শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * কারফিউ: সোনাহাট স্থলবন্দরে ৪ দিনে রাজস্ব ক্ষতি ৩৫ লাখ   * পার্বত্য জেলা বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত;   * সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় কক্সবাজার থেকে ঢাকা ফিরেছেন আটকেপড়া পর্যটকরা;   * কারফিউ: কুড়িগ্রামে থমকে জীবনযাত্রা, মহাবিপাকে শ্রমজীবী   * কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ৫০০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র করবে ইন্দোনেশিয়া;   * উদ্বোধন হলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর কিচেন মার্কেট;   * চিতলমারীতে আখচাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের   * কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঢাকা থেকে বেড়াতে এসে গোসলে নেমে এক তরুণ নিখোজ;   * চট্টগ্রামে মোবাইল, সাইকেলের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরকে বলাৎকার:যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ;   * প্রতিবছর কুড়িগ্রামের দ্বীপ চরবাসীদের দূর্ভোগ, নেই স্থায়ী সমাধান  

   সারাদেশ
কুড়িগ্রামের ধরলা-বারোমাসিয়া নদী এখন বিস্তৃন্ন ফসলের মাঠ
  Date : 26-02-2024
 কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে এক সময়ের খরস্রোতা ধরলা ও বারোমাসিয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর বুকে এখন সবুজ ফসলের সমারোহ ঘটেছে। এসব নদ-নদীর বুকে তীরবর্তী চাষিরা ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে বোরো ধান,ভুট্টা, বাদাম, কলা, মরিচ, বেগুন, কপি, সরিষা, আলুসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করে আসছে। ধরলা, বারোমাসিয়া ও নীলকমল নদ-নদীর চারিদিকে বোরো ধান ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন সবুজ ফসলেই ভরে গেছে। এ যেন এক সবুজের সমারোহ। সারাবছর পানি প্রবাহ সমান থাকায় নদীর নাম করণ হয় বারোমাসিয়া নদী। কিন্তু জলবায়ুর বৈরি প্রভাবের কারণে নদীটি এখন মরা খালে পরণিত হয়েছে। নদীতে পানির ধারণক্ষমতা না থাকায় বর্ষাকালে অল্প বৃষ্টিপাতে বন্যা হয়ে যায়। ফলে বছরে দু’বার চাষ করা গেলেও এখন আবহওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসুমে তিন-চার ফসল ফলাতে পারছে কৃষক। এতে করে বর্ষা কাটিয়ে খরা মৌসুমের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছে এই অ লের কৃষক।
জানা গেছে, সরকারী হিসাবে উপজেলায় দুইটি নদী ও একটি নদ অবস্থিত। নদীর দুইটির নাম ধরলা ও বারোমাসিয়া এবং নীলকমল নদ। ধরলা-বারোমাসিয়া ও নীলকমল নদসহ এই তিনটি নদ-নদী ভারত থেকে ত্রি-মূখীভাবে বাংলাদেশের গোরকমন্ডল ও নাখারজান এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে। তবে ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীর দুরত্ব কাছাকাছি হওয়ায় ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীটি ৬ কিলোমিটারের মধ্যে মিলিত হয়। ঐতিহ্যবাহী খরস্রোতা ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীসহ বিভিন্ন সমারোহে বিমোহিত হয়ে অনেকেই ছুটে আসছেন শেখ হাসিনা ধরলা সেতু ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের জ্যোতিন্দ্র নারায়ণ এলাকার বারোমাসিয়া নদীর নির্মিত সেতুর পাড়ে। অথচ মাত্র এক যুগ আগেও পানির প্রবাহতা ও প্রাণের স্পন্দন ছিল ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীতে। এই দুই নদীর প্রবল স্রোতের কারণে আতঁকে উঠতো নদী পাড়ের হাজারও বাসিন্দারা। এখন পানি না থাকায় ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীতে ছোট বড় প্রায় দুই শতাধিক চরের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে টানা ১৪ থেকে ১৫ বছর থেকে জলবায়ুর প্রভাবের কারণে নদী তিনটির ত্রীরবর্তী এলাকাগুলোতে পলিমাটি জমে নদীর তলদেশ ভরে উঠেছে। সে কারণে বছরের বেশি ভাগ সময় এখন নদীগুলোতে পানি থাকে না। বন্যার সময় দু/তিন মাস বাদে বছরের বাকিটা সময় নদীর বুক চিরে পুরোদমে চলছে চাষাবাদ। সীমান্তঘেঁষা এই নদী তিনটি এখন অ লের মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র আয়ের উৎস। নদী শুকিয়ে যাওয়া এখন জীবন-জীবিকায় কৃষি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আবহাওয়ার কারণে নদীর বুক জুড়ে জেগে ওঠা কয়েক হাজার কৃষি জমিতে চলছে এখন কৃষকদের প্রধান ফসল বোরো-আমন চাষের পাশাপাশি হচ্ছে সরিষা, পাট, শাক-সবজি, পিয়াজ, মরিচসহ হরেক রকমের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠি জলবায়ুর পরিবর্তন কাজে লাগিয়ে সমন্বিত উদ্যোগে এসব জমিতে অধিক হারে ফসল উৎপাদন করায় এলাকায় বেড়েছে কর্মসংস্থানসহ কৃষকরাও পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দে জীবন-জীবকার পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।  এ দিকে ধরলা ও বারোমাসিয়ার বুকে চাষাবাদ করে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও নদীতে নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহকারী জেলে পরিবার গুলো কঠিন দুশ্চিন্তায় পরেছেন। ধরলা ও বারোমাসিয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বোয়াল, কাতলা, রুই, টেংরা, কর্তি, ভেটকিসহ নানান প্রজাতির মাছ শিকার করে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতো। পানি প্রবাহ না থাকায় এসব মাছের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। ফলে সে এখানকার জেলে পরিবাররা পেশা হারিয়ে অনেকেই দিনমজুর, রিক্স্রাচালক, মালিসহ নানা বিভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত হলেও কিছু জেলে পরিবার কিন্তু নদীতে মাছ শিকার করতে না পেরে চরম দুচিন্তায় পড়েছেন।
 
উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ধরলা পাড়ের বোরো চাষি আলমগীর হোসেন ও জমসেদ আলী জানান, এক সময় এই ধরলা নদীই ধরলা পাড়ের হাজারও মানুষের ঘর-বাড়ী, ফসলি জমি-জমাসহ সব কিছুই গিলে খেয়েছে। অনেকেই ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীর তীব্র ভাঙ্গনে ঘর-বাড়ী হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন। তাই অনেকেই ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীল আগ্রাসী রূপ দেখেছে। অথচ সেই ধরলা ও বারোমাসিয়া নদী এখন পানি শূণ্য হয়ে পড়েছেন। এই দুই কৃষক প্রত্যেকেই ধরলার বুকে ৫ বিঘা জমিতে রোবো চাষবাদ করছেন। তাদের মতো শতশত কৃষক ধরলার বুকে বোরো, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করে জীবন নির্বাহী করছেন। তারা প্রত্যেকে বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ২৮ মন করে ধান ঘরে তোলেন আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবছরও ভাল ফলনের আশা করছেন।
 একই এলাকার ভুট্টা চাষি নুর ইসলাম নুর জানান, ধরলার বুকে দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষাবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবছরও ভুট্টার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারোমাসিয়া কৃষ্ণানন্দ এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান জানান, তারা প্রত্যেকে ৯-১০ বছর ধরে আমন ও আউশ ধান চাষাবাদ করতেন। ঐ সব জমিতে পলিমাটি জমায় অল্প সার দিয়ে আমনের পাশাপাশি বোরো, মরিচ,কপি, সরিষাসহ নানা মূখী ফসল চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন শতশত কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে জমিতে বোরোর চাষাবাদ করেছে। সেই সাথে ধরলা ও বারোমাসিয়াসহ বিভিন্ন নদীর অববাহিকার কৃষকরা ১৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করেছেন। অন্য দিকে উপজেলা জুড়ে ১ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। ধরলা ও বারোমাসিয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর অববাহিকায় প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়াও কলা ৬৫ হেক্টর, বাদাম ৮ হেক্টর, ডাল ৭ হেক্টর, কপি ৫ হেক্টর, সরিষা ১০ হেক্টর ও মরিচ ৫ হেক্টর চাষাবাদ করেছে। এ সব ফসল ফলে ধরলা ও বারোমাসিয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর তীরবর্তী শতশত কৃষক পরিবার এখন স্বাবলম্বী। আশা করছি আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে কৃষকরা আশানুরুপ ফলনের পাশাপাশি ভাল দামেও পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
আনোয়ার সাঈদ তিতু,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
 


  
  সর্বশেষ
কারফিউ: সোনাহাট স্থলবন্দরে ৪ দিনে রাজস্ব ক্ষতি ৩৫ লাখ
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত;
সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় কক্সবাজার থেকে ঢাকা ফিরেছেন আটকেপড়া পর্যটকরা;
কারফিউ: কুড়িগ্রামে থমকে জীবনযাত্রা, মহাবিপাকে শ্রমজীবী

Md Reaz Uddin Editor & Publisher
Editorial Office
Kabbokosh Bhabon, Level-5, Suite#18, Kawran Bazar, Dhaka-1215.
E-mail:manabadhikarkhabar11@gmail.com
Tel:+88-02-41010307
Mobile: +8801978882223 Fax: +88-02-41010308