গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড দেওচালা গ্রামের নিজাম উদ্দিন ও আনোয়ারা বেগমের সন্তান সুমন। বাবা-মায়ের সাত সন্তানের মধ্যে সুমন ৬ষ্ঠতম। বাবা নিজাম উদ্দিন পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বসতভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই তাদের। সবজি বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে সংসারের খরচ। সুমন জৈনা বাজার এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করলেও অসুস্থতার কারণে করতে পারছেন না চলাফেরা।নিজের ছেলে সন্তানের এমন অবস্থায় হা-হুতাশ করছেন পরিবারের সবাই। সরকার ও বিত্তবানদের মুখ চেয়ে পার করছেন রাত দিন। সংসারের টানা পোড়েন থাকলেও বেশ স্বাচ্ছন্দে দিন পার হচ্ছিল সুমনের পরিবারের। তবে সেই সুখ আর বেশিদিন সইলো না তাদের। অসুস্থ হওয়ার পর জানতে পারলেন তার টিস্যু ক্যান্সার হয়েছে সুমনের। বাবা মায়ের সব পুঁজি শেষ করে চিকিৎসা করালেও মিলেনি প্রতিকার। এখন অর্থের কাছে বাঁচা মরার প্রশ্ন সুমনের। প্রয়োজন ১৫-২০ লাখ টাকা কিন্তু বর্তমানে হাজার টাকা ব্যয় করার মতো সামর্থ্য নেই পরিবারটি। সুমনের বন্ধু হৃদয় বলেন,সে আমার বন্ধু,একসঙ্গে এসএসসি পাস করেছি। পড়াশোনা একসঙ্গে করার সুবাদে আমরা একসঙ্গে বেশিরভাগ সময় কাটাতাম। হঠাৎ কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিভিন্ন ডাক্তার দেখানোর পর জানতে পারে তার টিস্যু ক্যান্সার হয়েছে। আমার বন্ধুর আর্থিক অবস্থা তেমন একটা নেই। অর্থের অভাবে যেন তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেয়ে প্রায়। সে আগের মতো আমাদের মাঝে যেন ফিরে আসতে পারে। তাই সবাইকে অনুরোধ করব তার পাশে দাঁড়ানোর। হালিমা আক্তার নামে প্রতিবেশী এক গৃহবধূ বলেন, ছোটবেলা থেকেই অনেক শান্ত স্বভাবের ছিল সুমন। এমন একটি ভালো ছেলের অকালে জীবন নষ্ট হয়ে যাবে এটা মেনে নেওয়ার মতন না। সমাজের ধনী মানুষসহ সরকারিভাবে তাকে চিকিৎসার জন্য সাহায্য করলে হয়তো সে আবারও সুস্থ হতে পারবে ও পরিবারের হাল ধরতে পারবে তা না হলে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়বে। সুমনের শিক্ষক আনিসুর রহমান বলেন,আমি জানি তার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে দুরবস্থা রয়েছে।আমরা গ্রামবাসীসহ যারা রয়েছি তারা সাধ্যমত চেষ্টা করছি কিন্তু তার যে অর্থের প্রয়োজন শুধু এলাকাবাসীর পক্ষে ব্যবস্থা করা সম্ভব না। সরকার বা বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে ও তার সুচিকিৎসা করলে আবার সে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা মৃদুল আহমেদ বলেন,তিন বছর ধরে সুমন টিস্যু ক্যান্সারে আক্রান্ত। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশ মিলিয়ে চিকিৎসা বাবদ -৩০-৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখনো সে সুস্থ হয়নি।তার চিকিৎসার জন্য আরও ১৫-২০ লাখ টাকা দরকার। সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি আমাদের একান্ত আহবান তারা যেন সুমনের চিকিৎসা করার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। সুমনের আপন বড় বোন শেফালী আক্তার বলেন,আমার ভাইয়ের জন্য চিকিৎসা বাবদ আরও ১৫-২০ লাখ টাকা দরকার। সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
সুমনের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার ছেলেটা অসুস্থ তার টিস্যু ক্যান্সার হয়েছে। ডাক্তার বলেছে তাকে ভালো করার জন্য ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমি ক্ষুদ্র ব্যবসা চালিয়ে কোনরকম সংসার চালাই। আমার একার পক্ষে চিকিৎসার টাকা ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার বাড়ির ৭ গন্ডা জমি ছাড়া অন্য কোনো জমি-জায়গা নেই। বাড়ির জায়গাটুকু বিক্রি করলেও ৫-৭ লাখ টাকার বেশি হবে না। তাই কেউ যদি সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেয় তবেই হয়তো তার চিকিৎসা করাতে পারব। সুমনের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তিন বছর আগে বুকের মধ্যে ছোট একটা গোটা হইছিল।এরপর ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা শেষ করে ভারতে নিয়ে ৬ মাস চিকিৎসা করি।সেখানে সুফল না পেয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করে ডান হাত কেটে ফেলা হয়। এখন পর্যন্ত তিনটি অপারেশন করা হয়েছে। তারপরও সুস্থ হয় নাই। ছেলেটাকে যদি ঢাকায় বা দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করা হয় তাহলে আগের মতো সুমনকে ফিরে পাবো। আমার ছেলেকে আপনারা সবাই একটু সহযোগিতা করেন। তার কিছু হলে আমার আর কিছু থাকবে না।
ক্যান্সারে আক্রান্ত সুমন বলেন,আমি দীর্ঘদিন তিন বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমার চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করা হয়।এরপর বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ঋণ করা হয়। চিকিৎসার জন্য ৩০-৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ডাক্তার বলছে চিকিৎসার জন্য আরও ১৫-২০ লাখ টাকা দরকার। আমি সুস্থ হয়ে সবার মতো বাঁচতে চাই। সবাই আমার চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে আমি হয়তো বাঁচতে পারবো। আমি সুস্থ হয়ে বাঁচতে চাই। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, সুমনের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে যতটুকু সম্ভব তার পাশে থাকবে। সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: বিকাশ পার্সোনাল নম্বর:সুমনের বাবা নিজাম উদ্দিনের নাম্বার: 01817992401 ও সুমনের নাম্বার:01319121935 অথবা ইউনিয়ন ব্যাংক,মাওনা চৌরাস্তা শাখা শেফালী আক্তার, একাউন্ট নাম্বার:0301110054027
|