা, পঞ্চগড়ের মঠ অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে হত্যা, কুড়িগ্রামে ধর্মান্তরিত মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীকে হত্যা এবং বাহাই নেতা রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা। এ ছাড়া গাইবান্ধার চিকিৎসক দীপ্তি ও ব্যবসায়ী তরুণ দত্ত হত্যা, নীলফামারীতে মাজারের খাদেম এবং দিনাজপুরে এক চিকিৎসক হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি সে।

- See more at: http://bangla.jnews.com.bd/details/article/207897/%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7-%E0%A6%9C%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%A4#sthash.M6Rm0d4z.dpuf



  
  সর্বশেষ
খুলনার কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি`র মৃত্যুতে জানিপপ চেয়ারম্যানের শোক
কক্সবাজার জেলা পরিষদের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফের যোগদান
৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
মাদক কারবারে ককস বাজারের সাবেক এমপি বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308