সারাদেশ
  চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেনের সময় বাড়িয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, চলবে আরও এক মাস
  24-06-2024
 চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের পথের ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেন চলাচলের সময়সীমা আরও এক মাস বাড়িয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এবার অতিরিক্ত ছয়টি বগি নিয়ে আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলের ডিসিও তারেক মোহাম্দ ইমরান। রোববার  তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ট্রেনটি আরও এক মাস চালানোর জন্য অনুমোদন এসেছে। ১০টি বগি থেকে বাড়িয়ে ১৬টি বগি নিয়ে প্রতিদিন চলবে ট্রেন।” রেল কর্মকর্তারা বলেন, এর আগে চলাচল করা ১০ বগির বিশেষ ট্রেনটিতে প্রথম শ্রেণি, প্রথম শ্রেণির কেবিন, শোভন ও শোভন চেয়ার মিলিয়ে আসন সংখ্যা ছিল ৪৩৮টি। ১৬ বগিতে চলাচল করলে আসন সংখ্যা হবে ৭৪৩টি। ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে এখন নিয়মিত সূচিতে চলছে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ও ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ ট্রেন। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার নিয়মিত কোনো ট্রেন নেই। ঢাকা-কক্সবাজার পথে চলা দুটি ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নেওয়ার আসনও কম।রোজার ঈদের আগে গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পথে বিশেষ ট্রেন ‘ঈদ স্পেশাল’ চালু করে রেলওয়ে। পরে ২৯ মে ইঞ্জিন ও লোকো মাস্টার সংকট দেখিয়ে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।তবে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ ছিল ‘বাস মালিকদের চাপে’ রেল কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।তখন ১২ দিন বন্ধ থাকার পর গত ১২ জুন কোরবানির ঈদের আগে থেকে আবারও বিশেষ ট্রেনটি চালু করে ২৪ জুন পর্যন্ত চালুর কথা জানায় রেল কর্তৃপক্ষ।তবে শেষ সময়ের আগের দিন রোববার ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি নিয়মিত ভিত্তিতে চালুর দাবিতে ঢাকায় রেল ভবনে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলীর কাছে স্মারকলিপি দেয় যাত্রী কল্যাণ সমিতি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বাসিন্দারাও ওই রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর দাবি করে আসছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের সড়কপথের দূরত্ব ১৪৫ কিলোমিটার। বাসে যেতে সময় লাগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। এই পথে নন এসি বাসে ৪২০ টাকা, এসি বাসে ১ হাজার টাকা ভাড়া।এ পথে ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ২২৫ টাকা; সময়ও লাগে কম, ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের বিশেষ ট্রেনটি বন্ধ হলে প্রতিবাদ কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন স্থানীয়রা।রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।এতে মাহফুজুর রহমান নামে এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পথে ট্রেন চালু করা চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। স্থানীয় এমপি ও জনপ্রতিনিধিদের প্রশ্ন করতে হবে যে, এই পথে কেন ট্রেন বন্ধ হচ্ছে? আপনাদের (জনপ্রতিনিধি) ভূমিকা কী?”চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা বলেন, “আয় বাড়াতে হলে অবশ্যই চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ট্রেন চালু রাখতে হবে। অথচ এটিকে বন্ধ করে দিতে তৎপর হয়েছে একটি চক্র। “চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সড়ক যোগাযোগ এখনও নিরাপদ নয়। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যদি দুটি ট্রেন চলতে পারে, তাহলে চট্টগ্রাম থেকে কেন রেল চলবে না? এটা মেনে নেওয়া যায় না।”

সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, “বহু অনুরোধে বিশেষ ট্রেনটি চলাচল করছিল। অথচ আবারও বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কুচক্রী মহল রেলওয়েকে লাভহীন প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করছে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আঁতাত করে।”

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জসীম উদ্দিন, স্থপতি আশিক ইমরান ও মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 

মােঃ জানে আলম সাকী,

ব্যুরো চীফ, চট্টগ্রাম।