কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে একটি ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ফেলে দেওয়ায় ঘটনায় ৫০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।এক ভুক্তভোগী ব্যক্তি শনিবার নগরীর পাঁচশাইল থানায় এ মামলা করেছেন বলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ একাধিক গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, “মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।”গত ১৬ জুলাই বিকেলে নগরীর ষোলশহর রেল স্টেশনে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ শুরু হয়। ষোলশহর, দুই নম্বর গেট এলাকা হয়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে মুরাদপুর মোড় পর্যন্ত।এক পর্যায়ে ধাওয়া খেয়ে নগরীর মুরাদপুরে বেলাল মসজিদের পাশে ওই পাঁচতলা ভবনে আশ্রয় নিতে গিয়ে আটকা পড়েন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা ভবনটি ঘিরে ফেলে। তারপর ওই ভবনের ছাদে আটকে মারধর করা হয় ছাত্রলীগ কর্মীদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনের ছাদে আটকে পড়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রক্তাক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাদে পড়ে আছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা তৃতীয় একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোটাবিরোধী অন্দোলনকারীদের হামলার মুখে ছাদ থেকে ওই ভবনের পিছনের অংশের কার্নিশ ও পানির পাইপ বেয়ে ১৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নেমে আসার চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন সানশেডে ও জানালার মাঝের অংশে আশ্রয় নেন। তখনও উপরে থাকা আন্দোলনকারীরা পাথর ছুড়ে এবং লাঠি-হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে তাদের নিচে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। নিচ থেকেও তাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হচ্ছিল। এক পর্যায়ে ভবনটির ডানপাশের পাঁচ তলার সানশেড থেকে কালো পোশাক পরিহিত একজন নিচে পড়ে যান। মাটিতে পড়ে তার শরীর লাফিয়ে উঠে। তারপর নিথর পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আরেকজন উপর থেকে মাটিতে পড়ে যান। কোটা আন্দোলনের সহিংসতার ঘটনায় এ নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে মোট মামলা হয়েছে ২০টি। আর জেলার ১০টি উপজেলায় ১১টি মামলা দায়ের হয়েছে। এই ৩১ মামলায় গত ১২ দিনে ৮৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তারেক আজিজ আরও বলেন, "চট্টগ্রাম নগরীতে গত ২৪ ঘন্টায় গ্রেপ্তার হওয়া ৪০ জনসহ গত ১২ দিনে শহরে ৫১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। " এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম জেলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন জানান।
মােঃ জানে আলম সাকী,
ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম।