সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিসেম্বর ও জানুয়ারি—এই দুই মাস দৈনিক দুই হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ ও সেখানে রাত যাপনের সুযোগ পাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। তখন কোনো পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মেনে পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা দুই মাস দৈনিক দুই হাজার পর্যটক অনলাইন নিবন্ধন সম্পন্ন করে ট্রাভেল পাস পাচ্ছেন। এর বেশি পর্যটক গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজারের নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউ জেটি দিয়ে জাহাজে ওঠার আগে এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপে জেটি ঘাটে নামার সময় পর্যটকদের হাতে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক আছে কি না তদারকি করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মীরা। এ সময় পর্যটকের হাতে থাকা মিনারেল ওয়াটারের বোতল, পলিথিন, প্লাস্টিক পণ্য রেখে দেওয়া হয়। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ শেষে জাহাজে ওঠার সময় হাতে কিংবা ব্যাগে প্রবাল খণ্ড আছে কি না, তল্লাশি করা হয়। একই সঙ্গে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারি বিধিনিষেধ সম্পর্কে পর্যটকদের ধারণাও দেওয়া হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক জমির উদ্দিন একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক দ্বীপের পরিবেশ ধ্বংস করছে, এ জন্য দ্বীপে এসব নেওয়া নিষেধ। তা ছাড়া রাতের বেলা সৈকতে লোকসমাগম-হইচই, বাতি জ্বালিয়ে আলোকিত সৈকতে বারবিকিউ করলে কাছিমসহ সামুদ্রিক প্রাণীদের সমস্যা হয়। এ জন্য এসবও নিষিদ্ধ করা হয়।
পর্যটকদের রাত যাপনের জন্য সেন্ট মার্টিনে হোটেল রিসোর্ট কটেজ আছে ২৩০টির বেশি। ধারণক্ষমতা ২৩ হাজার। রোববার প্রথম দফায় ভ্রমণে যাওয়া তিন শতাধিক পর্যটক ওঠেন বহুতল ভবনের কয়েকটি হোটেলে। জাহাজে ওঠার আগে নিবন্ধনের সময় ওই সব হোটেল বুকিং করা হয়।
দ্বীপের পশ্চিম সৈকতে তিনতলাবিশিষ্ট একটি হোটেলের ১১৬টির কক্ষের মধ্যে রোববার অতিথি ছিলেন ৮০ জনের মতো। ৫ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়ায় ওই হোটেলের একটি কক্ষে উঠেছেন ঢাকার একজন পর্যটক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কক্ষ থেকে সমুদ্র দেখা যায়, এ অজুহাতে নন এসি কক্ষটির ভাড়া সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। কক্ষটির ভাড়া বড়জোর তিন হাজার টাকা হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি হোটেলের একজন ব্যবস্থাপক বলেন, এবার পর্যটন ব্যবসা দেরিতে শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি দুই মাস ব্যবসা চলবে। মালিকের নির্দেশনায় হোটেলকক্ষ ভাড়া কিছুটা বাড়িয়ে আদায় হচ্ছে, তাতে তাঁর করার কিছু নেই।