|
হাই কোর্টের রুল খালেদা জিয়ার সাজা কেন বৃদ্ধি নয় |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা কেন বৃদ্ধি করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। এদিকে ২৮ মার্চ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির না করায় শুনানীর তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয়। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়া অসুস্থ তা কর্তৃপক্ষ গোপন করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের এক আবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি সংক্রান্ত রুল জারি করে। চার সপ্তাহের মধ্যে আসামি খালেদা জিয়া এবং ঢাকার জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শুনানি করেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয় রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। এর আগে গত ২৫ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রিভিশন আবেদন দাখিল করে দুদক। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা দুদকের এ আবেদনকে সরকারের হস্তক্ষেপ বলে দাবি করছেন। এ বিষয়ে তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এখানে দুদকের রিভিশন করার কোনো সুযোগ নেই। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন ‘অনেকে বলছেন সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে দুদক এ আবেদন (রিভিশন) করেছে, এটা মোটেও ঠিক নয়। যখন আপিল বিভাগে জামিনের শুনানি হয়, তখনই আমরা আদালতকে বলেছি জাজমেন্টের (বিচারিক আদালতের রায়ের) এই সাজায় আমরা সন্তুষ্ট নয়। এটা অপর্যাপ্ত সাজা। তখন আদালত আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিল আমরা কিছু করেছি (সাজার বিরুদ্ধে দুদকের রিভিশন) কিনা। জবাবে আমরা আদালতকে বলেছিলাম, বিষয়টি দুদক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। দুদক পুরো জাজমেন্ট পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আবেদনটি করি।’খালেদাকে হাজির করা কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তিতর্কের শুনানি পিছিয়ে গেছে। খালেদার আইনজীবীদের আবেদনে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান নতুন দিন ধার্য করেন।খালেদা জিয়াকে আনা হবে, এ জন্য বিশেষ নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আদালতের বাইরের সড়কে মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ। এ সময় পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানকেও রাস্তায় দেখা যায়। আইনজীবী ও সাংবাদিকদের তল্লাশি করে আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেওয়া হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুল্লøাহ আবু সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে আজকে অসুস্থতার কারণে আনা হচ্ছে না বলে আমরা শুনতে পাচ্ছি।’ আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিচারককে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু কেন হাজির করা হয়নি তা বলতে পারছি না। কোনো কারণ আছে নিশ্চয়ই। আদালত চাইলে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করতে পারে।’ এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লøাহ মিয়া মামলায় জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখে ওই সময় পর্যন্ত তিনি জামিন দেন খালেদা জিয়াকে। খালেদার অসুস্থতা গোপনের অভিযোগ : কারাগারে থাকা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা গোপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে তার আইনজীবীরা বলছেন, চেয়ারপারসনকে নিয়ে আমরা চিন্তিত। তার সুচিকিৎসার প্রয়োজন। বকশীবাজারের বিশেষ আদালত থেকে বের হয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এসব কথা বলেন।আইনজীবী সানাউল্লøাহ মিয়া বলেন, ‘২৮ মার্চ মামলার তারিখ ধার্য ছিল। ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) আদালতে আনা হয়নি।’ আদালতের পরোয়ানার ফিরতি কাগজ (কাস্টডি পরোয়ানা) দেখেছেন বলে জানিয়ে সানাউল্লøাহ মিয়া বলেন, ‘আমরা দেখেছি খালেদা জিয়া অসুস্থ। যেহেতু তিনি অসুস্থ, আমরা খুবই চিন্তিত। কারণ আমরা জানতে পারছি না। উনারাও পরিষ্কার করে কিছুই বলেননি।’ সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, তিনি কী রোগে ভুগছেন, তিনি কেন এলেন না, সরকারের পক্ষ থেকে, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। শুধু লেখা আছে, খালেদা জিয়া জেলে অসুস্থ। এই মামলার আগামী তারিখ ধার্য করেছে ৫ এপ্রিল।আরেক আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাড়ে ৯টায় আদালতে এসেছি। দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ফোনালাপ করতে আমরা দেখলাম। তাদের মধ্যে আমরা বিভিন্ন দৌড়ঝাঁপ দেখেছি। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কী কারণে খালেদা জিয়াকে হাজির করা হচ্ছে না। অবশেষে আমরা যেটা দেখলাম, একটা পরোয়ানা জেলখানা থেকে এসেছে। সেখানে আমরা জানলাম, তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ।’
|
|
|
|
|