ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনে সরকার পতনের পর চট্টগ্রামে বিভিন্ন থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলায় আসামির সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে।নতুন করে নগরীর আকবরশাহ, ইপিজেড, পতেঙ্গা, সদরঘাট ও পাহাড়তলী থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিক মামলা করা হয়েছে। গত ২২ থেকে ২৪ অগাস্ট পর্যন্ত দায়ের করা মামলাগুলোতে ৬০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, থানায় হামলার পাশাপাশি বিভিন্ন পুলিশি স্থাপনায় হামলার ঘটনায়ও মামলা করা হয়েছে। এর আগে কোতোয়ালী থানায় করা মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছিল। গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেদিন বিকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের মত চট্টগ্রামেও থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়। আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, পতেঙ্গা, ইপিজেড থানা। লুটপাট হয়েছে অস্ত্রাগার ও মালখানা। কোতোয়ালী, পাহাড়তলী থানা ভবনের অবকাঠামো ছাড়া অবশিষ্ট কিছুই নেই। আর পতেঙ্গা ও ইপিজেড থানা একেবারেই ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে গেছে। এছাড়া, আকবরশাহ, সদরঘাট, হালিশহর থানায় হামলা ভাংচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। কর্ণফুলী টানেলের পশ্চিম প্রান্তে সম্প্রতি নির্মিত পুলিশ ফাঁড়িতে চলছে পতেঙ্গা থানার কাজ। আর ফ্রিপোর্ট সংলগ্ন ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়িতে চলছে ইপিজেড থানার কাজ। পতেঙ্গা থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, “থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০/২৫ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।”বিশেষ ক্ষমতা ও দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় করা এ মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি বলে জানান তিনি।এদিকে ২৫-৩০ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে ইপিজেড থানায়।বিষ্ফোরক, বিশেষ ক্ষমতা ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় করা এ মামলায়ও কারও নাম দেওয়া হয়নি বলে জানান ওসি মোহাম্মদ হোসেন।এদিকে ৫ অগাস্ট থানার বাইরে থাকা বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে আকবর শাহ থানায়।ওসি গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় অজ্ঞাত দুই থেকে তিন হাজার জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।হামলা ও গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে সদরঘাট থানাতেও।ওসি ফেরদৌস জাহান একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনার মামলায এক হাজার থেকে ১১’শ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়তলী থানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় চার থেকে পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
মােঃ জানে আলম সাকী,
ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম।