মােঃ জানে আলম সাকী, ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম আদালত থেকে ‘গায়েব’ হওয়া মামলার নথি নগরীর একটি ভাঙ্গারির দোকান থেকে উদ্ধার করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা সতীশ বাবু লেইনের ভাঙ্গারির দোকানটি থেকে নয়টি বস্তায় ভরা এসব নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মো. রাসেল (২৩) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ৫ জানুয়ারি মহানগর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) কার্যালয়ের সামনে থেকে মামলার নথি ‘হারানোর’ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর থেকে পুলিশের কয়েকটি দল নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে।
ওসি বলেন, “বুধবার আমরা বাকলিয়া বৌ বাজার এলাকা থেকে রাসেলকে আটক করি। পরে তার দেওয়া তথ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে পাথরঘাটা সতীশ বাবু লেইনের মফিজের ভাঙ্গারির দোকানে তল্লাশি চালিয়ে এসব কেইস ডকেট উদ্ধার করা হয়।”
আটক রাসেলের বরাতে ওসি করিম বলেন, এই যুবক আদালত এলাকার একটি চায়ের দোকানে কাজ করে। তার দাবি, তিনি এসব নথি পরিত্যক্ত অবস্থায় আদালতের বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছিল বলে মনে করেছে। যে কারণে তিনি কয়েক দফায় এসব নথি বস্তা ভরে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন।
রাসেল পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে তিনি কাগজগুলো ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করে ৪৩৭ টাকা পেয়েছিলেন।
২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবকাশকালীন ছুটিতে ছিল আদালত। ছুটি চলাকালে এসব নথি আদালত থেকে হারিয়ে যায় বলে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মফিজুল হক ভুঁইয়া একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, “১ হাজার ৯১১টি মামলার নথির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কার্যালয়ের সামনে রাখা নথিগুলো ছুটির পর এসে আর পাচ্ছি না।
“আমার অফিসে আর নথি রাখার জায়গা নেই। কিছুদিন আগে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। এর আগে থেকেই সেগুলো বারান্দায় ছিল।”
চট্টগ্রাম মহানগর আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় মহানগর দায়রা জজ আদালত। এর পাশেই মহানগর আদালতের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয়। এই কার্যালয়ে মহানগর দায়রা জজের অধীন ৩০টি আদালতের নথি থাকে।
সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বস্তায় ভরে সামনের বারান্দায় এসব নথি রাখা ছিল ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে।
থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়েছিল, ১২ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব নথি ‘হারিয়ে’ যায়।
রাসেল পুলিশকে বলেছেন, ২৭ থেকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সন্ধ্যার সময় তিনি আদালত থেকে এসব নথি বস্তায় ভরে নিয়ে গেছেন।