সংগঠনের নতুন এই চেয়ারম্যানের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন চ্যানেল আই এর রাজু আলীম।
সাক্ষাতকারে নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে আবদুল হাই সরকার বলেন, কাজটা খুব কঠিন। এটি এমন একটি সংস্থা যা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখান থেকে সব ব্যাংক কন্ট্রোল করা হয়। এটা অনেক বড় দায়িত্ব। এটা করা একদমই সহজ না। মিডিয়াসহ সবাইকে নিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই।
তিনি বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে এই এসোসিয়েশনের কোন শক্ত সেক্রেটারিয়েট নাই। এটা শুনে আশ্চর্য হবেন যে, কোন সেক্রেটারি জেনারেল নাই। আছে একজন একাউন্টেন্ট, ২-৩ জন পিয়ন। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা এসোসিয়েশনকে অবশ্যই গোছানো হতে হয়। কীভাবে যে চলছে এটা। মানে পকেটে গেছে সব। অনেকে অনেক কিছু বলতে চাইলেও বলতে পারতেন না ভয়ে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে সবাইকে চুপ করে রাখা হত।
এখানে অনেক দায়িত্ব আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা গত ১৫-১৭ বছর ধরে ডেড একটা অর্গানাইজেশন। বলতে পারেন, এটা একটা টোল সংগ্রহের অর্গানাইজেশন ছিল। হাউজিং, দুর্যোগ বিভিন্ন নামে এখানে টাকা দেয়া হত। বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ২ কোটি থেকে ৯ কোটি টাকা পর্যন্তও দিয়েছি আমরা। উনিই (আগের চেয়ারম্যান) আমাদের ভাগ করে দিতেন কাকে কত টাকা দিতে হবে।
ব্যাংক লুটতরাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা ওপেন সিক্রেট। সবাই জানেন আপনারা। আমার বলার কিছু নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এরকম কিছু করার আর কোন সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। আর যারা তা করতো তারা ত দেশের বাইরে চলে গেছে। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংক দখল হলো। এটা তো একজন করেনি, গ্রুপ ছিল একটা। অনেকের নামই হয়ত সামনে আসেনি। চার পাঁচ বছর আগে ইসলামী ব্যাংকের কাছে সব থেকে বেশি টাকা ছিল। তা প্রায় সবই খালি করে নিয়ে গেছে। এই ব্যাংকেই মানুষ বেশি টাকা রাখত।
টাকা ফেরত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কতটা আসবে জানি না তবে কিছুটা তো আসবেই। অনেক দেশে কড়াকড়ি আছে। সুইচ ব্যাংকের টা হয়ত আনতে পারবে। বিভিন্ন এজেন্সি, ইন্টারপোলের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। সরকার টু করকার কথা বলে টাকা আনা যেতে পারে। টাকা ফেরত আনা কঠিন ব্যাপার। তবুও যদি সরকার আনতে পারে তাহলে আমি বলবো, ধন্যবাদ।
ঢাকা ব্যাংক নিয়ে তিনি বলেন, আমরা অ্যাগ্রেসিভ ব্যাংকিং করি না। আমাদের ভুলভ্রান্তি ছিল। তবে এখন নেই। আমি আসার পর কিছু হয়নি। আগে হতে পারে। ছোট খাট কিছু ভুল থাকতে পারে সিদ্ধান্তের কারণে তবে আমাদের উল্লেখযোগ্য কোন ভুল নেই। ইনশাআল্লাহ আমরা ট্রাকে আছি। আমরা একটু কনজারভেটিব।
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে তিনি বলেন, অর্থনীতিকে সঠিক পথে আনতে তারা যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, যেকোন পরিবর্তনে মসময়ের প্রয়োজন আছে। রাতারাতি কিছু টেকসই হয় না।
অর্থ উপদেষ্টা এবং গভর্নরের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারা অত্যন্ত ভালো মানুষ। তাদের পাওয়ার কিছু নাই। তারা দেয়ার চেষ্টা করবে। আমি মনে করি, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরে আমূল পরিবর্তন এসে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা সংস্কারে হাত দিয়েছি। পলিটিক্যাল গভার্মেন্টের হাতে রিফর্ম করা কঠিন। এখানে সবাই এক না। এই সরকারের চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই। তারা নিবেদিত প্রাণ। এরা দেয়ার জন্যই এখানে আসছে। এরা একটা সুন্দর রোডম্যাপ করে যেতে পারলে দেশের মঙ্গল হবে।
ট্যাগ: অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে