বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলছে সে দেশের সেনাবাহিনী ও স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি। বাংলাদেশ থেকেও শোনা যাচ্ছে সেই শব্দ। আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো কোনো এলাকায় ছুটে আসছে তাদের ফায়ারকৃত মর্টার শেল ও গোলাগুলি। এমন অবস্থায় আতংকে ও নির্ঘুম দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসরত বাসিন্দারা। এর মধ্যেও থেমে নেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক নিয়ে দ্বীপটিতে যাচ্ছে ১০-১২টি জাহাজ। তাও মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষে। গত ২৭ জানুয়ারি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির একপর্যায়ে ১৩টি মর্টার শেল ও ১টি বুলেট কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পতিত হয় বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। এতে স্থানীয় লোকজনদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়ে যায়। এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান সীমান্তের পরিস্থিতি সচক্ষে দেখার জন্য কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধীনস্থ উখিয়ার পালংখালী বিওপি এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা এবং টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধীনস্থ হোয়াইক্যং বিওপি ও তৎসংলগ্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন। তিনি বিজিবি সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু সীমান্তে উত্তেজনার পরেও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল থেমে নেই। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, মিয়ানমারের উত্তেজনা পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত পর্যটকবাহী জাহাজগুলো বন্ধ রাখা প্রয়োজন। কেননা টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া জাহাজ ঘাট হতে সেন্টমার্টিন নৌ রুটের দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার। ওই ৪২ কিলোমিটার নৌ রুট একেবারে মিয়ানমারের সীমান্তঘেঁষা। যেকোনো মুহূর্তে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ছোড়া বুলেট বা মর্টার শেল পর্যটকবাহী জাহাজের মধ্যে এসে পড়লে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যেহেতু গোলাগুলি চলছে সেহেতু পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মিয়ানমারে সংঘাত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা ভালো হবে বলে মনে করে।
মােঃ জানে আলম সাকী, চট্টগ্রাম।