মানবাধিকার খবরের উদ্যোগে একাধিক বার ভারতে গিয়ে অনেক চেষ্টা-প্রচেষ্টা করেও মা বাবা ও পরিবারের সাথে ঈদুল ফিতরের খুশীর ঈদ করতে পারছে না ভারতে পাচার হয়ে যাওয়া তিন শিশু-কিশোর ছামিরুল,আপন ও আশিক। ছামিরুল পাচার হয় দুই বছর আগে। আর এক বছর আগে পাচার হয় আপন ও আশিক। ঈদের পর হলেও তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে মা-বাবার কোলে তুলে দিতে মানবাধিকার খবরের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গত বছর তিন শিশু-কিশোর পাচারের খবর জানতে পেরে মানবাধিকার খবর তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালায় । আইনি প্রক্রিয়ায় সকল ধরণরে কাগজপত্র সংস্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে সরবরাহ করে । দু দেশের র্দীঘ প্রক্রিয়ায় আটকে যায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আসার নথপিত্র। ভারতীয় দপ্তরগুলো বলছে বাংলাদেশ থেকে এই শিশু-কিশোরদের নাগরিকত্বের সঠিক পরচিয়পত্র চাওয়া হলে তা আসতে যথেষ্ট সময় ক্ষেপন হচ্ছে। দীর্ঘ সূএিতরা পর পরিচয়পত্র এলেও তাতে থাকছে যথেষ্টে ভুল ত্রুটি। যার কারণে এই শিশু-কিশোরদের বাংলাদেশে পাঠাতে যথেষ্টে বেগ পেতে হচ্ছে । সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে ছামিরুলেরে দেশে ফেরার কথা ছিল গত র্মাচ মাসে আর আপন ও আশকিরে এপ্রিল মাসে। কিন্তু তৃণমূেলর সংশ্লিষ্ট থানা থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় র্পযন্ত রির্পোটে ভুল থাকায় পুনরায় সংশোধন না করা র্পযন্ত ভারতীয় দপ্তরগুলোর কিছু করার থাকেনা। এ দিকে মানবাধিকার খবরের সময় ও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে বার বার বাংলাদশে ও ভারতের সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে গিয়ে কাগজপত্র ত্রুটিমুক্ত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মানবাধিকার খবরের কাছে শুধু ফোনে ও সরাসরি অফিসে এসে কান্নাকাটি করে তারা জানতে চায় কবে আমার আদরের বাচ্চাদের বুকের ধন বুকে ফিরে পাবো। অপরদিকে পাচারকৃত বাচ্চাদের ভারতের সেভ হোমে খোঁজ খবর নিতে গেলে
জরিয়ে ধরে অঝড়ে কান্না শুরু করে দেয়,কবে আমরা দেশে যেতে পারবো প্রিয় মা বাবার কাছে।এসব প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে পরেছে মানবাধিকার খবর। আমাদের সমাজে বিত্তবানদের বাচ্চাদের অপহরন করে মুক্তিপন আদায় করে পাচারকারীরা,আর গরীব অসহায় দরিদ্র বাচ্চাদের পাচার করে বিক্রি করা হয়। এ সমস্যায় উত্তরণে সবাইকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে।
মানবিক হতে লাগে মন । মানবিক হতে বিশেষ কোনো জাতি,ধর্ম বা বর্ণের নির্ভর করতে হয়না। যে ব্যক্তির মানবিক বোধ আছে , পৃথিবীর যেখানেই থাকুন ,যে ধর্ম বা বর্ণেরই হোন অথবা সুখের সাগরে ডুবে থাকুন-অসহায় মানুষের জন্য তার অন্তর কাঁদবেই। আর তাইতো ,খুব পরিশ্রমে অর্জিত অর্থ বিলিয়ে দিতে পারেন অকাতরে। বিশ্বের সেরা ধনিদের তকমা লাগিয়েও চুপ থাকতে পারেননা। জনকল্যানের দান নিশ্চিত করতে অনেকেই গড়ে তোলেন দাতব্য প্রতিষ্ঠান। অনেকেই আবার ইচ্ছা থাকা সত্বেও সময়ের অভাব ও নানা প্রতিকুলতার কারনে পারেন না । মানব সেবায় এগিয়ে আসতে চান, সেই সব দেবদূতসম তুল্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কে সুযোগ দিতে বদ্ধ পরিকর মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্বের একমাএ নিয়মিত সৃজনশীল বাংলা প্রকাশনা ”মানবাধিকার খবর” । দেশের সর্বাধিক প্রচারিত জনপ্রিয় এ ম্যাগাজিনটি তার লেখনী ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে অধিকার বঞ্চিত অসহায় মানুষের কথা তুলে ধরছে । এছাড়া দেশ-বিদেশ থেকে নারী ও শিশু উদ্ধার, আইনি সহায়তা,চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে এান বিতারন, ও দারিদ্র মেয়েদের বিবাহে সহায়তা , বাল্যবিবাহ ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে নানাবিধি সামাজিক কাজ করে যাচ্ছে । পএিকাটি নিয়মিত প্রকাশনার মাধ্যমে মানবাধিকার সংরক্ষন ও প্রতিষ্ঠায় আমাদের এ উদ্যোগে আপনার একান্ত সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি । এজন্য আপনার ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রদান যেকোন আর্থিক অনুদান এবং গর্বিত গ্রাহক হয়ে সার্বিক সহযোগিতা ও গঠনমুলক মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করুন। মানুষ মানুষের জন্য আপনার সহযোগীতায় মা-বাবা ও পরিবারের কাছে ফিরতে পারে ভারতে পাচারকৃত তিন শিশু-কিশোর আপন, আশিক ও ছামিরুল সহ বিভিন্ন দেশে পাচার ও আটককৃত অসংখ্য নারী ও শিশু। মানবাধিকার খবর কোন এনজিও নয়। তাইতো কোন সরকারী-বেসরকারী সংস্থার আর্থিক সহায়তা পায়না। মানবাধিকার খবরের এ মহতী উদ্যোগে সহায়তা করে মানব সেবায় এগিয়ে আসুন ।
সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা : ”মানবাধিকার খবর” ব্র্যাক ব্যাংক চলতি হিসাব নং - ১৫০১২০২৪৬৬৭২৪০০১ । বিকাশ নং- ০১৯৭১৮৮৮২২২৩ ।
আঙ্কেল আমি কি দেশে মায়ের কাছে যেতে পারবো, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাই, আমাকে আপনার সাথে নিয়ে যান। কথাগুলো গত ১লা মার্চ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লক্ষীকান্তপুরের হাসুস সেফ হোমে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেই হাউমাউ করে আর্তচিৎকার করতে থাকে ভারতে পাচার হয়ে যাওয়া নড়াইলের সেখহাটি ইউনিয়নের আপন (১২)। আপনের কান্না দেখে পাশে থাকা আরেক কিশোর পাচার হয়ে যাওয়া আশিকও কেঁদে ফেলে। এ দৃশ্য দেখে হোমের কর্মকর্তা, অন্যান্য নারী ও শিশুদেরও মন ভারী হয়ে উঠে।
আপন ও আশিকের পাচার হওয়ার খবর মানবাধিকার খবরে গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চ- ২০১৮ সংখ্যায় বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত হয়। তাদেরকে ভারত থেকে উদ্ধারের জন্য অবিভাবকদের কাছ থেকে নাগরিকত্বের সকল ধরনের কাগজ পত্র সংগ্রহ করে গত ২২শে ফেব্রুয়ারী আমি ভারতে গমন করি। এরপর আপন ও আশিকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস, হাসুস সেফ হোম সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সরবরাহ করে ২মার্চ দেশে ফিরে আসি। আশা করছি, সকল আইনি প্রক্রিয়ার শেষে আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে দুই কিশোরকে তাদের মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া যাবে। এব্যাপারে আপনের নানী মোছা: শৈয়রন বিবি যশোরের শার্শায় থানার একটি সাধারন ডায়েরী করেন যার নম্বর-২০৮, তারিখ-০৬/০১/২০১৮ এবং মোঃ রাব্বি হাসান আশিকের পিতা মোঃ রবিউল মোল্লা যশোরের অভয়নগর থানায় একটি সাধরন ডায়েরী করেন যার নং-২৮৭, তারিখ-০৭/০১/২০১৮।
আপন ও আশিকের দেশে ফেরার জন্য এই জিডির কপি, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নপত্র, জন্ম সনদ ও স্কুলের প্রত্যায়ন পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা প্রদান করা হয়েছে।
এ দিকে ছামিরুল নামে আরেক কিশোর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লক্ষীকান্তপুরে হাসুস সেফ হোমে একই সাথে রয়েছে। তার পুলিশ তদন্তে নাম ও ঠিকানায় ত্রুটি থাকায় দেশে আসতে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি চলতি মার্চ মাসে সকল আইনি প্রক্রিয়ায় শেষে তাকেও দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে। তিন কিশোরের বুক ফাটা আহাজারিতে মানবিক কারনে মানবাধিকার বিষয়ক বিশ্বের একমাত্র নিয়মিত সৃজনশীল জনপ্রিয় বাংলা প্রকাশনা মানবাধিকার খবর উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে এনে মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেছে। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মানবাধিকার খবর সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ৩য় বারের মত গত ১৫মার্চ মানবাধিকার খবরের সম্পাদক ও প্রকাশক রোটারিয়ান মোঃ রিয়াজ উদ্দিন ভারতে গমন করে; তিন কিশোরের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অগ্রগতির খোঁজ খবর নিয়ে ১৭মার্চ আবার দেশে ফেরেন। অপরি দিকে পাচারকৃত তিন কিশেরের মা-বাবা ও অবিভাবকদের হৃদয় বিদারক কান্নায় মানবাধিকার খবর পত্রিকার কর্তৃপক্ষ হিমসিম খাচ্ছে। যত দিন পর্যন্ত তাদেরকে পিতা-মাতার হাতে তুলে দিতে পারা না যায়, ততদিন এই তিন কিশোর ও তাদের মা-বাবার আর্তচিৎকার, আহাজারি, কান্নার মাতম চলতেই থাকবে। কে স্তব্দ করবে তাদের এ আর্তচিৎকার, আহাজারি।
এদিকে রোটারি ক্লাব অব গুলশান লেকসিটি নারী ও শিশু উদ্ধারে মানবাধিকার খবরকে সার্বিক ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে।
আপন আর আশিক দুজনই বাংলাদেশী কিশোর। দুস্কৃতীকারিরা এই দুই কিশোরকে অপহরণ করে গোপনে নিয়ে আসে কলকাতায়। উদ্দেশ্য, কলকাতা থেকে এই দুই কিশোরকে অন্যরাজ্যে পাচার করা। আশিক বয়স ১৩ বছর আর আপনের বয়স ১২ বছর।
আশিকের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল জেলার শেখহাটি মোজেরপাড়া গ্রামে। বাবার নাম রবিউল মোল্লা। স্থানীয় বিমহিষকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আশিক। বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। তারা দু’ভাই দু’বোন তাদের মধ্যে আশিক তৃতীয় । আশিক মাস দুয়েক আগে গ্রামের বাড়ীর আফড়ার মেলায় গিয়েছিল। সেখান থেকে ৫ দুস্কৃতকারী মুখে গামছা বেঁধে জোর করে নিয়ে আসে বেনাপোল সীমান্তে। তারপর আশিকের মুখে লিকো প্লাস্টার টেপ লাগিয়ে তাকে একটি পণ্যবাহী ট্রাকের নিচে চেসিসের সঙ্গে বেঁধে পার করে বেনাপোল সীমান্ত। সেখান থেকে তাঁকে বনগাঁ রেলস্টেশনে এনে ট্রেনে করে নিয়ে আসা হয় রানাঘাট রেল স্টেশনে। এখানে এসে দেখে আরও ৫জন দুস্কৃতকারী অপেক্ষা করছে। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় আশিক। তারপর একসময় ট্রেনে করে শিয়ালদহ স্টেশনে নামে। শিয়ালদহ নামার পর তার ক্ষিধে পেলে এক চায়ের দোকানদার তাকে খাওয়াবে এই শর্তে রেখে দেয় বাসনকোসন ধোয়ার কাজে। ইতিমধ্যে শিয়ালদহের রেলওয়ের সংস্থা রেলওয়ে চাইল্ড লাইন খবর পেয়ে উদ্ধার করে আশিক কে। তারপর তুলে দেয় রেল পুলিশের হাতে। রেল পুলিশ আশিককে পাঠিয়ে দেয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সরকারি হোম হাসুস বা হরিপুর আমরা সবাই উন্নয়ন সমিতির কাছে। গত বছর ১৫ ডিসেম্বর থেকে আশিক বারুইপুরের লক্ষীকান্তপুরের হাসুস’এ রয়েছে।
আপনের বয়স ১২ বছর। বাড়ি যশোর শার্শা থানার নাভারনের দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামে। পিতার নাম রাজু হোসেন। বাবার-মার বিচ্ছেদের পর মা অন্যত্র চলে গেছে। আপন মানুষ হয় নানীর কাছে। নানীর নাম শৈরন বিবি। নাভারণ বাজারে আছে নানীর ফলের দোকান। আপন স্থানীয় মিন্টুর ভাই ভাই চটপটির দোকানে কাজ করতো। মাসখানেক আগে আপন বেনাপোলের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে আসে। সেখান থেকে দুস্কৃতকারীরা আপনকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তাকে সীমান্ত পাচার করে নিয়ে আসে বনগাঁ রেলস্টেশনে। বনগাঁ স্টেশনে দালালরা তার টিকিট কাটতে গেলে সেই সুযোগে সে পালিয়ে যায় স্টেশন থেকে। তারপর ট্রেনে করে চলে আসে শিয়ালদহ স্টেশনে। সেখানে এসে রেল পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আপন। তারপর রেলওয়ের চাইল্ড লাইন আপনকে উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেয় বারুইপুরের হাসুস হোমে। গত বছর ১৯ ডিসেম্বর থেকে আপনের ঠাঁই হয় এই হোমে।
আশিক ও আপন দুজন এখন রয়েছে হাসুস হোমে। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে দক্ষিণে প্রায় ১০০ কি.মি. দূরে লক্ষীকান্তপুর বিজয়াঙ্গি বাজারে ওই হোমে ঢাকা থেকে প্রকাশিত মানবাধিকার খবর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক রোটারিয়ান মো: রিয়াজ উদ্দিন পরিদর্শনে গেলে, সেখানে হোমের কর্মকর্তারা তাঁকে জানান ওই দুই বাংলাদেশী কিশোরের কথা। ওই কিশোরদ্বয় বাংলাদেশে ফেরার জন্য সম্পাদকের কাছে কান্না-কাটি করে। চাইছে অবিলম্বে তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। বলেছে, তারা ফিরে যেতে চায় তাদের বাবা মায়ের কাছে। সম্পাদক গত ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এসে ঐ দুই কিশোরের বাড়ীর ঠিকানায় এবং সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করে। সর্বশেষ গত ৬ জানুয়ারী তাদের অবিভাবকদের খুজে পাওয়া যায়। আপনের নানী শৈরন ও মামা ফলের দোকানদার মিজানুর রহমান জানতে পেরে সম্পাদকের কাছে দাবী জানান- যে করে হোক তাদের আপনকে যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের কাছে দেয়া হয়। আপনের মায়ের নাম নাসিমা । অনেক আগে পিতার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়ায় মা অন্যত্র বিবাহ করে সংসার করছেন আর পিতা কোন খোজ-খবর নেয় না। নানীর কাছেই দুঃখে ও কষ্টে বড় হচ্ছিল আপন। অপর দিকে আশিকের বাবা হলেন যাত্রীবাহী মটর সাইকেল চালক। দরিদ্রতার মধ্যে তাদের দিন চলে। আশিকের বাব-মা ও দাবী জানান তাদের বুকের ধন কে যে কোন ভাবে হোক দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের কাছে দেওয়ার জন্য। আশিকের মায়ের নাম নাজমা বেগম। আশিক ও আপন বেঁচে আছে প্রায় ২মাস পর জানতে পেরে দুই পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এতদিন তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে, না পেয়ে তাদের জীবিত পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। ভারতে সেফ হোমে আশিক ও আপন এবং হোমের কর্মকর্তারা সম্পাদককে পেয়েও আনন্দিত হন। সেফ হোমের কর্মকর্তারা তাদের সঠিক ঠিকানা না থাকায় অনেকটা বিপদে ছিলেন। সম্পাদকের কারনে বাচ্চা দু’টিকে এবার দেশে ফিরিয়ে নেওয়ায় সার্বিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদি হন। বাচ্চা দু’টির বর্তমানে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের কাজ চালানো হয়।
এদিকে কিশোর ছামিরুলের বাংলাদেশের ঢাকার মিরপুরের সঠিক ঠিকানা খুজে না পাওয়ায় পুলিশ সঠিক ঠিকানা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ও কলকাতা উপ-দূতাবাসে পাঠাতে পারেনি। ফলে তার দেশে ফেরার বিষয়টি বিলম্বিত হতে থাকে। গত বছর ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও মানবাধিকার খবরের পক্ষে ভারতীয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও উপ-দূতাবাসের কাউন্সিলের মোঃ জামাল হোসেনের কাছে ছামিরুলের সঠিক ঠিকানা ও মা-বাবার ফোন নম্বর সরবরাহ করা হয়েছে। আশা করছি ছামিরুল খুব শীঘ্রই দেশে তার মা-বাবার কাছে ফিরতে পারবে। ছামিরুল দেশে ফিরতে না পারায় তার মা-বাবা খুবই উদ্বিঘœ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত মানবাধিকার খবরের কাছে স্মরণাপন্ন হয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে। মানবাধিকার খবর ছামিরুল ও তার মা-বাবার সাথে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দিচ্ছে।
ছামিরুল ও তার মা-বাবার আবেগ ও কষ্টের কথা শুনতে পেরে কান্দাকাটিতে আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। মানবাধিকার খবর নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে। জামিরুলের পাচার হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার খবরের গত মার্চ ২০১৭ সংখ্যায় বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে মানবাধিকার খবরের সহযোগিতায় ছামিরুলের পিতা দু’বার ভারতে গিয়ে ছামিরুলের সাথে সাক্ষাৎ করে এসেছেন।
উল্লেখ্য যে, মানবাধিকার খবর এর আগে ভারতের উত্তরাখ- প্রদেশের রুদ্রপুর থেকে পাচার হয়ে যাওয়া বাংলাদেশী কলেজছাত্রী সাবানা আক্তার চায়না, হায়দ্রাবাদ থেকে গৃহবধু মুন্নি, পশ্চিমবঙ্গের লক্ষীকান্তপুর থেকে শার্শার কিশোর বিপ্লব, হুগলী থেকে গাইবান্ধায় সালমা, দিল্লীর তিহার জেল থেকে পটুয়াখালীর বিউটি আক্তার, খুলনার শিশু সুমনসহ সাফল্যের সাথে অসংখ্য নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে এনে মা বাবা ও আইনের হাতে তুলে দিয়ে সাফল্য দেখিয়েছে।
এছাড়া ভারতীয় কিশোরী বৈশাখী ও পাকিস্তানের নাগরিক প্রকৌশলী অনিল কুমারকে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারের সার্বিক সহযোগিতা করে সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠিয়েছে। যা বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও প্রথম শ্রেনীর দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মিডিয়াতে গুরুত্ব সহকারে প্রচার হয়।
নারী ও শিশু উদ্ধার অভিযানে যারা মানবাধিকার খবরকে সার্বিক সহযোগিতা, পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়েছেন তাদের মধ্য রয়েছেন, কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, কাউন্সিলর ও হেড অব চ্যাঞ্চেলর মিয়া মোঃ মাইনুল কবির, ফাষ্ট সেক্রেটারী (প্রেস) মোঃ মোফাক্কারুল ইকবাল, কাউন্সিলর বি এম জামাল হোসেন সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান
ও সাবেক প্রধান বিচারপতি গিরিশ চন্দ্র গুপ্ত, পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নপরাজিৎ মূখার্জি, রাজ্য সভার সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, লোকসভার সংসদ সদস্য ও চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান শ্রীমতি প্রতিমা ম-ল, আলিপুর ভবানী ভবনে দক্ষিন ২৪ পরগনায় জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রীমতি শান্তি দাস, জেলা ইন্টেলিজেন্ট ব্রাঞ্চের নিবেদিতা তালুকদার এডিশন সেক্রেটারি ফরেনার্স গভ পশ্চিমবঙ্গ হোম ডিপার্টমেন্ট গৌরাঙ্গ সরকার।
জেলা শিশুরক্ষা সমিতির কর্মকর্তা অনিন্দ ঘোষ, কলকাতার সল্টলেকে বিকাশ ভবনে অবস্থিত শিশু রক্ষা প্রোগ্রাম ম্যানেজার সুচরিতা সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর, প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি অমর সাহা, মানবাধিকার খবর পত্রিকার কলকাতা প্রতিনিধি দিশা বিশ্বাস, ভারত প্রতিনিধি মনোয়ার ইমাম, বারাসাত প্রতিনিধি প্রদীপ রায় চৌধুরী, মানবাধিকার খবরের কলকাতাস্থ আইন উপদষ্টা রাজীব মুখার্জি, নিলোৎপল মৈত্র, রিয়াসহ অন্যান্য।