মঙ্গলবার প্রকাশিত সংস্থার মাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ২৬ জন গণপিটুনির শিকার হয়েছে, যেখানে আগের মাসে এই সংখ্যা ছিল ২০।
অক্টোবরে যারা এমন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৮ জনই মারা গেছেন, বাকি ৮ জন আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেছেন।
সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে একটু উন্নতি হয়েছে, কিন্তু আরও উন্নতি হওয়া যায়। খুব একটা সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে গেছি তা না।
“এখন যদি বলেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন? জাস্ট সন্তোষজনক; কিন্তু এটা আরও ভালো হওয়া দরকার।"
তবে গণপিটুনির নিরিখে যে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, সে কথাই বলছে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন। কমিশনে আসা অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের মাসের তুলনায় অক্টোবরে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৯১ দশমিক ৬৭ শতাংশ; আর নারী ধর্ষণ বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। গত মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২২ নারী ও ২৩ শিশু।
পূর্ব শত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতে মামলা, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের ওপর হামলা ও সহিংসতার চিত্রও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
এর মধ্যে গত বুধবার চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা সুলতানের মৃত্যু হয়। ৩ অক্টোবর গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদকে রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীসহ সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষদের ঢালাওভাবে আসামি করার তথ্য সংবাদমাধ্যমের বরাতে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে কারা হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে আসার তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে গুমের কোনো ঘটনা পাওয়া যায়নি। তবে কয়েক বছর আগে সংঘটিত গুমের অভিযোগ তুলে অক্টোবরে মামলা হয়েছে।
অক্টোবরে আগের মাসের তুলনায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার তথ্য উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়, “লাগামহীন মূল্য বাড়ার ফলে দেশের বেশির ভাগ খেটে খাওয়া, নিম্ন ও নির্ধারিত আয়ের মানুষ তাদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়ে। ফলে মানুষ সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।” গত মাসেও রোগীদের চিকিৎসায় অবহেলার তথ্য পেয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, শেরপুর সদর হাসপাতালে বিভিন্ন রোগের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের ইনজেকশন দেওয়ার পর অন্তত ৩০ জনের অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এ মাসেই অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ট্যাবলেট, ভিটামিন, গ্যাস্ট্রিক ও ডায়াবেটিকসের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশনের দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। ওষুধের দাম বেড়েছে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত।