মোঃ দেলোয়ার হোসেন উপজেলা প্রতিনিধি, রামগতি (লক্ষ্মীপুর) :
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর আব্দুল্লাহ ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলে নদীর পাড় ঘেঁষে বসবাস করতো রাকিব নামের এক যুবক। অতি সাধারণ এক জীবন, যেখানে প্রতিদিনের সংগ্রামই ছিল নিত্যসঙ্গী। নাড়া, বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে তৈরি একটি ছোট্ট কুঁড়েঘর—সেই ঘরই ছিল তার স্বপ্ন, আশ্রয় এবং শান্তি।
কিন্তু গত ক’দিনের টানা বৃষ্টি আর ভয়াবহ জোয়ার কেড়ে নিয়েছে রাকিবের সব কিছু। নদীর পানি এক মুহূর্তে আছড়ে পড়ে তার বসতঘরের ওপর। মাত্র কয়েক মিনিটেই ভেসে যায় মাথা গোঁজার ঠাঁই, যা অনেক কষ্ট করে গড়ে তুলেছিল রাকিব।
“ঘরের ভেতরে কিছুই তুলতে পারি নাই ভাই, শুধু একটা লুঙ্গি পরে বের হয়েছি,” — কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন রাকিব।
তার ঘরের যেখানে মাটি ছিল, সেখানে এখন শুধুই কাদা, কিছু নাড়ার ছেঁড়া টুকরো আর গুঁড়িয়ে যাওয়া বাঁশের খুঁটি। পরিবার বলতে একাই ছিল,তিনি সামান্য বেতনে নোয়াখালীর একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। মাঝেমধ্যে খণ্ডকালীন কাজ করতেন আশপাশের চরে। আজ সেই রাকিবের দিন কাটে খোলা আকাশের নিচে, কখনো কারো চালার নিচে একবেলা খাবার জোটে, আবার কখনো অনাহারে কাটে রাত।
এই ঘটনাটি শুধু একজন রাকিবের নয়—এটি চরাঞ্চলের বাস্তবতা।
আজও সেখানে বহু মানুষ জোয়ার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কেউ এখনো সরাসরি খোঁজখবর নিতে আসেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীরা নিজেরা কিছু সহায়তা করেছেন, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।
রাকিব এখন চায়—“শুধু একটা ঘর হোক, যাতে আবার মাথা গোঁজতে পারি।”
জনসাধারণ ও কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান:
এটি শুধু একটি ব্যক্তিগত দুর্যোগ নয়, বরং রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য একটি মানবিক ইঙ্গিত।
এই প্রতিবেদন হয়তো আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখায়, কোথায় দাঁড়িয়ে আছে আমাদের ‘মানবতা’।
|