|
নির্মাণ শেষ না হতেই মেঝেতে ফাটল |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
নির্মাণ শেষ না হতেই মেঝেতে ফাটলপক্ষাঘাতে অন্ধ যশোরের বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়নের সদুল্ল্যাপুর গ্রামের বাবর আলী বিশ্বাস। চার সদস্যের পরিবার নিয়ে পূর্বপুরুষের জমির এক কোনায় জীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। সারাদিনের ভিক্ষার টাকাতেই হতো অন্ন সংস্থান। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় জোটে একটি আধাপাকা ঘর। ঘর পাওয়ার খবরে যে শান্তি পেয়েছিলেন, তার পুরোটাই বরবাদ। কারণ সেই ঘরের জন্য এখন মোটা অর্থ ব্যয় হচ্ছে। ক্ষোভের সঙ্গে বাবর আলী জানালেন, `এক বস্তা সিমেন্ট, ১৬ কড়াই বালি, মিস্ত্রি খরচ ১৬শ` টাকা, পলিথিন, তারকাঁটা, পেরেক, কব্জা দিয়েছি। পায়খানার জন্য শুধু টিন আর বাতা দিয়েছে। ৩/৪ জন মিস্ত্রির ৭ দিনের খাওয়া ও মজুরি মিলিয়ে সাড়ে ৮ হাজার টাকা গুনতে বাধ্য হয়েছি। তার পরও ঘর বানানো শেষ না হতেই মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে।` একই অভিযোগ রায়পুর ইউনিয়নের শালবরাট গ্রামের শিখা রানী, বিধান দেবনাথ, বন্দবিলা ইউনিয়নের গাইদঘাট গ্রামের সালেহা বেগমসহ অনেকের। প্রাইভেট পড়িয়ে, অন্যের বাসায় কাজ করে অনেক কষ্টে সঞ্চিত টাকা দিতে হচ্ছে ঘর তৈরির উপকরণ কিনতে। অথচ ঘর বানাতে না বানাতেই খসে পড়ছে পলেস্তরা। `জমি আছে কিন্তু ঘর নেই`- যশোরের বাঘারপাড়ার ৬টি ইউনিয়নে এমন ১৩২ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পরিচালিত আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বসতঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে ৭০টি ঘর নির্মাণ শেষ হয়েছে। কিন্তু কাজের মান নিয়ে প্রান্তিক পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। তাদের দাবি, টয়লেটসহ ১৭৫ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ এক লাখ টাকা। তারপরও ঘর নির্মাণে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন উপকরণ। ধলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সুভাষ চন্দ্র দেবনাথ জানান, তাদেরকে না জানিয়ে কাজগুলো করা হচ্ছে এবং সব কাজই নিম্নমানের। এমনকি এ প্রকল্পের কোনো সভাও হয়নি। তবে তার কাছ থেকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছে। রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর রশিদ স্বপন বলেন, আমি শুনেছি, এই ইউনিয়নে কাজ হচ্ছে। তবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। নির্বাহী অফিসার নিজেই কাজ করাচ্ছেন বলে কোনো খোঁজ নেননি। উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন সভায় এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সদুত্তর পাইনি। তবে এসব বিষয় অস্বীকার করে বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহনাজ বেগম বলেন, `সভা না হলে আমার কাছে তারা অভিযোগ করতেন। আমি তো কোনো অভিযোগ পাইনি। তা ছাড়া কাজ হচ্ছে নির্দেশনামতোই। ঘর পেয়ে সবাই খুশি। আমি নিজে অনেক ঘর দেখেছি। আমার কাছে খারাপ মনে হয়নি। তারপরও কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।` যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল আওয়াল জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হবে। অনিয়মের প্রমাণ মিললে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
|
|
|
|
|