শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন   * চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;   * ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;   * গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অগ্নিকাণ্ড   * কক্সবাজারের টেকনাফে ধরা পড়ল ৪০০ কেজি ওজনের তলোয়ার মাছ   * মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর   * ট্রাকচাপায় সড়কে ঝড়ল অটোরিকশা চালকের প্রাণ   * ৭নং ওয়ার্ডে এনজিও সংস্থা প্রত্যাশী এর সেমিনার অনুষ্ঠিত ;   * কুড়িগ্রামে অযৌক্তিক রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন   * কুড়িগ্রামে তীব্র গরমে অচেতন হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু  

   অধিকারের প্রতিবেদন
দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না- ড. মিজানুর রহমান
  Date : 01-05-2016

ড. মিজানুর রহমান, চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে। তার দায়িত্ব পালনের সময়কালে তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে আলোচনা-সমালোচনায় এসেছেন বহুবার। বিশেষ করে আইনশৃংখলা বাহিনীর অন্যায় অত্যাচার, হত্যা ও নির্যাতনের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তিনি সর্বদা প্রতিবাদ মুখর। গত ১০ সেপ্টেম্বর মাসিক মানবাধিকার খবর পত্রিকার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ে তার মুখোমুখী হয় মানবাধিকার খবরের টিম। পাঠকের উদ্দেশ্যে তার চম্বুকাংশ তুলে ধরা হলো-

মানবাধিকার খবর : মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কি কি করা উচিত বলে আপনি মনে করেন ?

 

ড. মিজানুর রহমান : আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাবে, সামাজিক ভাবে, পারিবারিক ভাবে, সর্বোপরি সকলের দায়িত্ব রয়েছে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আমাদের পারিবারিকভাবে সকলের প্রতি সকলের যে মর্যাদা, মানুষকে ভালোবাসবার যে শিক্ষা, আমরা সেটা পরিবারের মতো সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় থেকে অর্জন করেছি। সমাজের কাছ থেকেও আমাদের নানাবিধ মূল্যবোধ জাগিয়ে রাখার তথা মনুষত্ব্যবোধ জাগিয়ে রাখার শিক্ষা পেয়ে থাকি। আর এ সবগুলো মিলেই হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষার মুল্যবোধ। তবে মানবাধিকার রক্ষা করা এবং প্রতিষ্ঠা করার মূল দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের। সুতরাং মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার না থাকলে একটি রাষ্ট্রের কি পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে তার লাভ-ক্ষতির সাম্যক ধারনা দিতে পারে রাষ্ট্র এবং গণমাধ্যম ও স্বাধীন বিচার বিভাগ। এখানে কিন্তু সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সবারই ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছি।

 

মানবাধিকার খবর : বর্তমান সরকার মানবাধিকার রক্ষায় কতখানি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলে আপনি মনে করেন?

ড. মিজানুর রহমান : বর্তমান সরকার যা কিছু করছে তা সবই খারাপ করছে এটা বলা যেমন সত্যের অপলাপ হবে, তেমনি যা কিছু করছে সবই সঠিক করছে সেটা বলাও প্রাসঙ্গিক হবে না। তবে এই সরকারের সময়ে সামাজিক অর্থনৈতিক পরিধি মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে। এর মাধ্যমে যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উন্নয়ন হচ্ছে তার মাধ্যমে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার একটা দিক উন্মোচিত হয়েছে। সে দিক থেকে বিবেচনা করলে তারা (সরকার) দারুণ রকমের প্রশংসনীয়। ঠিক তেমনিভাবে নাগরিক অধিকারের কথা যদি বলি, তাহলে বাংলাদেশে কিন্তু নাগরিক অধিকার অনেক খানি সংকোচিত হয়ে গেছে। আমাদের দেশের আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করছে না। বরং সাধারণ নাগরিকগণ তাদের থেকে অনেক সময় নিগৃহীত হচ্ছে। হয়রানির স্বীকার হচ্ছে এবং এই ক্ষেত্রে নিগৃহ ও হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য রাষ্ট্র যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কিন্তু রাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এখানে সরকারের তথা রাষ্ট্রের আরো যথাযথ ভূমিকা পালনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি।

 

মানবাধিকার খবর : আইনশৃংখলা বাহিনীর হয়রানি, নির্যাতন ও নিগৃহের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কমিশন বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশংসনীয় হয়েছে। কিন্তু ৫ মে হেফাজত ইসলাম কেন্দ্রিক শাপলাচত্ত্বর ট্রাজেডি নিয়ে নিরবতায় কমিশনের ভূমিকাকে প্রশ্ন বিদ্ধ বলে সমালোচনা আছে। এ নিয়ে কমিশনের বক্তব্য কি?

ড. মিজানুর রহমান : এখানে কিছু ভুল করা হয়ে থাকে। কমিশন কিন্তু কখনো নিরবতা বা নিরব ভূমিকা পালন করেনি। তবে হেফাজতে ইসলামের ৫ মের ঘটনায় আমরা মনে করেছি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিধান করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং কোন সম্প্রদায় বা কোন গোষ্ঠি যদি কোন প্রকার ধ্বংসাত্বক কার্যক্রমে লিপ্ত হয় তবে সে কর্মকা- থেকে বারণ করা বা নিবারণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময় রাষ্ট্রকে শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। এখানে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে যে গোষ্ঠির বা শক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করা হয় তা যেন সামঞ্জস্য পূর্ণ হয়। অযৌক্তিক শক্তি যেনো প্রয়োগ করা না হয়। সে ব্যাপারে আমরা তখনও সতর্ক করে দিয়েছি। সেই সঙ্গে আমরা নীতিগতভাবে যে কথাটি বলেছি সেটি হলো ৫ মের ঘটনার পরে অনেক সংস্থার পক্ষ থেকে অনেক কিছু অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে। আমরা সেগুলোর প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু আবার যারা এ ধরনের কর্মকা-ে লিপ্ত তাদের রাষ্ট্র যখন আটক করলো, সে আটক করার প্রক্রিয়াটিও আইনানুগ হয়নি বলে তাৎক্ষণিক ভাবে তখনও আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। সুতরাং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কখনো নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেনি। সংগত কারণে এ বিষয়ে সমালোচকদের সাথে একমত হতে পারছি না। আমি মনে করি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সবসময় মানবাধিক লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সরব ছিলো এবং আছে। তবে হয় তো ৫ মের ঘটনায় যতটা সরব থাকার প্রয়োজন ছিলো ততটা হয়নি, তা হতে পারে।

মানবাধিকার খবর : গণমাধ্যম প্রসঙ্গে বলছিলেন। সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সোচ্চার হয়েছেন পেশাজীবিরা। আপনার অবস্থান কি?

ড. মিজানুর রহমান : মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। এ অধিকার রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে। এ অধিকার কেউ হরণ করতে পারে না। এমন একটি মৌলিক অধিকার, যে অধিকারের সাথে অন্য অনেকগুলো অধিকার জড়িত। সুতরাং অন্যতম প্রধান একটি মৌলিক অধিকার হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। তাই সে জায়গাটি উন্মুক্ত রাখতে হবে। যখন আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে, সংকীর্ণ করা হচ্ছে তখন এটা যেমন একটি শঙ্কা। তেমনি এটি নিয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা করা উচিত। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে মনগড়া বিভ্রান্তিকর হলুদ সাংবাদিকতার নামে যা করে থাকেন তা কিন্তু সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে না, সাংবাদিকতার দায়বদ্ধতার মধ্যে আসে না। সুতরাং এসব থেকে কি ভাবে আমরা মুক্তি পেতে পারি সে বিষয়েও আমাদের চিন্তা করতে হবে। সে জন্য যারা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সাংবাদিকতায় জড়িত তাদের নিবৃত্ত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে এটি করতে গিয়ে রাষ্ট্র যেনো কখনো অযাচিতভাবে তার হস্তক্ষেপ না করে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।

 

মানবাধিকার খবর : পৃথিবীর দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক স্বীমান্ত হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের। সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা, অপহরণ, গুম ও নির্যাতন প্রতিনিয়ত ঘটেই চলছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি-না এ সম্পর্কে আপনার মতামত কি ?

ড. মিজানুর রহমান : ভারত বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম প্রতিবেশি রাষ্ট্র। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি এবং অবনতি হতে পারে। নানা চড়াই উৎরাই থাকতেই পারে। কিন্তু সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা, নির্যাতন কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে শক্তভাবে সজাগ থাকতে হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এসব বিষয়ে জোড়ালো প্রতিবাদ করে আসছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যন্ত আমরা প্রতিবাদে উচ্চ কন্ঠ থাকি। আমি পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাতে পারি, গত মাসে ভারতে মানবাধিকার বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সদস্যকে আমি ব্যক্তিগতভাবেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছি সীমান্তে হত্যার বিষয়ে। তারা আমাকে কথা দিয়েছেন তারাও এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখবেন।

 

মানবাধিকার খবর : বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার অভিমত কি ?

ড. মিজানুর রহমান : দেখুন একটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, তাহলে সে দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বর্তমানে দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে কিন্তু প্রতীয়মান হচ্ছে না। খবরের কাগজ খুললেই যেভাবে আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক হত্যা, নির্যাতন ও হয়রানির সংবাদ নজরে পড়ে এবং তারা তাদের পোশাক ব্যবহার করে যে ভাবে মানবাধিকার লংঙ্ঘনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে যা দেখি তাতে দেখতে পাই ভঙ্গুর আইন শৃংখলাবাহিনীর যে কর্মকান্ড এসব মানবাধিকারের জন্য ভীষণ রকমের হুমকি সরূপ। এ ব্যাপারে কিন্তু রাষ্ট্রকে পদক্ষেপ নিতেই হবে।

 

মানবাধিকার খবর :  আপনার এই মহান গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব মানবাধিকার রক্ষায় কতখানি ভূমিকা রাখছে ?

ড. মিজানুর রহমান : দেখুন মানবাধিকার রক্ষার কাজ হচ্ছে এমন একটি বিষয় যে, এখানে কখনোই পরিপূর্ণ তুষ্টি বা দায়িত্ব পালনে সফলতার দাবী করা যাবে না। কারণ; এতো বেশি এবং বিভিন্ন রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। দরিদ্র এবং ১৬ কোটি মানুষের একটি দেশ। যেখানে গণতন্ত্র এখনো পূর্ণ বিকশিত হতে পারে নি। যেখানে আমাদের বিচার বিভাগের পূর্ণতা রয়েছে বলে আমি মনে করি না। সেখানে প্রতিটি পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা থেকে যায়। তেমনি পরিস্থিতিতে অনেক ঘটনা আমাদের নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে। হয়তো কখনো আমরা সঠিক সময়ে তা জানতে পারছি না। নয়তো কখনো কখনো তা আড়ালেই থেকে যায়। আবার যেগুলো পাচ্ছি সে গুলোর সমাধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে  উদ্যোগ নিচ্ছি। তবুও আমি বলবো সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতিকার করতে পারছি না। এই যে এক ধরনের অপ্রাপ্তি, অসন্তুষ্টি এটা কিন্তু এক ধরনের অপ্রাপ্তি হয়ে সব সময় কাজ করে। এটা যদিও খুব স্বাভাবিক তবুও আমার বিশ্বাস সাধারণ মানুষ যদি এগিয়ে আসে, মানবাধিকার কমিশনের পাশে যদি দাঁড়ায়, তাহলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যে একটা শক্ত অবস্থান আছে সেখানে এটি দাঁড়াতে পারবে। পাশাপাশি আরো অধিক সংখ্যক মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরো সঠিক ও সফল হতে পারবে বলে আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি।

 

মানবাধিকার খবর : আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি ?

ড. মিজানুর রহমান : দেখুন আন্তর্জাতিক অঙ্গণে কিন্তু মানবাধিকার পরিস্থিতি একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে আছে। গাজায় দেখুন, সেখানে ইসরাইল যে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। দিনের পর দিন যে পরিমান মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে যারা মানবাধিকারের বিষয়ে নীতিবাক্য আওড়িয়ে থাকেন সেসব পশ্চিমা দেশগুলোর নিস্কৃয়তা এবং তাদের একপেষে মনোভাব ফিলিস্তিন নাগরিকদের মানবাধিকার হরণ এবং কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সাথে সাথে আবার বিভিন্ন জায়গায় দেখছি যে একটি উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীও কিন্তু মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তারাও কিন্তু ধর্মের নামে একদিকে হত্যা করছে। আরেক দিকে নির্যাতনের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ করছে। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবাধিকার নিয়ে স্বস্তিতে নেই।

 

মানবাধিকার খবর : মানবাধিকারের নামে কিছু কিছু সংগঠন প্রতারণাসহ নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ আছে কি?

ড. মিজানুর রহমান : হ্যাঁ, আছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। লিখিত ভাবে অবগত করেছি এবং ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি। এক শ্রেণীর মানুষ মানবাধিকার কে এক ধরনের ব্যবসায়ে পরিনত করে প্রতারণা করে চলেছে। তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। অতএব আমরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ কামনা করছি। কারণ; মানবাধিকার নিয়ে প্রতারণা করাও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ ধরনের প্রতারকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

 

মানবাধিকার খবর : আপনি আইনের ছাত্র এবং শিক্ষকও। বিচারকদের অভিসংশন নিয়ে সংসদের ভিতরে বাইরে যে বিতর্ক চলছে এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?

ড. মিজানুর রহমান : বিভিন্ন ভাবে বিচার বিভাগ ও বিচারকগণ প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়েন। তবে বিচারকদের অপসারণের পদ্ধতি নিয়ে সংসদের ভেতরে-বাইরে যৌক্তিক তর্ক হতে পারে। অনেক দেশে সংসদের মাধ্যমেই বিচারকদের অপসারণ করা হয়ে থাকে। আবার অনেক দেশে তা হয় না। আমাদের দেশের আইন বিভাগ এখনো পরিপূর্ণতা পায়নি। আমি দায় নিয়েই বলছি, আমাদের বিচার বিভাগ এখনো শক্ত মেরুদ-ের উপর দাঁড়ায় নি। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যেখানে কার্যকর কিছু হয় নি। সেখানে এ ব্যবস্থা কার্যকর হলে আমার ভীতু যে আদালত, ভীতু যে বিচারক সে অবস্থায় ন্যায় বিচার আরো দূরে সরে যাবে বলে মনে করছি। কারণ; এমতাবস্থায় এ ব্যবস্থা বিচারকদের আরো বিচলিত করবে।

 

মানবাধিকার খবর : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন এবং সরকারের ভূমিকা কতটুকু সহায়ক ?

ড. মিজানুর রহমান : আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যপারগুলোতে আমরা (কমিশন) সরাসরি তদন্ত করতে পারবো না। আইনে বাধা-নিষেধ আরোপ করেছে। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর বিরুদ্ধেই সিংহভাগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়ে থাকি। সেখানে যদি আমাদের তদন্ত করতে দেয়া না হয়, তাহলে আমরা কাজ করবো কোথায়? এভাবে আইনের মাধ্যমে আমাদের কর্মকে সংকোচিত করে রাখা হয়েছে। যথাযথ কাজে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। আইন থেকে এ বিষয়গুলো যদি সরিয়ে দেয়া হয় তাহলে কমিশনের কাজে আরো গতি আসবে। আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে।

 

মানবাধিকার খবর : বাংলাদেশ তথা এশিয়ার একমাত্র নিয়মিত প্রকাশিত মানবাধিকার বিষয়ক পত্রিকা মাসিক মানবাধিকার খবরের প্রকাশনা সর্ম্পকে আপনার অভিমত কি ?

ড. মিজানুর রহমান : মানবাধিকার খবরের সঙ্গে শুরু থেকেই আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। আমি ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত বর্ষপূর্তিসহ বেশকিছু অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছি। মানবাধিকার খবরে প্রাসঙ্গিক যে বিষয়গুলোকে নিয়ে সংখ্যাগুলো সাজানো হয় তা প্রশংসনীয়। আমি ও আমরা মানবাধিকার খবরের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। ভবিষ্যতে মানবাধিকার খবরের উত্তর উত্তর সাফল্য কামনা করছি।

 

মানবাধিকার খবর : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ড. মিজানুর রহমান : মানবাধিকার খবরের পাঠক এবং আপনাদেরও ধন্যবাদ।

 

আলোকচিত্রী : আব্দুল্লাহ আল জোহাইফা



  
  সর্বশেষ
বাল্যবিবাহের কারণে বাড়ছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু: জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চট্টগ্রামে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ বলী;
ঢাকা,চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান ;
গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অগ্নিকাণ্ড

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308