কক্সবাজারের উখিয়া থেকে এক রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়া এই যুবক তখন পরিচয় গোপন করে এক বাঙালি যুবকের নাম-পরিচয় দিয়েছিলেন। জামিনে গিয়ে পালানোর পর আদালতের পরোয়ানা পেয়ে পুলিশ জানতে পারে, যাকে ধরতে পরোয়ানা- তিনি আসল ব্যক্তি নন, আগে কখনো গ্রেপ্তারও হননি তিনি। দুই বছরের বেশি সময় তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর সদস্যরা উখিয়ার বালুখালী এলাকার ১২ নম্বর ক্যাম্প থেকে বুধবার আবুল হোসেন (৩৫) নামে রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিবন্ধিত বাসিন্দা আবুল হোসেন। কিন্তু তার আগে থেকেই থাকতেন খুটা খালী এলাকায়। ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়ে নিজের পরিচয় গোপন রেখে নাম প্রকাশ করেন সালাহ উদ্দিন। এদিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর সালাহ উদ্দিন আগে কখনও গ্রেপ্তার হয়নি বলে আদালতকে জানায়। পরে আদালত মামলাটির অধিকতর তদন্ত করতে পিবিআইকে আদেশ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মোজাম্মেল হক বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, খুটাখালী এলাকার বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন পেশায় কৃষক। তার প্রতিবেশী এক ব্যক্তির বাড়ির কাছে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন রোহিঙ্গা যুবক আবুল হোসেন। এ কারণে তারা পরষ্পর পরিচিত ছিল।২০১৭ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় এক হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল আবুল হোসেন। পূর্ব পরিচয়ের কারণে রোহিঙ্গা যুবক আবুল হোসেন নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে সালাহ উদ্দিনের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেন।আদালত থেকে জামিন নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর চান্দগাঁও থানা পুলিশ আসামিকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর সালাহ উদ্দিনের বাড়িতে পুলিশ গেলে তিনি বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশকে জানায়। পরিদর্শক মোজাম্মেল জানান, চট্টগ্রাম মহানগর চতুর্থ দায়রা জজ আদালতে সালাহ উদ্দিন বলেছেন, তার নামে যে পরোয়ানা জারি হয়েছে- সেই সালাহ উদ্দিন তিনি নন। আগে কখনও তিনি গ্রেপ্তারও হননি। আদালত সালাহ উদ্দিনের আবেদন আমলে নিয়ে ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি মামলাটি পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “কারাগারে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হওয়ার হাজতিদের ছবি এবং গ্রেপ্তারের পর ছবি মিলিয়ে দেখা যায়, পরোয়ানা জারি হওয়া সালাহ উদ্দিন এবং গ্রেপ্তার হওয়া সালাহ উদ্দিনের ছবির ভিন্নতা আছে।” টানা তদন্তের পর বুধবার উখিয়া বালুখালী ১২ নম্বর ক্যাম্প থেকে আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।
মােঃ জানে আলম সাকী,
ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম।