বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * সাতক্ষীরায় দেবরের কবল থেকে স্বামীর সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এতিম শিশু কন্যাকে নিয়ে বিধবা মহিলার সংবাদ সম্মেলন   * শ্যামনগরে জমি নিয়ে বিরোধে ভাইয়ের হাতে ভাইয়ের মৃত্যু   * রামগতিতে ঐতিহাসিক বদর উপলক্ষে উপজেলা জামায়াতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল।   * সাতক্ষীরায় রেড ক্রিসেন্টের দরিদ্র পরিবারের মাঝে রমজান ফুড প্যাকেজ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ   * আরসা প্রধানকে গ্রেপ্তার করায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বস্তি কিন্তু শংকা কাটেনি   * চট্টগ্রাম আদালতে পক্ষপাতিত্ব আদেশ, প্রতিকার চেয়ে উপদেষ্টার কাছে বিবাদীর দরখাস্ত   * কক্সবাজারে তিন দিনব্যাপী ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু   * চুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ১৯ নেতা বহিষ্কার   * সাতক্ষীরার শ্যামনগরসহ পৃথক তিন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫ মণেরও বেশি হরিণের মাংস জব্দ-আটক ১   * রামগতিতে উপজেলা যুবদলের সম্মেলনে অনুষ্ঠিত  

   সারাদেশ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে কুড়িগ্রামের হাতে তৈরি নকশী টুপি
  Date : 09-03-2025
 
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: মোর্শেদা বেগম দশম শ্রেণির ছাত্রী থাকা কালীন তার বিয়ে হয়। সংসারে অভাব থাকায় ১৯৯৪ সালে স্বামী জাবেদ আলীর সঙ্গে চলে যান টাঙ্গাইলে। সেখানে একটি টাওয়াল ফ্যাক্টরিতে কাজ করে কোনরকম জীবন যাপন করেন। কিছুদিন পর পরিচয় হয় মোছা. কমলা বেগমের সাথে। কমলা বেগমের টুপি তৈরির কাজ দেখে দেখে রপ্ত করেন কলা-কৌশল। দিনে ফ্যাক্টরির কাজ আর রাতে টুপি বানানো।
 
শুরু করে প্রথম টুপি তৈরি করে মজুরি পান ২৮০ টাকা। পরে তার নিখুঁত কাজ দেখে মুগ্ধ হন এক বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা অবলীলায় প্ল্যাস্টিক  প্রথম অর্ডারে ৫০টি টুপি তৈরি করে পেয়েছিলেন ১৫হাজার টাকা। এর পর মোর্শেদা বেগম নিজ গ্রামে ফিরে প্রথমে এলাকার  অসহায়  বিধবা ৭ জন নারীকে নিয়ে শুরু করেন দারিদ্র্য জয়ের সংগ্রাম। হাতে বানানো টুপি তৈরি করে এখন তিনি লাখোপতি। তার সফলতার গল্প শুনে দলে দলে অনান্য নারীরা টুপি বানানো কাজে ছুটে আসেন। বর্তমানে তার সাথে ৬ হাজার নারী কাজ করছেন। মোর্শেদা বেগম নিজ গ্রাম পাতিলাপুরের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন নাই আশপাশে প্রায় ৪০-৫০ টি গ্রামের নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বয়সী নারী পাশাপাশি পুরুষরাও একাজ করে সংসারের আয় যোগাচ্ছেন। 
 
মোর্শেদা জানান, ফেনীর দুজন ব্যবসায়ীর কাছে তিনি তৈরি করা টুপি বিক্রি করেন। আর এই টুপি মধ্যপ্রাচ্যের বাহারাইন, সৌদি আরব, দুবাইয়ে বিক্রি হয়। ওই ব্যবসায়ীরা তার কাছে রেশমা সরবরাহ করেন। এরপর তিনি নারীদের সঙ্গে নিয়ে স্রেফ সুঁই সুতা দিয়ে তৈরি করেন নানা ধরনের নকশাখচিত টুপি। টুপি তৈরির দেখভাল করতে বিভিন্ন গ্রামে বেতনভুক্ত প্রায় ১৫ জন সুপার ভাইজার রেখেছেন। হাতে বানানো প্রতিটি টুপি তৈরির জন্য নারীরা পারিশ্রমিক পান ১৩০০-১৫০০ টাকা। এতে সুই সুতার খরচ ২০০-২৫০ টাকা। প্রতি টুপিতে তিনি কমিশন পান ১০০- ১২০ টাকা । প্রতি মাসে ২-৩ হাজার টুপি বিক্রি করেন তিনি। মোরশেদা এর প্রতিবেদককে  বলেন,আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই দুটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। একবার ওমরা হজ পালন করেছি আরেকবার ইচ্ছা আছে হজ  করার। তারপর যতদিন বেঁচে আছি মানব সেবার   কাজ করে যাব।  কিছু নেই সরকারিভাবে এমনকি কুড়িগ্রামের বিসিকের পক্ষ থেকে  কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। তারা শুধু আশ্বাস দেয় । সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিপুণ হস্ত সম্ভারের টুপি তৈরির পরিধি আরো বাড়াতে পারবেন বলে জানান তিনি।
 
কুড়িগ্রামের প্রত্যান্ত গ্রামের নারীদের হাতে তৈরি টুপি মধ্য প্রাচ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। বাহারি রঙের সুতা আর রেশমার উপরে আঁকা বিভিন্ন ডিজাইনে বানানো টুপির চাহিদা বেড়েই চলছে। এই টুপি তৈরি করে এখানকার হাজারো নারীদের হয়েছে কর্মসংস্থান, সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা। তবে এমন আয় আর সুনামের গল্পের পিছনে মূল নারী উদ্যোক্তা মোর্শেদা বেগমকে পাড়ি দিতে হয়েছিল অনেকটা পথ। 
 
বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করায় নারীদের আইকন হিসেবে পরিচিত তিনি। মোর্শেদা বেগম কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার পাতিলাপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিপুণ হস্ত শিল্প সম্ভার নামে টুপি তৈরির প্রতিষ্ঠানের পরিচালক তিনি।
 
কলি বেগম জানান, চার বছর আগে মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে টুপি তৈরির কাজ শুরু করেন। এখন তার আর অভাব নেই। সংসারের স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরি করে ভালো আয় করছেন তিনি অনেকটা স্বাবলম্বী।
 
শিক্ষার্থী মোছা. লায়লা খাতুন বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি আমি মোর্শেদা খালার টুপি তৈরি কাজ করি। এখান থেকে যা উপার্জন করি লেখাপড়ার খরচ মিটিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করতে পারি।শুধু আমি না আমার মত বিভিন্ন বয়সের নারীরা এখানে কাজ করে।
 
সাত দরগাহ গ্রামের ময়না বলেন, সারা বছর আমরা টুপি তৈরির কাজ করি। বিশেষ করে রমজান মাস ও কোরবানি ঈদে সময় টুপির চাহিদা বেশি থাকে। এসময় টুপি বানিয়ে জন প্রতি ০৮-০৯হাজার টাকা পাই। পরিবার নিয়ে খুব ভালোভাবে ঈদ কাটাতে পারছি।
 
কুড়িগ্রাম বিসিক এর উপ ব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ জোনায়েদ বলেন, পাতিলাপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা মোর্শেদা বেগমের টুপি মধ্য প্রাচ্য যাচ্ছে এটি কুড়িগ্রাম জেলার গৌরবের। হাজার হাজার নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি। সরকারি কোন প্রশিক্ষণ, আর্থিক ঋন অথবা তৈরি টুপির বাজারজাতকরণে কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হলে কুড়িগ্রাম বিসিক শিল্প মোর্শেদা বেগমকে সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।


  
  সর্বশেষ
সাতক্ষীরায় দেবরের কবল থেকে স্বামীর সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এতিম শিশু কন্যাকে নিয়ে বিধবা মহিলার সংবাদ সম্মেলন
শ্যামনগরে জমি নিয়ে বিরোধে ভাইয়ের হাতে ভাইয়ের মৃত্যু
রামগতিতে ঐতিহাসিক বদর উপলক্ষে উপজেলা জামায়াতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল।
সাতক্ষীরায় রেড ক্রিসেন্টের দরিদ্র পরিবারের মাঝে রমজান ফুড প্যাকেজ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308