কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নগরের পাঁচলাইশ থানার মারামারি ও হত্যাচেষ্টার আরেক মামলায় গ্রেপ্তার (শন অ্যারেস্ট) দেখানো হয়েছে এক শিক্ষার্থীকে। তাঁর নাম রমজান শেখ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার অতিরিক্ত চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পাঁচলাইশ থানার পুলিশ এই মামলায় আসামি রমজান শেখ জড়িত থাকার তথ্য পাওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। ২১ জুলাই থেকে পাঁচলাইশ থানার একটি মামলায় কারাগারে আটক আছেন শিক্ষার্থী রমজান শেখ। আজ আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানির জন্য তাঁকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। জানতে পেরে ছেলেকে দেখতে ছুটে আসেন বাবা নির্মাণশ্রমিক মোস্তফা শেখ। আদালত প্রাঙ্গণে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন , ১৮ জুলাই নগরের মুরাদপুর বন গবেষণাগার এলাকার বাসা থেকে তাঁর ছেলেকে নিয়ে যায় স্থানীয় মো. আরিফসহ পাঁচ থেকে সাতজন। এরপর ছেলেকে পাঁচলাইশ থানায় দিয়ে দেয়। মোস্তফা শেখ অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে বাসা থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়নি। স্থানীয় ছেলেরা ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ থাকতে তাঁরা কেন এই কাজ করল, তার বিচার চান তিনি। দুই দিন ছেলে কোথায় ছিল কোনো খোঁজ পাননি। ২১ জুলাই পাঁচলাইশ থানার একটি মামলায় তাঁর ছেলেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মোস্তফা শেখ দাবি করেন, তাঁর ছেলে কোনো রাজনীতি করেন না। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থলের ফুটেজ দেখে পুলিশ আসামি ধরছে। নিরীহ কাউকে হয়রানি করছে না। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, রমজান শেখকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ঘটনাস্থলে থাকার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। এমনকি একটি ভবনের ছাদেও তাঁকে দেখা গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ১৬ জুলাই বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরে তিনজন নিহত হন। তাঁরা হলেন মো. ফারুক (৩২), ফয়সাল আহমেদ (২০) ও মো. ওয়াসিম (২২)। পরদিন ১৭ জুলাই বহদ্দারহাটে সংঘর্ষে তানভীর আহমেদ নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও মো. সাইমন নামের মুদিদোকানের এক কর্মচারী গুলিতে নিহত হন। পরে গুলিতে আহত ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদয় চন্দ্র তরুয়া নামের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মারা যান। এ ছাড়া পুলিশ বক্স ও নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর, ওপর থেকে পাথর ছুড়ে মারায় ছাদ থেকে নামতে গিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় নগরের বিভিন্ন থানায় ২০টি মামলা হয়। আর জেলায় হয় ১১টি।
মােঃ জানে আলম সাকী,
ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম।