|
জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি বনাম সরকারের ভূমিকা |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
‘দিনে দিনে শুধু বাড়ছে দেনা, সুধিতে হইবে ঋণ’। সামনে এ আর একটা কেমন দিন? জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে কার জয় হলো, কার বা হলো পরাজয়? সরকার না সরকারী ডাক্তার নাকী আমলার? আসলে এদের কোন পক্ষের জয় কিংবা পরাজয় হয়নি। পরাজিত হয়েছে সাধারণ জনগণ। স্বৈর সরকারের ঘোষণার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ডাক্তারদের আন্দোলনে পিষ্ট হলো এই জনগণ। ডাক্তারদের কর্মবিরতির সময় সারা দেশে কয়েক‘শ মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। এই মৃত্যুই কিন্তু শেষ না। কারণ বিতর্কিত। “বিশে^র হেরোইন যখন পদতলে ভয় কি আমার মিছে, স্বৈরাচারী কালোবাজারী বন্ধুরা সদাই প্রশাসণের যে জগদল পাথর সরিয়ে সর্বদলীয় ছাত্র-জনতা বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। এখনও স্বৈরাচারের অজ¯্র শিকড় রাষ্ট্র ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করছে। সুযোগ হলে যে কোন সময় আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। ৯ বছরের দুঃশাসনে আজ অর্থনীতি দেউলিয়া। সৎ মানুষের বদলে সমাজে অসৎ মানুষের পদচারণাই বেশী। ঔষধ নামের কতো কি যে বাজারে পাওয়া যায়, এর কোন হিসাব নেই। চধৎধপবঃধসড়ষ ংুৎঁঢ়, ধ-ঋৎঁরঃ ারঃধ, ঋড়ড়ফ ারঃধ লঁরপব, ই-১২ লঁরপব, অংপড়ারঃধ ংুৎঁঢ়, এধড়ুধনধহ ধৎয়, ঝঐঅজইঅঞ-ই টনিক, ট্যাবলেট, হজমী, যৌন উত্তেজক ক্যাপসুল-ট্যাবলেট আরো কতো কি! এই ধরণের অনেক কিছুই এক কালে সরকারী খাতায় রেজিষ্ট্রিকৃত ছিল এমনকি প্রতিষ্ঠিত ও ছিলো। রেজিষ্ট্রেশন মোটামুটি ভাবে এই সবের গুনাগুনের কোন রকম এক প্রকার সরকারী স্বীকৃতি। আসলে কিন্তু এই রেজিষ্ট্রেশন এবং গুনাগুণের মধ্যে তেমন কোন সম্পর্ক ছিলো না। কোন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে এইগুলো স্বীকৃতি পেয়েছিলো। শত চেষ্টা করেও তার হদিস পাওয়া যায় না। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে কয়েকজন সচেতন চিকিৎসক এহেন পরিস্থতি সম্বন্ধে সজাগ হয়ে উঠেন।তাদের ঐকান্তিক আগ্রহে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট চিকিৎসক নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন। তাদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো দেশে ঔষধ প্রস্তুত এবং আমদানীর ক্ষেত্রে গুনাগুণ বিচার করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা এবং অপ্রয়োজনীয় ঔষধ বাতিল করা। এই কমিটির সুপারিশক্রমে প্রায় সাড়ে আট হাজার রেজিষ্ট্রিকৃত ঔষধের সংখ্যা কমিয়ে সাড়ে চার হাজারে আনা হয়। বাদ পরে বিভিন্ন নামের কথিত ঔষধ। এর ফলে কিছু সংখ্যক বাদ ঔষধ প্রস্তুতকারী এবং অসাধু ব্যবসায়ী মহল এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তৎপর হয়ে ওঠে। কারণ এদের স্বার্থে চরম আঘাত লাগে। এই স্বার্ধান্বেষী মহল অত্যন্ত তৎপর হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি ১৯৭৫ সালের আগষ্টের মাঝামাঝি ভেঙ্গে দেওয়া হয় এবং এই সুযোগের ফাঁকে পরগাছার মতো গজিয়ে উঠে স্বনামে বেনামে কিছু কিছু ঔষধ। যেমন ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত মকসুল হাসান চৌধুরী ও রেজিষ্ট্রার দিলরুবা রহমান প্যারাসিটামল সিরাপে “প্রপাইলিন গøাইকল” নামের রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হয় বলে দৈনিক পত্রিকাগুলিকে জানিয়েছিলেন। এই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ শিশুদের কিডনি ধ্বংস করে দেয় বলে সিম্পোজিয়ামে প্রকাশ করেন। ঋঙঙউঠওঞঅ, ঋজটওঞঠওঞঅ এই ঔঁরপব গুলি নাকি ভারতের কি একটা শুকনো গাছের বিশেষভাবে তৈরি পাউডার থেকে ঔঁরপব ঋজটওঞঠওঞঅ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই সকল ঔষধ থেকে ক্যান্সার, গর্ভধারণ ক্ষমতা হ্রাস এবং অবাঞ্চিত গর্ভপাত ঘটে। এমনকি গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্য সংকটাপন্ন হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ মন্তব্য করেন। অবশেষে এই হলো অনেক অপ্রয়োজনীয় এমন কি ক্ষতিকারক ঔষধ বাজারে পুনরায় হরদম প্রচলিত হয়। ব্যবসায়ী মহল বিশেষ করে বহুজাতিক ঔষধ কোম্পানী বাংলাদেশের ঔষধের বাজারে তাদের আধিপত্য বিনষ্ট হোক এটা তারা সহ্য করবেই বা কেনো? বর্তমানেও স্বাস্থ্য খাতের বালিশ ও পর্দাকান্ড সহ যে দুরাবস্থা বলার অপেক্ষা থাকে না স্বাস্থ্যের ১৭ টি গুরুত্বপূর্ণ নথি (ফাইল) কেবিনেট থেকে গায়েব! ৯ জন কর্মচারীকে ধরেও ছেড়ে দিয়েছেন সি.আই.ডি’র বড় বাবুরা। সব মিলিয়ে জাতি আজ চরম হতাশায়। জরুরী ভিত্তিতে স্বাস্থ্য খাতেরই চিকিৎসা একান্ত প্রয়োজন। মানবাধিকার কর্মী, বিশিষ্ট জন মেসার্স ফ্রেন্ডশিপ স্টীলের প্রোপাইটার হাজী মোঃ অবদুর রশিদ, প্রকৌশলী মোঃ বাকের হোসেন, বজলুর রহমান, সুবোধ কুমার বিশ^াস, ছালমা জামিলা, ইমরান খানেরা কহিল। বর্তমানে বাজারে নকল ও ভেজাল ঔষধের রমরমা বাণিজ্য। ভুয়া প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক, প্যাথলজিক্যাল ল্যাব অলিতে গলিতে ছড়াছড়ি। চিকিৎসার নামে অর্থলুট চলছে। নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রেও প্রতারণা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান ডেলিভারি, “শুধু চাই কাড়ি কাড়ি অর্থ”, যেনো দেখার কেউ নেই! গণতন্ত্র বিকাশমান ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার, বর্তমান প্রশাসন জনস্বার্থের খাতিরে আন্তরিকতার সাথে ন্যায়নীতি ও জাতীয় ঔষধ নীতির উপর নজর দেবেন এবং পূনর্বিবেচনা কমিটি গঠনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রীর মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
|
|
|
|
|