সারাদেশ
  বাড়ছে পানি, ভাঙছে নদী নাগেশ্বরীতে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার
  12-06-2024

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বন্যা শুরুর আগেই গঙ্গাধর নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতায় ইতিমধ্যে নদীগর্ভে কারও চলে গেছে আবাদি জমি, কারও ভিটেমাটি, এমনকি স্কুল, মাদ্রাসা, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বন্যা শুরুর আগেই দুই কিলোমিটারব্যাপী নদীভাঙনে চোখের সামনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, গাছপালা এমনকি বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনের খুঁটি। ভাঙনের মুখে পড়ে বাড়িঘর অনত্র সরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বালারহাট গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানান, একাধিকবার গঙ্গাধর নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছেন এখানকার মানুষ। দুই দফা ভেঙেছে বালাহাট বাজার, কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দু’টি মাদ্রাসা। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেললেও এবার ভাঙনে ভেসে যাচ্ছে সেগুলো। ফলে আবারো ভাঙনের মুখে পুরো এলাকা। তাই ভাঙনরোধে স্থায়ী সমাধান চান এলাকাবাসী। স্থানীয় নূর বানু বেগম জানান, তাদের বাড়ি ১০ বার ভেঙে গেছে নদীগর্ভে। নদী ভাঙতে ভাঙতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তারা। এখন নদীর কিনারে বাড়ি তাদের। যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে করে বসতভিটা কখন নদীর পেটে চলে যায় তার ঠিক নেই। এবার বাড়ি ভাঙলে মাথাগোঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের। কন্যামতি গ্রামের আমোদ আলী জানান, তাদের ৭ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এ পর্যন্ত ৩ বার ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এবারো ভাঙনের মুখে রয়েছেন। বৃদ্ধ নূর মোহাম্মদ জানান, বসতভিটা ছাড়াও তাদের আবাদি জমি, সুপারি বাগান, পুকুরসহ ভাঙনে ১৫ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাথাগোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন তিনি। সেটিও ভাঙনের মুখে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক শাহালম মিয়া জানান, ইতিপূর্বে ২ বার তাদের বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে ভেঙে গেছে। আবারো ভাঙনের মুখে রয়েছে। এবার ভেঙে গেলে লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে এখানকার ছেলেমেয়েদের। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজর আলী জানান, কয়েবার এখানকার স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন বসতভিটা ভাঙনের শিকার হয়েছে। আবারো সেগুলো ভাঙনের মুখে রয়েছে। সরকার যদি স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নেয় তবে নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে হবে এখানকার মানুষকে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, নাগেশ্বরী উপজেলায় দুধকুমার নদের তীর রক্ষা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর বাইরে, বিশেষ করে চরাঞ্চলে ভাঙনরোধে অনুমতি বা বরাদ্দ নেই। এ কারণে চরে কোনো ধরনের কাজ করতে পারছি না।

মানবাধিকার খবর

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি