সারাদেশ
  কচুয়ায় পেশেন্ট কেয়ারে আবাসিক ডাক্তার না থাকায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনার ছয় দিন পর তদন্ত কমিটি গঠন
  25-06-2024
বাগেরহাটের কচুয়ায় সেই  পেশেন্ট কেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারের পর আবাসিক ডাক্তার না থাকায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে চিকিৎসাধীন প্রসূতী মায়ের মৃত্যুর খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশের ছয় দিন পর অবশেষে বাগেরহাটের সিভিলসার্জনের নির্দেশে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আ, স, মোঃ মাহবুবুল আলম। কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার মনি শংকর পাইককে প্রধান করে ডাঃ সারমিন ও ডাঃ রাশেদকে সদস্য করে ৩ সদস্য কমিটিকে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে রিপোর্ট দাখিল করার কথা রয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান  ডাঃ মনি শংকর পাইক বলেন, বাগেরহাটের সিভিল সার্জনের নির্দেশে ৩ দসদ্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে সিভিল সার্জন অফিসে রিপোর্ট জমা দিব । তিনি আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও  এ বিষয়টি তদন্ত করে আইনের বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। উপজেলা প্রশাসন ও আমরা যৌথভাবে এবিষয়টি দেখবো আসা রাখি এতে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। গত ২৩ জুন দুপুরে বাগেরহাটের সিভিল সার্জনের কাছে এবিষয় জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঈদের ছুটির কারনে আমরা কিছুই করতে পারিনি তিনি তখন কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আ, স, মোঃ মাহবুবুল আলম এর সাথে কথাবলে তার ফোনে এই প্রতিবেদককে কথা বলার সুযোগ করে দেয় ফোনের ওপার থেকে  ডাঃ আ, স, মোঃ মাহবুবুল আলম এই প্রতিবেদককে জানান, নিহতের কেউ আমাদের কাছে কোন অভিযোগ দায়ের করেনি অভিযোগ করলে আমরা ব্যাবস্থা নিব। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন এষয়টি শোনার সাথেসাথে প্রতিবেদকের কাছ থেকে ফোন নিয়ে তাকে বলেন এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিউজ আসছে আমি চিঠি দিচ্ছি। এর পর সিভিল সার্জন তদন্ত করার জন্য  চিঠি ইস্যু করেন।     
উল্লেখ্য কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামের বিলকিস বেগম (৩৫) নামে একজন গর্ভবতী মা গত ১৯জুন (বুধবার) সিজারের জন্য আনুমানিক সকাল ১১ টায় কচুয়ায় পেশেন্ট কেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয় । সেখানে বাগেরহাট ২৫০ সজ্জ্বা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: অসীম কুমার সমদ্দার ও একই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: ইন্দ্রজিৎ বিকালে ঐ প্রসূতি মায়ের সিজার সম্পন্ন করে বাগেরহাটে ফিরে যায় । পরবর্তীতে প্রসূতি মায়ের রক্তক্ষরণ শুরু হলে ক্লিনিকে কোন দায়িত্ব প্রাপ্ত ডাক্তার না থাকায় ক্লিনিকের ডিপ্লোমা নার্স সারমিন আক্তার তার চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন এক পর্যায়ে প্রসুতি মায়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় সে বাগেরহাটের ডা: অসীম কুমার সমদ্দারের পরামর্শে রাত ৯ টার পরে রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন । সেখানে গিয়ে রোগীর অবস্থা আরো অবনতি হলে কিছু সময় পরেই রোগী মারা যায় ।
সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক ডা:ফয়সাল হোসেন নামে একজন ডাক্তার ২৪ ঘন্টা থাকার কথা থাকলেও ঐ দিন তিনি ছুটিতে ছিলেন । 
এ বিষয়ে মৃত বিলকিস বেগমের স্বামী শামিম ব্যাপারী বলেন, আমার স্ত্রী সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল তার কোন ধরনের অসুস্থতা ছিল না । ১৭ হাজার টাকা চুক্তিতে সিজারের জন্য আমার স্ত্রীকে কচুয়া পেশেন্ট কেয়ারে ভর্তি করি । পরে ৫ টার দিকে ওটিতে নিয়ে যায় এরপর বাইরে বসে কয়েকবার আমার স্ত্রীর চিৎকার শুনি । পরে নার্স কে জিজ্ঞেস করলে বলে ও কিছু না । পরে আমার স্ত্রীর একটি পুত্র সন্তান হয় এবং ডাক্তার চলে যায় । পরবর্তীতে রাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে । এ সময় ক্লিনিকে কোন ডাক্তার না থাকায় নার্স এবং আয়া সুস্থ করার চেষ্টা করে এক পর্যায়ে না পেরে বাগেরহাটের ডা: অশীম কুমার সমদ্দারকে ফোন দিলে তিনি দ্রুত খুলনা পাঠানোর ব্যাবস্থা করতে বলেন তার পরামর্শ অনুযায়ী স্ত্রীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে মারা যায় । ক্লিনিকের গাফিলতির কারণেই তার স্ত্রী মারা গেছে বলে মৌখিক অভিযোগ করেন।

উজ্জ্বল কুমার দাস(কচুয়া,বাগেরহাট)প্রতিনিধি ।।