বিনোদন
  কক্সবাজার সৈকতে উচ্চাদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে অ‌বৈধ স্থাপনা নির্মাণ
  28-11-2024
মােঃ জানে আলম সাকী, ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম :  কক্সবাজার সৈকতে উচ্চাদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাতারাতি নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। উপেক্ষিত হ‌চ্ছে সৈকত পর্যটনের অখণ্ডতা রক্ষায় মহাপরিকল্পনার নির্দেশনা। বালিয়াড়ি দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনায় দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। সৈকতের বালির ওপর স্থাপনা নির্মাণের ফলে বিনষ্ট হ‌চ্ছে বি‌নোদন পরিবেশ ও সৌন্দর্য।

অর্ন্তবর্তী সরকারের শুরু‌তে সু‌যোগবু‌ঝে কক্সবাজার শহরের সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক অ‌বৈধ দোকান। এই পয়েন্টের সড়ক ও ফুটপাতেও বসানো হয়েছে আরও শতাধিক ভ্রাম্যমাণ হকার। এর দক্ষিণপাশে কলাতলী পয়েন্টের সিক্রাউন হোটেলের সামনে তৈরি করা হয়েছে ৫টি দোকান। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা  জানান, জয়নাল, জাকির ও গুরামিয়া নামে তিন ব্যক্তি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এসব স্থাপনা নির্মাণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

ঝিনুক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দাবি করে জয়নাল নামে এক ব্যক্তি গনমাধ‌্যমকে বলেন, দোকানগুলো ৫ আগস্টের আগে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তা ও ব্যবসার স্বার্থে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে  বলেন, সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি জানার পর নিজ উদ্যোগে এক সপ্তাহের মধ্যে এসব স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় অভিযান চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের  বলেন, সরকারি বা ব্যক্তিগত জমি হোক, সৈকত এলাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগ নেই। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার পর্যটন এলাকার জন্য ৩০ বছর (২০১১-৪১) মেয়াদে মহাপ‌রিকল্পনা‌টি গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ২০১৩ সালের মে মাসে। প্ল্যান অনুযায়ী কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার সৈকতসংলগ্ন প্রথম ৩০০ মিটারের মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। পরবর্তী ৩০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণ করা যাবে সাড়ে ছয় মিটার উঁচু বা দোতলা ভবন। তবে নির্দেশনা লঙ্ঘন করে সৈকতে এসব বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও সরকার কক্সবাজারের সৈকত এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। এই গেজেট অনুযায়ী সৈকতের বেলাভূমিতে স্থাপনা নিষিদ্ধ। এ পয়েন্টে পরিবেশগত সংকটাপন্ন স্থানে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে হাইকোর্টের।